মেয়েদের যে ভূলের কারণে সংসারে সুখ-শান্তি আসেনা বিস্তারিত জেনে নিন

আপনি কি বিবাহিত ? আপনার সংসারে কি সুখ-শান্তি নেই ? এই অশান্তির কারণ খুজে পাচ্ছেন না ? আপনি কি এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর জানতে চান ? আজ আপনাদের জানাবো মেয়েদের যে সমস্ত ভূলের কারণে সংসারে সুখ-শান্তি আসেনা বিস্তারিত জেনে নিন।
মেয়েদের যে ভূলের কারণে সংসারে সুখ-শান্তি আসেনা বিস্তারিত জেনে নিন

এখানে জানাতে পারবেন- সংসারের অশান্তির কারণ ও প্রতিকার সমূহ। স্ত্রীর কোন কোন অভ্যাসগুলো সংসারে অশান্তি ডেকে আনে। আসুন আর দেরি না করে শুরু করা যাক।

ভূমিকাঃ মেয়েদের যে সব ভূলের কারণে সংসারে সুখ আসেনা।


একটি সংসার সুখের করতে গেলে নারী-পুরুষ উভয়ের গুরুত্ব থাকতে হবে। পুরুষরা জীবিকার চাহিদায় বাহিরে কাজ করবে এবং সংসার চালাবে। সেই সংসার কিভাবে চালালে সুখ আসবে তা অনেকটাই মেয়েদের উপর নির্ভর করে। কথায় আছে সংসার সুখের হয় রমনির গুণে।

সূচীপত্রঃ

মেয়েদের যে ভূলের কারণে সংসারে সুখ আসেনা
মেয়েদের সংসার ভাঙ্গার কারণ
মায়ের কারণে মেয়ের সংসার ভাঙ্গে
সংসারে অশান্তি দূর করার উপায়
সংসারে অশান্তি দূর করার দোয়া ও আমল
সংসারে অশান্তি নিয়ে উল্লেখযোগ উক্তি
সুখি পরিবার গঠনে নবীজির নির্দেশনা
দাম্পত্য সম্পর্ক ঠিক রাখার উপায়
লেখকের মন্তব্য

মেয়েদের যে ভূলের কারণে সংসারে সুখ আসেনা

কোথায় স্বর্গ, কোথায় নর্গ কে বলে তা বহুদূর, মানুষের মাঝে স্বর্গ-নরক মানুষেতেই সুরাসুর। সংসার জীবনে সুখ-শান্তি নির্ভর করে নারী-পুরুষ উভয়ের উপরই। তবে সংসার পরিচালনার জন্য পুরুষ মানুষকে বেশির ভাগ সময় বাইরে থাকতে হয়। আয় রোজগার ছাড়া অন্যান্য বিষয়গুলো স্ত্রীর নির্ভর করে। নারীর কোন কোন ভূলের কারণে সংসারে সুখ আগেনা আসুন তা জেনে নেয়া যাক।

১. সকালে দেরি করে ঘুম থেকে উঠা

খুব সকালে ঘুম থেকে উঠা আল্লাহ তায়ালার খুব বড় নিয়ামত। যে দেরিতে ঘুম থেকে উঠে সে অনেক কিছু নিয়ামত থেকে বঞ্চিত হয়। সকালে ঘুম থেকে তাড়াতাড়ি উঠলে যেমন আপনার শরীর সুস্থ থাকে। সকালের আলো বাতাস শরীরের জন্য অত্যান্ত উপকারী। এছাড়াও তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠলে সংসারের সমস্ত কাজ আপনি অনায়াসে করে ফেলতে পারেন। তাই যে নারী সকালে ঘুম থেকে দেরিতে উঠবে সে সংসারে সুখ-শান্তি আসা কঠিন।

২. স্বামীর ইনকামে সন্তুষ্ট না থাকা

যে নারী তার স্বামীর ইনকামে সন্তুষ্ট থাকেনা সে সংসারে সুখ-শান্তি আসাটা কষ্টসাধ্য। নারীরা যদি স্বামীর ইনকামকে মানিয়ে নিয়ে সে অনুপাতে সংসার খরচ করতে শিখে তাহলে সহজেই সেই সংসারে সুখ নেমে আসে। কিন্তু নারীরা যদি স্বামীর আয়ে সন্তুষ্ট না থাকে তাহলে কোন এক সময় স্বামীকে অবৈধ পথে ইনকাম করতে হয় স্ত্রীর কারণে। 

যার ফল স্বরুপ খুব খারাপ হয়। অবৈধ অনেক টাকা আসতে পারে সংসারে, কিন্তু সুখ আসবে না। তাই যে নারী স্বামীর ইনকামে সন্তুষ্ট থাকেনা সে সংসারে সুখ-শান্তি আসেনা।

৩. স্বামীর মতামতের গুুরুত্ব না দেওয়া

কোন স্ত্রী যদি তার স্বামীর মতামতের গুরুত্ব না দেয় তাহলে সে সংসারে সুখ-শান্তি আসবেনা। তাই স্বামীকে তারা মত প্রকাশের সুযোগ দিতে হবে। কোন স্ত্রী যদি সে নিজে নিজের মতো করে চলতে চায় বা চালাতে চায় স্বামীকে গুরুত্ব না দেয় তাহলে সে সংসারে অশান্তি লেগে থাকবে। অথচ স্বামীর কথা মতোই তাকে চলতে হবে, কিন্তু বর্তমান সমাজ চলছে উল্টো। স্বামীরাই স্ত্রীদের কথা মতো চলতে বাধ্য হচ্ছেন।

৪. ফজরের নামাজ আদায় না করা

আল্লাহ তায়ালা ফজরের নামাজের মধ্যে অনেক নিয়ামত দান করেছেন। কোন নারী যদি ফজরের নামাজ আদায় করে তাহলে সে সংসারে আল্লাহর বরকত নাজিল হয়। আর যে সংসারে নারীরা ফজরের নামাজ কাজা করে তারমানে সে দেরি করে ঘুম থেকে উঠে তাহলে সে সংসারে আল্লাহর বরকত কমে যায়, ফলে সে সংসারে সুখশান্তি আর থাকেনা।

৫. ফরজ গোসলে অলসতা করা

ফরজ গোসল খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল। যখন গোসল ফরজ হয় সঙ্গে সঙ্গে তা করে ফেলা উত্তম। তাই সংসারে সুখ আনতে অবশ্যই ফরজ গোসলে অলসতা করা যাবেনা। তবে হ্যাঁ রাতের শেষ ভাগে, অর্থাৎ ফজরের নামাজের আগে গোসল করলেই হবে। গোসলের কারণে নামাজ কাজা করা মোটেও ঠিক নয়। উল্লেখ্য যে গোসল ফরজ থাকা অবস্থায় সংসারের সকল কাজকর্ম করতে পারবেন।

