আল্লাহ্ মানুষের যেসব গুণগুলো পছন্দ করেন বিস্তারিত জেনে নিন এখানে
প্রত্যেক মুমিন মুসলমানের একমাত্র চাওয়া-পাওয়া হচ্ছে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যমে তার ভালোবাসা পাওয়া। আপনি কি জানেন মানুষের কোন কোন গুণগুলো আল্লাহর কাছে পছন্দনীয় ?
হ্যাঁ বন্ধুরা আজ আপনাদের সামনে- মানুষের যেসব গুণ আল্লাহ পছন্দ করেন তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা থাকছে নিচে। এখানে জানতে পারবেন আল্লাহর প্রিয় বান্দা হতে হলে কোন কোন আমলগুলো বেশি বেশি করা লাগবে।
ভূমিকাঃ আল্লাহ্ মানুষের যেসব গুণ পছন্দ করে থাকন।
মুমিন বান্দার এমন কিছু গুণাবলি আছে, যেগুলো আল্লাহর কাছে অতি প্রিয়। এসমস্ত গুণে গুণান্নিত ব্যক্তিদের আল্লাহ সুবহানাহু তাআলা ভালোবেসে থাকেন। আর সেই ভালোবাসার প্রিয় পাত্রগুলোর কথা কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে উল্লেখ রয়েছে।
সূচীপত্রঃ
পবিত্রতা অর্জনকারী
তওবাকারী
রাসুল (সাঃ) এর অনুসরণকারী
অনুগ্রহকারীকে আল্লাহ পছন্দ করেন
ধৈর্যশীল ব্যক্তিকে আল্লাহ পছন্দ করেন
আল্লাহভীরু লোককে আল্লাহ পছন্দ করেন
সর্বক্ষেত্রে আল্লাহর উপর ভরসাকারী
ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠাকারী
দানশীল ব্যক্তিকে আল্লাহ পছন্দ করেন
লেখকের মন্তব্যঃ
পবিত্রতা অর্জনকারী
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন- আল্লাহ তাআলা পবিত্রঃ তিনি পবিত্রতা অর্জনকারীকে ভালোবাসেন। এ পবিত্রতা শুধু শারীরিক পবিত্রতাই নয়, বরং এ পবিত্রতা হচ্ছে জীবনের প্রতিটি দিক ও বিভাগে শারীরিক, মানসিক, আদর্শিক, লেন-দেন, আয়-ব্যয়, কথা-বার্তা ও আচার-আচরণসহ সব ধরনের পবিত্রতা অর্জনকারীকে মহান আল্লাহ ভালোবাসেন। আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমেও এ কথার ঘোষণা এভাবে দিয়েছেন- وَ یُحِبُّ الۡمُتَطَهِّرِیۡنَ
‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ভালবাসেন অধিক পবিত্রতা অর্জনকারীদেরকে।’ (সুরা বাকারাঃ আয়াত ২২২) সুতরাং পবিত্রতা অর্জনের বিকল্প নাই। আল্লাহ সুবহানাহু তাআলার ভালোবাসা পেতে হলে সর্ব প্রথম এবং প্রধান যে কাজটি করতে হবে সেটি হচ্ছে পবিত্রতা অর্জন করা
তওবাকারী
যারা আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বেশি তাওবাহ করে, আল্লাহ তাআলা তাদেরকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসেন। আল্লাহ তাআলা বলেন- اِنَّ اللّٰهَ یُحِبُّ التَّوَّابِیۡنَ
‘নিশ্চয় আল্লাহ তাওবাকারীদেরকে ভালবাসেন।’ (সুরা বাকারাঃ আয়াত ২২২)
এ তাওবার মর্মার্থ কি? মানুষ প্রতিনিয়ত-অহরহ গোনাহ করে থাকে। আর এ গোনাহ থেকে ফিরে আসা কিংবা বিরত থাকা। অতীত জীবনে যেসব গোনাহ হয়েছে, আল্লাহর কাছে সেসব গোনাহকে অপরাধ হিসেবে স্বীকার করে এ অপরাধ বা গোনাহের জন্য অনুতপ্ত হওয়া, এ অন্যায়-অপরাধ না করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞার নামই হলো তাওবাহ।
যারাই এ প্রতিজ্ঞা করে গোনাহ থেকে ফিরে আসে বা গোনাহ থেকে বিরত থাকে। আল্লাহ তাআলা এসব তাওবাকারীকেই সবচেয়ে বেশি ভালোবাসেন। আর এ তাওবাহ কোনগুলো- أَستَغْفِرُ اللهَ
উচ্চারণঃ ‘আস্তাগফিরুল্লাহ।’
অর্থঃ আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
أَسْتَغْفِرُ اللهَ وَأَتُوْبُ إِلَيْهِ উচ্চারণঃ ‘আস্তাগফিরুল্লাহা ওয়া আতুবু ইলাইহি।‘
অর্থঃ আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তাঁর দিকেই ফিরে আসছি।
رَبِّ اغْفِرْ لِيْ وَتُبْ عَلَيَّ إِنَّكَ (أنْتَ) التَّوَّابُ الرَّحِيْمُ
উচ্চারণঃ 'রাব্বিগ্ ফিরলি ওয়া তুব আলাইয়্যা ইন্নাকা (আংতাত) তাওয়্যাবুর রাহিম।'
