কোন রোগে কোন খাবার খেলে দ্রুত সেরে যায় বিস্তারিত জানুন
আমাদের সুস্থ্যতার জন্য পুষ্টিকর খাবার খাওয়া প্রয়োজন। এর পরও আমরা মাঝে মাঝে অসুস্থ হয়ে পড়ি। তবে অসুখ হলেই যে ঔষধ খেতে হবে এমনটি নয়। কিছু খাবার আছে যেগুলো খেলে দ্রুত রোগ সেরে যায়। আপনি কি জানেন কোন রোগে কোন খাবার খেলে দ্রুত সুস্থ হবে ?
হ্যাঁ বন্ধুরা আজ আপনাদের জানাবো- কোন কোন খাবার খেলে কোন কোন রোগ সেরে যায় সে সম্পর্কে। নিয়মিত নিয়ম মেনে পুষ্টি সমৃদ্ধ নিচের খাবারগুলো খেলে অনেক রোগের হাত থেকে বাঁচতে পারবেন। তো আসুন জেনে নেয়া যাক-
ভূমিকাঃ
একমাত্র পুষ্টিকর খাবারই পারে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে। আর শরীরে যতো বেশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকবে ততো বেশি সুস্থ থাকা যাবে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা না থাকলে শরীরে যে রোগ খুব তাড়াতাড়ি বিস্তার ঘটাতে পারে। এককথায় পুষ্টিকর খাবার এবং নিয়ম মাফিক চলাফেরা করার মাধ্যমে সুস্থ্যতা থাকা যায় সবথেকে বেশি।
পোস্ট সূচিপত্রঃ
পুরুষত্ব কমে গেলেঃ- ডিম, দই, কলা, বাদাম ও খেজুন
ওজন কমাতেঃ শসা, গাজর ও করলা
হজম শক্তি বাড়াতেঃ কলা, পেঁপে ও দই
দৃষ্টিশক্তি কমেগেলেঃ ছোট মাছ ও সবুজ শাকসবজি
হৃদরোগ ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেঃ রসুন, অলিভ অয়েল ও আদা
লেখকের মন্তব্য
পুরুষত্ব কমে গেলেঃ- ডিম, দই, কলা, বাদাম ও খেজুন
বিবাহিত জীবনে সুখ-শান্তি নির্ভর করে দাম্পত্যের উপর। দাম্পত্য জীবন সুখের না হলে বিবাহিত জীবন একেবারে বিশাদ। বিশেষ করে পুরুষদের পুরুষত্ব কমে গেলে সংসার অশান্তিতে ডুবে যায়। যে কোন কারণে পুরুষত্ব কমে যেতে পারে, তাই বলে হতাশ হওয়া যাবেনা। কোন সময় যদি পুরুত্ব কমে যায় তবে প্রতিদিন দুইটি করে ডিম খাবেন। দই খাবেন, দুইটি করে কলা খাবেন, বাদাম খাবেন, এবং পর্যাপ্ত পরিমানে খেজুর খাবেন।
ডিম শরীরে টেস্টোস্টেরনের উৎপাদন বৃদ্ধি করে। ডিম প্রোটিনের ভাল উৎস। শরীরে টেস্টোস্টেরনের ক্ষরণ বৃদ্ধি করতে রোজের ডায়েটে কলা রাখতে পারেন। নিয়ম করে কলা খেলেও শরীর চাঙ্গা থাকে, শরীরে স্ফূর্তি আসে। খেজুর হচ্ছে দ্রুত বলবর্ধক একটি শুষ্ক ফল। খেজুরে থাকা প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট টেস্টোস্টেরন বৃদ্ধিতে খুবই সহায়ক।
ওজন কমাতেঃ শসা, গাজর ও করলা
শরীর খুব মোটা আর ভারি হয়ে গেলে অবশ্যই ওজন কমাতে হবে। ওজন বেশি হলে শরীর নিয়ে চলে ফিরে বেড়ানো ও কাজকর্ম করা খুব কঠিন হয়ে যায়। তাই ওজন কমাতে চাইলে শসা, গাজর ও করলা খান ভুব ভালো উপকার পাবেন। শরীরে পানির অভাব দূর করতে শসা খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন পুষ্টিবিদ ও চিকিৎসকরা।
ওজন কমাতেও ভীষণ কার্যকর শসা। এতে শুধু ওজন কমাতেই শসা নয়, মিলবে পুষ্টিও। পরিপূর্ণ ও অল্প ক্যালরি শসা। খেলেই পেট ভরে যায়, অথচ সেভাবে ক্যালরি প্রবেশ করে না শরীরে। ফলে ওজন কমানোর প্রক্রিয়ায় খাদ্যতালিকায় অপরিহার্য শসা। এ ছাড়া শসায় রয়েছে ডায়েটারি ফাইবার, যা হজমের জন্য ভালো। পেট পরিষ্কার রাখতে সহায়ক।
শীতের সবজি হলেও কম-বেশি সারা বছরই দেখা মেলে গাজরের। আর এই গাজর দিয়েই চটজলদি কমিয়ে ফেলা যায় শরীরের মেদ। শশা, গাজর, টমেটো, পেঁয়াজ দিয়ে স্যালাড তো বানান, দ্রুত ওজন কমাতে সেই সালাদেই বাড়িয়ে দিন গাজরের পরিমান। প্রতিদিন গাজর খাদ্যতালিকায় রাখলে মেদ কমবেই।
