লবঙ্গের পুষ্টিগুণ এবং লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতা - অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন
লবঙ্গ রান্নায় ব্যবহৃত অতি সুপরিচিত একটি মসলার নাম। যেকোন ধরনের খাবারের স্বাদ বাড়াতে এর ব্যবহার হয়ে থাকে। তবে স্বাস্থ্যের উপকারিতার দিক থেকেও লবঙ্গের অবদান কতখানি তা কি আমরা জানি ?
হ্যাঁ বন্ধুরা আজ আপনাদের সামনে লবঙ্গের পুষ্টিগুণ এবং এর উপকারিতা - অপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা নিয়ে হাজির হয়েছি। এখানে জানতে পারবেন লবঙ্গ খেলে কোন কোন অসুখের হাত থেকে রক্ষা পেতে সাহায্য করে।
ভূমিকাঃ
লবঙ্গ গাছের ফুলের কুড়িকে শুকিয়ে লবঙ্গ তৈরি করা হয়। লবঙ্গকে অনেকে লবঙ্গ বলেও ডাকে। লবঙ্গের সুগন্ধের মূল কারণ “ইউজেনল” নামক যৌগ। লবঙ্গ স্বাধারণত মাংস, পোলাও, বিরিয়ানি জাতিয় খাবারের স্বাদ বাড়াতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। লবঙ্গ মসলা হিসেবে ব্যবহার হলেও এর ঔষধীগুনে ভরপুর।
পেজ সূচিপত্রঃ
লবঙ্গের পুষ্টিগুণ
লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতা
লবঙ্গ খাওয়ার অপকারিতা
সেক্সের জন্য লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতা
পুরুষের লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতা
সহবাসের আগে লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতা
খালি পেটে লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতা
লবঙ্গ খাওয়ার নিয়ম
লেখকের মন্তব্য
লবঙ্গের পুষ্টিগুণ
ইউএসডিএ (ইউনাইটেড স্টেট ডিপার্ট্মেন্ট অব অ্যাগ্রিকালচার) এর তথ্যমতে, প্রতি ১০০ গ্রাম লবঙ্গে, প্রোটিন ৬ গ্রাম, লিপিড ১৩ গ্রাম,কার্বোহাইড্রেট ৬৫ গ্রাম , সুগার ২ গ্রাম , শক্তি ২৭৪ কিলো-ক্যালোরি এবং ডায়েটারি ফাইবার রয়েছে ৩৩ গ্রাম। এ ছাড়া লবঙ্গে প্রচুর পরিমাণে থাকে খনিজ পদার্থ যার মধ্যে
রয়েছে- আয়রন, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম এবং জিংক উপাদান।
লবঙ্গের তেলের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো অ্যাসিটাইল ইউজেনল, বেটা-ক্যারোফাইলিন, ভ্যানিলিন, ক্র্যাটেগলিকঅ্যাসিড, ট্যানিন, গ্যালোট্যানিক অ্যাসিড, মিথাইল স্যালিসাইলেটসহ ইত্যাদি।
লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতা
লবঙ্গের নানাবিধ স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। বহু গুণেগুনান্নিত এই লবঙ্গের উপকারিতার কথা বলে শেষ করা যাবে না। লবঙ্গের সঠিক ব্যবহার জানলে, সে অনুযায়ী ব্যবহার করলে আপনাকে কখনো ডাক্তারের কাছে যেতে হবে না। আসুন জেনে নিন উপকারিতার কথাগুলো সম্পর্কে।
হজম ক্ষমতা বাড়ায়ঃ হজম ক্ষমতা বৃদ্ধিতে লবঙ্গ খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। কারণ লবঙ্গতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ফাইবার, যা হজম ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সহায়তা করে। এ ছাড়াও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা, ডিসপেপসিয়া, এরাফ্লাটুলেন্স, এবং নসিয়ার মতো সমস্যার হাত থেকে মুক্তি দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে লবঙ্গ।
