ঝিঙের পুষ্টিগুণ ও ঝিঙে খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
ঝিঙে একটি গ্রীস্মকালীণ সবজি। এই ঝিংগা সবজি হিসেবে আমরা সবায় কম-বেশি খেয়ে থাকি। কিন্তু আমরা কি জানি ঝিংগার পুষ্টিগুণ এবং এর উপকারিতার কথা ?
হ্যাঁ বন্ধুরা আজ আপনাদের সামনে ঝিঙের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করবো। এখানে জানতে পারবেন- ঝিংগা আমাদের দেহের কি কি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
ভূমিকাঃ ঝিঙের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা।
তীব্র গরমের সময় আমাদের অতিরিক্ত ঘাম হয় এবং এর ফলে আমাদের শরীর থেকে প্রচুর পানি বের হয়ে যায়। ডিহাইড্রেট হতে পারে মনে হলে অর্থাৎ শরীর পানি শূন্য হয়ে গেলে নানান ধরনের শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে। এই সময় পানীয় জাতীয় সবজি সুস্থ থাকার উপযোগী হতে পারে। বিশেষ করে ঝিংগে। ঝিঙা দিয়ে কোনো রেসিপি করে খেলে, শরীরে পানিশূন্যতা দূর করা যাবে খুব সহজে।
সূচীপত্রঃ
ঝিঙের পুষ্টিগুণ
ঝিঙে খাওয়ার উপকারিতা
ঝিঙে খাওয়ার অপকারিতা
ঝিঙে কোন কোন রোগের প্রতিশেধক
এক নজরে ঝিঙে চাষ
লেখকের মন্তব্যঃ
ঝিঙের পুষ্টিগুণ
প্রতি ১০০ গ্রাম ঝিঙেতে-
শর্করা ৪.৩ গ্রাম, আমিষ ১.৮ গ্রাম, জলীয় অংশ (জল) ৯৫ গ্রাম, খাদ্য শক্তি ৩০ কিলোক্যালরী, খনিজ লবণ, ০.৩ গ্রাম, চর্বি ০.৬ গ্রাম। ভিটামিন এ ৬৭০ মাইক্রোগ্রাম, ভিটামিন বি-১ বা থায়ামিন ০.১১ মিলিগ্রাম, ভিটামিন-২ বা রাইবোফ্লাভিন ০.০৪ মিলিগ্রাম, নায়াসিন বা ভিটামিন বি-৬ ০.৩ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি ৬ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ৪০ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ৪০ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ৪০ মিলিগ্রাম, আয়রণ ০.৫ মিলিগ্রাম, আঁশ ০.৫ গ্রাম, ভিটামিন-ই ১.২০ মিলিগ্রাম।
ঝিঙে খাওয়ার উপকারিতা
(১) তীব্র গরমে শরীরকে পানি শূন্যতা থেকে রক্ষা করতে ঝিঙা হতে পারে একটি আদর্শ সবজি। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পানি বা জলীয় অংশ। প্রচুর পরিমাণে জলীয় অংশ থাকার কারণে গরমকালে ঝিঙার তরকারি বা ঝিঙা দিয়ে কোনো রেসিপি করে খেলে, শরীরে পানিশূন্যতা দূর করা যায় খুব সহজে।
(২) ঝিঙাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং খনিজ লবণ থাকার কারণে এটি মানব দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ফলে এই গরম সময়ও অতিরিক্ত সর্দি, ঠাণ্ডা, কাশি কিংবা ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো শারীরিক সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে ঝিঙে খেতে পারেন।
(৩) ঝিঙা মানুষের দেহে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। ঝিঙা এমন একটি সবজি, যার বেশিরভাগ অংশই পানি। বাকি অংশটুকুতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন এবং মিনারেল। শর্করা কিংবা ক্যালরি একেবারেই নাই বললেই চলে। যার ফলে এই গরমের সময় যারা ডায়াবেটিসে ভুগছেন, বা যাদের ব্লাড সুগার বেশি, তারা যদি প্রতিদিন ঝিঙার তরকারি, ঝিঙা ও মাছ দিয়ে ঝোল করে খেতে পারেন কিংবা ঝিঙা ভাজি করে খেতে পারেন, সেক্ষেত্রে কিন্তু ব্লাড সুগার বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বিন্দুমাত্র থাকে না।
