মানবাধিকার লঙ্ঘনে প্রয়োজনে ম্যান্ডেট দিয়ে পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত জাতিসংঘ

কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের উপর অতিরিক্ত বলপ্রয়োগে জাতিসংঘ মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিশ্বসযোগ্য প্রমান পাওয়াই কি বলেছে আপনি কি জানেন ?

মানবাধিকার লঙ্ঘনে প্রয়োজনে ম্যান্ডেট দিয়ে পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত জাতিসংঘ

হ্যাঁ বন্ধুরা আজ আপনাদের জানাবো সম্প্রতি যে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী দ্বারা শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের উপর যে নির্যাতনের প্রমান পেয়েছেন এর পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরাঁ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সে সম্পর্কে।

ভূমিকাঃ বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ব্যাপারে জাতিসংঘের উদ্বেগ প্রকাশ।

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরাঁ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিশ্বাসযোগ্য তথ্যপ্রমাণ পেয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তিনি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

সূচীপত্রঃ

মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রমান পেয়েছে জাতিসংঘ
প্রয়োজনে ম্যান্ডেট অনুযায়ী পদক্ষেপ নিবে জাতিসংঘ
হয়রানি করা হচ্ছে ছাত্রসহ সাধারণ মানুষদের
গ্রেফতার বানিজ্যের অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে
আইন শৃংখলা বাহিনী এখন আইন লঙ্ঘনকারী
আইনের অপব্যবহার হচ্ছে সব ক্ষেত্রে
সকল বাহিনী যেন সরকারের আজ্ঞাবহতে পরিনত হয়েছে
শেষ কথাঃ

মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রমান পেয়েছে জাতিসংঘ

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরাঁ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিশ্বাসযোগ্য তথ্যপ্রমাণ পেয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তিনি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

বর্তমান ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে হাজারো তরুণ এবং রাজনৈতিক বিরোধীদের গণগ্রেপ্তারের বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব। মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার চর্চার ক্ষেত্রে যথাযথ প্রক্রিয়ার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন তিনি।

নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিশ্বাসযোগ্য তথ্যপ্রমাণ পাওয়ার পর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরাঁ। এ বিষয়ে রাজধানী ঢাকায় এবং নিউ ইয়র্কে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জাতিসংঘের উদ্বেগের বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, 

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে সেনা পাঠানো শীর্ষস্থানীয় একটি দেশ হিসেবে বাংলাদেশের প্রতি আমরা মানবাধিকারের প্রতি সম্মান ও সমুন্নত রাখার আহ্বান জানাই। বাংলাদেশের ভেতরে জাতিসংঘের চিহ্ন সম্বলিত কোনো যানবাহন আর ব্যবহার করা হচ্ছে না বলে বাংলাদেশ সরকারের বিবৃতি আমরা পেয়েছি। 

আমরা এটা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই এবং আবারও বলতে চাই যে, জাতিসংঘে সেনা ও পুলিশ দিয়ে অবদান রাখা দেশগুলো শুধু তখনই জাতিসংঘ চিহ্নিত এবং জাতিসংঘের চিহ্ন সম্বলিত সরঞ্জাম ব্যবহার করতে পারে, যখন জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনের অধীনে তাদেরকে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী হিসেবে কোনো ম্যান্ডেটেড কাজ দেওয়া হয় তখন। 

সরকারিভাবে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়ার ফলে সারা বিশ্বের সাথে বাংলাদেশের ভার্চুয়াল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেলেও জাতিসংঘের কাছে ঠিক সময়ে সকল খবরাখবর পৌছেগেছে। তাজাড়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দূতাবাসগুলোতো সব খবর রাখছেই।

প্রয়োজনে ম্যান্ডেট অনুযায়ী পদক্ষেপ নিবে জাতিসংঘ

যেকোনো পরিস্থিতিতে প্রয়োজন হলে জাতিসংঘ মহাসচিব তার ম্যান্ডেট অনুসারে পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। সোমবার (২৯ জুলাই) মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজাররিক ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেছেন

