স্বামীকে খুশি করার ৮টি উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

বিবাহের মাধ্যমে সংসার শুরু করে দাম্পত্য জীবন, পারিবারিক জীবন, সামাজিক জীবন সুখের হবে এমনটি প্রত্যাশা সকলের। স্বামী স্ত্রীকে খুশি রাখবে, স্ত্রী স্বামীকে খুশি রাখবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু অনেক স্ত্রীই জানেনা কিভাবে স্বামীকে খুশি রাখতে হয়।

আজ আপনাদের জানাবো স্বামীকে খুশি করার কয়েকটি উপায় সম্পর্কে। স্বামীর সাথে কিভাবে চলবেন, কিভাবে কথা বলবেন, কিভাবে নিজেকে স্বামীর সামনে উপস্থাপন করবেন ইত্যাদি বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা থাকছে নিচের অংশে।

ভূমিকাঃ

স্বামী স্ত্রী এর মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক অনেক বেশি থাকা প্রয়োজন এই এই ভালোবাসা থাকার জন্য স্বামী স্ত্রীকে অনেক সময় খুশি করার জন্য অনেক কিছু করতে হবে। স্বামীর যেমন দায়িত্ব স্ত্রীকে খুশি করার তেমনি স্ত্রী এর দায়িত্ব স্বামীকে খুশি করা। একজন স্ত্রী একটা স্বামীকে অনেক ভাবে খুশি করতে হবে। একজন স্ত্রী তার স্বামীকে খুশি করতে পারবে এমন কিছু পয়েন্ট নিম্নে উল্লেখ করা হলো।

পেজ সূচিপত্রঃ

কখনো স্বামীর আগে খাবার খাবেন না
স্বামী ঘরে ফিরার আগে ঘুমাবেন না
সকালে স্বামীর পছন্দসই জামা পরবেন
স্বামীর কাছে অযথা পোশাক- গয়না চাইবেন না
স্বামীর রাগ হলে নিজেকে সংযত রাখবেন
স্বামীর কোন কথা অপছন্দ হলে তর্ক করবেন না
স্বামীর আগে উচ্চস্বরে কথা বলবেন না
লেখকের মন্তব্যঃ

কখনো স্বামীর আগে খাবার খাবেন না

স্বামীকে খুশি করার অনেকগুলি সহজ মাধ্যম রয়েছে, তার মধ্যে একটি হলো স্বামীর আগে খাবার না খাওয়া। স্বামী বাইরে থাকলে তার জন্য কোন স্ত্রী যদি অপেক্ষা করেন তবে দেখবেন স্বামী সেই স্ত্রীর উপর খুশি হয়ে যাবে। তবে আসতে দেরি হলে এবং স্বামীর যদি অনুমতি থাকে তাহলে আপনি আগেও খেয়েনিতে পারেন। তবে অপেক্ষা করলে স্বামী বেশি খুশি হবে।

আজকালকার মেয়েরা তো স্বামীকে খুশি করতেই চায়না। তারা শুধু নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। স্বামীর উপর খবরদারি করেন। স্বামীকে বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন করেন। এক গবেষনায় উঠে এসেছে পুরুষ মানুষের অকাল মৃত্যুর জন্য বেশি দায়ী স্ত্রীর অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ এবং কর্মক্ষেত্রের টেনশন এর পর অসুখ-বিসুখ।

স্বামী ঘরে ফিরার আগে ঘুমাবেন না

কখনো স্বামী ঘরে ফিরার আগে ঘুমিয়ে যাবেন না। স্বামী যখন রাতে বাসায় এসে দেখবে যে আপনি না খেয়ে তার জন্য অপেক্ষা করছেন, এখনো ঘুমাননি তখন আপনার প্রতি তার ভালোবাসা দ্বিগুন বৃদ্ধি পেয়ে যাবে। স্বামী বাসায় ফিরার পর তার পোশাক-পরিচ্ছদ খুলতে সাহায্য করবেন, ফ্রেশ হওয়ার জন্য যা যা লাগবে এগিয়ে দিবেন। এক সঙ্গে খাবার খেয়ে এক সঙ্গে ঘুমাতে যাবেন।

অনেক স্ত্রী আছেন এমন যে স্বামীর আসার আগে খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন, স্বামীর এসে দরজায় অনেক ডাকাডাকির পর দরজা খুলেন। স্বামীকে ভালো করে রিসিভ করেন না, স্বামীর সাথে ভালোভাবে কথা বলেন না। এমন কি খাবারটাও খেতে দিতে আসেনা, বলে টেবিলে খাবার আছে খেয়ে নাউ, খারাব খাওয়া হলে ফ্রিজে খাবারগুলো ঢুকিয়ে রেখ।

সকালে স্বামীর পছন্দসই জামা পরবেন

আজকাল তো স্ত্রীরা স্বামীকে খুশি করার জন্য পোশাক পরে না, সাজগোজ করে না। অন্যদের দেখানোর জন্য তারা জামা-কাপড় পরিধান করেন। না এমনটা ঠিক নয়। সকালে স্বামী ঘুম থেকে উঠার আগেই তার পছন্দের জামা-কাপড় পরিধান করবেন, স্বামী যে প্রথম দেখাতেই খুশি হয়ে যান। শুধুু সকালে নয়, সব সময় স্বামী বাসায় ফিরার আগে স্বামীর পছন্দমত কাপড় পরে সেজে তার জন্য অপেক্ষা করবেন। 

