ছেলেদের জন্য যে ১০টি কাজ হারাম জেনে নিন বিস্তারিত এখানে

নারীদের জন্য বৈধ বা হালাল হলেও ছেলেদের জন্য ১০টি কাজ হারাম করা হয়েছে। কোন কোন মেয়েদের জন্য হালাল হলেও ছেলেদের জন্য তা হারাম তাকি আপনি জানেন ?
ছেলেদের জন্য যে ১০টি কাজ হারাম জেনে নিন বিস্তারিত এখানে

হ্যাঁ আজ আপনাদের জানাবো ছেলেদের যে ১০টি কাজ করা হারাম সে সম্পর্কে। এখানে জানতে পারবেন যে ইচ্ছে করলেই আপনি মেয়েদের মত সাজসজ্জা করতে পারবেন কিনা এবং কাপড় পড়ার বিধান সমূহ সম্পর্কে। তো আসুন আর দেরি না করে শুরু করা যাক-

ভূমিকাঃ

প্রথমে আল্লহ আদম (আঃ) কে সৃষ্টি করলেন এবং পরে তার পাজরের হাড় থেকে বিবি হাওয়াকে সৃষ্টি করলেন। নারী-পুরুষ আলাদা ভাবে সৃষ্টি করে তাদের চলার জন্য গাইডলাইন দিয়ে দিয়েছেন। যেগুলো মেনা চলা আমাদের কর্তব্য। ইচ্ছে করলেই পুরুষরা মেয়েদের মত পোষাক, অলংকার, আরো অনেক কিছু পড়তে পারবেনা। তেমনি মেয়েরাও ইচ্ছে করলে পুরুষের বেশ ধরে বেড়াতে পারবেনা।

পেজ সূচিপত্রঃ

হাত-পায়ে মেহেদী লাগানো
নিরেট এক কালারের লাল ও হলুদ রঙের কাপড় পরিধান করা
ফ্যাশনের জন্য নাক-কান ফোঁড়ানো
প্রাপ্ত বয়স্কোদের হাফপ্যান্ট পরিধান করা
চুল-দাড়িতে কালো রঙ লাগানো
স্বর্ণ ব্যবহার করা
টাকনুর নিচে কাপড় পরিধান করা
সিল্কের কাপড় পরিধান করা
নারীদের মত পোশাক পরিধান করা ও তাদের অনকরণে সাজসজ্জা গ্রহণ করা
লেখকের মন্তব্যঃ

হাত-পায়ে মেহেদী লাগানো

পুরুষের জন্য হাতে-পায়ে মেহেদী ব্যবহার করা নিষিদ্ধ (নাসাঈ, হা/৫০৮৯, সনদ হাসান)। তাই বিবাহ উপলক্ষে হোক কিংবা অন্য কোন উপলক্ষে উভয়াবস্থাতেই পুরুষের জন্য হাতে-পায়ে মেহেদী লাগানো হারাম, বরং এটা কাবীরা গুনাহ। কেননা এতে মহিলাদের সাদৃশ্য আছে (ফাতাওয়া নূরুন ‘আলাদ দারব, ১১তম খণ্ড, পৃ. ৪১৫-৪১৬)। 

হাত-পায়ের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার জন্য মেহেদী ব্যবহার করা শুধু নারীদের বৈশিষ্ট্য, পুরুষের জন্য জায়েয নয়। কেননা রাসূলুল্লাহ (সাঃ) মহিলাদের সাদৃশ্য অবলম্বনকারী পুরুষদের অভিসম্পাত করেছেন (ছহীহ বুখারী, হা/৫৮৮৫)। শায়খ ইবনু বায (রাঃ) বলেন, ‘মুমিন পুরুষের জন্য কোন ক্ষেত্রেই মহিলাদের অনুকরণ করা বৈধ নয়। 

