অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কে কোন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেলেন বিস্তারিত জেনে নিন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কারণে খুশি হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ত্যাগ করেন। এসময় দেশ পরিচালনার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। আপনি কি জানেন উপদেষ্টা মন্ডলীরা কে কোন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেলেন?
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কে কোন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেলেন বিস্তারিত জেনে নিন

হ্যাঁ বন্ধুরা আজ আপনাদের সামনে নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাগণের নাম ও তাদের দপ্তর বন্টন নিয়ে আলোচনা করবো। আসুন আর দেরি না করে শুরু করা যাক।

ভূমিকাঃ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাগণের দপ্তর বন্টন।

সূচীপত্রঃ

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কি
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংবিধান
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা গণের নামের তালিকা
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কে কোন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেলেন
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ কত দিন
লেখকের মন্তব্যঃ

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কি

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যবস্থা হলো ২০২৪ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনের পরিপেক্ষিতে সৃষ্ট অসহযোগ আন্দোলনের ফলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর সংগঠিত অস্থায়ী সরকার ব্যবস্থা। 

এই ব্যবস্থা ২০২৪ সালের ৫ই আগস্ট বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন সমন্বয়ক এবং সেনাবাহিনী প্রধান দ্বারা নিশ্চিত করা হয় এবং ৮ই আগস্ট শপথ গ্রহণের মাধ্যমে ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয় এটি সাবেক বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার উত্তরসূরী।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংবিধান

বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধানে ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার’ নামে কোন ব্যবস্থার উল্লেখ নেই। তবে কাছাকাছি ধরনের একটি ব্যবস্থার কথা আগে বলা ছিল, যেটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নামে পরিচিত। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান ও ক্ষমতা হস্তান্তরের লক্ষ্যে ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশের সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করা হয়। 

পরবর্তীতে এই পদ্ধতি অনুসরণ করেই তিনটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু ২০১১ সালে এই ব্যবস্থা বাতিল করে সংবিধান সংশোধন করে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী, নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ক্ষমতায় থাকা সরকারের অধীনেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। 

এরপর ওই সরকারই বিজয়ী রাজনৈতিক দল বা জোটের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন। কিন্তু নির্বাচন ছাড়াই হুট করে সরকারের পতন ঘটায় বর্তমানে দেশে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সেটি বিবেচনায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের দাবি উঠেছে। অথচ এ ব্যাপারে সংবিধানে কিছুই বলা নেই, বলছিলেন সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহদীন মালিক। 

মূলতঃ সে কারণেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ঘিরে আইনগত এক ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। সংবিধানকে রাষ্ট্র পরিচালনার মূল ভিত্তি বলা হয়ে থাকে। ফলে এটি না থাকলে দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে নানান সমস্যা ও সংকট তৈরি হবে। এখন সংবিধানে উল্লেখ না থাকলেও প্রয়োজনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা যেতে পারে কি? কোন উপায় কি আছে? 

সংবিধান বিশেষজ্ঞ শাহদীন মালিক বলেন, উপায় অবশ্যই আছে, তবে সেটি করতে হলে বর্তমান সংসদ বহাল রেখেই সরকার গঠনের চেষ্টা করতে হবে। এক্ষেত্রে বর্তমান সংসদ সদস্যদের মধ্যে যতজনকে পাওয়া যায়, তাদেরকে নিয়েই নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করতে হবে। সংবিধান রক্ষার স্বার্থে এটি নামমাত্র মন্ত্রিসভা হবে। 

তাদেরকে দিক নির্দেশনা দেয়ার জন্য উপদেষ্টামণ্ডলী রাখা হবে এবং তারাই রাষ্ট্র পরিচালনার মূল দায়িত্ব পালন করবেন। কিন্তু বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ইতোমধ্যেই সংসদ ভেঙে দিয়েছেন। যদিও সংবিধান অনুযায়ী সে এখতিয়ার রাষ্ট্রপতির আছে কী-না, সেটি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী, এককভাবে সংসদ বিলুপ্ত করার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির নাই, বলেন আইনজীবী শাহদীন মালিক। তিনি আরো বলেন, সংবিধানের ৭২ অনুচ্ছেদে পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে যে, প্রধানমন্ত্রীর লিখিত পরামর্শ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি সংসদের অধিবেশন আহ্বান, সমাপ্তি এবং সংসদ বিলুপ্তি করবেন। 