ব্রিফিংয়ে প্রথমে তিনি বাংলাদেশ ইস্যুতে একটি বিবৃতি পাঠ করেন। এরপর প্রশ্নোত্তর পর্ব শুরু করেন। শুরুতেই বিবৃতিতে তিনি সব রকম সহিংসতার দ্রুত, স্বচ্ছ এবং পক্ষপাতিত্বহীন তদন্তের দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন এবং এর জন্য যারা দায়ী তাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।

ডুজাররিক বলেন, বাংলাদেশ ইস্যুতে আমার কাছে আপডেট আছে। আমি আপনাদের বলতে পারি যে, বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। তিনি নতুন করে ছাত্র আন্দোলন শুরু হওয়ার বিষয়ে অবহিত এবং তিনি শান্ত ও সহিংসতা থেকে বিরত থাকার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

ডুজাররিকের বিবৃতির পর শুরু হয় প্রশ্নোত্তর। এ সময় একজন সাংবাদিক তাকে বাংলাদেশের পরিস্থিতি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বর্ণনা দিতে থাকেন। তাতে বিরক্তি প্রকাশ করেন স্টিফেন ডুজাররিক। এর আগের দিন এক ব্রিফিংয়েও ওই সাংবাদিককে ডুজাররিক তার প্রশ্নের মাঝপথে থামিয়ে দিয়েছিলেন। 

ডুজাররিক তাকে বলেছিন, আমি বক্তব্য শুনতে চাই না। আপনার প্রশ্ন করুন। সোমবারও একই রকম অবস্থার অবতারণা হয়। ওই সাংবাদিককে থামিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, আমি পরিস্থিতি সম্পর্কে জানি। আমি আপনাকে ১০ সেকেন্ডও বক্তব্য দেওয়ার জন্য দেব না। আমি প্রশ্ন শুনতে চাই। ওই সাংবাদিকের প্রশ্ন ছিল- বাংলাদেশ সরকার পুনর্ব্যক্ত করেছে যেসব হত্যাকাণ্ড এবং 

সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ন্যায়বিচার করা হবে পক্ষপাতিত্বহীন এবং বস্তুনিষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে দায়ীদের শনাক্ত করে। ওই সাংবাদিকের প্রশ্ন শেষ না হতেই তাকে থামিয়ে দেন ডুজাররিক। তিনি বলেন, নো, স্যার। আমি পরিস্থিতি সম্পর্কে জানি। আমি আপনাকে বক্তব্য দেওয়ার জন্য ১০ সেকেন্ডও সময় দেব না। প্রশ্ন চাই। এ সময় ওই সাংবাদিক বলেন, এসব পদক্ষেপের প্রেক্ষিতে আপনার পর্যবেক্ষণ কি?

জবাবে স্টিফেন ডুজাররিক বলেন, আমাদের পর্যবেক্ষণ হলো ঠিক দুই মিনিট আগে যেটা বলেছি সেটা। তাতে সব রকম সহিংস ঘটনার যথাযথ তদন্ত হতে হবে স্বচ্ছতার সঙ্গে এবং পক্ষপাতিত্বহীনভাবে। এসব সহিংসতায় জড়িতদের সবাইকে জবাবদিহিতায় আনতে হবে। এ পর্যায়ে ওই সাংবাদিক আবার জানতে চান, আমার আরও জানার আছে। 

সেনাবাহিনী মোতায়েনের পর ঢাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে গেছে। সরকারি ও বেসরকারি সম্পদের ভয়াবহ ধ্বংসলীলার বিষয় প্রকাশিত হয়েছে। এ রকম একটি ভয়াবহ ক্ষতির বিষয়ে বাংলাদেশকে কি কোনো সহায়তা দেবে জাতিসংঘ? জবাবে ডুজাররিক বলেন, সংকটের সময় যেকোনো দেশকে আমরা সবসময় সংলাপে সহায়তা করতে প্রস্তুত। 