৬. পুরুষের চাইতে নিজেকে বুদ্ধিমান ভাবা

যে নারী তার স্বামীর চাইতে নিজেকে জ্ঞানি মনে করে সে নারী তার স্বামীকে পাধান্য দেয়না এটায় বাস্তব চিত্র। আর এই ভুল যে নারী করে বা করবে সে সংসারে মহান আল্লাহ তায়ালা বরকত ও উন্নতি দান করবেন না। তাই নারীরা কখোনো নিজেকে পুরুষের থেকে বুদ্ধিমান ভাববেন না। হ্যাঁ উভয়ে আলোচনা করে মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। স্ত্রী হয়ে কোন সিদ্ধান্ত আপনার স্বামীর উপর চাপিয়ে দিবেন না।

৭. ইচ্চাকৃতভাবে নামাজ দেরিতে আদায় করা

আল্লাহ তায়ালা ঐ ব্যক্তিতে সবথেকে বেশি ভালোবাসেন যে নামাজ সঠিক সময়ে আদায় করে। কোন কাজ ছাড়া যদি কোন ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে নামাজ আদায়ে দেরি করে তাহলে তার সংসারে সুখ-শান্তি ও বরকত কমে যায়। যতই কাজ থাক আগে নামাজ, পরে কাজ।

৮. আত্মীয়তা ও পারিবারিক বন্ধন ছিন্ন করার চিন্তা থাকলে

কোন নারী যদি আত্মীয়তা ও পারিবারিক বন্ধন ছিন্ন করার চিন্তা করে বা বন্ধন ছিন্ন করে তাহলে তার সংসারে সুখ-শান্তি আসবেনা। আত্মীয়তা ও পারিবারিক বন্ধন খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া হাদিসেও আছে, আত্মীয়তা ছিন্নকারি জান্নাতে যাবে না। আপনি যদি এই বন্ধনে আবদ্ধ থাকেন এবং সকলের সাথে ভাল সম্পর্ক রাখেন তাহলে আপনার বিপদে খুব সহজেই অন্যকে পাশে পাবেন।

মেয়েদের সংসার ভাঙ্গার কারণ

বর্তমানে বিবাহ বিচ্ছেদের খবর খুব বেশি শোনা যায়। অস্বাস্থ্যকর সম্পর্কের কারণে এমটা হয়ে থাকে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। মানসিক শান্তির জন্য নারী-পুরুষ উভয়ই বিচ্ছেদের পথে হাঁটেন। চলুন জেনে নেয়া যাক বিবাহবিচ্ছেদের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি কারণ।

১. বিয়ের পর সঙ্গীর প্রতি ভালোবাসা কমে যাওয়া

বিবাহবিচ্ছেদের একটি প্রধান কারণ হচ্ছে বিয়ের পর সঙ্গীর প্রতি ভালোবাসা ধীরে ধীরে কমে যাওয়া। একে অপরের প্রতি প্রেমপূর্ণ সম্পর্ক না থাকা। জার্নাল অব সেক্স অ্যান্ড ম্যারিটাল থেরাপির ২০২০ সালের একটি সমীক্ষা অনুসারে, দুই হাজর ৩৭১ জনের বিবাহবিচ্ছেদের সমীক্ষায় প্রায় অর্ধেক মানুষ ভালোবাসা এবং ঘনিষ্ঠতার অভাবকে দায়ি করেছেন। একে অপরের প্রতি আবেগ কমে যাওয়া বিবাহবিচ্ছেদের একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ বলে প্রমানিত।

২. প্রতারণা বা বিশ্বাসঘাতকতা

প্রতারণা বা বিশ্বাসঘাতকতা বিবাহবিচ্ছেদের খুব সাধারণ একটি কারণ। একটি সম্পর্ক টিকে থাকে সারা জীবন ধরে শুধুমাত্র বিশ্বাসের ওপর। একে অপরের প্রতি বিশ্বাস ও ভরসা না থাকলে সেই সম্পর্ক শেষ হতে বেশি সময় লাগে না। তাই সঙ্গীর সাথে কখনোই বিশ্বাসঘাতকতা করবেন না।

৩. সঙ্গীকে অবজ্ঞা করা

কোন মানুষই নিখুঁত নয়। সবারই কিছু না কিছু দোষ থাকে এটাই স্বাভাবিক। এসব আমাদের মেনে নিয়েই একে অপরকে যোগ্য সম্মানটা দিতে হবে। সমস্যা দেখা দেয় যখন আমরা আমাদের সঙ্গীকে অবজ্ঞা করা শুরু করি, অবহেলা করি। অবজ্ঞা, উপহাস এবং অসম্মান এসবই সু-সম্পর্কের জন্য খারাপ এবং এটা আস্তে আস্তে বিবাহবিচ্ছেদের দিকে নিয়ে যায়।

৪. মানসিক নির্যাতন

শারীরিক নির্যাতনের মতো মানসিক নির্যাতনও অসহনীয়। অহেতুক রাগ দেখানো, গালাগালি করা এবং দোষারোপ করা মানসিক নির্যাতনের মধ্যে পড়ে। এই নির্যাতন থেকে মুক্তি পেতে অনেকেই বিচ্ছেদের পথে হাটে। তবে এখন নারীদের চেয়ে পুরুষরাই বেশি মানসিক নির্যাতনের স্বীকার হন। সংসারে অশান্তি হবে বা সন্তাদের মুখের দিকে চেয়ে পুরুষ মানুষ দিনের পর দিন এই মানসিক নির্যাতন সহ্য করে যায়। যখন একেবারে অসহ্য হয়ে যায় তখন বিচ্ছেদ ঘটে।

৬. মতের অমিল

স্বামী সাথে স্ত্রীর মতের অমিল সব চেয়ে প্রকট আকার ধারণ করে। যৌথভাবে কোনো সিদ্ধান্তই তারা নিতে পারেন না। দুজনই যার যার অবস্থানকে সঠিক প্রমাণ করার জন্য ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েন। নিজের মতামত ঠিক কি না, তা ব্যাখ্যা করার জন্য কোনো যুক্তির আশ্রয় নেয়ার প্রয়োজন তারা অনুভব করেন না। মূলত ইগো সমস্যার কারণেই এমনটা হয়। 

একপক্ষ মনে করতে থাকে তার আত্মমর্যাদায় আঘাত দেয়ার চেষ্টা করছে অপর পক্ষ। একে অন্যকে স্বার্থপর বলেও ভাবতে শুরু করেন তারা। এই ক্ষেত্রে স্ত্রী যদি স্বামীর মতামত মেনে নেয় তাহলে সমস্যা দূর হয়ে যায়। যদি দেখেন যে স্বামীরটাই ভূল তাহলে পরে শান্ত ভাবে ভূঝালেই হয়। কিন্তু স্ত্রীরা একজেদ নিয়ে বসে থাকেন, আর এতেই নামে বিপত্তি। বাংলাদেশে নারী নির্যাতনের আইন আছে। কিন্তু বর্তমানে পুরুষ নির্যাতনের আইন তৈরি করা দরকার। কারণ নারীর চেয়ে বর্তমান সময়ে পুরুষ নির্যাতন হয় বেশি।

