স্বামী-স্ত্রী ঘনঘন মিলিত হলে যেসব উপকার হয় তা বিস্তারিত জেনে নিন
বৈবাহিক জীবনে সুখি হতে চাই সবায়। কিন্তু অনেকেই সেই সুখের দেখা পান না। স্বামী-স্ত্রী দুজনের মনের মিল থাকাটা জরুরি। শুধু মনের মিল থাকলেই চলবেনা, ঘনঘন শারীরিক ভাবে মিলামেশা করলে অনেক উপকার আছে যা অনেকেই জানে না।
আজকে আপনাদের সাথে আলোচনা করবো স্বামী-স্ত্রী ঘনঘন মিলিত হলে যেসব উপকার হয় তা নিয়ে। অনেকে মানে করেন স্বামী-স্ত্রী দৈহিক ভাবে ঘনঘন মিলিত হলে স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ক্ষতিকর, এটা সম্পূর্ণ ভূল ধারনা। তাহলে আর দেরি না করে নিচের আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ে জেনে সেই সব উপকারের কথাগুলো সম্পর্কে।
পেজ সূচিপত্রঃ স্বাম-স্ত্রী ঘনঘন মিলিত হলে যেসব উপকার হয়।
মানসিক চাপ কমিয়ে প্রশান্তি দেয়
রাতে খুব ভালো ঘুম হয়
হার্ট ভালো থাকে
রোগ-ব্যাধি কম হয়
অন্য নারীর প্রতি আশক্ত হবে না
অন্য পুরুষের প্রতি আকর্ষণ থাকবে না
নিয়মিত যৌন মিলনে স্মৃতিশক্তি প্রখর হয়
লেখকের মন্তব্য
মানসিক চাপ কমিয়ে প্রশান্তি দেয়
সাংসারিক জীবনে দাম্পত্য সুখের উপর নির্ভর করে দুজনের সুখি জীবন। শুধু একজন সুখি হলেই হবে না। সুখের ক্ষেত্রে দুজন দুজনের প্রতি লক্ষ রাখা দরকার। মানসিক শান্তি আনার ক্ষেত্রে নিয়মিত শারীরিক মিলনের অভ্যাস সবচেয়ে ভালো। কারণ নিয়মিত শারীরিক মিলনের ফলে মন উত্ফুল্ল থাকে ফলে মানসিক অশান্তি কম হয়।
এজন্য এই হালাল কাজে কখনোই অবহেলা বা অলসতা করবেন না। স্ত্রী হিসেবে স্বামীকে শান্তি দিতে পারলে আপনিও সওয়াবের অংশিদার হবেন। এটা একটি হালাল কাজ ইসলামী বিধান অনুসরণ করে মিলিত হলে আপনি নেকিও অর্জণ করতে পারবেন। তাছাড়া দুজনের সম্পর্ক আরো মজবুত হবে।
রাতে খুব ভালো ঘুম হয়
স্বামী-স্ত্রী ঘনঘন শারীরিক ভাবে মিলিত হলে রাতে খুব ভালো ঘুম হয়। একেবারে প্ররিতৃপ্ত ঘুম। ঘনঘন মিলিত হওয়ার ক্ষেত্রে স্ত্রীরা বেশি অলসতা করে, যা মোটেও ঠিক নয়। এক্ষেত্রে অনেকের সংসারে অশান্তি নেমে আসে। আবার যারা অশান্তি করতে পারেনা, তারা মনে মনে খুব কষ্ট পায়। এমনও ঘটনা আছে, স্বামীর ইচ্ছা জেগেছে যৌন মিলন করার
অথচ স্ত্রী তার ডাকে সাড়া না দিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো, পাশে স্ত্রী গভীর ঘুমে আচ্ছোন্ন অথচ স্বামীর দুচোখে ঘুম নেই। স্বামী-স্ত্রী যৌন মিলনকে যদি উপভোগ করে তবে কাউরি কোন আপত্তি থাকার কথা নয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মেয়েরা অলসতা করে, অবহেলা করে, স্বামীকে প্রাধান্য দেয় না। এটা চরম অন্যায়, এটা স্বামীর প্রতি অবিচার। এমনও বলতে শুনা যায় স্ত্রীরা বলে ‘‘একই কাজ বারবার করতে তোমাদেরকে এতো ভালোলাগে ?’’