বিশ্বের কোথাও প্রতিবাদ বিক্ষোভের সময় যেসব মানুষ দুঃখজনকভাবে তাদের সম্পদ হারান অথবা পরিবারের সদস্যদের হারান- তাদেরকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার কোনো স্কিমের সঙ্গে জাতিসংঘ জড়িত নয়। আপনাকে ধন্যবাদ। এ পর্যায়ে অন্য একজন সাংবাদিক জানতে চান, আপনি একটু আগে যে বিবৃতি দিয়েছেন তার জন্য ধন্যবাদ। বাংলাদেশ ইস্যুতে আমার তিনটি প্রশ্ন আছে। তা খুব দ্রুত হবে। 

বাংলাদেশে তরুণ নিরপরাধ জনগণের বিরুদ্ধে গুলি করে এবং তাদেরকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জোরপূর্বক বিবৃতি দেওয়ানোর কূটকৌশল (উইচ হান্ট) চালাচ্ছে আইন প্রয়োগকারী এজেন্সি। এতে তাদের ভূমিকার বিষয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের পর্যবেক্ষণ কি? জবাবে স্টিফেন ডুজাররিক বলেন- মুশফিক (মুশফিকুল ফজল আনসারি) আমি পুনরাবৃত্তি করছি। 

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেছেন, বাংলাদেশে নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করেছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিশ্বাসযোগ্য রিপোর্ট আছে। এসব রিপোর্টে উদ্বেগ জানিয়েছেন মহাসচিব। এসব নিয়ম লঙ্ঘনের সঙ্গে যারা জড়িত তাদেরকে জবাবদিহিতায় আনার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

আপনার দ্বিতীয় প্রশ্ন কি? মুশফিক বলেন, এই একই বাহিনী অন্য দেশগুলোতে থাকা জাতিসংঘের পতাকাতলে এসব লোকদের নিয়ে তিনি (জাতিসংঘ মহাসচিব) স্বস্তি প্রকাশ করেন? এ প্রশ্নের জবাবে স্টিফেন ডুজাররিক বলেন, এটা পরিষ্কার যে আমরা বাংলাদেশের ওপর এবং বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের ওপর নির্ভর করি। তারা মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে এবং এর সম্মানার্থে শান্তিরক্ষী মিশনগুলোতে কাজ করে চলেছেন। আপনার শেষ প্রশ্ন কি?

মুশফিক বলেন, জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান বলেছেন, তার অফিস তাদের (বাংলাদেশের) তদন্তে সহায়তা করতে প্রস্তুত। মানবাধিকার বিষয়ক গ্রুপগুলো, আন্তর্জাতিক বিজ্ঞজন এবং নোবেলবিজয়ীরা পরিস্থিতিতে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ দাবি জানিয়ে আসছেন। এর প্রেক্ষিতে মহাসচিবকে ব্যবস্থা নিতে কতটা তথ্যপ্রমাণ প্রয়োজন হবে? এ প্রশ্নের জবাবে ডুজাররিক বলেন, ম্যান্ডেন্টের অধীনে সবসময় ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত জাতিসংঘ মহাসচিব।

হয়রানি করা হচ্ছে ছাত্রসহ সাধারণ মানুষদের

শিক্ষার্থীদের সীমাহীন দুর্ভোগসহ অনাকাঙ্ক্ষিত হতাহতের ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে এবং দেশব্যাপী নৈরাজ্য অগ্নিসন্ত্রাস ও ধ্বংসযজ্ঞের প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ ক্যাম্পাসের প্যারিস রোডে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষকেরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। তাঁরা সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ১০ দফা দাবির কথা জানিয়েছেন।

অপরদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত শিক্ষার্থীদের ৯ দফার প্রতি সমর্থন জানিয়ে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম ক্যাম্পাসে মিছিল ও প্রতিবাদী সমাবেশ করেছে। ৯ দফা না মানা হলে তাঁরা সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবি জানাবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক আবু নাসের মো. ওয়াহিদ আরও বলেন, ‘এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে যে ভুলগুলো হয়েছে, তার আত্মসমালোচনা আমাদের করতে হবে। অবশ্যই ভুল ছিল। এই ভুল যদি স্বীকার না করি, তাহলে এই সংকট থেকে উত্তরণ ঘটাতে পারব না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধের কথাটি বললেই হবে। কাজেকর্মে থাকতে হবে। 

