ঐতিহাসিক ৫ আগষ্ট-২৪ দেশে কি কি ঘটেছিল সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন এখানে

২০২৪ সালে ৫ আগষ্ট বাংলাদেশ দ্বিতীয় বার স্বাধীনতা লাভ করে একথা আমরা সবাই জানি। এত বড় অসম্ভব ব্যাপার কিভাবে সম্ভব হলো তাকি আমরা সবাই জানি ?
ঐতিহাসিক ৫ আগষ্ট-২৪ দেশে কি কি ঘটেছিল সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন এখানে

হ্যাঁ বন্ধুরা আজ আপনাদের সাথে ৫ আগষ্টের বিজয়ের পেছনের অনেক অজানা সব তথ্য নিয়ে হাজির হয়েছি। এখানে জানতে পারবেন- এতো বল প্রয়োগ করার পরও কেন সরকারকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালাতে হলো।

ভূমিকাঃ ৫ আগষ্ট-২৪ এর বিজয়ের নেপস্থের কিছু ঘটনাবলী।

সূচীপত্রঃ

কোটা সংস্কার আন্দোলনের ডাকে ঢাকা ঘেরাও
৫ আগষ্টে অনেক আন্দোলনকারীদের হত্যা করে সরকারি বাহিনী
খুনি হাসিনার পদত্যাদ করে দেশ ত্যাগ
৫ আগষ্ট বাংলাদেশের দ্বিতীয় বিজয়
কোটা সংস্কার আন্দোলনের ফল
এমপি, মন্ত্রী এবং সরকারি দোষরদের আত্নগোপন
৫ আগষ্ট-২৪ হামলা, অস্ত্র লুট ও অগ্নিসংযোগ
৫ আগষ্টে বিভিন্ন দোকানে লুটপাট
লেখকের মন্তব্যঃ

কোটা সংস্কার আন্দোলনের ডাকে ঢাকা ঘেরাও

৫ আগষ্ট-২৪ বেলা ১১টার দিকে শাহবাগ এলাকায় বিক্ষোভকারীরা জড়ো হতে থাকে। এসময় ছাত্রলীগ-যুবলীগ-আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সেখানে এলে লাঠিসোঁটা নিয়ে তাদের ধাওয়া দেন বিক্ষোভকারীরা। পরে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দৌড়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে আশ্রয় নেয়। 

পরে আন্দোলনকারীরা বিএসএমএমইউর ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। ডেইলি স্টার জানিয়েছে যে সকাল ১১টার দিকে এক দল লাঠিধারী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) পেছনের গেট দিয়ে চত্বরে আসে। সেখানে তারা হঠাৎ হামলা চালিয়ে ১০-১৫টি মোটরসাইকেল ও দুই-তিনটি অ্যাম্বুলেন্সে আগুন দেয়। 

চত্বরে থাকা ব্যক্তিগত গাড়িও পুড়িয়ে দিয়ে পেছনের গেট দিয়ে তারা আবার  পালিয়ে যায়। তাদের হাতে ছিল রড, হস্টিস্টিক ও দেশি-বিদেশি অনেক অস্ত্র। তারা মুখোশ পরা ছিল। তাদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে এই হামলাকারীরা সরকার সমর্থক বলে দাবি করেছে শাহবাগে অবস্থান করা আন্দোলনকারী ছাত্ররা।

দুপুর ১২টার পর সরকারি নির্দেশে মোবাইল ইন্টারনেটের ফোর-জি সেবা বন্ধ করে দেয়া হয়। সাথে দেশের ইন্টারনেট সংযোগ থেকে (ব্রডব্যান্ডসহ) মেটা প্ল্যাটফর্ম বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করে সরকার। এর ফলে এই প্ল্যাটফর্মের ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ হয়ে যায়।

দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সন্ধ্যা ৬টা থেকে সারা দেশে কারফিউ জারি করা হয়েছে বলে জানানো হয়। বিকেলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করে সোমবার থেকে তিন দিনের (৫,৬ ও ৭ আগষ্ট)  ঘোষণা করে সাধারণ ছুটি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নতুন কর্মসূচি লং মার্চ টু ঢাকা ঘোষণা করে। প্রথমে ৬ আগষ্ট পালন করার কথা থাকলেও পরে তা একদিন এগিয়ে ৫ আগষ্ট নির্ধারণ করা হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ বলেন-