মায়ের কারণে মেয়ের সংসার ভাঙ্গে

এখনকার বেশিরভাগ সময় মেয়েদের বিয়ের পরে তাদের ফ্যামিলিতে সমস্যা হয় একমাত্র মায়ের কারণে। অনেক মায়েরা আছেন যারা তাদের মেয়েকে শাসন না করে আরো প্রশ্রয় দেয়। বর্তমান সময়ে আমরা লক্ষ্য করে দেখি যে, মেয়ে ডিভোর্স হয় শুধু মায়ের কারণে। কোন পুরুষ যদি তার স্ত্রীকে কোন কিছু বলে অমনিতেই মায়েরা বলে থাক তোর ভাত খাওয়া দরকার নেই। বাড়িতে চলে আয় আমার ভাতের অভাব নেই। এই যে একটা দাম্ভিকতা, যার কারণে বর্তমানে সমাজের এই সমস্যাটা দিন দিন বৃদ্ধি পেয়েছে।

সংসারে অশান্তি দূর করার উপায়

বিবাহিত জীবনে দাম্পত্য কলহ একটা অনেক বড় সমস্যা। একে অপরকে সন্দেহ করা, দু’জন মানুষের মধ্যে মতপার্থক্য, অকে অপরকে অন্যের সঙ্গে তুলনা করা, ছাড় না দেয়া, রাগের সময় নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলা, একে-অপরকে সময় না দেয়া, দীর্ঘদিন একে অপরের বিপক্ষে ক্ষোভ ধরে রাখা, ইত্যাদি বহু কারণে দাম্পত্য কলহ বাড়তে পারে। অনেক ভালো ভালো সম্পর্কও ছোট খাটো কিছু ভুলের কারণে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ থেকে ডিভোর্স পর্যন্ত গড়াচ্ছে।
১. বউ আর মায়ের সম্পর্ক ভালো রাখতে আপনি সবসময় নিরপেক্ষ থাকবেন। কারো পক্ষ নিবেন না। আর নিলে দুই জনের পক্ষই নিবেন। মা যৌক্তিক কথা বললে মায়ের পক্ষ নিবেন আর বউ যৌক্তিক কথা বললে বউয়ের পক্ষ নিবেন। কখনোই একজনের পক্ষ নিয়ে কথা বলবেন না। একই সাথে দুই জনের পক্ষ নিতে হবে। 

মায়ের কথা শুনে বউকে এবং বউয়ের কথা শুনে মাকে কখনো অভিযুক্ত করবেন না। একজন বুদ্ধিমান পুরুষ কখনোই মায়ের সামনে স্ত্রীকে কিংবা স্ত্রীর সামনে মাকে আঘাত করে বা তুলনা করে কথা বলে না। মা ও বউ উভয়ের কথা হজম করতে শিখুন। বউকে বউয়ের দৃষ্টি কোণ থেকে আর মাকে মায়ের দৃষ্টিকোণ থেকে বুঝাতে হবে। কাজটা কঠিন তবে অসম্ভব নয়। একটা কথা মনে রাখবেন মা তো মা-ই। মা কষ্ট পায় এমন কাজ কখনোই করবেন না।
২. বউ আর মায়ের সম্পর্ক ভালো রাখতে আপনি দুজনকেই সময় দিন। কাজের ব্যস্ততা সারাজীবনই থাকবেই। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এই কাজের ব্যস্ততা শেষ হবেনা। এর মাঝেও সময় বের করতে হবে দুজনের জন্যই। মাসে একবার বউকে কোথাও না কোথাও ঘুরতে নিয়ে যান। 

বাইরে থেকে ফুচকা ও চটপটি খাইয়ে আনুন। খেতে খেতে বউয়ের সাথে হাসিমুখে গল্প করুন। কাজ থেকে ফেরার সময় বউয়ের জন্য আইসক্রিম বা চকলেট নিয়ে যান। তাহলে দেখবেন, বউয়ের চিল্লাচিল্লি একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে।

তবে চেষ্টা করুন মাকে একটু বেশি সময় দিতে। মায়ের সাথে গল্প করুন। মানুষের যখন বয়স হয়ে যায় তখন তাঁরা টাকা পয়সা চায় না। তাঁরা চায় সময়। তাঁরা চায় ভালোবাসা। ছেলে বা স্বামীর সঙ্গে সময় কাটাতে না পারলে তা নারীর ভেতর এক ধরনের হতাশা তৈরি হয়। এটি মাঝে মাঝে ক্ষোভ আকারে বেরিয়ে আসতে পারে।
৩. কখনোই রাগ করবেন না। জানি কাজটা কঠিন। রাগের সময় আমাদের মাথা গরম থাকে। কখনোই বউয়ের গায়ে হাত তুলবেন না। আবারও বলছি, কখনোই বউয়ের গায়ে হাত তুলবেন না। বেশি রাগ ওঠলে তাকে ধমক দিন। তার সাথে কথা বলার সময় সাবধানতা অবলম্বণ করুন। আঘাত পাবে এমন কথা বলা থেকে বিরত থাকুন। 

বিশেষ করে খোঁটা দিয়ে কথা যাবে না। দাম্পত্য কলহ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে একতরফাই শুরু হয়ে থাকে। সঙ্গী হয়তো রেগে গিয়ে কিছু বলছে, পাল্টা জবাব দিতে গিয়ে এক কথায় দুই কথায় কলহ শুরু হয়ে যায়। তখন আপনার উচিত জায়গাটা ত্যাগ করা। বাড়িতে থাকলে বাইরে চলে যান। কিছুটা সময় দূরত্ব থাকলে রাগ আপনা আপনিই কমে যাবে। 

দাম্পত্য কোন প্রতিযোগিতা নয় যে এক পক্ষকে জিততে হবেই। আপনার কথাই থাকবে, আপনার কথাই শেষ কথা ইত্যাদি ভাবনা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন। দাম্পত্য কলহে যদি স্বামী-স্ত্রী নিজেরে মধ্যে বনিমনা না হয় তবে পারিবারিকভাবে খোলামেলা আলোচনা করতে হবে।
৪. বউয়ের কাছ থেকে প্রত্যাশা কমিয়ে ফেলুন। সেও একজন মানুষ। সেও ক্লান্ত হতে পারে। তারও ভুল হতে পারে। তার ছোট ছোট ভুলগুলো ক্ষমা করে দিন। একজন মানুষ শতভাগ ভালো হতে পারে না। তার মাঝেও দুই একটা বদঅভ্যেস থাকতে পারে। এটা মেনে নিতে শিখুন। খারাপ দিকগুলো এড়িয়ে চলে ভালো দিকগুলোর প্রশংসা করুন। 