দাঁতের ব্যথা কমায়ঃ লবঙ্গ দাঁতের ব্যথা দূর করে। মাড়ির ক্ষয় নিরাময় করে। লবঙ্গতে উপস্থিত অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান শরীরে প্রবেশ করার পর নিমেষে দাঁতের যন্ত্রণা কমিয়ে দেয়। পাশাপাশি মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে বিশেষ ভুমিকা পালন করে থাকে এই লবঙ্গ। প্রায় সব টুথপেস্টের কমন উপকরণ এই লবঙ্গ।
বমি বমি ভাব দূর করেঃ ট্রেনে বা বাসে যাওয়ার সময় যদি মাথা ঘুরতে থাকে ও বমি এসে যায়, তাহলে মুখে একটি লবঙ্গ রেখে সেই চুষে রস খেলে বমি ভাব ও মাথা ঘোরা কমে যাবে। গর্ভবতী মায়েরা সকালের বমিবমি ভাব দূর করতে লবঙ্গ চুষতে পারেন। লবঙ্গের ঝাঁঝালো গন্ধ বমি বমি ভাব দূর করতে বিশেষ ভাবে সাহায্য করে।
মাথা ব্যথা ও স্ট্রেস কমায়ঃ ধোঁয়া, রোদ এবং ঠান্ডার জন্য শ্লেষ্মা বেড়ে নানা ধরনের মাথা ব্যথা বা মাথার রোগ দেখা দিতে পারে। মাথা ব্যথা কমাতে লবঙ্গের উপকারিতা অপরিসীম। এ ছাড়া ক্লান্তি ভাব বা স্ট্রেস কমাতে লবঙ্গ খুবই উপকারী একটি উপাদান। প্রতিনিয়ত নিয়ম করে ১টি অথবা ২টি লবঙ্গ চুষে খাওয়া হলে স্ট্রেস অথবা ক্লান্তি ভাব থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
খাবারে রুচি বৃদ্ধি করেঃ বিভিন্ন রোগ বিশেষ করে পেটের রোগে এবং জ্বরে ভোগার পরে খাবারে অরুচি দেখা দেয়। ভাত-রুটি, মাছ-মাংস, মিষ্টান্ন বা যে কোন উপাদেয় খাবারে পর্যন্ত রুচি হয় না সেক্ষেত্রে লবঙ্গ চুর্ণ সকালে খালি পেটে দুপুরে খাবারের পরে খেলে খাবারে রুচি ফিরে আসবে। নিজে একবার হলেও পরীক্ষা করে দেখতে পারেন আসলেই খাবারে রুচি আসে কিনা।
বায়োঅ্যাক্টিভ উপাদান বিদ্যমানঃ লবঙ্গতে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিকারসিনোজেনিক, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়া, অ্যান্টিইনফ্লেমেটোরি, হেপাটো-প্রোটেক্টিভসহ আরো অনেক বায়ো অ্যাক্টিভ উপাদান পাওয়া যায়। লবঙ্গ কলেরা, যকৃতের সমস্যা, ক্যান্সার, শরীরে ব্যথা ইত্যাদি থেকে শরীরকে রক্ষা করে। অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল প্রপাটিজ যে কোনও ধরনের জীবাণুকে মেরে ফেলতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখেঃ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে প্রয়োজনীয় ইনসুলিন তৈরি হতে পারে না। গবেষণায় দেখা গেছে, লবঙ্গের রস শরীরের ভিতরে ইনসুলিন তৈরিতে সাহায্য করে ও কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়, এবং রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য লবঙ্গ অত্যান্ত উপকারি।
ত্বকের সংক্রমণ সারায়ঃ আসলে লবঙ্গে উপস্থিত ভোলাটাইল অয়েল শরীরে উপস্থিত টক্সিক উপাদানদের বের করে দেয়। সেই সঙ্গে জীবাণুদেরও মেরে ফেলে। ফলে সংক্রমণ জনিত কষ্ট কমতে একেবারেই সময় লাগে না। ঘা পচড়া হতে পারবে না। তাই ত্বক ভালো রাখতে লবঙ্গ হতে পারে আপনার জন্য উপকারি দ্রব্য।
লবঙ্গ খাওয়ার অপকারিতা
প্রত্যেক খাবারের যেমন ভালো গুন থাকে তার পাশাপাশি তার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও থাকে। সেই অনুযায়ী লবঙ্গের ভালো দিক এর পাশাপাশি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও রয়েছে। তাই অতিরিক্ত পরিমাণে লবঙ্গ খাওয়ার ফলে কি কি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে তা নিম্নে তালিকা ভুক্ত করা হল।
- অতিরিক্ত পরিমাণে লবঙ্গ খেলে শরীরের রক্ত পাতলা হয়ে যেতে পারে।
- অতিরিক্ত পরিমাণে লবঙ্গ খেলে হাইপোগ্লাইসেমিয়ার মতো সমস্যা হতে পারে।
- ১৫ বছরের নিচের শিশুদের আলাদা করে লবঙ্গ বা এর চা থেকে দূরে রাখুন।