তা সে মেহেদীর ক্ষেত্রে হোক কিংবা অন্য কোন সাজসজ্জার ক্ষেত্রে’ (ইবনু বায, মাজমূঊ ফাতাওয়া, ২৯তম খণ্ড, পৃ. ৪৭)। তবে ‘নারী-পুরুষ উভয়ে পাকা চুলে এবং পুরুষরা দাড়িতে মেহেদী বা অন্য রং ব্যবহার করতে পারবে। কিন্তু কোনভাবেই কালো রং ব্যবহার করতে পারবে না (সহীহ মুসলিম, হা/২১০২; আবূ দাঊদ, হা/৪২০৪; নাসাঈ, হা/৫০৯১)।

নিরেট এক কালারের লাল ও হলুদ রঙের কাপড় পরিধান করা

শরী‘আতসম্মত বিষয় হল- অপব্যয়, অহংকার ও হারাম ব্যতীত ইচ্ছানুযায়ী খাও এবং পরিধান কর (ছহীহ বুখারী, তরমজাতুল বাব ‘লিবাস’ অধ্যায়-৭৭, অনুচ্ছেদ-১; সহীহ মুসলিম, হা/১০১৫; মিশকাত, হা/৪২৮০; ২৭৬০)। তবে হলুদ রংয়ের ব্যাপারে স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। হাদীছে এসেছে, আব্দুল্লাহ ইবনু আমর ইবনুল ‘আছ (রাঃ)) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,

.رَأَى رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَىَّ ثَوْبَيْنِ مُعَصْفَرَيْنِ فَقَالَ إِنَّ هَذِهِ مِنْ ثِيَابِ الْكُفَّارِ فَلَا تَلْبِسْهَا. وَفِيْ رِوَايَةٍ قُلْتُ أَغْسِلُهُمَا؟ قَالَ بَلْ اَحْرِقْهَا

‘রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আমার পরনে হলুদ রঙের দু’টি কাপড় দেখে বললেন, নিশ্চয় এগুলো কাফেরদের পোশাক, অতএব তা পরিধান করো না’। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, আমি বললাম, কাপড় দু’টি কি ধুয়ে ফেলব? রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেন, বরং জ্বালিয়ে ফেল (সহীহ মুসলিম, হা/২০২৭; মিশকাত, হা/৪৩২৭)। অন্যত্র বর্ণিত হয়েছে,

.عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ أَنَّ نَبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَا أَرْكَبُ الْأُرْجُوَانَ وَلَا أَلْبَسُ الْمُعَصْفَرَ وَلَا أَلْبَسُ الْقَمِيْصَ الْمُكَفَّفَ بِالْحَرِيْرِ
ইমরান ইবনু হুছাইন (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী করীম (সাঃ) বলেছেন, আমি অত্যধিক লাল বর্ণের গদির উপর আরোহণ করি না। আমি হলুদ রংয়ের কাপড় পরিধান করি না এবং রেশমযুক্ত জামাও পরিধান করি না (আবূ দাঊদ, হা/৪০৪৮; মিশকাত, হা/৪৩৫৪, সনদ ছহীহ)। 

আবূ দাঊদের অন্য বর্ণনায় আছে, আলী ভ বলেছেন, আমাকে উরজুরয়ানী তথা অত্যধিক লাল বর্ণের গদি ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন (আবূ দাঊদ, হা/৪০৫০; মিশকাত, হা/৪৩৫৬, সনদ সহীহ)। অন্য বর্ণনায় এসেছে, হেলাল ইবনু ‘আমের (রাঃ) তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করে বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে লাল বর্ণের চাঁদর পরিহিত অবস্থায় মিনায় একটি খচ্চরের উপর বসে খুৎবা প্রদান করতে দেখেছি (আবূ দাঊদ, হা/৪০৭৩; মিশকাত, হা/৪৩৬৩, সনদ সহীহ)।

ফ্যাশনের জন্য নাক-কান ফোঁড়ানো

কানের দুলের সাথে নামাজ ভঙ্গের কোনো সম্পর্ক নাই। তবে‘ নাকে ফুল পরা, কানের দুল পরা ছেলেদের জন্য হারাম। হাতে চুরি, ব্রেসলেট, কানে দুল, গলায় মালা ইত্যাদি অলংকারাদি পরিধান করা মহিলাদের বৈশিষ্ট্য। তাই এ সব অলংকার পুরুষদের ব্যবহার করা হারাম। আর এগুলো যদি স্বর্ণ বা রৌপ্যের তৈরি হয় তাহলে তা আরও বেশি জটিল। 