সংবিধানের ৭২ অনুচ্ছেদের এক নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, সরকারি বিজ্ঞপ্তি দ্বারা রাষ্ট্রপতি সংসদ আহ্বান, স্থগিত ও ভঙ করিবেন....তবে আরে শর্ত থাকে যে, এই দফার অধীন তাহার দায়িত্ব পালনে রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক লিখিতভাবে প্রদত্ত পরামর্শ অনুযায়ী কার্য করিবেন। কিন্তু নির্বাহী আদেশে ইতোমধ্যেই সংসদ ভেঙে দেয়া হয়েছে। 

সেক্ষেত্রে এখন কী করার আছে? পোস্ট ভ্যালিডিটি দিয়ে ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার’ গঠন করা যাবে, বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনায় বিশেষ ক্ষমতাবলে কোন পদক্ষেপ নেয়ার পর সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে পরবর্তীতে সেটির বৈধতা দেয়াকে আইনের ভাষায় 'পোস্ট ভ্যালিডিটি' বা দায়মুক্তি বলা হয়ে থাকে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা গণের নামের তালিকা

১। ড. মুহাম্মদ ইউনুস (প্রধান উপদেষ্টা)
২। জনাব সালেহ উদ্দিন আহমেদ
৩। জনাব ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ
৪। ড. আসিফ নজরুল
৫। জনাব হাসান আরিফ
৬। জনাব মোঃ তৌহিদ হোসেন
৭। লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো: জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব:)
৮। জনাব আদিলুর রহমান খান
৯। জনাব আলী ইমাম মজুমদার
১০। জনাব মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান
১১। সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
১২। জনাব মোঃ নাহিদ ইসলাম
১৩। জনাব আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া
১৪। জনাব ফারুক ই আজম, বীর প্রতীক
১৫। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন
১৬। মিজ্‌ নূরজাহান বেগম
১৭। অধ্যাপক ডাঃ বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার
১৮। মিজ্‌ ফরিদা আখতার
১৯। মিজ্‌ শারমীন এস মুরশিদ
২০। ড. আ. ফ. ম. খালিদ হোসেন
২১। জনাব সুপ্রদীপ চাক্‌ম

অন্তর্বর্তকালীন সরকারের কে কোন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেলেন

হাসিনা সরকারকে উৎখাতের পর নবনিযুক্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শপথ গ্রহনের ১৬ ঘন্টার মধ্যেই বিভিন্ন বিভাগের ও মন্তণালয়ের দায়িত্ব বন্টন করা হয়। শুক্রবার দুপুরে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে। 

ওই প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ, প্রতিরক্ষা, শিক্ষা, খাদ্য, ভূমি মন্ত্রণালয়সহ মোট ২৭টি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেই সাথে আরো ১৩ জন উপদেষ্টার মধ্যে ১৩টি মন্ত্রণালয় বন্টন করে দেয়া হয়। সেগুলো নিম্নরুপ।

ড. মুহাম্মদ ইউনূসঃ মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ, প্রতিরক্ষা, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, খাদ্য, ভূমি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি,  জনপ্রশাসন,  খনিজ সম্পদ, নৌ-পরিবহন, পানি সম্পদ, মহিলা ও শিশু,  বাণিজ্য, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন - এই সব মন্ত্রণালয় দেখবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

মোঃ তৌহিদ হোসেনঃ জনাব মোঃ তৌহিদ হোসেন পেয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। ২০০৬ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত, তিনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাস বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করার পর বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিসে যোগ দেন। 

এরপর ২০০১ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার নিযুক্ত হয়েছিলেন।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবঃ) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীঃ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়ি্ত্ব দেওয়া হয়েছে লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবঃ) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে। এর আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) এম সাখাওয়াত হোসেন। আওয়ামী লীগকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করায় তাকে এই মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে দেয়া হয়।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) এম সাখাওয়াত হোসেনঃ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) এম সাখাওয়াত হোসেনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের। ২০০৭ সালের ১৪ই ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারিই পর্যন্ত টানা পাঁচ বছর তিনি বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বিভিন্ন গণমাধ্যমে নির্বাচন বিশ্লেষক হিসেবে তার লেখা বা উপস্থিতি দেখা যায়।

ড. আসিফ নজরুলঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক এবং রাজনীতি বিশ্লেষক অধ্যাপক আসিফ নজরুল আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