“ পরিস্থিতি পর্যালোচনায় এক জরুরি সিদ্ধান্তে আমাদের ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি ৬ আগষ্ট থেকে পরিবর্তন করে ৫ আগষ্ট করা হলো। অর্থাৎ আগামীকালই সারা দেশের ছাত্র-জনতাকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করার আহ্বান জানাচ্ছি। 
                                                                  — বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ

৫ আগষ্টে অনেক আন্দোলনকারীদের হত্যা করে সরকারি বাহিনী

৫ আগষ্ট ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সারাদেশে জনসাধারনের উপর ব্যাপক গুলি করে, যাতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘাতে নিহত হন অন্তত ১০৯ জন। দুপুরে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আন্দোলনরত গনমানুষের উপর লক্ষ্য করে গুলি করেন। এতে ৩০ জন নিহত হয়। 

 যাত্রাবাড়ীর ঘটনার একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, “ জোহরের নামাজ আদায়ের পর আমরা সবাই যাত্রাবাড়ী থানার সামনে ছিলাম। হঠাৎ পুলিশ আমাদের ওপর গুলি করতে শুরু করে। আমি অন্তত ১০–১৫ জনকে থানার সামনে মরে পড়ে থাকতে দেখি। পরে যখন গোলাগুলি থামে, তখন থানার সামনে পড়ে থাকা লাশগুলো নিয়ে আসি। ”

রাজধানীর উত্তরায় পুলিশের গুলিতে ১০ জন, সাভারে ১৮ জন, কুষ্টিয়া শহরে পুলিশের গুলিতে ৬ জন, হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে পুলিশের গুলিতে ৬ জন, মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলায় নৌ পুলিশের গুলিতে ব্যক্তি ১ জন, গাজীপুরের শ্রীপুরে বিজিবির গুলিতে ৫ জন নিহত হন ও অর্ধশতাধিক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হন। গাজীপুরের কালিয়াকৈরের সফিপুর আনসার–ভিডিপি একাডেমিতে আনসার সদস্যদের গুলিতেও মারা যান ২ জন।

খুনি হাসিনার পদত্যাদ করে দেশ ত্যাগ

৪ আগষ্টে সরকার ৩ দিনের কারফিউ জারি করার পর ৫ আগষ্টে চলছিল প্রথম দিনের কারফিউ। এদিন সকালের পরিবেশ বেশ থমথমে, সতর্ক অবস্থানে ছিল ঢাকার পুলিশ। তবে কারফিউ অমান্য করে বেলা ১১ টার পর থেকে সারা দেশের শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণ শাহবাগে জড়ো হতে শুরু করে। তারপর শাহবাগ থেকে আন্দোলনকারীরা গণভবনের দিকে পদযাত্রা শুরু করেন। 

এ সময় শেখ হাসিনা বেলা দুইটার দিকে সেনা প্রধানের চাপে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন এবং আড়াইটার দিকে বঙ্গভবন থেকে একটি সামরিক হেলিকপ্টারে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উদ্দেশ্যে দেশ ত্যাগ করেন। তারপর বেলা তিনটার দিকে সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন এবং শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের খবরটি প্রচার করেন। 

এদিকে গণভবনের দখন নেয় বিক্ষোভকারীরা। লুটপাট হয় গণভবন। কিন্তু সেদিন রাতের মধ্যেই লুটপাট হওয়া ৮০ শতাংশ জিনিসপত্র কর্তৃপক্ষের কাছে ফিরিয়ে দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা। ঐদিন গণভবনের একেকটা জিনিস একেক জনকে নিয়ে যেতে দেখা যায়। এবং সেখানে গণকবরের সন্ধান পান।

৫ আগষ্ট বাংলাদেশের দ্বিতীয় বিজয়

বেলা ২ টায় খবর আসে যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জনগণের উদ্দেশে বক্তব্য দেবেন। আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে সে সময় পর্যন্ত জনসাধারণকে সহিংসতা পরিহার করে ধৈর্য ধারণ করার অনুরোধ করেন। তখনই মানুষ বুঝে যায়, পট বদলে যাচ্ছে। মানুষ একে একে ঘর থেকে বের হতে শুরু করে। 

