ইউরোপের বিভিন্ন দেশে সহজে, কম খরচে ষ্টুডেন্ট-কাজের ভিসা পাওয়ার উপায় জানুন
আপনি কি বিদেশে গিয়ে লেখাপড়া শেষ করে ক্যারিয়ার গড়তে চান ? অনেক টাকা পয়সা ইনকাম করে পরিচ্ছন্ন ও ঝামেলামুক্ত জীবন যাপন করতে চান ? তাহলে বেছে নিন ইউরোপের যে কোন দেশ।
হ্যাঁ বন্ধুরা সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্সসহ ইউরোপের দেশগুলোতে ষ্টুডেন্ট ভিসা বা ভিজিট ভিসা পাওয়া যেমন সহজ তেমনি খরচও অনেক কম। আসুন কম খরচে ইউরোপের যেসব দেশে সহজে ষ্টুডেন্ট ভিসা পাওয়া যায় জানুন।
ভূমিকাঃ ইউরোপের দেশগুলোতে সহজে ষ্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার উপায় জানুন।
বাংলাদেশসহ এশিয়া মহাদেশের অধিকাংশ মানুষের বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে ইউরোপের দেশগুলোকে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। কারণ ইউরোপের যেকোন একটি দেশের ভিসা পেলে ২৭টি দেশে বিনা ভিসায় ভ্রমণ করা যায়। এছাড়াও ইউরোপের সব দেশের জীবনযাত্রার মান অনেক উন্নত।
সূচীপত্রঃ
ইউরোপের কোন দেশের ভিসা সহজে পাওয়া যায়
বর্তমানে ইউরোপের কোন কোন দেশে ভিসা চালু আছে
ইউরোপে যেতে ভিসা আবেদন করার নিয়ম
বাংলাদেশ থেকে ইউরোপ যাওয়ার নিয়ম
কম খরচে ইউরোপের কোন দেশে যাওয়া যায়
ইউরোেপের কোন দেশে যাওয়া সহজ
সরকারি ভাবে বিদেশ যাওয়ার উপায়
ইউরোপের কোন দেশ চাকরির জন্য ভালো
ইউরোপের কোন দেশে বেতন বেশি
ইউরোপে সর্বনিম্ন বেতন কত
লেখকের মন্তব্যঃ
ইউরোপের কোন দেশের ভিসা সহজে পাওয়া যায়
বর্তমানে ইউরোপের মোট অনেকগুলো দেশের ভিসা সহজে পাওয়া যায়। দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে ফ্রান্স, পর্তুগাল, মাল্টা, সুইজারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, হাঙ্গেরি, লিথুনিয়া, লাটভিয়া ইত্যাদি। ফ্রান্স অর্থনৈতিকভাবে বেশ শক্তিশালী একটি দেশ। ইউরোপীয় ইউনিয়নভূক্ত যেকোনো একটি দেশের ভিসা পেলে আপনি বাকি দেশগুলোতে ভ্রমণ করতে পারবেন।
এজন্য আলাদা কোন ধরনের ভিসা লাগবে না। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অভিবাসীদের নিকট বর্তমানে সেনজেনভুক্ত দেশগুলো অন্যতম একটি সেরা গন্তব্য। ইউরোপের সেনজেনভুক্ত বা ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত কয়েকটি দেশ রয়েছে যেসব দেশের ভিসা সহজে পাওয়া যায়। যারা ইউরোপে পড়াশোনা, ভ্রমণ কিংবা কাজের উদ্দেশ্যে যাবেন তাদের জন্য ভিসা পাওয়া আরও বেশি সহজ হবে।
আয়ারল্যান্ড
ইউরোপের সেনজেনভুক্ত দেশের তালিকায় সবচেয়ে শীর্ষস্থানে রয়েছে আয়ারল্যান্ড। এই দেশের সকল ধরনের ভিসা খুব সহজে পেয়ে যাবেন। ইউরোপের এই দেশে যেতে খরচ লাগবে আনুমানিক প্রায় ৮ লক্ষ থেকে ১২ লক্ষ টাকা। নিজেই নিজের ভিসা আবেদন সম্পন্ন করলে এর চেয়ে কয়েকগুণ কম খরচে ভিসা পাওয়া যায়। তবে এজেন্সির মাধ্যমে গেলে খরচ আরো বৃদ্ধি পেতে পারে। আয়ারল্যান্ড ভিসা অনুমোদন হার সবচেয়ে বেশি।
লিথুনিয়া
ইউরোপের দেশ হিসেবে ভিসা অনুমোদন হারের তালিকায় লিথুনিয়া দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। এটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি দেশ। সেনজেনভুক্ত এই দেশের শিক্ষার মান, জীবন যাপন মান এবং চিকিৎসা সেবার মান অনেক অনেক বেশি উন্নত। ইউরোপের এই উন্নত দেশে যেতে বাংলাদেশ থেকে আনুমানিক প্রায় ৪ থেকে ৫ লক্ষ টাকা প্রয়োজন। লিথুনিয়া যাওয়ার যোগ্যতা এবং ডকুমেন্টস থাকলে খুব সহজে আপনি ষ্টুডেন্ট, ওয়ার্ক পারমিট এবং টুরিস্ট ভিসায় এ দেশে যেতে পারবেন।
লাটভিয়া