(৪) ঝিঙাতে উচ্চমাত্রায় ফাইবার থাকায় হজম শক্তি বৃদ্ধি করে, ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এই সবজি খাওয়ার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যও দূর হয় অনায়াসে।
(৫) ঝিঙা ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এই সবজিতে ক্যালোরির পরিমাণ কম এবং ফাইবার বেশি থাকায় ওজন নিয়ন্ত্রণে যারা ডায়েট করছেন বা যারা ওজন কমাতে চাচ্ছেন, প্রতিদিন ঝিঙার তরকারি খেতে পারেন ভালো ফলাফল পাবেন।
(৬) ঝিঙাতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম, যা হাড় ও দাঁত মজবুত রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
(৭) ঝিঙা এবং এই জাতীয় সবজি রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। তাই যারা হৃদরোগের ঝুঁকিতে আছেন কিংবা যাদের রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি, তারা প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ঝিঙার তরকারি কিংবা নানান রেসিপি রাখতে পারেন।
(৮) যেহেতু ঝিঙাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন এবং খনিজ লবণ থাকে, যা আমাদের ত্বকের যত্ন নিতে সাহায্য করে। তেমনি এই সবজিটি চুলের গোড়া শক্ত করে, ত্বকে সহজে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না। অর্থাৎ ফ্রি রেডিকেলস থেকে আমাদের ত্বককে মুক্ত রাখতে সহায়তা করে এই ঝিঙার সবজি।
(৯) ঝিঙাতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিটা ক্যারোটিন। তাই এই সবজি খেলে আমাদের দৃষ্টি শক্তি সুস্থ রাখতেও বিশেষ ভূমিকা রাখে।
(১০) আজকাল বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, এই সবজিটি ক্যান্সার প্রতিরোধেও যথেষ্ট অবদান রাখতে পারছে।
এছাড়াও এসব পানীয় জাতীয় সবজিতে রয়েছে আরও নানান ধরনের জানা-অজানা পুষ্টিগুণ। তাই এই গরমে তুষ্টি পেতে হলে বা গরমে সুস্থ থাকতে চাইলে প্রয়োজন ঝিঙা এবং ঝিঙ্গা জাতীয় অন্য সব পানীয় জাতীয় সবজির বিভিন্ন ধরনের রেসিপি দৈনিক খাদ্য তালিকায় রাখা।
ঝিঙে খাওয়ার অপকারিতা
ঝিঙের ক্ষতির চেয়ে দেহে আরও বেশি উপকারী এবং এটিকে সাধারণত নিরাপদ বলে মনে করা হয়। শাকসবজি হিসাবে খাওয়া ঝিঙে সম্পর্কে বেশিরভাগ গবেষণা ইঁদুরের উপরে করা হয়েছে, যার কারণে এর ক্ষতটি স্পষ্ট হয় না। একই সাথে, আমরা ঝিঙের সম্ভাব্য কিছু অসুবিধাগুলি সম্পর্কে নীচে বলছি।
এইভাবে, ঝিঙে নিরাপদ, তবে কিছু ক্ষেত্রে এটি গর্ভাবস্থায় নিরাপদ বলে বিবেচিত হয় না। ঝিঙে থেকে তৈরি চাতে অ্যাবোর্টিফেসিয়েন্ট প্রভাব পাওয়া যায়। এ জাতীয় পরিস্থিতিতে গর্ভাবস্থায় সেবন করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভাল। এর ব্যবহারের কারণে অ্যালার্জি পেতে পারে।
এটি স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারী তা আপনি ইতিমধ্যে জেনে গেছেন। সীমিত পরিমাণে, স্বাস্থ্যের জন্য এটির ক্ষতি নগন্য। এমন পরিস্থিতিতে, যদিও এর স্বাদটি খুব বেশি পছন্দ করা নাও যেতে পারে, তবে স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে অবশ্যই আপনার ডায়েটে এটি অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে চিন্তা করা উচিত।
আপনি যদি ঝিঙের শাকসব্জী খেতে পছন্দ না করেন তবে আপনি এটির রস খেতে পারেন। একই সাথে ট্রাফলের জন্য যদি আপনার কোনও ধরণের অ্যালার্জি থাকে তবে কেবলমাত্র চিকিৎসকের পরামর্শে এটি গ্রহণ করুন।
ঝিঙে কোন কোন রোগের প্রতিশেধক
ঝিঙাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং খনিজ লবণ থাকার কারণে এটি মানব দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ঝিঙে খেলে পানি শুন্যতা দূর হয়, অতিরিক্ত সর্দি, ঠাণ্ডা, কাশি কিংবা ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো শারীরিক সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। ব্লাড সুগার বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বিন্দুমাত্র নেই।
হজম শক্তি বৃদ্ধি করে, ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। হাড় ও দাঁত মজবুত রাখতে সাহায্য করে। হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে। চুলের গোড়া শক্ত করে, ত্বকে সহজে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না। দৃষ্টি শক্তি সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। এই সবজিটি ক্যান্সার প্রতিরোধেও যথেষ্ট ভূমিকা রাখতে পারে।
এক নজরে ঝিঙে চাষ
উন্নত জাতঃ বারি ঝিংগা-২, বারি ঝিংগা-১, সামার সর্ট, শতাব্দী।
বপনের সময়ঃ ফেব্রুয়ারি-মার্চ (মাঘ-চৈত্র) উপযুক্ত সময়।
চাষপদ্ধতিঃ ঝিঙ্গা চাষে সেচ ও নিকাশের উত্তম সুবিধাযুক্ত এবং পর্যাপ্ত সূর্যালোক প্রায় এমন জমি নির্বাচন করতে হবে। একই গাছের শিকড় বৃদ্ধির জন্য জমি এবং গর্ত উত্তমরুপে তৈরি করতে হয়। এ জন্য জমিকে প্রথমে ভাল ভাবে চাষ ও মই দিয়ে এমনভাবে তৈরি করতে হবে যেন জমিতে কোন বড় ঢিলা এবং আগাছা না থাকে।
বেডের উচ্চতা হবে ১৫-২০ সেমি। বেডের প্রস্থ হবে ১.২ মিটার এবং লম্বা জমির দৈঘ্য অনুসারে সুবিধামত নিতে হবে। এভাবে পরপর বেড তৈরি করতে হবে। এরূপ পাশাপাশি দুইটি বেডের মাঝখানে ৬০ সেমি ব্যাসের সেচ ও নিকাশ নালা থাকবে এবং ফসল পরিচর্যার সুবিধার্থে প্রতি দুবেড পর পর ৩০ সেমি প্রশস্ত নালা থাকবে।
বীজের পরিমানঃ জাত ভেদে শতক প্রতি ১২ - ১৫ গ্রাম।
সার ব্যবস্থাপনাঃ
সারের নাম শতক প্রতি সার
কম্পোস্ট সার ৮০ কেজি
ইউরিয়া সার ৭০০ গ্রাম
টিএসপি সার ৭০০ গ্রাম
এমওপি সার ৬০০ গ্রাম
জিপসাম ৪০০ গ্রাম
২০ কেজি গোবর, অর্ধেক টিএসপি ও ২০০ গ্রাম এমওপি সার, সমুদয় জিপসাম, দস্তা, বোরণ জমি তৈরির সময় মাটিতে প্রয়োগ করুন। অবশিষ্ট গোবর (মাদা প্রতি ৫ কেজি), টিএসপি সার (মাদা প্রতি ৩০ গ্রাম), ২০০ গ্রাম এমওপি সার (মাদা প্রতি ২০ গ্রাম), সমুদয় ম্যাগনেসিয়াম (মাদা প্রতি ৫ গ্রাম) চারা রোপণের ৭ থেকে ১০ দিন পূর্বে প্রয়োগ করুন।
চারা রোপণের ১০ থেকে ১৫ দিন পর ১ম বার ২০০ গ্রাম ইউরিয়া সার এবং ২০০ গ্রাম এমওপি সার (মাদা প্রতি ১৫ গ্রাম), ৩০থেকে ৩৫ দিন পর ২য় বার, ৫০ থেকে ৫৫ দিন পর ৩য় বার ২০০ গ্রাম করে ইউরিয়া সার (মাদা প্রতি ১৫ গ্রাম) প্রয়োগ করুন। চারা রোপণের ৭০থেকে ৭৫ দিন পর ১০০ গ্রাম ইউরিয়া সার (মাদা প্রতি ১৫ গ্রাম) প্রয়োগ করুন।
সেচঃ ঝিংগা গ্রীষ্মকালে চাষ করা হয়। গ্রীষ্মকালে মাঝে মাঝে বৃষ্টি হয় বলে তখন সবসময় পানি সেচের প্রয়োজন নাও হতে পারে। কিন্তু ফেব্রুয়ারির শেষ সময় থেকে মে মাস পর্যন্ত খুব শুষ্ক আবহাওয়া বিরাজ করে। তখন অনেক সময় কাল পর্যন্ত বৃষ্টিই থাকে না। উক্ত সময়ে ৫ থেকে ৬ দিন পর পর নিয়মিত সেচ দিন।
আগাছাঃ নিয়মিত জমি পর্যবেক্ষণ করুন । সেচ ও সার দেবার পর জো আসা মাত্র নিড়িয়ে আগাছা মুক্ত করুন। চারা গজানোর ২০ থেকে ২৫ দিন পর আগাছা দমন করুন। গাছ খুব ঘন থাকলে পাতলা করে দিন। চারা অবস্থা থেকে রসুন গঠনের পূর্ব পর্যন্ত ২ থেকে ৩ বার নিড়ানি দিয়ে জমির আগাছা পরিষ্কার করে নিন।