অর্থাৎ এ কারণে দ্বিগুণ গুনাহ হবে। কারণ তা একদিকে নারীদের সাথে সাদৃশ্য অবলম্বন অন্য দিকে পুরুষের জন্য স্বর্ণ-রৌপ্য ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত। শুধু তাই নয় বরং পুরুষদের অলংকার পরিধান করার রীতি পাশ্চাত্য ও অমুসলিমদের সাদৃশ্য অবলম্বনের ক্ষেত্রে অন্ধ অনুকরণের আরেকটি উদাহরণ। ইসলামের দৃষ্টিতে এগুলো সবই কঠিন হারাম।

এ হাদিসের ব্যাখ্যা হল, যে সকল পুরুষ কৃত্রিমভাবে নারীর বেশ-ভুষা অবলম্বন করে হিজড়া সাজে অর্থাৎ যারা পোশাক-পরিচ্ছদ, কণ্ঠস্বর, কথা বলার ধরণ, চলাফেরা, রূপসজ্জা ইত্যাদি দিক দিয়ে নারীদের সাথে সাদৃশ্য অবলম্বন করে তাদের প্রতি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অভিসম্পাত করেছেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদেরকে হিজড়া হিসেবে সাব্যস্ত করেছেন।

কিন্তু সৃষ্টিগতভাবে হিজড়াদের কোন দোষ নেই। কারণ এ ক্ষেত্রে তাদের নিজস্ব কোন হাত নেই। বরং মহান আল্লাহ তাদেরকে সেভাবেই সৃষ্টি করেছেন।

প্রাপ্ত বয়স্কোদের হাফপ্যান্ট পরিধান করা

পোশাক এমন হতে হবে যা পুরোপুরি সতর আবৃত করে। পুরুষের জন্য নাভি থেকে হাটুর নিচ পর্যন্ত আর নারীর পুরো শরীর সতর। পোশাকের প্রধান উদ্দেশ্যই হল সতর ঢাকা। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে বনী আদম! আমি তোমাদের জন্য অবতীর্ণ করেছি পোশাক, যা তোমাদের লজ্জাস্থান আবৃত করে এবং সৌন্দর্য দান করে। (সুরা আরাফ ২৬)

সুতরাং যে পোশাক এই উদ্দেশ্য পূরণে ব্যর্থ তা যেন শরিয়তের দৃষ্টিতে পোশাকই নয়। তা নাজায়েয পোশাক। এটা পরিত্যাগ করে পূর্ণরূপে সতর আবৃত করে এমন পোশাক গ্রহণ করা জরুরি। যেমন পুরুষের জন্য হাফ প্যান্ট পরা। মহিলাদের পেট-পিঠ উন্মুক্ত থাকে এমন পোশাক পরিধান করা। তবে ছোটদের ব্যাপারটা ভিন্ন, কিন্তু একজন প্রাপ্ত বয়স্কো পুরুষের জন্য কখনোই হাফ প্যান্ট পরে ঘুরেবেড়ানো উচিৎ নয়।

চুল-দাড়িতে কালো রঙ লাগানো

রাসুল (সাঃ) বলেন, 'শেষ যুগে এমন এক সম্প্রদায়ের আবির্ভাব ঘটবে যারা (চুল-দাড়িতে) কবুতরের বুকের রঙের মতো কালো খেজাব বা কলপ ব্যবহার করবে। তারা জানানতের সুগন্ধও পাবে না। (আবু দাউদ : ৪২১২)। যারা চুল-দাড়িতে কালো রঙ ব্যবহার করবে তারা জান্নাত থেকে তো বঞ্চিত হবে আবার তাদেরকে ভয়াবহ শাস্তির হুশিয়ারিও দিয়েছেন মহানবী (সাঃ)।