যাদের রক্তে শর্করার মাত্রা কম, তারা কখনোই বেশি পরিমাণে লবঙ্গ খাবেন না। কেননা, এটি হাইপারগ্লাইসিমিয়ার কারণ হতে পারে। আবার যাদের অ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রেও লবঙ্গ খাওয়ায় র্যাশ বা চুলকানির সমস্যা দেখা দিতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে লবঙ্গ খাওয়া থেকে বিরত থাকাই মঙ্গলজনক।
সেক্সের জন্য লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতা
লবঙ্গে থাকা ফ্ল্যাভোনয়েড, অ্যালকালয়েড ও স্যাপোনিন যৌন ইচ্ছা বা কামশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। যৌন ক্ষমতা এবং টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বৃদ্ধির পাশাপাশি অকাল বীর্যপাত রোধে বহু শতাব্দী ধরে লবঙ্গের ব্যবহার হয়ে আসছে। লবঙ্গ স্নায়ুতন্ত্রকে উত্তেজিত করে যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধির পাশাপাশি সঙ্গমের ইচ্ছে বাড়াতে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
স্পার্ম কাউন্ট বাড়াতে সাহায্য করে লবঙ্গ। গবেষণা বলছে, শুধু পুরুষরাই নন, লবঙ্গ খেলে উপকৃত হন মহিলারাও। মহিলাদের যৌন ইচ্ছা বাড়াতে সাহায্য করে লবঙ্গ। তাই প্রতিদিন এক টুকরো লবঙ্গ চিবিয়ে খান। এতে উপকার পাবেন।
পুরুষের লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতা
লবঙ্গতে রয়েছে ভিটামিন কে, ম্যাঙ্গানিজ, ফাইবার ও গুরুত্বপূর্ণ কিছু অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। এ ছাড়া রয়েছে ভিটামিন বি১,বি২, বি৩, বি৬ ও বি৯ যা শরীরকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি পুরুষদের যৌন ক্ষমতা বাড়ায়। নিয়মিত লবঙ্গ সেবন পুরুষদের অকাল বীর্যপাতের সমস্যা থেকে দূর হয়। যার ফলে যৌন জীবনে উষ্ণতার অভাব হয় না।
পুরুষরা কীভাবে লবঙ্গ খাবেন জানেন কি? এক্ষেত্রে শুধু চিবিয়ে খেলে হবে না। গরম জলে লবঙ্গ দিয়ে খান উপকার পাবেন। আর রাতে শোয়ার আগে লবঙ্গ খাবেন। পাশাপাশি ব্যথা-বেদনা কমাতে সাহায্য করে লবঙ্গ। এতে প্রদাহরোধী বৈশিষ্ট রয়েছে যা ব্যথা থেকে দ্রুত মুক্তি দেয়। এ ছাড়া নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধজনিত সমস্যা থেকেও মুক্তি দিতে পারে লবঙ্গ। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে মুখে এক টুকরো লবঙ্গ রাখুন।
সহবাসের আগে লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতা
অনেকেই জানেনা সহবাসের আগে লবঙ্গে খেলে কি হয়?লবঙ্গ খাওয়ার ফলে ছোটখাটো সমস্যার পাশাপাশি অনেক বড় সমস্যা থেকেও সমাধান দেয় লবঙ্গ। যাদের বয়স হয়ে গেছে তবে বিয়ে করতে ভয় পাচ্ছেন পুরুষের যৌন ক্ষমতা কম হয়ে যাওয়ার কারণে যারা দুশ্চিন্তা আছেন।
তারা আজকে থেকে প্রতিদিন অন্তত দুইটি করে লবঙ্গ খান।কারণ লবঙ্গের মধ্যে থাকা ক্যালসিয়াম, কপার, সেলিনিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, থায়ামিন, ফাইবার, আয়রন, ভিটামিন সহ কিছু গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টি অক্সিডেন্ট যা আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি পুরুষের যৌন ক্ষমতা অনেকটাই বৃদ্ধি করে এবং মানুষের যৌন সংক্রান্ত যত ধরনের সমস্যা আছে তা নিমিষেই সমাধান করে দেয় লবঙ্গ।
এবার চলুন জেনে নেওয়া যাক সহবাসের আগে লবঙ্গ খেলে কি হয় এবং উপকারিতা গুলো কি কি ?