সালেহ উদ্দিন আহমেদঃ অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন সালেহ উদ্দিন আহমেদ। তিনি ২০০৫ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি মহাপরিচালক (ডিরেক্টর জেনারেল–ডিজি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বাংলাদেশ একাডেমি অব রুরাল ডেভেলপমেন্ট (বার্ড) এর। 

দীর্ঘদিন ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অফিসের এনজিও অ্যাফেয়ার্স ব্যুরোর মহাপরিচালক পদেও। গত কয়েক বছর ধরে বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছিলেন তিনি।

আদিলুর রহমান খানঃ মানবাধিকার সংস্থা ‘অধিকার’ এর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক আদিলুর রহমান খান পেয়েছেন শিল্প মন্ত্রণালয় এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। আদিলুর রহমান খানকে ২০১৩ সালে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীদের সরিয়ে দেওয়ার অভিযানে মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে ‘বিভ্রান্তি ছড়ানোর’ অভিযোগে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। 

পরে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের ৫৭ ধারার মামলায় তাকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত। তবে খান সাহেব এখন জামিনে মুক্ত আছেন।

এএফ হাসান আরিফঃ সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হাসান আরিফ পেয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। তিনি ২০০৭ সালে ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ছিলেন। তারও আগে ২০০১ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

সৈয়দা রেজওয়ানা হাসানঃ রিবেশ রক্ষার বিষয়ে সরব সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান পেয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। তিনি বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি বেলার প্রধান নির্বাহী এবং সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় ‘রামোন ম্যাগসেসে’ থেকে শুরু করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।

শারমীন এস মুরশিদঃ নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা ব্রতীর প্রধান নির্বাহী শারমীন এস মুরশিদ সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন। নির্বাচন বিশ্লেষক ছাড়াও তিনি ভোটাধিকার ও বাক-স্বাধীনতার বিষয়ে বেশ আগে থেকেই সরব।

ফরিদা আখতারঃ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন উন্নয়ন ও মানবাধিকারকর্মী ফরিদা আখতার। তিনি বেসরকারি সংস্থা উন্নয়ন বিকল্পের নীতি নির্ধারণী গবেষণা’র (উবিনীগ) নির্বাহী পরিচালক। তিনি একাধারে একজন মানবাধিকার, সেইসাথে বিকল্প কৃষি উৎপাদন ও গবেষণা এবং নারী অধিকার বিষয়ক একজন কর্মী।

আ ফ ম খালিদ হাসানঃ হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাবেক নায়েবে আমীর এবং ইসলামী চিন্তাবিদ আ ফ ম খালিদ হোসেন পেয়েছেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। তিনি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের শিক্ষা উপদেষ্টা ছিলেন। সেইসাথে ওমরগণি এমইএস কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের খণ্ডকালীন অধ্যাপকও ছিলেন।

মোঃ নাহিদ ইসলামঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. নাহিদ ইসলাম ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন। নাহিদ ইসলাম সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। গত জুনে কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকেই সমন্বয়ক হিসেবে নেতৃত্বে দিয়ে আসছেন।

আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন। আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াঃ ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে। কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকেই সমন্বয়ক হিসেবে নেতৃত্বে দিয়ে আসছেন।

নুরজাহান বেগমঃ গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুরজাহান বেগম স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন। তিনি ২০১০ সালে গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত হন। এর আগে তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

সুপ্রদীপ চাকমাঃ পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন সুপ্রদীপ চাকমা। তিনি ১৯৮৫ সালে সপ্তম বিসিএসের মাধ্যমে সুপ্রদীপ চাকমা সরকারি চাকরিতে যোগদান করেন। পররাষ্ট্র ক্যাডারের সাবেক এই কর্মকর্তা পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চ্যায়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। 

কর্মজীবনে তিনি মেক্সিকো ও ভিয়েতনামে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বও পালন করেছেন। রাবাত, ব্রাসেলস, আঙ্কারা এবং কলম্বোতে বাংলাদেশ মিশনেও তিনি বিভিন্ন পদে কাজ করেছেন।

বিধান রঞ্জন রায়ঃ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন বিধান রঞ্জন রায়। তিনি জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সাবেক অধ্যাপক ও পরিচালক বিধান রঞ্জন রায় পেশায় একজন মানসিক চিকিৎসক ও মনরোগ বিশেষজ্ঞ। 