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রাস্তায় মানুষকে আর বাধা দেয়নি। বেলা আড়াইটায় শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার খবরের পর লাখো মানুষের মিছিল, স্লোগানে মুখর হয় ঢাকাসহ সারা দেশ। বেলা পৌনে দুইটার দিকে মোবাইল ইন্টারনেটও চালুর নির্দেশনা দেওয়া হয়। এসময় রাজধানীর শাহবাগে হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে। বিভিন্ন জায়গা থেকে সেখানে মানুষ স্লোগান দিয়ে আসতে থাকে।

অবশেষে ছাত্র ও জনতার ২৩ দিনের দেশ কাঁপানো আন্দোলনে পতন হলো আওয়ামী লীগ সরকারের। শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগপত্র জমা দেন। এরপর বঙ্গভবন থেকেই হেলিকপ্টারে দেশ ছাড়েন। সে সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন তাঁর বোন শেখ রেহানা। বেলা আড়াইটায় হাসিনা পালিয়ে যাবার পর মিছিল নিয়ে গণভবনে প্রবেশ করে অসংখ্য মানুষ।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের ফল

প্রধানমন্ত্রী পালিয়ে যাবার পর দুপুরে সেনা সদর দপ্তরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। বৈঠকে ডাক পান বাংলাদেশ জামাতে ইসলামের আমির, জাতীয় পার্টির আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও মুজিবুল হক চুন্নু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মির্জা আব্বাস।

বিকেল চারটায় জনগণের উদ্দেশে ভাষণ দেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। ভাষনে সেনাপ্রধান বলেন,

“ দেশে একটা ক্রান্তিকাল চলছে। আওয়ামী লীগ ছাড়া সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের আমন্ত্রণ করেছিলাম। আমরা সুন্দর আলোচনা করেছি। সেখানে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হবে। এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীন দেশের সব কার্যক্রম চলবে। আমরা মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে যাব। এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের বিষয়ে ওনার সঙ্গে কথা বলব। তাঁর সঙ্গে আলাপ–আলোচনা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে দেশ পরিচালনা করা হবে।
                                                                                                            — জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান

সমস্ত হত্যা ও অন্যায়ের বিচার হবে বলে জনগণের উদ্দেশে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান আরো বলেন, “ আপনারা সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি আস্থা রাখেন। আমরা সমস্ত দায়দায়িত্ব নিচ্ছি। আপনাদের কথা দিচ্ছি, আশাহত হবেন না। যত দাবি আছে, সেগুলো আমরা পূরণ করব। দেশে শান্তিশৃঙ্খলা ফিরিয়ে নিয়ে আসব। আমাদের সহযোগিতা করেন। প্রতিটি হত্যার বিচার হবে। ”
                                                                                                            — জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান

ভাঙচুর, হত্যা, সংঘর্ষ ও মারামারি থেকে জনগণকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে সেনাপ্রধান বলেন, "আপনারা যদি কথামতো চলেন, একসঙ্গে কাজ করি। নিঃসন্দেহে সুন্দর পরিণতির দিকে অগ্রসর হতে পারব। মারামারি ও সংঘাত করে আর কিছু পাব না। তাই দয়া করে ধ্বংসযজ্ঞ, অরাজকতা ও সংঘর্ষ থেকে বিরত থাকুন। সবাই মিলে সুন্দর ভবিষ্যতের দিকে অগ্রসর হব।"

শেখ হাসিনা পালিয়ে যাবার খবর শুনে আনন্দে ফেটে পড়ে পুরো দেশ। বিকেলে রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব এলাকায় জড়ো হওয়া হাজারো মানুষকে বিজয় উল্লাস করতে দেখা যায়। হাসপাতালের কর্মীদের রাস্তায় এসে নাচতে দেখা গেছে। অসুস্থ নারীরা হুইলচেয়ার নিয়ে বেরিয়ে আসেন। রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় রিকশায় করে তরুণ-তরুণীদের হাতে ও মাথায় পতাকা নিয়ে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়।

এমপি, মন্ত্রী এবং সরকারি দোষরদের আত্নগোপন

শেখ হাসিনা ছাড়াও তার প্রশাসন ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত বেশ কয়েকজন ব্যক্তি বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যায়। এই খবর পেয়ে আওয়ামী লীগের এমপি, মন্ত্রী, ছোট-বড় অনেক নেতাকর্মী এবং সরকারি বেশ কিছু কর্মকর্তা দেশের মধ্যে আত্নগোপনে চলে যায়। এদের মধ্যে প্রায় ৬২৬ জন মত বিভিন্ন সেনানিবাসে আশ্রয় নেয়। বিমান বন্দর এবং সীমান্ত দিয়ে পার হওয়ার সময় হাতেনাতে ধরা পড়েন অনেকে। প্রায় প্রতিদিনই কেউ না কেউ ধরা পড়ছে আইন শৃংখলা বাহিনীর হাতে।