আমি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার শিক্ষক বলেই আমি দুর্নীতি, অন্যায়-অনিয়ম করার লাইলেন্স পাইনি। গতকাল হাইকোর্টে একটি কথা বলা হয়েছে, প্রত্যেকের ওপর যে সাংবিধানিক দায়িত্ব আছে, সেই দায়িত্ব যেন আমরা পালন করতে পারি। কেন রক্তপাতহীন আন্দোলন ছাড়া এই দেশে এখনো কোনো দাবি মানা হয় না। সামনের দিকে এর সমাধানের পথ বের করতে হবে।’

এই আন্দোলনে যেসব সাধারণ শিক্ষার্থী ছিলেন, যাঁরা কোনো অপকর্মে ছিলেন না, তাঁদের যেন কোনো হয়রানি ও দুর্ভোগ না হয়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে ৪. কোটা আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত, কিন্তু কোনো অপরাধে জড়িত না, এমন ছাত্রদের নিরাপত্তা দিতে হবে।

রাস্তা থেকে, বাজার থেকে, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের মহল্লা থেকে গণহারে গ্রেফতার করা হচ্ছে। রিক্সা চালক, দিন মজুর, চাকরী জীবি, ছাত্র এমনকি শিক্ষক পর্যন্তও বাদ যাচ্ছেনা গ্রেফতার হতে। যারা অভুক্ত ছাত্রদেরকে আন্দোলনের সময় খাবার ও পানি খাইয়ে সাহায্য করেছিল তাদেরকেও গ্রেফতার করা হচ্ছে, হয়রানি করা হচ্ছে।

গ্রেফতার বানিজ্যের অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে

পুলিশি হয়রানির স্বীকার হচ্ছেন ছাত্র-শিক্ষকসহ সাধারণ মানুষ। নিরোপরাধ মানষকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ, তারপর তাদের কাছে চাওয়া হচ্ছে মোটা অংকের টাকা। টাকা না দিলে বা না দিতে চাইলে দেশব্যাপী নৈরাজ্য, অগ্নিসন্ত্রাস ও ধ্বংসমূলক কাজ হয়েছে তার আসামী বানানো হবে বলে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক লোক সাংবাদিকদের এই ধরনের তথ্য প্রদান করেছেন। আবার টাকা না দিলে থানায় নিয়েগিয়ে কঠিন নির্যাতন করা হচ্ছে।

আইন শৃংখলা বাহিনী এখন আইন লঙ্ঘনকারী

আইন শৃংখলা বাহিনী এখন আইন লঙ্ঘনকারী দলে পরিনত হয়েছে। নিরস্ত্র নীরিহ ছাত্র-ছাত্রীদের গুলি করে হত্যার অসংখ্য ভিডিও ফুটেজ দেখা যাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। হেলিকপ্টার থেকে গুলি করতে দেখা গেছে পুলিশ ও র‌্যাব বাহিনীকে। ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে সহিংসতার রুপ দিয়েছে ছাত্রলীগ ও পুলিশ বাহিনী। 

এদিকে ছয় সমন্বয়ককে ডিবি অফিসে তুলে নিয়ে গিয়েছে নিরাপত্তার অজুহাতে। তাদেরকে জোর করে ডিবির লিখিত আন্দোলন প্রত্যাহারের ব্রিফিং পড়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন, আন্দোলনরত ছাত্রদের অন্য সমন্বয়করা। তারা এটা প্রত্যাক্ষান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষনা দিয়েছেন।

আইনের অপব্যবহার হচ্ছে সব ক্ষেত্রে

বিএনপিপন্থী শিক্ষকেরা মিছিল শেষে সমাবেশে বলেন, শিক্ষার্থীদের ৯ দফা মেনে নিন। অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিন। লাশ নিয়ে এই সরকার রাজনীতি করছে। ইট, পাথর, বালুর মূল্য বেশি এই শহীদদের মূল্যের চেয়ে, তা নিয়েই মায়াকান্না করছে। এ দেশের বর্তমান প্রজন্ম ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের এই মায়াকান্না বুঝতে কষ্ট হয় না। 