অর্থঃ 'হে আমার প্রভু! আপনি আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমার তাওবাহ কবুল করুন। নিশ্চয় আপনি মহান তাওবা কবুলকারী করুণাময়।'
শিরক এবং কবিরা গুনাহ থেকে মাফ পেতে নিচের এই ইস্তেগফারটি বেশি বেশি পড়তে পারেন-
উচ্চারণঃ 'আস্তাগফিরুল্লাহাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়ুল কাইয়ুমু, ওয়া আতুবু ইলাইহি। ' অর্থঃ আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই, তিনি ব্যতীত কোনো মাবুদ নাই, তিনি চিরঞ্জীব ও চিরন্তন, এবং আমি তাঁর কাছে ফিরে আসি। (তিরমিজি, আবু দাউদ)।
রাসুল্লাহর অনুসরণকারী
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুসরণ ও অনুকরণকারীকে মহান আল্লাহ ভালোবাসেন। আল্লাহ তাআলা বলেন- قُلۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ تُحِبُّوۡنَ اللّٰهَ فَاتَّبِعُوۡنِیۡ یُحۡبِبۡکُمُ اللّٰهُ وَ یَغۡفِرۡ لَکُمۡ ذُنُوۡبَکُمۡ ؕ وَ اللّٰهُ غَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ
‘(হে রাসুল! আপনি) বলে দিন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসতে চাও, তবে আমার অনুসরণ কর, তবেই আল্লাহ তোমাদের ভালবাসবেন এবং তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেবেন। আর আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সুরা ইমরানঃ আয়াত ৩১)
অর্থাৎ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরতে পারলে, জীবনের প্রতিটি দিক-বিভাগে তাঁর আনুগত্য ও অনুসরণ করতে পারলেই মহান আল্লাহ তাআলা বান্দাকে অনেক বেশি ভালোবাসবেন।
অনুগ্রহকারীকে আল্লাহ পছন্দ করেন
কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা অনুগ্রহকারীদের ভালোবাসেন। শাদ্দাদ ইবনে আউ (রাঃ) -সংবাদ দিচ্ছেন যে, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে দু’টি বিষয় শিক্ষা করেছেন, একটি তার বাণীঃ “নিশ্চয় আল্লাহ প্রত্যেক বস্তুতে ইহসান অবধারিত করেছেন।
” মুহসিন আল্লাহর একটি সন্দুর নাম, (অনুগ্রহকারী), অর্থাৎ তিনি প্রচুর অনুগ্রহকারী, নি-আমতদাতা, দয়াশীল ও অনুগ্রহপরায়ণ, তাই তিনি প্রত্যেক বস্তুতে অনুগ্রহ করা, নি-আমত দেওয়া, রহম করা ও দয়াকে ভালোবাসেন। আর দ্বিতীয় বিষয়টি হচ্ছে প্রথম বিষয়ের অনিবার্য ফসল, আর সেটি হচ্ছে, “অতএব, তোমরা যখন হত্যা করবে সেটাও সুন্দরভাবে করবে,
আর যখন যবেহ করবে সেটাও সুন্দরভাবে করবে, তোমাদের প্রত্যেকে তার ছুরি ধার দিয়ে নিবে এবং যবেহকৃত জন্তুকে শান্ত হতে দিবে।” অর্থাৎ যখন কোনো নফসকে হত্যা করবে, যে হত্যার উপযুক্ত হয়েছে, যেমন কাফির যোদ্ধা, অথবা মুরতাদ অথবা হত্যাকারী অথবা অন্য কেউ, তখন তোমাদের ওপর ওয়াজিব হচ্ছে হত্যার পদ্ধতি ও অবস্থা ভালোটা গ্রহণ করা।
অনুরূপভাবে যখন তোমরা পশু যবেহ করবে, তোমাদের ওপর ওয়াজিব সুন্দরভাবে যবেহ করা ও পশুকে শান্ত হতে দেওয়া, ছুরি ধার দেওয়া ও দ্রুত চালনা করা ইত্যাদি। আরেকটি মুস্তাহাব হচ্ছে পশুর উপস্থিতিতে ছুরি ধার না দেওয়া এবং একটির সামনে অপরটি যবেহ না করা এবং যবেহ করার স্থানে টেনে নিয়ে না যাওয়া।
ধৈর্যশীল ব্যক্তিকে আল্লাহ পছন্দ করেন
ধৈর্য একটি মহৎ গুণ। আমাদের প্রিয় নবীজি (সাঃ) ছিলেন, সবচেয়ে বেশি ধৈর্যশীল। আল্লাহর শ্রেষ্ঠ বান্দা ও বন্ধু হয়েও তাঁকে অবিশ্বাসীদের বহু জুলুম-নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে, কিন্তু তিনি সর্বদা ধৈর্যশীলতার পরিচয় দিয়েছেন। মহান আল্লাহই তাঁকে এই অমূল্য নিয়ামতে ভূষিত করেছেন।