মনরোগ বিজ্ঞানে এমবিবিএস, ডিপিএম, ও এমফিল ডিগ্রি অর্জন করা এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ময়মসিংহ মেডিকেল কলেজের মনোরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি ময়মনসিংহের ইউনিয়ন স্পেশালাইজড হাসপাতালে কর্মরত আছেন।

ফারুক-ই আজমঃ ফারুক-ই- আজমকে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন। তিনি ছিলেন

মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানঃ নতুন উপদেষ্টাদের মধ্যে আর মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানকে দেওয়া হয়েছে তিনটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। সেগুলো হলো বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়, সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেল মন্ত্রণালয়।

আলী ইমাম মজুমদারঃ আর নতুন করে সরকারে যুক্ত হওয়া আলী ইমাম মজুমদারকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।

ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদঃ ১৬ আগস্ট শুক্রবার রাতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায় যে, নতুন উপদেষ্টাদের মধ্যে ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদকে শিক্ষা ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ কত দিন

সকল রাজনৈতিক দল এবং ব্যক্তিদের নির্বাচনের আকাঙ্ক্ষা এবং ছাত্র-জনতার সংস্কারের দাবি ঠিক করতে যত দিন লাগবে, তত দিনই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার থাকবে, এর এক দিন বেশিও থাকবে না এবং কমও থাকবে না বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

শপথ গ্রহণের ঠিক দুই দিন পর ছুটির দিন শনিবার সচিবালয়ে অফিস করেছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। সকাল সাড়ে ৯ টায় অফিসে আসেন তিনি। দুই ঘণ্টার মতো মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা জানান তিনি।

তিনি আরো বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কত দিন থাকবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। প্রধান উপদেষ্টা এবং সব উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচন কমিশনসহ যেসব প্রতিষ্ঠান সংস্কার করা প্রয়োজন, সেগুলো করতে যত সময় লাগবে সে সময় পর্যন্ত থাকবে।

আসিফ নজরুল বলেন, আইনের সংস্কার করে উপযুক্ত জায়গায় উপযুক্ত লোক বসাতে হবে। শিক্ষার্থী আন্দোলনের এটাও একটা দাবি। ১৫ বছরে যত খারাপ আইন হয়েছে সেগুলো সংস্কার বা বাতিল করা হবে। বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন যেটা আছে, সেটা পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি বলে জানান আইন উপদেষ্টা।

গত দুই দিনে নতুন সরকারের আরো দু’জন উপদেষ্টা এনিয়ে কথা বললেও তাদের মেয়াদ নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি। তবে আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে নতুন সরকার গঠিত হয়েছে। এই ধরনের সরকার কাঠামো সংবিধানের কোথাও নেই, যে কারণে তাদের মেয়াদের কথা কোথাও বলা নেই।

আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বিবিসি বাংলাকে বলেন, “যখন ওনাদের মনে হবে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য পরিবেশ তৈরি হয়েছে তখন ওনারা নির্বাচনের ঘোষণা দিবেন। তার আগে এই সরকারের মেয়াদ নিয়ে কোন ধারণা পাওয়া যাবে না”।

লেখকের মন্তব্যঃ

হাজারো খুনের আসামী খুনি হাসিনার পদত্যাগ করে দেশ ত্যাগের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেন। এই সরকারের উপধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ গ্রহন করেন আগে থেকেই সম্মানীত বরেন্য ব্যক্তি ড. মুহাম্মদ ইউনুস। উনার সাথে আরো ২০জন উপদেষ্টা নিয়ে সরকার গঠন করেন। 

তাদের প্রধান কাজ হচ্ছে দেশ সংস্কার করে অবাদ সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করে একটি সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেয়া। এবং সেই নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। এই সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে যতদিন সময় লাগবে ঠিক ততদিন এই সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন। 

কারণ প্রত্যেকটা সেক্টর দূর্নীতি ও অনিয়মে ভরে আছে, যা ঠিক করতে যথেষ্ট সময়ের প্রয়োজন। বাংলার জমিন থেকে অনিয়ম, দূর্নীতি, অবিচার, অন্যায় চির তবে দুরীভূত  হোক এই কামনায় আজকের মত বিদায় নিচ্ছি। ভালো থাকুন, সুস্থ্য থাকুন, আল্লাহ হাফেজ। 


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