ভিসা অনুমোদন পাওয়ার হারের দিক বিবেচনা করে এই দেশের অবস্থান রয়েছে ৩ নম্বরে। লাটভিয়ায় অল্প খরচে উচ্চশিক্ষা লাভ করা যায়। ষ্টুডেন্ট ভিসায় বাংলাদেশ থেকে আনুমানিক প্রায় ৩ থেকে ৫ লক্ষ টাকা খরচ করে এই দেশে পড়াশোনার উদ্দেশ্যে যেতে পারবেন। কাজের উদ্দেশ্যে ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে গেলে খরচ পড়বে আনুমানিক প্রায় ৮ লক্ষ থেকে ১৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত।
ফিনল্যান্ড
ফিনল্যান্ড ইউরোপের সেনজেনভুক্ত আরেকটি অন্যতম দেশ। যেখানে খুব সহজে যাওয়া যায়। এই দেশের সবকিছু অন্যান্য দেশের চেয়ে অনেক বেশি উন্নত, সেরা এবং আকর্ষণীয়। এই দেশে গেলে আপনি পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করতে পারবেন। স্বপ্নের দেশ ফিনল্যান্ডে শিক্ষা ভিসায় যেতে হলে আপনাকে খরচ করতে হবে ৪ থেকে ৫ লক্ষ টাকা।
ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে যেতে চাইলে ১০ লক্ষ থেকে ১২ লক্ষ টাকা আপনাকে গুনতে হতে পারে। ফিনল্যান্ড ভিসা অনুমোদন সফলতার মাপকাঠিতে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে। পরিচিত আত্মীয়-স্বজনদের মাধ্যমে গেলে ভিসা খরচ অনেক কম পড়বে। কিন্তু বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে গেলে খরচ আরো অনেক বেড়ে যেতে পারে।
স্লোভাকিয়া
সহজে ইউরোপের ভিসা পাওয়া যায় এমন পাঁচটি দেশের মধ্যে স্লোভাকিয়ার অবস্থান সবচেয়ে শেষে রয়েছে। কারণ এই দেশের ভিসা অনুমোদন হার উপরোক্ত দেশগুলোর তুলনায় কম। এই দেশে যেতে আনুমানিক খরচ পড়বে ১০ লক্ষ টাকার আশেপাশে।
উপরে উল্লেখিত দেশগুলো ছাড়াও বর্তমানে ইউরোপের মালটা, নেদারল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, পর্তুগাল, অস্ট্রিয়া, ডেনমার্ক এবং পোল্যান্ড দেশের ভিসা অনেক সহজেই পাওয়া যাচ্ছে। তবে এগুলোর মধ্যে সবগুলো দেশ কিন্তু সেনজেনভুক্ত নয়। এটা আপনাকে মনে রাখতে হবে।
বর্তমানে ইউরোপের কোন কোন দেশে ভিসা চালু আছে
বর্তমানে ইউরোপের মোট অনেকগুলো দেশের ভিসা সহজে পাওয়া যায়। দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে ফ্রান্স, পর্তুগাল, মাল্টা, সুইজারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, হাঙ্গেরি, লিথুনিয়া, লাটভিয়া ইত্যাদি। ফ্রান্স অর্থনৈতিকভাবে বেশ শক্তিশালী একটি দেশ। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ভূক্ত যে কোন একটি দেশের ভিসা পেলেই আপনি আরো ২৬টি দেশে যেতে পারবেন ঐ এক ভিসাতেই।
ইউরোপে যেতে ভিসা আবেদন করার নিয়ম
আপনি অনলাইনের মাধ্যমে ইউরোপে যাওয়ার ভিসার আবেদন করতে পারবেন। সেজন্য আপনাকে প্রথমে দেশ সিলেক্ট করতে হবে যে দেশে আপনি যেতে চান। তারপর আপনাকে ভিসা ফি দিয়ে প্রয়োজনীয় নথিপত্রের মাধ্যমে ইউরোপ ভিসা আবেদন করতে হবে। আমরা সকলেই জানি যে, ইউরোপ হলো একটি বৃহৎ মহাদেশ এর নাম। যে মহাদেশ এর মধ্যে প্রায় ৫০ টির মতো দেশ রয়েছে।
তো ভিসা আবেদন করার আগে আপনাকে নির্ধারন করতে হবে যে, আপনি ইউরোপ এর কোন দেশে যেতে চান। আর যখন আপনি ইউরোপ এর দেশ নির্ধারন করবেন তারপর আপনাকে সেই দেশের সকল রুলস মেনে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। তো এবার আমি আপনাকে ইউরোপ এর কোন দেশে সবচেয়ে সহজে ভিসা পাওয়া যায় সে সম্পর্কে বিস্তারিত বলবো।
ইউরোপ ভিসা আবেদন করার পদ্ধতি