যৌন মিলনের সময় তার সাথে স্বাভাবিক আচরণ করুন। ঐ সময় অস্থির হয়ে যাবেন না। এখানেও ধৈর্য ধরতেই হবে। তাকে সম্মান দিন। বউকে সম্মান করা দোষের কিছু না। বউকে ভাবতে দিন সে আপনার থেকেও চালাক। বউয়ের সামনে চালাক সাজার মাঝে কোনো বাহাদুরি নেই। পৃথিবীতে সব নারীই নিজের থেকে চালাক মানুষকে অপছন্দ করে।

সংসারে অশান্তি দূর করার দোয়া ও আমল

ঘরে-পরিবারে অশান্তি ও কলহ-বিবাদ খুব বেশি দেখা যায়। শয়তানের প্ররোচনাই মূলত ঘরের এসব অশান্তি ও কলহ-বিবাদের মূল কারণ। আর শয়তানের ধোঁকা-প্ররোচনা থেকে মুক্ত থাকতে কুরআন-সুন্নাহর নির্দেশনা অনুযায়ী আমল ও দোয়ার বিকল্প নেই। কেননা আল্লাহ তাআলা মানুষকে এ মর্মে সতর্ক করেছেন- ‘নিশ্চয়ই শয়তান মানুষের প্রকাশ্য শত্রু’।

১. পরিবারে সালামের প্রচলন করা

পরিবারের কোনো সদস্য বাহির থেকে ঘরে প্রবেশ করলেই ঘরে অবস্থানরত পরিবারের অন্য লোকদের সালাম দেওয়ার প্রচলন চালু করা। এটি কুরআন-সুন্নাহর নির্দেশ ও কল্যাণ। আল্লাহ বলেন-

فَإِذَا دَخَلْتُم بُيُوتًا فَسَلِّمُوا عَلَى أَنفُسِكُمْ تَحِيَّةً مِّنْ عِندِ اللَّهِ مُبَارَكَةً طَيِّبَةً كَذَلِكَ يُبَيِّنُ اللَّهُ لَكُمُ الْآيَاتِ لَعَلَّكُمْ تَعْقِلُون

‘যখন তোমরা ঘরে প্রবেশ করবে তখন তোমরা তোমাদের স্বজনদের প্রতি সালাম করবে অভিবাদন স্বরূপ যা আল্লাহর কাছ থেকে কল্যাণময় ও পবিত্র। (সুরা নূর : আয়াত ৬১) ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন- তুমি যখন তোমার ঘরে প্রবেশ করবে তখন সালাম দেবে; তা তোমার জন্য এবং তোমার পরিবারের জন্য বরকত হবে।’ (তিরমিজি)

২. ঘরে প্রবেশের সময় দোয়া পড়া

বাহির থেকে ঘরে প্রবেশ করতেই সালামের পর সুন্নাতের দিকনির্দেশনা মোতাবেক এ দোয়া পড়া-

بِسْمِ اللهِ وَلَجْنَا وَ بِسْمِ اللهِ خَرَجْنَا وَ عَلَى اللهِ رَبِّنَا تَوَكَّلْنَا

উচ্চারণ : ‘বিসমিল্লাহি ওলাজনা ওয়া বিসমিল্লাহি খারাজনা, ওয়া আলাল্লাহি রাব্বিনা তাওয়াক্কালনা।’ (আবুদাউদ)

৩. খাবারের সময় দোয়া পড়া

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন- ’যখন কোনো ব্যক্তি তার ঘরে প্রবেশ করার সময় এবং খাবার খাওয়ার সময় দোয়া পড়ে, তখন শয়তান (একে-অপরকে) বলে- আজ এখানে তোমাদের রাতযাপন এবং রাতের খাবারের কোনো সুযোগ নেই। (মুসলিম)

হজরত আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যখন তোমাদের কেউ আহার করে সে যেন আহারের পূর্বে বলে-

بِسْمِ الله বিসমিল্লাহ; আল্লাহর নামে।

তারপর ডান হাত দিয়ে খাবার খাওয়া শুরু করতে হবে। (বুখারি ও মুসলিম)

অতঃপর এই দোয়াটি পড়া-
اَللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِيْهِ وَ اَطْعِمْنَا خَيْراً مِّنْهُ -

উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা বা-রিক্ লানা- ফী-হি ওয়া আত্বইমনা খাইরাম্ মিনহু।

অর্থঃ ‘হে আল্লাহ! আমাদেরকে এতে বরকত দিন, ভবিষ্যতে আরো উত্তম খাদ্য

দিন’। (তিরমিজি, আবু দাউদ, মিশকাত)

যদি কেউ খাওয়ার শুরুতে বিসমিল্লাহ বলতে ভুলে যায়, তবে সে যেন বলে-

بِسْمِ اللهِ أَوَّلِهِ وَ أَخِرِهِ

বিসমিল্লাহি ফি আওয়ালিহি ওয়া আখিরিহি। অর্থাৎ খাওয়ার শুরু ও শেষ আল্লাহর নামে। (তিরমিজি)

৪. সুরা বাকারা তেলওয়াত করা

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন ‘সবকিছুরই একটি চুড়া থাকে আর কুরআনের চুড়া হল সুরা আল-বাক্বারা। শয়তান যখন সুরা আল-বাকারার তেলাওয়াত শোনে তখন সে ঐ ঘর থেকে বের হয়ে যায়। যেখানে তা তেলওয়াত করা হয়।’ (মুসতাদরেকে হাকেম)

৫. অশ্লীল বিনোদন থেকে ঘর ও পরিবারকে হেফাজত করা

নিজ নিজ ঘর ও পরিবার-পরিজনকে গান-বাজনা এবং গান-বাজনার সরঞ্জাম থেকে মুক্ত রাখা। কেননা গান-বাজনা হলো শয়তানের আওয়াজ। আল্লাহ তাআলা বলেন-

’আল্লাহ বলেন চলে যা, অতপর তাদের মধ্য থেকে যে তোর অনুগামী হবে, জাহান্নামই হবে তাদের সবার শাস্তি-ভরপুর শাস্তি। তুই সত্যচ্যুত করে তাদের মধ্য থেকে যাকে পারিস স্বীয় আওয়াজ (বাদ্য-বাজনা) দ্বারা, স্বীয় অশ্বারোহী ও পদাতিক বাহিনী নিয়ে তাদেরকে আক্রমণ কর, তাদের অর্থ-সম্পদ ও সন্তান-সন্তুতিতে শরিক হয়ে যা এবং তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দে। ছলনা ছাড়া শয়তান তাদেরকে কোনো প্রতিশ্রুতি দেয় না।’ (সুরা বনি ইসরাঈল : আয়াত ৬৩-৬৪)