৫আগষ্ট-২৪ হামলা, অস্ত্র লুট ও অগ্নিসংযোগ

শেখ হাসিনা পালিয়ে যাবার পর বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ, আওয়ামী লীগ সম্পর্কিত ব্যক্তিবর্গ ও পুলিশের হত্যা, বাসা বাড়ি ভাংচুর ও থানা পুড়িয়ে দেবার ঘটনা ঘটে। হাসিনার পদত্যাগের পর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, গণভবন ও সংসদ ভবনে অসংখ্য মানুষ ঢুকে পড়েন। তারা গণভবন ও সংসদ ভবন লুট করেন। 

বেলা ৪টায় আওয়ামী লীগের ঢাকা জেলা কার্যালয়ে আগুন দেন আন্দোলনকারীরা। প্রধান বিচারপতি বাসভবনে হামলা করে বিক্ষোভকারীরা। এরপর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে আগুন দেয় বিক্ষোভকারীরা। এদিন একাত্তর টিভি, সময় টিভি, এটিএন বাংলা ও মাই টিভির কার্যালয় হামলা পরিচালনা করা হয়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ধানমন্ডির বাসায় ভাঙচুর করা হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে কয়েক শত ব্যক্তি আকস্মিকভাবে পুলিশ সদরদপ্তরে হামলা চালায়। ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সন্ধ্যা ৬টা হতে ৬ ঘণ্টার জন্য বন্ধ করে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। 

রাজধানী গুলিস্তানে পুলিশ সদর দপ্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে (ডিএসসিসি) হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় দুটি ভবনে আগুন দেওয়ার ঘটনাও ঘটে। রাজধানীর গুলশানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার বাড়ি এবং সাবেক অর্থ মন্ত্রী লোটাস কামাল টাওয়ার ভবনে আগুন দিয়েছে উত্তেজিত জনতা। 

রাজধানীর গুলশান ২ নম্বরের ৭১ নম্বর সড়কে অবস্থিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের বাসায় হামলা ও অগ্নিসংযোগ করেছে উত্তেজিত জনতা। এসময় বাসার সামনে থাকা দুটি গাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় ঐ জনতা।

৫ আগষ্টে বিভিন্ন দোকানে লুটপাট

৫ আগষ্ট বিজয়ের পর কিছু পথভ্রষ্ট লোক ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন শহরে, উপজেলা পর্যায়ে এমনকি ইউনিয়ন ও গ্রামেও আওয়ামী লীগ বন্থি লোকের দোকানপাট ভাংচুর করে লুটপাট করেছে। এমপি, মন্ত্রী বা আওয়ামী লীগের ছোট-বড় সপিং মল, বিপনীবিতানে অগ্নিসংযোগ করে মালামাল লুটপাট করা হয়। বাদ যায়নি সরকারি স্থাপনাও। গণভবণ থেকে শুরু করে, সিটি ভবণ, পুলিশ ষ্টেশন ও জেলা পরিষদ ভবণসহ সরকারি নানা স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ করে লুটপাট করা হয় মূল্যবান জিনিস পত্র।

লেখকের মন্তব্যঃ

৫ আগষ্ট-২৪ অবশ্যয় বাংলাদেশের মানুষের কাছে একটি স্বরনীয় দিন হয়ে থাকবে। এটা বাংলাদেশের দ্বিতীয় বিজয় উল্লেখ করা হচ্ছে। যারা বিজয়ের জন্য লড়াই করেছেন, আর যারা ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন বা লুকিয়ে আছেন এবং যারা এই বিজয় উপভোগ করছেন সবার কাছে দিন সত্যিই মনে রাখার মতো। 

এই আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেনে তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং যারা আহত হয়ে আছেন তাদের দ্রুত সুস্থ্যতা কামনা করছি। এবং সেই সাথে তাদের পরিবারের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি। 

অত্যাচারি, জালেম সরকার উৎখাতের পর নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। এই সরকারকে সাধুবাদ জানাই এবং সেই আরো দাবি জানাই ভবিষ্যতে যেন এই রকম জালেম সরকার ক্ষমতার মসনদে বসতে না পারে সেই ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