করলার রসে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি উপাদান, যা শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। করলার রসের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বক ও চুলের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং চর্মরোগ সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে। করলার রস ওজন কমানোর ক্ষেত্রেও অনেক উপকারী। করলার রস ফ্যাট সেল বার্ন করে নতুন ফ্যাট সেল তৈরিতে বাধা দেয়।
হজম শক্তি বাড়াতেঃ কলা, পেঁপে ও দই
যে কোন খাবার খাওয়ার পর যদি হজম না হয় তাহলে খুব বিপদ। কোন কিছুতেই শান্তি পাওয়া যায় না। খাবার হজম করতে কলা, পেঁপে ও দই এর জুড়ি মেলা ভার। কলা একটি উৎকৃষ্ট মানে ফল, যা খাওয়ার ফলে দ্রুত হজম হয়ে যায় এবং খুব তাড়াতাড়ি এনার্জি ফিরে আসে শরীরে। তাই সুস্থ শরীরে সকাল-বিকাল ২টি করে কলা খান। ২টি না হলেও ১টি করে কলা খান।
পেঁপের গুণের শেষ নেই। কাঁচা-পাকা দুইভাবেই এটি খাওয়া যায়। শরীরের জন্য পেঁপে খুবই উপকারী একটি ফল। হজমের জন্য পেঁপে খুবই উপকারী। এই ফল খেলে শরীর সতেজ হয় ও জীবনী শক্তি ফিরে পাওয়া যায়। এটি পাকস্থলীর অতিরিক্তি অ্যাসিড দূর করে। এ কারণে যারা গ্যাস্ট্রিক ও বুক জ্বালা সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য পেঁপে খুব উপকারী।
যে কোন অনুষ্ঠানে ভালো ভাবে ভূড়ি ভোজ করার পর দ্রুত খাবার হজম করতে আমরা সবাই দই খেয়ে থাকি। আপনার প্রিয় ফল কেটে দইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে দিন। আপেল, কিউই, কলা, পেয়ারা, ডালিম, তরমুজের সঙ্গে দই মিশিয়ে খেতে পারেন। ওজন কমানোর জন্য এই খাবার আদর্শ। কারণ, এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ।
দৃষ্টিশক্তি কমেগেলেঃ ছোট মাছ ও সবুজ শাকসবজি
চোখের দৃষ্টিশক্তি কমেগেলে ছোট মাছ ও সবুজ শাকসবজির ভূমিকা অপরিসীম। মলাঢেলাজাতীয় মাছ খাবারে চোখের জ্যোতি বাড়ে। শিশুসহ বড়দের চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে তাই এসব খাবার নিয়মিত রাখতে পারেন। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, বিটা ক্যারোটিন ও লিউটিনও দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে উপকারি।
সবুজ শাকসবজি চোখের জ্যোতি বাড়াতে দারুন কাজ করে। বিশেষ করে কচুঁর শাক রাত কানা দূর করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। আমাদের প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় একটি করে সবুজ শাক রাখা উচিৎ। শাক খেতে অনেকে অপছন্দ করে থাকেন। একটা কথা মনে রাখবেন- সুস্থ থাকতে চাইলে ভালো না লাগলেও শাকসবজি খেতে ভূলবেন না।
হৃদরোগ ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেঃ রসুন, অলিভ অয়েল ও আদা
হৃদরোগ ও রক্তচাপ নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এমন রোগীর সংখ্যাও কিন্ত কম নয়। যাদের এই দুটি সমস্যা আছে তারা নিয়ম করে রসুন, অলিভ অয়েল ও আদা খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করুন। কাঁচা রসুন ও আদা খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। নিয়মিত অল্প পরিমানে হলেও রসুন ও আদা খান। কাঁচা না খেতে পারলে অলিভ অয়েল দিয়ে ভেজে খান হৃদরোগ ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
লেখকের মন্তব্যঃ
অসুখ-বিসুখ হলেই সব সময় ঔষধ খেয়ে সারাতে যাবেন না। তাহলে ঔষধের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বেন। তখন কিন্তু আর ঔষধ ছাড়া কোন রোগ রাসাতে পারবেন না এবং ঔষধের পার্শ্বপতিক্রিয়াই অন্য সমস্যা সৃষ্টি হবে। অনেক খাবার আছে যেগুলো নিয়মিত খেলে আপনার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে এবং আপনি সুস্থ থাকবেন। তাই উপরে বর্ণিত নিয়ম মেনে চলুন, ভালো থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url