আল্লাহর জিকির যেমন শয়তানকে দূরে রাখে তেমনিভাবে গান এবং বাদ্যযন্ত্রের আওয়াজ রহমতের ফেরেশতাগণকে দূরে রাখে। আর ঘর থেকে যখন ফেরেশতা বের হয়ে যায়, তখন সেখানে শয়তান তার রাজত্ব কায়েম করে।

৬. ঘরে কুকুরের প্রবেশ থেকে সাবধান থাকা

নিজ নিজ ঘরকে কুকুরের প্রবেশ থেকে হেফাজত করা। অথচ অনেক বাড়িতে কুকুর পোষা হয়। হাদিসে এসেছে- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ’যে ঘরে ছবি এবং কুকুর থাকে সেঘরে ফেরেশতা প্রবেশ করে না।’ (বুখারি)

৭. ঘরে ছবি ও জীব-জন্তুর মূর্তি না রাখা

ছবি এবং বিভিন্ন জীব জন্তুর মূর্তি থেকে ঘরকে পরিচ্ছন্ন রাখা। হাদিসে এসেছে-

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ঘরে মূর্তি বা ছবি থাকে সেখানে ফেরেশতা প্রবেশ করে না।’ (মুসলিম)

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত ঘরে অবস্থানকালীন সময়ে কুরআন-সুন্নাহর দিকনির্দেশনা মেনে জীবন-যাপন করা। সুন্নাতের পুরোপুরি অনুসরণ ও অনুকরণ করা। তাতে শয়তানের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাবে মুমিন। কুরআন ও সুন্নাহর দিকনির্দেশনায় ঘরে ফিরে আসবে শান্তি ও নিরাপত্তা।

সংসারে অশান্তি নিয়ে উল্লেখযোগ উক্তি

০১. সংসারে কারো ওপর ভরসা করো না, নিজের হাত এবং পায়ের ওপর ভরসা করতে শেখো।

-উইলিয়াম শেক্সপিয়র

০২. সংসার হচ্ছে নদীর মোহনার মতো যেখানে মানুষ একটি বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে সকলের সুখ-দুঃখের অংশীদার হয়।

– রেদোয়ান মাসুদ

০৩. এই সংসারকে তারাই পরিবর্তন করতে সক্ষম হয় যারা তা করার জন্য পাগলের মতো লাফিয়ে পড়ে।

-রব সিলটানেন

০৪. হোক বা সংসার, যে ধর্মের নৌকা প্রস্তুতকরে সে ঠিকই পার হয়ে যায়।

-মহাভারত

০৫. সৌন্দর্যের আলোতে সংসার আলোকিত হয় না।

– রেদোয়ান মাসুদ

০৬. চোখের বিনিময়ে চোখ এর এই যুদ্ধে শেষ পর্যন্ত পুরো সংসারকেই অন্ধ হয়ে থাকতে হয়।

-মহাত্মা গান্ধী

০৭. অতীতে সংসার জীবন দুর্গন্ধযুক্ত, ঠান্ডা, নোংরা এবং অস্বস্তিকর ছিল,

কিন্তু এটি থেকেই আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে।

–লুসি ওয়ার্সলে

০৮. সুন্দরী মেয়েরা পারিবারিক জীবনে সবচেয়ে বেশি অসুখী হয়, কারণ তাদের উপর বহু পুরুষের অভিশাপ লেগে থাকে।

– রেদোয়ান মাসুদ

০৯. পুরো সংসার এর পরিবর্তন প্রয়োজন। তবে আগে নিজেকে ভালোভাবে পরিবর্তন করে নাও।

-ইউকো অনু

১০. এই জগৎ সংসার বিশাল, আমি অন্ধকার হয়ে যাওয়ার আগেই এর স্বাদ নিতে চাই।

-জন মুইর

১১. বিয়ে হয় সৌন্দর্য, চাকরি, ক্ষমতা ও টাকা পয়সা-সহ নানা পারিপার্শিক অবস্থা দেখে কিন্তু সংসার হয় দুটি মনের সাথে। বিয়ের কয়েক বছর পর দৃশ্যমান সকল মোহ কেটে যায় কিন্তু থেকে যায় শুধু একটি মন। সুতরাং মন সুন্দর তো সংসার সুন্দর।

– রেদোয়ান মাসুদ

১২. আমার পরিবার আমার শক্তি এবং আমার দুর্বলতা।

-ঐশ্বরীয়া রাই বচ্চন

১৩. সংসার কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। বরং এটাই সব।

-মাইকেল জে ফক্স

১৪. ঘৃণার এই সংসারে ভালোবাসা হলো সেই বিপ্লব যা সব কিছু কাটিয়ে তুলতে পারে।

-ব্র্যায়ান্ট এম.সি গিল

১৫. এটা পুরোপুরি আপনার হাতেই জগৎ সংসারকে অন্যদের জন্য ভালো করা।

-নেলসন ম্যান্ডেলা

১৬. জগৎ সংসারে যে পরিবর্তন দেখতে চাও, তা নিজের মধ্যেই করে ফেলো।

-মহাত্মা গান্ধী

১৭. সংসারে সাধু-অসাধুর মধ্যে প্রভেদ এই যে, সাধুরা কপট আর অসাধুরা অকপট।

-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

১৮. মনের মতো মানুষ ছাড়া সংসার করা আর ডাস্টবিনের পাশে বসে থাকা একই কথা।

– রেদোয়ান মাসুদ

১৯. সংসারে শান্তি পেতে হলে কি করবেন? নিজের বাড়িতে যান এবং পরিবারকে ভালোবাসুন।

-মাদার তেরেসা

২০. সংসার এর সবচেয়ে সুন্দর জিনিসটাকে কখনো ছোয়া কিংবা ধরা যায় না, তাকে শুধুই হৃদয় দ্বারা অনুভব করা যায়।

-হেলেন কেলার

সুখি পরিবার গঠনে নবীজির নির্দেশনা

সুখময় সংসারকে জান্নাতের সঙ্গে তুলনা করা হয়ে থাকে। অশান্ত ও কলহ-বিবাদে জড়ানো পরিবারের তুলনা শুধু জাহান্নামের সঙ্গে চলে।

পারিবারিক জীবনে সুখ, শান্তি ও কল্যাণ পেতে স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক আন্তরিকতা ও ভালোবাসার পাশাপাশি প্রিয় নবী (সা.)-এর নির্দেশিত পথ ও পদ্ধতি অবলম্বনের কোনো বিকল্প নেই। সংসারের সুখের জন্য স্বামী-স্ত্রী দু’জনের পালনীয় অতি গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় নিচে উল্লেখ করা হলো।