- প্রতিদিন নিয়মিত লবঙ্গ খেলে পুরুষের অকাল বীর্যপাতের সমস্যা দ্রুত দূর হয়ে যায়।
- রাতে ঘুমানোর আগে অথাবা সহবাসের আগে লবঙ্গ চিবিয়ে খাওয়ার ফলে লবঙ্গের মধ্যে থাকা গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন গুলো পুরুষের শুক্রানুর সংখ্যা বাড়াতে সাহায্য করে।
- সহবাসের আগে লবঙ্গ চিবিয়ে খাওয়ার খেলে স্নায়ুতন্ত্র কে উত্তেজিত করে যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধির পাশাপাশি সঙ্গমের ইচ্ছা বাড়াতে সাহায্য করে।
- সহবাসের আগে লবঙ্গ খেলে দ্রুত বীর্যপাত রোধে কাজ করে এবং দীর্ঘ সময় জীবনসঙ্গিনীর সাথে সময় কাটানো যায়।
- সহবাসের আগে একটি লবঙ্গ মুখের ভিতর নিয়ে চিবিয়ে খেলে মুখে সুগন্ধ আসে যার ফলে মিলন হতে পারে আরো সুন্দর।
- প্রতিদিন লবঙ্গ খাওয়ার ফলে দাঁতের ব্যথা ও মারীর ক্ষয় রোধ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
- প্রতিদিন নিয়মিত দুটি করে লবঙ্গ খাওয়ার ফলে সর্দি, কাশি সহ ঠান্ডা জনিত সকল রোগ থেকে মুক্তি মিলে।
- লবঙ্গ শুধু পুরুষদেরই উপকার করে না পাশাপাশি নারীদের কেও লবঙ্গ বেশ কাজ করে। পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও যদি প্রতিদিন একটি করে লবঙ্গ চিবিয়ে খায় তাহলে তাদের যৌন ইচ্ছা বাড়ায়।
- প্রচন্ড মাথা ব্যথা বা অক্লান্ত পরিশ্রম করার পরে এক টুকরো লবঙ্গ মুখে চিবিয়ে নিয়ে কিছুক্ষণ শুয়ে থাকুন সব ক্লান্ত আস্তে আস্তে দূর হয়ে যাবে।
পুরুষ মানুষ জীবনযাত্রার চলার পথে নানা রকম ভাবে বন্ধুদের সাথে অথবা রাস্তাঘাটে ধূমপান মদপান সহ অনেক ধরনের নেশা দ্রব্য গ্রহণ করে থাকে যার ফলে দিন দিন শুক্রাণু সংখ্যা অনেকটাই কমে যায়। সুতরাং যারা এ সকল বদ অভ্যাসে আসক্ত রয়েছেন তারা দ্রুত এই সকল বদ অভ্যাস গুলো ত্যাগ করুন এবং প্রতিদিন দুটি করে লবঙ্গ খান।
এবং যারা যৌন সমস্যায় ভুগছেন এবং নিজের সঙ্গীকে সঠিকভাবে সুখ দিতে পারছেন না তারা অবশ্যই সহবাসের আগে প্রতিদিন লবঙ্গ চিবিয়ে খেয়ে দেখেন সাথে সাথে ফলাফল পাবেন। আশা করি সবাই জানতে পেরেছেন সহবাসের আগে লবঙ্গ খেলে কি হয়।
খালি পেটে লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতা
প্রতিদিন খালি পেটে একটুখানি লবঙ্গের গুঁড়া খেলে রক্তের সুগারের লেভেল নিয়ন্ত্রণে থাকে। এটা ইনসুলিন সিক্রিশন বাড়াতে সাহায্য করে। ৬. লবঙ্গের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাঙ্গানিজ, ফ্ল্যাভনয়েড, ইত্যাদি উপাদান রয়েছে যা আমাদের হাড়ের ঘনত্ব বজায় রাখতে সাহায্য করে।
রোজ খালি পেটে একটা, দুটো লবঙ্গ খান। দারুন উপকার পাবেন। এটা আপনার সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণ করবে, দাঁত ভালো রাখার সঙ্গে একাধিক কাজ করবে। খালি পেটে লবঙ্গ খেলে একাধিক উপকার পাওয়া যায়। দেখে নিন খালি পেটে লবঙ্গ খেলে কী কী উপকার হতে পারে।
লিভার ভালো রাখেঃ লবঙ্গ লিভারে নতুন কোষ গজাতে সাহায্য করে। একই সঙ্গে সেটাকে ভালো রাখে।
সুগার নিয়ন্ত্রণ করেঃ রোজ খালি পেটে একটুখানি লবঙ্গের গুঁড়ো খেলে রক্তের সুগারের লেভেল নিয়ন্ত্রণে থাকে। এটা ইনসুলিন সিক্রিশন বাড়াতে সাহায্য করে।