হার্ট ভালো থাকে
স্বামী-স্ত্রী ঘনঘন যৌন কাজে মিলিত হলে উভয়ের হার্ট ভালো থাকে। হার্ট ভালো রাখার একমাত্র উপায় এটি নয়, যৌন মিলনের ফলে যে মানসিক ও শারীরিক তৃপ্তি পাওয়া যায় তাতে হার্ট ভালো থাকে। সহবাস হার্ট এবং ফুসফুসের ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং সাময়িকভাবে উচ্চ রক্তচাপ কমায়।
যৌন মিলন স্ট্রোক এবং কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি থেকে রক্ষা করে। সহবাস করলে শরীরে ক্ষতিকর জীবানু বাসা বাধতে পারে না। গবেষকরা গবেষণা করে জানিয়েছেন যে যারা সপ্তাহে অন্তত দুবার সহবাস করে তাদের শরীরে ক্ষতিকর জীবানু তুলনায় কম থাকে।
উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং হার্ট ভালো থাকে। উচ্চরক্তচাপ দুশ্চিন্তা থেকে আসে, যা হৃৎপিণ্ডের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক। দুশ্চিন্তা হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা অনেক বাড়িয়ে তোলে। আর এই দুশ্চিন্তা কমাতে সেক্সের চেয়ে ভাল ঔষুধ আর কিছু নেই। জৈবিক মনোবিজ্ঞান অধ্যয়নরত গবেষকরা দেখেছেন যে যারা নিয়মিত যৌনমিলন করে তাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
তাই হৃদরোগের সম্ভাবনা অনেক কম। আমেরিকান জার্নাল অব কার্ডিওলজির দ্বারা প্রকাশিত একটি গবেষণা থেকে জানা যায়, যে দম্পতিরা সপ্তাহে কমপক্ষে দুইবার সহবাস করে তাদের হার্টের হার অনেক বেশি ভাল হয় তাদের তুলনায় যারা কখনও সেক্স করেনি। সপ্তাহে তিনবার সহবাস হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়।
• সহবাস হার্ট এবং ফুসফুসের ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং সাময়িকভাবে উচ্চ রক্তচাপ কমায়।
• যৌন মিলন স্ট্রোক এবং কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি থেকে রক্ষা করে।
রোগ-ব্যাধি কম হয়
নিয়মিত সহবাস করলে শরীরে রোগ ব্যাধি কম হয়। প্রোস্টেট ক্যান্সার থেকে পুরুষদের প্রতিরোধ করা
দেখা যাচ্ছে যে একজন মানুষ যখন প্রায়ই সহবাস করে তখন সে প্রোস্টেট ক্যান্সারের বিরুদ্ধে বেশি সুরক্ষিত থাকে, এর কারণ হল প্রোস্টেট গ্রন্থিতে নতুন তরল পদার্থের সাথে পুরনো তরল পদার্থ প্রতিস্থাপিত হয়, যা প্রোস্টেট ক্যান্সার প্রতিরোধে অবদান রাখে।
• জরায়ুর ক্যান্সার থেকে মহিলাদের প্রতিরোধ৷ করে। সম্প্রতি জানা গেছে, হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের সংক্রমণের ফলে জরায়ুর ক্যান্সার হতে পারে, কিন্তু যখন মহিলারা সহবাস উপভোগ করে, তখন পুরোনো সার্ভিকাল কোষের একটি বড় অংশ ঝরে পড়ে এবং তাদের পরিবর্তে নতুন এবং শক্তিশালী কোষ তৈরি হয়, যা অনেক বেশি পুরনো কোষের তুলনায় ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধী।
অন্য নারীর প্রতি আশক্ত হবে না