স্বামী বাইরে থেকে এসে দেখবে আপনি চাকরানীর মত কাপড় পরে আছেন, এতে স্বামীর মন খারাপ হয়ে যেতে পারে। আবার দেখা যায় বাইরে কোথাও বেড়াতে গেলে, বা কোন অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য স্ত্রীরা বেশি সাজ-সজ্জা করেন মানুষ দেখানোর জন্য এতেও কিন্তু স্বামীর মন খারাপ হতে পারে। হ্যাঁ আপনি একমাত্র নিজের স্বামীকে খুশি করবেন এটাই আপনার মহান দায়িত্ব।

স্বামীর কাছে অযথা পোশাক- গয়না চাইবেন না

হাতে টাকা থাক বা না থাক, কোন কিছু পছন্দ হলেই তা অপ্রয়োজনীয় হলেও কিনতে হবে। এর জন্য ঋণ করতেও কোন দ্বিধা করে না। যদি ঋণ নাও করতে হয় তবু নিজ টাকা অপ্রয়োজনে খরচ করা বোকামি ও গুনাহের কাজ। যথা সম্ভব ঋণ করা থেকে বেঁচে থাকা উচিত । এতে যদি কষ্ট হয় হোক। হ্যাঁ, নিজের পছন্দের কোন জিনিস যদি স্বামীর নিকটও পছন্দনীয় হয় তাহলে ভবিষ্যতে যখন ঐ জিনিষের প্রয়োজন পড়বে তখন কিনবে। (সূরা আনআম আয়াত: ১৪১, সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৪০৮)

স্বামীর রাগ হলে নিজেকে সংযত রাখবেন

স্বামীকে রেগে যেতে দেখলে, আপনিও নিশ্চয়ই তাঁর সঙ্গে বাকযুদ্ধে জড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন মনে মনে? থামুন! এমন না-করে সেই পরিস্থিতি থেকেই নিজেকে সরিয়ে নিন। নিজেকে শান্ত রাখুন এবং তাঁর কটূক্তি উপেক্ষা করে যান। আপনিও যদি তাঁর সঙ্গে বিবাদ বাঁধিয়ে বসেন, তা হলে তিনি আক্রমণাত্মক এবং আরও বেশি হিংস্র হয়ে পড়বেন। তাই নিজের সমস্ত আবেগকে পাশে সরিয়ে রেখে ঠান্ডা মাথা এবং শান্ত গলায় যুক্তিপূর্ণ কথা বলে তর্কের অবসান ঘটান।

স্বামীর কোন কথা অপছন্দ হলে তর্ক করবেন না

স্বামীর কোন কথা বা আচরণ আপনার নিকট অপছন্দ হলেও তার সাথে তর্ক করবেন না। কারণ স্বামী স্বামীই। প্রয়োজন হলে পরে ঠান্ডা মাথায় তাকে বুঝিয়ে বলবেন ব্যাপারটি। বলবেন এই ধরনের কথা শুনে আমি অভ্যাস্থ নই। প্লিজ আমাকে আর এই ধরনের কথা বলোনা আমি কষ্ট পায়। 

আর কষ্ট পেয়েই বা লাভ কী ? তাকে তো আপনি স্বামীর জায়গা থেকে বাদ দিতে পারছেন না। অতএব তিনি যেন বোঝেন আপনি কষ্ট পেয়েছেন; সেই ভাষায় তাকে বোঝান। আর আপনি কষ্টটা ভুলে যান। কারণ ছোট ছোট কষ্টকে যদি মনে রাখেন, তাহলে বড় কাজ করবেন কীভাবে ?

স্বামীর আগে উচ্চস্বরে কথা বলবেন না

এখনকার বেশির ভাগ স্ত্রীরা স্বামীর সঙ্গে উচ্চস্বরে কথা বলে শুরু থেকেই। অনেক অনেক মহিলা আছেন যারা তাদের স্বামীর সাথে চাকরের মতো আচরণ করেন। অনেক চেচামেচি করে, তুই-তুকারি ভাষা প্রয়োগ করে, গালমন্দ করে স্বামীকে। এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে স্ত্রীর আচরণে, কথা বার্তায় স্বামী আত্নহত্যা করেছেন বা বাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন। বর্তমানে নারীর থেকে পুরুষ নির্যাতন বেশি হয়।

লেখকের মন্তব্যঃ

স্বামীকে খুশি করা একটা স্ত্রীর জন্য খুব সহজ। ইসলামের বিধি-বিধান পুরোপুরি মেনে চললে সেই সংসারে কোন দিন অশান্তি আসতে পারেনা। হাদিসে এসেছে একজন স্ত্রী লোক ৪টি কাজ করলে সে জান্নাতে চলে যাবে। চারটি কাজের মধ্যে একটি কাজ হলো স্বামীকে খুশি করা বা স্বামীর কথা মতো চলা, স্বামীর পছন্দ অপছন্দকে প্রাধান্য দেওয়া। স্বামীকে খুশি রাখুন, ভালো থাকুন, সুস্থ্য থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