মুখের স্বাস্থ্য ভালো রাখেঃ দাঁতের সমস্যা, ইত্যাদির হাত থেকে লবঙ্গ আমাদের বাঁচায়। দাঁতে ব্যথা হলে যদি আপনি লবঙ্গ খান তাহলে অনেকটাই আরাম পাবেন। এছাড়াও মুখের দুর্গন্ধ, মুখের অন্যান্য সমস্যা, ইত্যাদি দূর করতে সাহায্য করে থাকে।
হজম শক্তি বাড়ায়ঃ লবঙ্গ তার উষ্ণতা দিয়ে হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে থাকে। এতে অ্যান্টি মাইক্রোবাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা পেটের বিভিন্ন ক্ষতিকর জীবাণুকে ধ্বংস করতে সাহায্য করে এবং পেট ভালো রাখে।
গাঁটের ব্যথা কমায়ঃ লবঙ্গের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাঙ্গানিজ, ফ্ল্যাভনয়েড, ইত্যাদি উপাদান রয়েছে যা আমাদের হাড়ের ঘনত্ব বজায় রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি হাড়ের কোষ মেরামত করতে সাহায্য করে। তাই গাঁটের ব্যথার জায়গায় লবঙ্গের তেল লাগালে অনেকটাই উপসম পাওয়া যায়।
ব্যথা কমায়ঃ খালি পেটে রোজ লবঙ্গ খেলে মাইগ্রেনের সমস্যা, মাথা ব্যথা, ইত্যাদি কমাতে সাহায্য করে থাকে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ সর্দি, জ্বর, কাশি, সাইনাস, ইত্যাদির হাত থেকে লবঙ্গ আমাদের বাঁচায়। এতে রয়েছে অ্যান্টি ভাইরাল এবং ব্লাড পিউরিফিকেশন উপাদান যা রক্তের থেকে দূষিত পদার্থ দূর করতে সাহায্য করে থাকে।
লবঙ্গ খাওয়ার নিয়মঃ
আমাদের শরীরে প্রতিনিয়ত যে সকল সাধারণ রোগ হয় যেমন সর্দি-কাশি জনিত সহ ঠান্ডা জনিত রোগ। এ সকল রোগ খুব সহজেই লবঙ্গের মাধ্যমে শেষ হয়ে যায়।শুধু তাই নয় শরীরের ছোটখাটো রোগ শেষ করার পাশাপাশি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে অনেক শক্তিশালী করে তোলে।তবে মাত্রা অতিরিক্ত লবঙ্গ খাওয়া শরীরের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যেতে পারে।তাই চলুন লবঙ্গ খাওয়ার নিয়ম সঠিকভাবে জেনে নেওয়া যাক।
- প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে সর্বোচ্চ দুইটি লবঙ্গ নিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিন।
- তারপর সকালের নাস্তা খাওয়ার মিনিমাম ৩০ মিনিট আগে দুটি লবঙ্গ ভালোমতো চিবিয়ে খান।এতে আপনার পেটের বদহজমের পাশাপাশি পেট পরিষ্কার হবে।
- তবে যদি আপনি লবঙ্গ চিবিয়ে না খেতে পারেন তাহলে মিনিমাম ২০ মিনিট লবঙ্গ দুটি মুখে নিয়ে ভালোমতো চুষতে থাকুন।
- এছাড়া আপনি রাতে খাওয়া দাওয়া পড়ে এবং ঘুমানোর মিনিমাম ২০ থেকে ৩০ মিনিট আগে দুটি লবঙ্গ মুখের ভিতর নিয়ে চিবিয়ে খেতে পারেন অথবা মুখে নিয়ে চুষতে পারেন।
আশা করি লবঙ্গ কখন খাওয়া উচিত এবং লবঙ্গ খাওয়ার নিয়ম সঠিকভাবে জানতে পেরেছেন। যেকোনো জিনিস আপনার প্রয়োজনের থেকে অতিরিক্ত খাওয়া শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।তাই যেকোনো জিনিস খাওয়ার আগে সঠিক সময় এবং সঠিক নিয়ম জেনে নিবেন।
লেখকের মন্তব্যঃ
বন্ধুরা এতোক্ষণ নিশ্চয় জেনে গেছেন যে, লবঙ্গ খাওয়ার যত উপকারিতা সম্পর্কে। অনেক উপকারি একটি উপাদান হচ্ছে লবঙ্গ। মানব দেহের জন্য নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য লবঙ্গ অত্যান্ত উপকারি। উপরে বর্ণিত নিয়ম মেনে নিয়মিত লবঙ্গ খান ভালো থাকুন, সুস্থ্য থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url