সহবাস স্বামী-স্ত্রী পরষ্পরের বিশ্বাস এবং ভালবাসা বৃদ্ধি করে। ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী যদি স্বামী-স্ত্রী সহবাস করে, তবে তা আল্লাহ্ তাআলার দেয়া অফুরন্ত নেয়ামতের তুল্য হয়। এটা বেহেশতের ভিতরের অনাস্বাদিত নেয়ামতের তুল্য। পৃথিবীতে সহবাস একটি জান্নাতী উপহার একথা মনে করে সহবাস করলে উভয়ের অন্তর এক অনাকাঙ্খিত আনন্দে ভরে ওঠে।
হাদীসে রাসূলে পাক সা. বলেছেন তোমাদের স্ত্রী সহবাস ও একটি সদকার সমতুল্য। কুরআনে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন: তোমাদের স্ত্রীরা তোমাদের কৃষিক্ষেত। তোমরা যেভাবে ইচ্ছা তোমাদের কৃষিক্ষেতে যাও’। স্বামী স্ত্রী তাদের উভয়ের মধ্যে জমি ও কৃষকের মতো একটা সম্পর্ক রয়েছে। জমিতে কৃষক নিছক বিচরণ ও ভ্রমণ করতে যায় না।
জমি থেকে ফসল উৎপাদন করার জন্যই সে সেখানে যায়। মানব বংশধারার কৃষককেও মানবতার এই জমিতে সন্তান উৎপাদন ও বংশধারাকে সুমন্নত রাখার লক্ষ্যেই সহবাস করতে হবে। স্বামী যখনই স্ত্রীর সঙ্গ চাইবে তখনই স্ত্রী যদি তার সঙ্গ দেয় তবে কোন স্বামী পরকীয়াই জড়াবে না। অন্য নারীর প্রতি তার আশক্তি বা চাহিদা থাকতে পারেনা।
অন্য পুরুষের প্রতি আকর্ষণ থাকবে না
ঠিক একই ভাবে কোন স্ত্রী যদি তার স্বামীর সঙ্গ চায়,তবে তাকে পরিতৃপ্ত করা স্বামীর দায়িত্ব। স্ত্রীকে পরিপূর্ণ তৃপ্তি দিতে না পারলে সেই স্ত্রী অন্য পুরুষের প্রতি আকর্ষণ আস্তে আস্তে বেড়ে যায় এবং সময় সে পরকীয়াই লিপ্ত হয়ে যায়। তাই প্রত্যের স্বামীর উপর তাদের স্ত্রীর হক সঠিক ভাবে আদায় করা। স্বামী-স্ত্রী একে অপরের প্রতি ছাড়া অন্যের প্রতি আকর্ষিত হওয়ার মূল কারণ হচ্ছে বাড়িতে পর্যাপ্ত সঙ্গ না পাওয়া।
নিয়মিত যৌন মিলনে স্মৃতিশক্তি প্রখর হয়
যেই সব মহিলারা নিয়মিত মিলন করেন তাদের স্মৃতিশক্তি প্রখর থাকে আর্কাইভ অফ সেক্সুয়াল বিহেভিয়ার এর এক সাম্প্রদায়িক গবেষণায় দেখা গিয়েছে নারীরা যত বেশি যৌন মিলন করে ততই তারা কোন শব্দ মুখস্থ করার ক্ষেত্রে পারদর্শী হয়ে ওঠেন তাদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়।
নিয়মিত শারীরিক মিলনের ফলে হাড়ের জয়েন্টে ব্যথার ক্ষেত্রে আরাম পাওয়া যায় অর্গানিজম এর আগে অক্সিটোসিন হরমোনের সামান্য থেকে পাঁচ গুণ বেড়ে যায় যার ফলে মাথাব্যথা-মাইগ্রেন এর মত সমস্যা দূর হয়।
লেখকের মন্তব্যঃ
স্বামী-স্ত্রীর সহবাসের সুখ আল্লাহ তাআলার একটি বড় নিয়ামত। এই সুখকে জান্নাতি সুখের সাথে তুলনা করা হয়েছে। স্বামি স্ত্রী মিলনে শুধু শারিরীক শান্তিই না এতে সওয়াব ও পাওয়া যায়। তবে সময় সুযোগ পেলে একে অন্যকে আদর করবে এতে ক্ষতির কিছু আছে বলে আমি মনে করিনা।
তবে একটা কথা মনে রাখবেন অবহেলা বা অলসতা করে কেউ কাউকে ফিরিয়ে দিবেন না। ফিরিয়ে দেওয়া মানেই আস্তে আস্তে তাকে দূরে ঠেলে দেওয়ার সমতুল্য। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, নিয়মিত সহবাস করুন, আল্লাহ হাফেজ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url