বিপদে ধৈর্যধারণের নির্দেশ দিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, আর আপনি ধৈর্যধারণ করুন, আপনার ধৈর্য হবে আল্লাহর সাহায্যেই।’ (সুরা : আন-নাহাল, আয়াতঃ ১২৭)। ধৈর্য সফলতার চাবিকাঠি। তাই মহান আল্লাহ তাঁর মুমিন বান্দাদেরও ধৈর্যধারণের তাগিদ দিয়েছেন।
পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা ধৈর্য ধরো ও ধৈর্যে অটল থাকো এবং পাহারায় নিয়োজিত থাকো। আর আল্লাহকে ভয় করো, যাতে তোমরা সফল হও।’ (সুরাঃ আলে ইমরান, আয়াতঃ ২০০)। শুধু তা-ই নয়, ধৈর্যধারণ মহান আল্লাহর কাছে এতটাই প্রিয় যে তিনি ধৈর্যের বিনিময়ে পুরস্কার বাড়িয়ে দেন। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তাদের দুবার প্রতিদান দেওয়া হবে এ কারণে যে তারা ধৈর্যধারণ করে এবং ভালো দ্বারা মন্দকে প্রতিহত করে।
আল্লাহভীরু লোককে আল্লাহ পছন্দ করেন
আল্লাহভীরু মানুষের জন্য আল্লাহ জীবনকে সহজ ও সাবলীল করে দেন।ফলে জীবন তার কাছে বোঝা মনে হয় না।আল্লাহ তা'য়ালা বলেন, ‘এবং যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করবে,আল্লাহ তার সমস্যার সমাধান সহজ করে দেবেন।
যারা আল্লাহকে ভয় করে তারা পৃথিবীতেও নানা পুরস্কারে পুরস্কৃত হবে।আল্লাহ বলেন, ‘যারা ঈমান এনেছে এবং মুত্তাকী (আল্লাহভীরু) হয়েছে,তাদের জন্য জাগতিক জীবনে রয়েছে সুসংবাদ। যারা পৃথিবীতে আল্লাহকে ভয় পাবে,তাঁর নির্দেশ মেনে চলবে,পরকালে আল্লাহ তাদের জান্নাত দ্বারা পুরস্কৃত করবেন।ইরশাদ হয়েছে, ‘জান্নাতকে আল্লাহভীরুদের নিকটবর্তী করা হবে।
আল্লাহভীরুদের জন্য সাফল্য ও হেদায়েতের ঘোষণা দিয়েছেন আল্লাহ তা'য়ালা।ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করে, আল্লাহকে ভয় করে এবং তাঁর অবাধ্যতা থেকে সাবধান থাকে তারাই সফলকাম। পরকালে উত্তম পরিণতি তাকওয়ার অন্যতম পুরস্কার।আল্লাহ আল্লাহভীরুদের জন্য উত্তম পরিণতির ঘোষণা দিয়েছেন, ‘শুভ পরিণতি আল্লাহভীরুর জন্য।
সর্বক্ষেত্রে আল্লাহর উপর ভরসাকারী
তাওয়াক্কুল আলাল্লাহ বা আল্লাহর ওপর ভরসা করা এটি মুমিন বান্দার অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য যা, আল্লাহতায়ালা অত্যন্ত পছন্দ করেন। পবিত্র কুরআনে আল্লাহতায়ালা এরশাদ করেন, আল্লাহতায়ালার ওপরই ভরসা রেখ, যদি তোমরা প্রকৃত মুমিন হও (সূরা মায়েদা-২৩)।
আরেক আয়াতে এসেছে, আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোনো মাবুদ নেই। অতএব, মুমিনরা আল্লাহর ওপর ভরসা করুক’ (আত-তাগাবুন-১৩)। আরও এসেছে, মুমিন তো তারাই, (যাদের সামনে) আল্লাহকে স্মরণ করা হলে তাদের হৃদয় ভীত হয়, যখন তাদের সামনে তার আয়াতগুলো পড়া হয়, তখন তা তাদের ইমানের উন্নতি সাধন করে এবং তারা তাদের প্রতিপালকের ওপর ভরসা করে (সূরা আল আনফাল-২)।
এক হাদিসে আসছে, একজন সাহাবি নবিজি (সাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল (সাঃ) আমি কি উট বেঁধে আল্লাহর ওপর ভরসা করব? নাকি উট ছেড়ে দিয়েই আল্লাহর ওপর ভরসা করে রেখে যাব? উত্তরে নবিজি (সাঃ) বললেন, আগে উট বাঁধ তারপর আল্লাহর ওপর ভরসা কর, যাতে কোনো দুর্ঘটনার কারণে উট হারিয়ে না যায় (সুনানে তিরমিজি হাদিস নং ২৫১৭)।
ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠাকারী
বিশ্বমানবতা আজ মহাবিপর্যয়ের সম্মুখীন। সর্বত্র ন্যায়বিচারের অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। অশান্ত বিশ্বকে শান্তিময় করার একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে নিরঙ্কুশ ন্যায়বিচার। ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে ইসলাম অত্যধিক গুরুত্বারোপ করেছে। পবিত্র কুরআনে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘হে যারা ইমান এনেছ!
আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে সাক্ষ্যদাতা হিসেবে তোমরা দৃঢ়ভাবে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠাকারী হও, এমনকি সেই সাক্ষ্য তোমাদের নিজেদের বা পিতামাতার অথবা নিকটাত্মীয়দের বিরুদ্ধে গেলেও। যার সম্পর্কে সাক্ষ্য দেয়া হচ্ছে, সে ধনী হোক বা গরীব, আল্লাহ্ উভয়েরই সর্বোত্তম অভিভাবক।
অতএব তোমরা যাতে ন্যায়বিচার করতে সক্ষম হও, সেজন্য তোমরা কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ করো না আর তোমরা যদি পেঁচানো কথা বল অথবা সত্য এড়িয়ে যাও, তবে মনে রেখো, তোমরা যা কর সে বিষয়ে নিশ্চয় আল্লাহ পুরোপুরি অবগত আছেন’ (সুরা নিসাঃ ১৩৫)।
দানশীল ব্যক্তিকে আল্লাহ পছন্দ করেন
কুরআনের এক আয়াতে এসেছে, ‘যারা আল্লাহর রাস্তায় স্বীয় ধনসম্পদ ব্যয় করে তাদের উদাহরণ একটি বীজের মতো, যা থেকে সাতটি শীষ জন্মায়। প্রত্যেকটি শীষে একশ করে দানা থাকে। আল্লাহ অতি দানশীল, সর্বজ্ঞ। (সূরা বাকারাঃ ২৬১)। দানে ধন কমে না। রাসূল (সাঃ) জোর দিয়েই বলেছেন, ‘কোনো দান-সদকাই সম্পদে ঘাটতি সৃষ্টি করে না।’ (সহিহ মুসলিমঃ ২৫৮৮)।
দানের ফজিলতের ব্যাপারে অনেক হাদিসই বর্ণিত হয়েছে। এক হাদিসে রাসূল (সাঃ) বলেন, ‘প্রতিদিনই দুজন ফেরেশতা নেমে আসেন। তাদের একজন দোয়া করেন, আল্লাহ! যে দান করে তাকে আপনি আরও দিন। অপরজন দোয়া করেন- আল্লাহ! যে ধনসম্পদ আঁকড়ে ধরে রাখে, তার সম্পদ ধ্বংস করে দিন।’ (সহিহ বোখারিঃ ১৪৪২)।
তাছাড়া দান সদকা মানুষকে বিপদাপদ থেকেও রক্ষা করে এবং আল্লাহতায়ালার ক্রোধ দমিয়ে দেয়। রাসূল (সাঃ) এরশাদ করেন : ‘নিশ্চয়ই দান আল্লাহর ক্রোধ নিভিয়ে দেয় এবং অপমৃত্যু ঠেকায়।’ (জামে তিরমিজিঃ ৬৬৪)।
লেখকের মন্তব্যঃ
প্রত্যেক মুমিন-মুসলমান আল্লাহকে ভয়, ভালোবাসা, তাকওয়া ও পরকালে সুখ লাভের আশায় আল্লাহর ইবাদত করে থাকেন। আল্লাহর অসন্তোষ এবং রাগকে ভয় পান, এবং তার করুণা, রহমত এবং ক্ষমা পাওয়ার প্রত্যাশা রাখেন। প্রতিনিয়ত আল্লাহর পছন্দের পত্র হয়ে তার ভালোবাসা পেতে উপরে বর্ণিত কাজ গুলো করতে পারি। আল্লাহ আমাদের সবাইকে তার পছন্দের প্রিয় পাত্র হিসেবে গ্রহণ করুন, আমিন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url