শিক্ষার্থীদের এই ৯ দফা দাবি না মানলে সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবি জানাবেন তাঁরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের অধ্যাপক হাছানাত আলী বলেন, ‘সরকার আমাদের বোকা ভেবেছে। আইনমন্ত্রী কয়েক দিন আগে বলেছেন, আমার দেশের ছেলেমেয়েরা কোনো ভাঙচুর করেনি। 

তাহলে কেন প্রতিদিন রাতে ব্লক রেইড দিয়ে আইডি কার্ড দেখে শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। সরকারের এই দ্বিচারিতাকে তাঁরা ঘৃণা করেন। সরকার তার কর্তৃত্ববাদী শাসনকে দীর্ঘায়িত করতে সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে। ছাত্র আন্দোলন পরাজিত হতে পারে না। তারা জয়ী হবেই।’ 

অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। আইন যেন শুধু দূর্বলদের জন্যই। রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের সমান অধিকারের কথা থাকলেও অনেক ক্ষেত্রেই তা মানা হচ্ছেনা। অপরদিকে একটি কুচক্রি মহল এই সুযোগে রাষ্ট্রের অনেক মূল্যবান সম্পদ নষ্ট করে ফেলেছে যা কোন ভাবেই কাম্য নয়। কারণ এই সমস্ত স্থাপনা রাষ্ট্রের টাকা নির্মিত হয়েছে এবং এগুলো রাষ্ট্রের সম্পদ কোন দলের নয়।

সকল বাহিনী যেন সরকারের আজ্ঞাবহতে পরিনত হয়েছে

রাষ্ট্রের সকল বাহিনী, সকল দপ্তর যেন সরকারের আজ্ঞাবহ হয়েপড়েছে। পুলিশ বাহিনীতো অনেক আগে থেকেই যখন যে সরকার এসেছে সেই সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করেগেছে। বর্তমান সরকারের সময় এটা পুরোপুরি সরকারী এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী সংস্থাতে পরিনত হয়েছে। এছাড়াও র‌্যাব, 

বিজিবিও সরকারের অন্যায় আদেশ পালনে যেন অতি উৎসাহি একটা গোষ্ঠিতে পরিনত হয়েছে। দেশের অন্যান্য বাহিনী যায় করুক না কেন। সকল মানুষের আস্থার একটা জায়গা ছিল সেনাবাহিনী। আমরা ছোট থেকে দেখে আসছি দেশে ক্রান্তিকালে সেনাবাহিনীকে বিশেষ ভূমিকা পালনের মাধ্যমে সকল সমস্যা সমাধান করতে। 

এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। সেনাপ্রধানের হস্তক্ষেপের কারণে প্রাণহানির সংখ্যা অনেকটা কমেছে। অনেকের মনে প্রতিবাদ করার ইচ্ছা থাকলেও চাকরী এবং প্রাণের ভয়ে সত্য কথাটাও বলতে পারছেনা। বাংলাদেশের সকল নিরাপত্তা বাহিনী বাংলাদেশের সকল নাগরিকের জান-মালের হেফাজতের পাশাপাশি সরকারের নিরাপত্তা দিবে এটাও তাদের দ্বায়িত্ব। সরকার ভূল করলে তো সঠিক পরামর্শ দিতে পারে।

শেষ কথাঃ

পরিশেষে বলতে চাই কোটা সংস্কার আন্দোলন ছাত্রদের নায্য দাবি মেনে নিয়ে আদালত এবং সরকার যেনম রায় ও পরিপত্র জারি করেছেন, তেমনি ছাত্রদের বাকি দাবিগুলো মেনে নিয়ে শান্তি শৃংখলা ফিরাতে পারে সরকার। মুখে সরকার ছাত্রদের দাবির সাথে একমত হলেও কাজে ভিন্ন। নিহত ছাত্রদের ঘাতকদের গ্রেফতার না করে উল্টো ছাত্রদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। 

আমি মনে করি সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হবে এবং সঠিক পদক্ষেপের ফলে দেশে শান্তি শৃংখলা ফিরে আসবে। তা না হলে জাতিসংঘের পদক্ষেপের মাধ্যমে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে ছাত্রদের নায্য দাবি আদায়সহ সারা দেশে শৃংখলা ফিরে আসুক এই কামনায় শেষ করছি। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।







এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