বার্ধক্যজনিত কারণে কারো চুল-দাড়ি পেকে গেলে তাতে খেজাব ব্যবহার করা বৈধ। তবে তা কালো খেজাব হতে পারবে না। নবীজি (সাঃ) মূলত মেহেদী বা এ ধরণের রঙের কোনো জিনিস দ্বারা চুল-দাড়ি রাঙাতে উৎসাহ দিয়েছেন। হজরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, মক্কা বিজয়ের দিন নবীজি (সাঃ) হজরত আবুবকরের পিতা আবু কুহাফার (রাঃ) চুল-দাড়ি পাকা দেখে তাকে বললেন, ‘এটাকে কোনো কিছু দ্বারা পরিবর্তন করো। তবে কালো থেকে বিরত থাকো।

স্বর্ণ ব্যবহার করা

ইসলামে শালীনতা, সৌন্দর্যের ভারসাম্য রক্ষা আবশ্যক। নারী ও পুরুষের জন্য আলাদা আলাদা নিয়ম-কানুন রয়েছে। নারীদের জন্য স্বর্ণ ব্যবহার জায়েজ করা হয়েছে। আর পুরুষদের জন্য স্বর্ণের ব্যবহার হারাম করা হয়েছে। জানার বিষয় হচ্ছে, পুরুষের জন্য সামান্য পরিমাণ স্বর্ণ ব্যবহার করা কি জায়েজ? ইসলামি শরিয়তে পুরুষদের জন্য যে কোনো পরিমাণ স্বর্ণের অলংকার ব্যবহার করা হারাম। হাদিসে স্বর্ণ ব্যবহারের ব্যাপারে স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা এসেছে।

বিখ্যাত সাহাবি হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে একদিন আল্লাহর রসুল (সাঃ) এক সাহাবির হাতে স্বর্ণের আংটি দেখতে পেয়ে তা তার হাত থেকে খুলে ছুড়ে ফেলে দিলেন এবং বললেন, يَعْمِدُ أَحَدُكُمْ إِلَى جَمْرَةٍ مِنْ نَارٍ فَيَجْعَلُهَا فِي يَدِهِ আপনাদের অনেকে জাহান্নামের জ্বলন্ত অঙ্গার হাতে পরিধান করেন! 

আল্লাহর রসুল (সঃ) ওই জায়গা থেকে চলে যাওয়ার পর ওই সাহাবিকে বলা হলো, আংটিটি তুলে নিয়ে অন্য কাজে লাগান। সাহাবি বললেন, না, আল্লাহর কসম! যে বস্তু রসুল (সঃ) ফেলে দিয়েছেন তা আমি কখনোই আর নেবো না। (মুসলিম: ২০৯০)

টাকনুর নিচে কাপড় পরিধান করা

মানুষ যেসব কাজকে সামান্য মনে করে অথচ আল্লাহর নিকটে সেগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তন্মধ্যে টাখনুর নিচে কাপড় পরিধান করা একটি। অনেকের কাপড় এত লম্বা যে, তা মাটি স্পর্শ করে। কেউবা আবার পরিধেয় বস্ত্র পিছন থেকে মাটিতে টেনে বেড়ায়। টাখনুর নিচে এভাবে কাপড় ঝুলিয়ে পরা হারাম। রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন,

ثَلَاثَةٌ لَا يُكَلِّمُهُمُ اللهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ، وَلَا يَنْظُرُ إِلَيْهِمْ وَلَا يُزَكِّيهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ» قَالَ: فَقَرَأَهَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثَلَاثَ مِرَارًا، قَالَ أَبُو ذَرٍّ: خَابُوا وَخَسِرُوا، مَنْ هُمْ يَا رَسُولَ اللهِ؟ قَالَ: «الْمُسْبِلُ، وَالْمَنَّانُ، وَالْمُنَفِّقُ سِلْعَتَهُ بِالْحَلِفِ الْكَاذِبِ

“তিন প্রকার লোকের সাথে আল্লাহ তা‘আলা ক্বিয়ামতের দিন কথা বলবেন না, তাদের দিকে তাকাবেন না এবং তাদেরকে পবিত্র করবেন না; বরং তাদের জন্য রয়েছে মর্মন্তুদ শাস্তি। তারা হলো-টাখনুর নিচে কাপড় (অন্য বর্ণনায় লুঙ্গী) পরিধানকারী, খোঁটাদানকারী (অন্য বর্ণনায় এসেছে, যে খোঁটা না দিয়ে কোনো কিছু দান করে না) ও মিথ্যা কসমের মাধ্যমে পণ্য বিক্রয়কারী”

