বাচ্চার জ্বর হলে যে সব ভূলে জ্বর আরোও বাড়িয়ে দিতে পারে জানুন

জ্বর যে কোন সময় যে কাউরি হতে পারে। শিশুদের জ্বর হলে অভিভাবকরা অনেক ঘাবড়ে যায়। বিভ্রান্ত হয়ে এমন কিছু কাজ করে বাসেন যাতে শিশুর ভালো না হয়ে ক্ষতি বেশি হয়। আপনি কি জানেন ক্ষতিকর সেই কাজগুলো কি কি ?
বাচ্চার জ্বর হলে যে সব ভূলে জ্বর আরোও বাড়িয়ে দিতে পারে জানুন

হ্যাঁ বন্ধুরা আজ আপনাদের জানাবো শিশুদের জ্বর হলে কোন কাজগুলো করলে জ্বর আরও বেড়ে যেতে পারে সে সম্পর্কে। এখানে জানতে পারবেন জ্বর-সর্দি ও ঠান্ডা লাগলে কি করবেন সে সম্পর্কেও।
ভূমিকাঃ
আবহাওয়া পরিবর্তন জনিত কারণে শিশুর জ্বর-সর্দি- ঠান্ডা লাগাটা একটা স্বাভাবিক ব্যাপার। শিশুদের অসুখ-বিসুখ হবে তাই বলে বিচলিত হলে চলবে না। এ সময় মাধা ঠান্ডা রেখে শিশুর চিকিৎসা করাতে হবে। কোন কোন অভিভাবক আছেন যারা বিচলিত হয়ে সমস্যা সমাধান করতে গিয়ে ভূল পদক্ষেপ নিয়ে ফেলেন।

পেজ সূচিপত্রঃ

মোটা কাপড় পরিয়ে রাখলে
গোসল না করিয়ে রাখলে
তাপমাত্রা না মেপে নিজে থেকে ঔষধ খাওয়ালে
ঠান্ডা পানি খেতে না দিলে
জোর করে খাওয়াতে যাবেন না
লেখকের মন্তব্যঃ

মোটা কাপড় পরিয়ে রাখলে

জ্বর হলেই বাবা-মায়েরা বাচ্চাকে মোটা গরম কাপড় পরিয়ে দেন। পাছে গায়ে হওয়া না লাগে। বন্ধ করে দেওয়া হয় এসি এবং পাখাও, যা করা একদমই উচিত নয় বলে জানালেন ডাঃ ছায়া শাহ। চিকিৎসকের মতে, বাচ্চার জ্বর এলে, বিশেষ করে টেম্পারেচর হাই থাকলে পাখা বা এসি বন্ধ করার দরকার নেই। 

বরং প্রয়োজন মতো পাখা বা এসি চলিয়েই রাখুন। এতেই দেহের তাপমাত্রা কমবে। তবে বাচ্চার কাঁপুনি দিলে সঙ্গে সঙ্গে পাখা ও এসি বন্ধ করে দেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে । জ্বর হলেই শিশুকে চাদর কিংবা ভারী কাপড়ে মুড়িয়ে রাখা যাবে না। চিকিৎসকরা বলেন, একাধিক ভারী পোশাক পরলেই জ্বরে শিশু আরাম পাবে, কিংবা ঘাম হয়ে জ্বর সেরে যাবে এমনটা কিন্তু নয়। 

বরং জ্বরের সময় ভারী পোশাকে শিশুর কষ্ট আরো বাড়িয়ে দিতে পারে। এজন্য এই ধরনের পোশাক পরানো থেকে বিরত থাকুন। জ্বরের সময় বাচ্চাকে মোটা জামাকাপড় না পরিয়ে হালকা পোশাকে রাখা উচিত। কারণ জ্বরের ফাঁদে পড়ে এমনিতেই বাচ্চাদের শরীরে অস্বস্তি বাড়ে। তার উপর মোটা জামাকাপড় পরালে সেই অস্বস্তি আরও কয়েক গুণ বাড়তে পারে। 

তাই এমন ভুল এড়িয়ে চলাই শ্রেয়। এই প্রসঙ্গে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোকপাত করলেন ডাঃ শাহ। তিনি জানালেন, এক বছর বয়সী বাচ্চাদের গায়ে কম্বল দেওয়া উচিত নয়। কারণ কম্বলের চাপে অসুবিধায় পড়তে পারে শিশু। এমনকী শ্বাস কষ্ট বাড়ার আশঙ্কাও থাকে। তাই সাবধান!