আবহাওয়া ও দুর্যোগঃ অতি বৃষ্টির কারনে জমিতে পানি বেশি জমে গেলে নালা তৈরি করে তাড়াতাড়ি পানি সরানোর ব্যবস্থা করুন। নচেত গাছ মরে যাবে।
পোকামাকড়ঃ ঝিঙ্গার কাঁঠালে পোকাঃ আক্রমণ বেশি হলে ফেনিট্রথিয়ন জাতীয় কীটনাশক ( যেমন সুমিথিয়ন বা ফলিথিয়ন ২০ মিলিলিটার প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে) ১০ দিন পর পর ২ থেকে ৩ বার ভালভাবে স্প্রে করুন। স্প্রে করার পর ১৫ দিনের মধ্যে সেই সবজি খাবেন না বা বিক্রি করবেন না।
সুড়ঙ্গকারী পোকা দমনে সাইপারমেথরিন জাতীয় বালাইনাশক ( যেমন কট বা ম্যাজিক ১০ মিলি/ ১০ লিটার হারে পানিতে মিশিয়ে) সকালের পরে সাঁজের দিকে স্প্রে করুন।
সাদা মাছি আক্রমণ হলে হলুদ রং এর আঠালো ফাঁদ ব্যবহার করুন। আক্রমণ বেশি হলে ইমিডাক্লোরোপ্রিড জাতীয় কীটনাশক (যেমন এডমায়ার অথবা টিডো ৭-১০ মিলিলিটার / ২মুখ) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০ দিন পরপর ২/৩ বার। ঔষধ স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করুন।
ফলের মাছি পোকা দমনে সাইপারমেথ্রিন জাতীয় কীটনাশক (যেমন ওস্তাদ ২০ মিলিলিটার অথবা ম্যাজিক অথবা কট ১০ মিলিলিটার) প্রতি ১০লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০ থেকে ১২ দিন পরপর ২/৩ বার। ঔষধ স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করুন।
রোগবালাইঃ ডাউনি মিলডিউ রোগ দমনে ম্যানকোজেব জাতীয় ছত্রাকনাশক (যেমনঃ রিডোমিল গোল্ড ১০ লিটার পানিতে ২০ গ্রাম মিশিয়ে ১০ থেকে ১২ দিন পর পর ২ থেকে ৩ বার স্প্রে করতে যেতে পারে। স্প্রে করার পর ১৫ দিনের মধ্যে সবজি বিষাক্ত থাকবে। ঔষধ স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করুন।
মোজাইক ভাইরাস রোগ দমনে জমিতে সাদা মাছি দেখা গেলে (বাহক পোকা) ইমিডাক্লোরোপ্রিড জাতীয় কীটনাশক (যেমন এডমায়ার অথবা টিডো ১০ মি.লি. ২ মুখ ) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে। ঔষধ স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করুন।
সতর্কতাঃ বালাইনাশক/কীটনাশক ব্যবহারের আগে বোতল বা প্যাকেটের গায়ের লেবেল ভালো করে পড়ুন এবং নির্দেশাবলি মেনে চলুন। ব্যবহারের সময় নিরাপত্তা পোষাক পরিধান করুন। ব্যাবহারের সময় ধূমপান এবং পানাহার করা যাবে না। বালাইনাশক ছিটানো জমির পানি যাতে মুক্ত জলাশয়ে না মেশে তা লক্ষ্য রাখুন।
বালাইনাশক প্রয়োগ করা জমির ফসল কমপক্ষে সাত থেকে ১৫ দিন পর বাজারজাত করুন। বালাইনাশক/কীটনাশক ব্যাবহারের সময় নিরাপত্তা পোষাক পরিধান করুন। ব্যবহারের সময় ধূমপান এবং পানাহার করা থেকে বিরত থাকুন।
ফলনঃ জাত ভেদে শতক প্রতি ফলন ৪০-৬০ কেজি।
সংরক্ষনঃ ঠান্ডা ও বাতাস চলাচল করা জায়গাতে ফল ঘষা বা চাপ খায় না এমন ভাবে সংরক্ষণ করুন। বীজ বেশিদিন সংরক্ষণ করতে চাইলে নিমের তেল মিশিয়ে রাখতে পারেন। কিছুদিন পর পর বীজ হালকা রোদে শুকিয়ে নিবেন।
লেখকের মন্তব্যঃ
পুষ্টিকর সবজির কথা আসলে, সাধারণত কেউ ঝিঙের কথা উল্লেখ করে না। কিন্তু এই ঝিঙের এতো পুষ্টিগুণ রয়েছে তা অনেকের কাছেই অজানা। আশা করি আপনি উপরের লেখাগুলো মনোযোগ সহকারে পড়ে তা উপলব্ধি করতে পেরেছেন। এই সবজিটি সাদে তেমন আকর্ষণীয় না হলেও পুষ্টিগুণে ভরপুর।
তাই উপরে বর্ণিত উপকারগুলো পেতে চাইলে অবশ্যয়ই ঝিঙেকে পছন্দের সবজি বানিয়ে নিন। লেখাগুলো পড়ে উপকৃত হলে, ভালো লাগলে বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url