স্বামীর দায়িত্ব
দ্বীনদার স্ত্রী গ্রহণ করা

রাসূল (সাঃ) বলেন- যে বিবাহ করার ইচ্ছা করে, সে যেন দ্বীনকে প্রাধান্য দেয়। অন্য হাদিসে এসেছে, চারটি বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রেখে মেয়েদের বিয়ে করা হয়- (১) সম্পদ, (২) বংশমর্যাদা, (৩) সৌন্দর্য ও (৪) দ্বীনদারি। সুতরাং তুমি দ্বীনদারিকেই প্রাধান্য দেবে নতুবা তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে (সহিহ বুখারি)।

মনের ভালোবাসা মুখে প্রকাশ করা

হযরত খাদিজা (রাঃ) সম্পর্কে রাসূল (সাঃ) বলেছেন, ‘আমার মনে তার প্রতি ভালোবাসা ঢেলে দেওয়া হয়েছে’ (মুসলিম)। হযরত আয়েশা (রাঃ) কে বলেছেন, ‘সবার চেয়ে আয়েশা আমার কাছে এমন প্রিয়, যেমন সব খাবারের মধ্যে সারিদ (আরবের বিশেষ এক ধরনের খাদ্য) আমার কাছে বেশি প্রিয়’ (সহিহ বুখারি)। তাই স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসার কথা মুখে প্রকাশ করুন।

নিজেকে পরিপাটি রাখা

পুরুষরা তাদের সঙ্গিনীকে সুন্দরভাবে দেখতে পছন্দ করে। ঠিক একইভাবে তারা তাদের সঙ্গীকেও সুন্দরভাবে দেখতে পছন্দ করে। রাসূল (সাঃ) বলেন, ‘আমি আমার স্ত্রীদের জন্য এমনই পরিপাটি থাকা পছন্দ করি, যেমন আমি তাদের ক্ষেত্রে সাজগোজ করে থাকতে পছন্দ করি’ (বাইহাকি, হাদিস : ১৪৭২৮)।

স্ত্রীর প্রতি সব সময় আন্তরিক থাকা

স্ত্রীর সঙ্গে সব সময় আন্তরিক আচরণ করতে হবে। হজরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূল (সাঃ) ভালোবেসে কখনো কখনো আমার নাম হুমায়রা বা লাল গোলাপ বলে ডাকতেন (ইবনে মাজাহ)। তিনি আরও বলেন, পাত্রের যে অংশে আমি মুখ রেখে পানি পান করতাম তিনি সেখানেই মুখ লাগিয়ে পানি পান করতে পছন্দ করতেন (মুসলিম)।

স্ত্রীর সঙ্গে উত্তম আচরণ করা

স্ত্রীর সঙ্গে উত্তম আচরণ করা পারিবারিক সুখের অন্যতম চাবিকাঠি। তার পাওনাগুলো পরিপূর্ণভাবে আদায় করতে হবে। তার অধিকার বুঝিয়ে দিতে হবে। তার নিত্যদিনের শারীরিক ও মানসিক চাহিদা পুরা করতে হবে। রাসূল (সাঃ) বলেন- তোমাদের মধ্যে সেই ভালো যে তার পরিবারের কাছে ভালো। আর আমি আমার পরিবারের কাছে তোমাদের চেয়ে উত্তম (আত-তিরমিজি)।

স্ত্রীর মনোরঞ্জন

পারিবারিক শান্তির জন্য স্ত্রীর মনোরঞ্জন অপরিহার্য। রাসূল (সাঃ) আপন স্ত্রীদের সঙ্গে বিনোদনমূলক আচরণ করেছেন। আয়শা (রাঃ) এক সফরে নবী (সাঃ)-এর সঙ্গে ছিলেন। তিনি বলেন, আমি তার সঙ্গে দৌড় প্রতিযোগিতা করে তার আগে চলে গেলাম। অতঃপর আমি মোটা হয়ে যাওয়ার পর (অন্য আরেক সফরে) তার সঙ্গে আবারও দৌড় প্রতিযোগিতা করলাম, এবার তিনি (রাসূল সাঃ) আমাকে পেছনে ফেলে দিয়ে বিজয়ী হলেন। তিনি বলেন, এ বিজয় সেই বিজয়ের বদলা (আবু দাউদ)।

একে অপরের কাজে সহযোগিতা

নবীজি (সাঃ)-এর প্রিয়তমা স্ত্রী হজরত আয়েশা (রা.)-কে জিজ্ঞেস করা হয়, নবীজি কি পরিবারের লোকদের তাদের ঘরোয়া কাজে সহযোগিতা করতেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ, নবীজি ঘরের লোকদের তাদের কাজে সহযোগিতা করতেন এবং নামাজের সময় হলে নামাজের জন্য যেতেন (সহিহ বুখারি)। সুখী জীবনের জন্য সুযোগ পেলেই পারিবারিক কাজে সহায়তা করতে হবে।

পরিবারের সঙ্গে অধিক সময় কাটানো

হজরত উকবা ইবনে আমের (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর কাছে দু-জাহানের মুক্তির পথ কী, তা জানতে চাইলাম। উত্তরে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তিনটি উপদেশ দিলেন। ১. কথাবার্তায় আত্মসংযমী হবে। ২. পরিবারের সঙ্গে তোমার অবস্থানকে দীর্ঘ করবে। ৩. নিজের ভুল কৃতকর্মের জন্য আল্লাহর কাছে অনুতপ্ত হবে (তিরমিজি)।

সঙ্গিনীর সঙ্গে পরামর্শ করা

জীবনের যে কোনো বিষয়ে জীবন সঙ্গিনীর মতামতকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিতে হবে। নবীজি শুধু ঘরোয়া বিষয়ই নয় অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ক্ষেত্রে স্ত্রীদের মতামত নিতেন। ‘হুদায়বিয়ার সন্ধি’ নামক ইসলামি ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রেক্ষাপটে নবীজি তার স্ত্রী উম্মে সালমা (রাঃ)-এর কাছ থেকে পরামর্শ নিয়েছিলেন। পরবর্তী সময় যা অতি কার্যকরী বলে বিবেচিত হয় (বুখারি)।

আল্লাহর কাছে দোয়া

পরিবারে সুখ-শান্তির জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করতে হবে। কীভাবে দোয়া করতে হবে আল্লাহ আমাদের তা শিখিয়ে দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন, ‘হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের স্ত্রীদের পক্ষ থেকে এবং আমাদের সন্তানের পক্ষ থেকে আমাদের জন্য চোখের শীতলতা দান করো এবং আমাদের মুত্তাকিদের জন্য আদর্শস্বরূপ করো (আল কুরআন ২৫/৭)।

স্ত্রীর দায়িত্ব
স্বামীর প্রতি সম্মান দেখানো

স্বামীর আনুগত্য করা স্ত্রীর কর্তব্য। নবী করিম (সাঃ) বলেন, ‘যদি আমি কোনো মানুষকে অপর কারও জন্য সিজদা করার অনুমতি দিতাম, তবে নারীকে তার স্বামীকে সিজদা করতে নির্দেশ দিতাম’ (তিরমিজি)।