গোসল না করিয়ে রাখলে

শিশুর জ্বর হলে অনেকেই এ ভুলটি করে থাকেন। ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছলেও শিশুকে গোসল করা বন্ধ করে দেন। অথচ চিকিৎসকরা বলছেন, যেকোনো রোগের ক্ষেত্রেই পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা জরুরি। গোসল করানো একেবারে বন্ধ করা যাবেনা। জ্বর হলে অনেকেই শিশুকে স্নান করাতে চান না। কিন্তু ডাঃ শাহ বলছেন অন্য কথা। তাঁর মতে, জ্বরের সময় শিশুকে অবশ্যই স্নান করানো উচিত। এতে দেহে তাপমাত্রার ভারসাম্য বজায় থাকবে। এমনকী জ্বর নামবে দ্রুত।

তাপমাত্রা না মেপে নিজে থেকে ঔষধ খাওয়ালে

সদ্যোজাত ও শিশুদের ক্ষেত্রে জ্বর ১০০ ছাড়ালে প্যারাসিটামল দেওয়া যেতেই পারে। তবে জ্বর একশোর গণ্ডী পেরলেই অনেকে মেফেমেনিক অ্যাসিড বা আইব্রুপ্রোফেনের মতো ঔষুধ খাওয়ান বাচ্চাকে, যা একেবারেই করা উচিত নয়। এই প্রসঙ্গে ডাঃ ছায়া শাহ জানালেন, এত হাই ডোজের ঔষুধ দুম করে বাচ্চাদের দেওয়া উচিত নয়। 

বরং জ্বরের সময় শুধুমাত্র প্যারাসিটামলেই ভরসা রাখা উচিত। তবে ঔষুধ দেওয়ার আধ ঘণ্টা পরেও জ্বর না নামলে বাচ্চাকে স্নান নয়তো গা স্পঞ্জ করিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দিলেন চিকিৎসক। সেই সঙ্গে কপালে জল পট্টিও দিতে হবে। হাত দিয়ে শরীর গরম অনুভূত হলেই তা জ্বর নয়। অনেক অভিভাবকই এ ভুলটি করে বসেন। 

জ্বরের ঔষুধ খাওয়ানোর আগে অবশ্যই থার্মোমিটার ব্যবহার করে শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করে ঔষুধ খাওয়াতে হবে। সামান্য জ্বরে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই শিশুকে প্যারাসিটামল ঔষুধ খাওয়ান। এতে ক্ষেত্রবিশেষে হিতে বিপরীত হতে পারে। বড়রা নিজেদের ক্ষেত্রে প্রায়ই এমন ঝুঁকি নিয়ে থাকেন। তবে শিশুদের জন্য এমন ভুল প্রাণ সংশয়ের কারণ হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

ঠান্ডা পানি খেতে না দিলে

জ্বর এলে অনেকে শিশুদের গরম পানীয় খাওয়ান। যেমনঃ গরম দুধ। এ বিষয়ে চিকিৎসকরা বলেন, গরম পানীয় খেলে সাময়িক আরাম মিললেও শরীরের তাপমাত্রায় খুব হেরফের হয় না। স্বাভাবিক ঠান্ডা পানি খেতে দিন, তবে ফ্রিজের ঠান্ডা পানি মোটেও খাওয়াতে যাবেন না। এতে বড় ধরনের বিপদ হতে পারে।

জোর করে খাওয়াতে যাবেন না

জ্বরের সময় এমনিতেই খুদেরা খেতে চায় না। এক্ষেত্রে জোর করে না খাওয়ানোর পরামর্শ দিলেন চিকিৎসক। বরং অল্প অল্প করে বারে বারে খাওয়ালে শিশুর পেট ভরবে। এদিকে খাওয়ার সময় কান্নাকাটিও করবে না। বাচ্চা অসুস্থ হলে শোনা কথায় ভরসা রেখে কাজ না করে শুনুন ডাক্তারের পরামর্শ।

লেখকের মন্তব্যঃ

শিশুদের শরীর এবংত্বক এমনিতেই নাজুক তারপর আবহাওয়া পরিবর্তন জনিত কারণে অনেক সময় ঠান্ডা লেগে জ্বর-সর্দি হয়ে থাকে এই সোনা মনিদের। এমন সময় প্রায় অভিভাবকগণ বিচলিত হয়ে পড়েন, আর কিছু কমন ভূলগুলো করে থাকেন যা শিশুর উপকারের পরিবর্তে ক্ষতিই হয়ে যায়। উপরে বর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণ করলে আশা করা যায় উপকার পাবেন। ভালো থাক সকল সোনামনি, ভালো থাকুন ্আপনারা, আল্লাহ হাফেজ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