সিল্কের কাপড় পরিধান করা

ইসলামী শরিয়তে অমিশ্র রেশম কাপড় পরিধান করা পুরুষের জন্য বৈধ নয়। তবে কোনো কাপড় যদি মিশ্র সুতায় তৈরি হয় এবং তাতে অন্য সুতার পরিমাণ বেশি হয় এবং রেশম সুতার পরিমাণ কম হয়, তবে পুরুষ তা পরিধান করতে পারবে। অন্যদিকে নারীরা সব ধরনের রেশমি পোশাক পরিধান করতে পারবে।

হুজায়ফা (রা.) বলেন, ‘নবী (সা.) আমাদের স্বর্ণ ও রৌপ্যের পাত্রে পানাহার করতে নিষেধ করেছেন এবং তিনি মোটা ও চিকন রেশমি বস্ত্র পরিধান করতে ও তাতে বসতে নিষেধ করেছেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৮৩৭) তবে বিশেষ প্রয়োজনে শরিয়ত পুরুষকে রেশমের পোশাক পরিধানের অনুমতি দিয়েছে। যেমন চর্মরোগ ও উকুন প্রতিরোধ করা। (আল-ফিকহু আলা মাজাহিবিল আরবাআ, পৃষ্ঠা ৬৬৬)

অন্য হাদিসে তিনি বলেন, ‘আমার উম্মতের মধ্যে পুরুষদের জন্য রেশমি কাপড় এবং স্বর্ণ ব্যবহার করা হারাম; কিন্তু নারীদের জন্য তা হালাল।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস ঃ ১৭২০) এ ছাড়া সম্মুখ সমরে শত্রু বাহিনীর দৃষ্টিভ্রম সৃষ্টির উদ্দেশ্যে উজ্জ্বলবর্ণের এবং আঘাত প্রতিরোধের জন্য মোটা রেশমি পোশাক পরিধানের অবকাশ আছে বলে মত দিয়েছেন কোনো কোনো ইসলামী আইনজ্ঞ।

নারীদের মত পোশাক পরিধান করা ও তাদের মত সাজসজ্জা গ্রহণ করা

আল্লাহ তাআলা মানুষকে যে লিঙ্গ ও স্বভাব দিয়ে সৃষ্টি করেছেন, তা বজায় রাখাই আল্লাহর বিধান। পুরুষ হয়ে নারীর বেশ ধারণ করা, নারীর মতো কথা বলা, ওঠাবসা, চলাফেরায় মেয়েদের ভঙ্গি নকল করা গুরুতর গুনাহ। একইভাবে নারী হয়ে কথাবার্তা, ওঠাবসা, চলাফেরায় পুরুষের নকল করাও গুরুতর গুনাহের কাজ।

আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত রয়েছে, আল্লাহর রাসুল (সাঃ) পুরুষদের মধ্যে নারীর বেশ ধারণকারীদের ও নারীদের মধ্যে পুরুষের বেশ ধারণকারিণীদের অভিশাপ দিয়েছেন। (সহিহ বুখারি) পুরুষ হয়ে নারীর বা নারী হয়ে পুরুষের পোশাক পরিধান করা, নারীদের মতো সাজগোজ করা, মেকআপ সেওয়া ও অলংকার পরিধান করাও নাজায়েজ।

লেখকের মন্তব্যঃ

আল্লাহ তাআলা মানব জাতিকে পাঠিয়েছেন দুনিয়াতে তার বিধান মেনে চলার জন্য। জিন এবং ইনসার সৃষ্টি করেছেন। তার মধ্যে আবার ভিন্ন করেছেন নারী এবং পুরুষকে আদালা ভাবে কিছু বিধান দিয়ে। সকলের জন্য গাইড লাইন দিয়ে দিয়েছেন, চলাফেরা, পোষাক পরিচ্ছেদ কেমন হবে সব কিছু বলে দিয়েছেন। আশাকরি উপরের আলোচনা থেকে সব জেনে গেছেন। আল্লাহ হাফেজ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