স্বামীর আদেশ পালন করা

রাসূল (সাঃ) বলেছেন, ‘স্বামী যখন তার প্রয়োজনে স্ত্রীকে ডাকে, সে যেন অবশ্যই তার কাছে আগমন করে, যদিও সে চুলার ওপর ব্যস্ত থাকুক। (অর্থাৎ যদিও সে রান্নাবান্নার কাজে ব্যস্ত থাকুক)’ (তিরমিজি)। অন্য হাদিসে রাসূল (সাঃ) বলেছেন, ‘যখন কোনো পুরুষ তার স্ত্রীকে তার শয্যায় ডাকে (পারস্পরিক মিলনের উদ্দেশ্যে)। 

এরপর স্ত্রী যদি স্বামীর আহ্বানে সাড়া না দেয়, আর স্বামী যদি (তার এ আচরণে কষ্ট পেয়ে) তার প্রতি নারাজ অবস্থায় রাত অতিবাহিত করে, এমতাবস্থায় জান্নাতের বাসিন্দারা তাকে সকাল হওয়া পর্যন্ত লানত দিতে থাকে’ (বুখারি)। এ দুটি হাদিস থেকে স্পষ্টভাবে বোঝা যায় যে, স্বামীর আদেশ পালন করা স্ত্রীর জন্য অপরিহার্য।

স্বামীকে কষ্ট না দেওয়া

রাসূল (সাঃ) বলেছেন, ‘যে নারী তার স্বামীকে জীবনযাপনের ক্ষেত্রে দুনিয়াতে কষ্ট দেয়, তার সম্পর্কে জান্নাতের হুর-গেলমানরা লানত দিয়ে বলে, হে হতভাগা! তাকে কষ্ট দিও না। আল্লাহতায়ালা তোমাকে নিশ্চিহ্ন করুন!’(তিরমিজি)।

স্বামীর সন্তুষ্টি অর্জন

রাসূল (সাঃ) বলেছেন, ‘যদি কোনো স্ত্রীলোক এমতাবস্থায় মারা যায় যে, তার স্বামী তার ওপর সন্তুষ্ট ছিল, তবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে’ (তিরমিজি)। এ হাদিস থেকে বোঝা যায়, স্বামীর সন্তুষ্টিতে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন হয়।

স্বামীর জন্য সাজগোজ

একবার নবীজি (সাঃ) সফর থেকে ফিরে মদিনায় আসার পর বাড়িতে না গিয়ে সাহাবিদের বললেন, তোমরা এখানে থেমে যাও এবং বাড়িতে খবর পাঠাও যেনো তোমাদের স্ত্রীরা নিজেদের তোমাদের জন্য প্রস্তুত করে রাখতে পারে। রাসূল (সাঃ)-এর স্ত্রীরা নিজেকে রাসূল (সাঃ)-এর সামনে সাজগোজ করে উপস্থাপন করতেন (বুখারি)।

স্বামীর দোষ গোপন রাখা

নারীদের মধ্যে এ প্রবণতা খুব বেশি লক্ষ করা যায়- তারা স্বামীর দোষ অন্যের কাছে শেয়ার করে মন হালকা করতে চায়! এটা ইসলামি শরিয়তে হারাম ও কবিরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত। এতে করে সংসারে কলহ ও অবিশ্বাস সৃষ্টি হয় এবং সুখ-শান্তি চলে যায়। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন, ‘ধ্বংস তাদের জন্য, যারা অগ্র-পশ্চাতে দোষ বলে বেড়ায়’ (সূরা হুমাজাহ-১)।

স্বামীর আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সুসম্পর্ক

ইসলামে আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষার প্রতি খুব বেশি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। রাসূল (সাঃ) বলেন, ‘আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না’-(বুখারি ও মুসলিম)। সুখী পারিবারিক জীবনের জন্য স্বামীর আত্মীয়দের প্রতি স্ত্রীর এবং স্ত্রীর আত্মীয়দের প্রতি স্বামীর সুসম্পর্ক রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

বিপদের সময় স্বামীর পাশে দাঁড়ানো

বিপদ আপদ ও পেরেশানির সময় স্বামীকে সান্ত্বনা দেওয়া সুন্নত। যেমন রাসূল (সাঃ) ওহি লাভের পর অজানা শঙ্কায় আতঙ্কিত হয়ে গৃহে ফিরে এলে হজরত খাদিজা (রাঃ) তাকে সান্ত্বনা দেন, ‘কখনো না (শঙ্কার কোনো কারণ নেই)। নিশ্চয় আপনি আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখেন। অন্যের বোঝা বহন করেন। মেহমানের আপ্যায়ন করেন। (আপনার কিছু হবে না)। (বুখারি)।

স্বামীর কৃতজ্ঞতা স্বীকার

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) মেরাজ থেকে ফিরে এসে বলেন, ‘আমি জাহান্নাম কয়েকবার দেখেছি, কিন্তু আজকের মতো ভয়ানক দৃশ্য আর কোনো দিন দেখিনি। তার মধ্যে নারীর সংখ্যাই বেশি দেখেছি। তারা বলল, আল্লাহর রাসূল কেন? তিনি বললেন, তাদের অকৃতজ্ঞতার কারণে। জিজ্ঞেস করা হলো, তারা কি আল্লাহর অকৃতজ্ঞতা করে? ব

ললেন, না, তারা স্বামীর অকৃতজ্ঞতা করে, তার কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে না। তুমি যদি তাদের কারও ওপর যুগ-যুগ ধরে অনুগ্রহ কর, এরপর কোনো দিন তোমার কাছে তার বাসনা পূর্ণ না হলে সে বলবে, আজ পর্যন্ত তোমার কাছে কোনো কল্যাণই পেলাম না’ (মুসলিম)।

অযথা সন্দেহ পরিহার করুন

আল্লাহ বলেন, হে মুমিনরা, তোমরা অধিক অনুমান থেকে দূরে থাকো। নিশ্চয় কোনো কোনো অনুমান তো পাপ। আর তোমরা গোপন বিষয় অনুসন্ধান করো না এবং একে অপরের গিবত করো না (সূরাঃ হুজুরাত, আয়াতঃ ১২)। যে পরিবারে সন্দেহের রোগ বাসা বাঁধে সেখানে সুখের আশা করা বৃথা। যে কোনো বিষয়ে পরস্পরে বোঝাপড়া ও আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে হবে।

দাম্পত্য সম্পর্ক ঠিক রাখার উপায়

মতের অমিল, ভুল–বোঝাবুঝি, অসহিষ্ণুতা, রুক্ষ মেজাজ, আমিত্বের মতো নানা কারণে সুন্দর দাম্পত্য জীবনে ঘটতে পারে ছন্দপতন। দুজন মানুষ একসঙ্গে থাকলে ঝগড়া হবে, তাই বলে ভালোবাসার চর্চা বন্ধ করা যাবে না। রাগের বশে জীবন এলোমেলো করে ফেলারও কোনো মানে হয় না। প্রকৃতির নিয়মেই প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে হবে।

১. যেকোনো সম্পর্কেই পারস্পরিক সম্মান ও শ্রদ্ধাবোধ ভীষণ জরুরি। হোক সেটা বন্ধুত্ব, প্রেম কিংবা বিবাহিত জীবন। যেকোনো কথা, আচার কিংবা ব্যবহারের মধ্যে সেই সম্মান ও শ্রদ্ধাবোধ যেন প্রতীয়মান থাকে। না হলে সেখানে একটা অদৃশ্য দূরত্ব সৃষ্টি হবে, যা পরস্পরের অজান্তে সম্পর্ককে বিষাক্ত করে তুলবে।
২. স্বামী–স্ত্রী দুজনকেই একে অপরের প্রতি বিশ্বাস রাখতে হবে। দুজনের কাছেই দুজনের আস্থাভাজন হওয়া জরুরি। আর দুজনের মধ্যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সৃষ্টি যদি হয়ও তাহলে বিরূপ প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে সমঝোতার মাধ্যমে সেটার সমাধান করুন।
৩. যেহেতু একজীবন একসঙ্গে অতিক্রম করার লক্ষ্যে ‘বিয়ে’ নামক এই বন্ধন, তাই এখানে ভালোবাসার রকমফের হবে নিঃস্বার্থ। কিছু পাওয়ার প্রত্যাশা অনেক সময় শূন্যতা সৃষ্টি করে। তাই প্রতিদানহীন ভালোবাসা সঙ্গীর মধ্যে সঞ্চার করতে পারে অনন্য এক অনুভব।
৪. সংসারজীবনে ছোট–বড় অনেক ঘটনাই ঘটতে পারে। হতে পারে মতানৈক্য। তাই বলে সেসব বিষয়কে ইস্যু করে নিজেদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি করা নিছক নির্বুদ্ধিতা। রাগ না দেখিয়ে বরং নমনীয়ভাবে আলোচনার মাধ্যমে উদ্ভূত সমস্যার সমাধান করুন।
৫. দাম্পত্য নারী–পুরুষের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিশেষ প্রয়োজন। এতে একজনের কাছে অন্যজন বিভিন্ন জটিলতা ও অসুবিধা সহজে শেয়ার করতে পারে। আর সেখান থেকে একটা সমাধান বের হয়ে আসে। তবে দাম্পত্যে যদি বন্ধুভাবাপন্ন সম্পর্ক না থাকে, তাহলে অনেক বিষয় অমীমাংসিত থেকে যায়, যা থেকে দূরত্বের সৃষ্টি হয়।
৬. দাম্পত্যে সুখী হতে ভালো শ্রোতা হওয়া খুব জরুরি। অনেক সময় দেখা যায়, স্ত্রী কিছু একটা বলছে আর স্বামী ফোন স্ক্রল করছে অথবা টিভিতে মনোযোগ দিয়ে আছে। হয়তো কিছুটা শুনছে আর অন্যদিকে চেয়ে হুঁ–হা করছে। এতে পরোক্ষভাবে অপর পক্ষকে অসম্মান করা হয়।
৭. যেকোনো সাফল্য বা অর্জনে স্বামী-স্ত্রী পরস্পরকে অভিবাদন জানাবে ও উৎসাহ দেবে। এতে দুজনের মধ্যে নির্ভরতা ও ঘনিষ্ঠতা বাড়বে। প্রশংসা পেলে আরও ভালো কিছু করার প্রেরণা জন্মে।
৮. দাম্পত্যে নিজের পরিসর বলেও একটা বিষয় থাকা দরকার। অনেক স্বামী–স্ত্রী আছেন, যাঁরা একজন আরেকজনের সঙ্গে গায়ে গায়ে লেগে থাকেন, সঙ্গীর সবকিছুতে নজরদারি করেন। এটা একেবারেই ঠিক না। প্রত্যেক মানুষেরই চিন্তাভাবনার একটা নিজস্ব জগৎ থাকে।
৯. উপলক্ষ থাকুক বা না থাকুক দুজন মিলে মাঝে মাঝে দূরে কোথাও ঘুরতে যাওয়া জরুরি। বেড়ানো কিংবা একসঙ্গে বাইরে খাওয়া একঘেয়ে জীবনে ভিন্নমাত্রা যোগ করতে সাহায্য করে। তাই ব্যস্ততার ভেতরেও সময় বের করে মাঝে মাঝে ডেটিং করা দাম্পত্য জীবনে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
১০. সঙ্গীর সঙ্গে নিয়মিত ঘনিষ্ঠ হতে হবে। কথায় আছে ব্যবসা–বাণিজ্যের বড় বড় চুক্তি যেমন রেস্তোরাঁ কিংবা হোটেলে হয়, ঠিক তেমনি স্বামী–স্ত্রীর যত মান–অভিমান কিংবা মনোমালিন্য সব ঠিক করে দিতে পারে শোবার ঘর। উৎকৃষ্ট অন্তরঙ্গতা ও স্পর্শ দাম্পত্যকে করে আরও সতেজ। একটা উপভোগ্য ও সুন্দর সময় কাটানোর পর দুজনের মধ্যকার অনেক বিষয়ই নিমেষে গৌণ হয়ে যায়।

লেখকের মন্তব্যঃ

সংসার জীবনে তখনেই ‍সুখ আসে যখন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্ক মধুর থাকে। একটা উক্তি প্রচলিত আছে- ‘‘সংসার সুখের হয় রমনীর গুণে’’। আসলে শুধু রমনী ভালো হলেই হবেনা। দুজনকেই ভালো হতে হবে। একজন খুব ভালো, অন্য জন সেই রকম খারাপ তাহলে হবে না। তবে আজকাল বর্তমান সমাজে দেখা যাচ্ছে, মেয়েদের কিছু ভুলের কারণেই মূলত সংসারে অশান্তি নেমে আসছে। 

অবশ্যয় এই সমস্ত ভূলগুলো থেকে মেয়েদের বেরিয়ে আসতে হবে। ছোট বেলাই দেখেছি বয়স্কো মহিলাদে তাদের স্বামী বাড়িতে আসা মাত্রই তাদের সেবায় লেগে যেতেন। তারা স্বামীর সমস্ত আদেশ মেনে নিতেন। আর এখন আদেশ তো দূরের কথা, অনুরোধ করেও শুনে না। যাই হোক স্ত্রীরা স্বামীর খেদমত করুন, আর স্বামীরা স্ত্রীদের সঠিক মর্যাদা দিন, দেখবেন সংসারে সুখ এমনিতেই চলে আসবে। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।




এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