প্রথমে আপনাকে সিলেক্ট করতে হবে আপনি আসলে ইউরোপের কোন দেশে যেতে চান। তারপর আপনার ভিসার ধরন সিলেক্ট করতে হবে। কেননা, আপনি বিভিন্ন ধরনের ভিসার মাধ্যমে ইউরোপের দেশ গুলোতে যেতে পারবেন। আর ভিসার ধরন সিলেক্ট করার পর আপনাকে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সংগ্রহ করে সরাসরি অ্যাম্বাসি অথবা অনলাইন থেকে ভিসা আবেদন করতে হবে।
বাংলাদেশ থেকে ইউরোপ যাওয়ার নিয়ম
যেহুতু আপনি একজন বাংলাদেশি, সেহুতু আপনার একটা বিষয় জেনে নিতে হবে। আর সেটি হলো, কিভাবে আমাদের বাংলাদেশ থেকে ইউরোপ এর মধ্যে যাওয়া যায়। তো একজন বাংলাদেশি হয়ে ইউরোপ যাওয়ার জন্য মোট ০২ টি সহজ উপায় আছে। আর সেগুলো হলো, শিক্ষার্থী ভিসা এবং ভ্রমন ভিসা।
মূলত এই দুইটি ভিসার মাধ্যমে আপনি খুব সহজে আমাদের বাংলাদেশ থেকে ইউরোপে যেতে পারবেন। আর যখন আপনি এই দুটো ভিসার জন্য আবেদন করবেন তখন আপনি রোমানিয়া, আর্মেনিয়া, সার্বিয়া এবং মালটার মতো দেশে যেতে পারবেন। তবে এগুলো ছাড়াও অন্যান্য দেশে আপনি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা কিংবা আরো বিভিন্ন ভিসার মাধ্যমে যেতে পারবেন।
কম খরচে ইউরোপের কোন দেশে যাওয়া যায়
বর্তমানে ইউরোপের যে দেশগুলোর ভিসা সহজে পাওয়া যায় সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- ফ্রান্স, পর্তুগাল, মাল্টা, সুইজারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, হাঙ্গেরি, লিথুনিয়া, লাটভিয়া ইত্যাদি।
এছাড়া অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, চেক প্রজাতন্ত্র, ডেনমার্ক, এস্তোনিয়া, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, গ্রীস, হাঙ্গেরি, আইসল্যান্ড, ইতালি, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া, লুক্সেমবার্গ, মাল্টা, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, পোল্যান্ড এই ভিসার মাধ্যমে আপনি এই ২৬টি ইউরোপীয় দেশে অবাধে ভ্রমণ করতে পারবেন এবং সর্বোচ্চ ৯০ দিন থাকতে পারবেন।
ফ্রান্স
ফ্রান্স অর্থনৈতিকভাবে বেশ শক্তিশালী একটি দেশ। ফ্রান্সে টুরিস্ট ভিসা পাওয়া যায় সহজেই। তবে সেক্ষেত্রে ভিসা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে শর্তগুলো পূরণ করতে হবে। ফ্রান্সে শিক্ষা ভিসাও সহজে পাওয়া যায়। কিন্তু কাজের জন্য ভিসা পাওয়া কিছুটা কঠিন। তবে নিয়ম মেনে চেষ্টা করলে খুব সহজেই কাজের জন্য ভিসা পেয়ে যাবেন।
পর্তুগাল
অভিবাসীদের স্বর্গ বলা হয় পর্তুগালকে। কারণ, পর্তুগালে নাগরিকত্ব পাওয়া সবচেয়ে সহজ। পর্তুগালে কাজের জন্য ভিসা পাওয়া বেশ সহজ। এছাড়া ভ্রমণ ও পড়াশোনার জন্য সহজেই ভিসা পাওয়া যায়। তবে শিক্ষা ভিসা পেতে আইইএলটিএস স্কোর কমপক্ষে ৬.০০ থাকতে হবে।
মাল্টা
মাল্টা ইউরোপের শেনজেনভুক্ত একটি দেশ। বর্তমানে প্রতিবছরই বিভিন্ন দেশ থেকে মাল্টায় কাজের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমায়। ইউরোপের এই দেশে কাজের জন্য ভিসা পাওয়া অনেকটাই সহজ। বর্তমানে বাংলাদেশ ও ভারত থেকে কাজ নিয়ে মাল্টায় যাচ্ছেন অনেকেই। এছাড়া টুরিস্ট ও শিক্ষা ভিসা প্রাপ্তিও বেশ সহজ। ইউরোপের অন্যদেশগুলোর তুলনায় মাল্টায় যেতে খরচও বেশ কম।
সুইজারল্যান্ড
পর্যটনের অন্যতম দেশ সুইজারল্যান্ড। সবসময় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সুইজারল্যান্ডের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে যান পর্যটকরা। বাংলাদেশ থেকে শিক্ষা ভিসা ও টুরিস্ট ভিসা নিয়ে সুইজারল্যান্ডে যাওয়া যায়। বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ টুরিস্ট ভিসা নিয়ে সুইজারল্যান্ডে যান।
কারণ, সহজেই সুইজারল্যান্ডের টুরিস্ট ভিসা পাওয়া যায়। কিন্তু কাজের জন্য সুইজারল্যান্ডের ভিসা পাওয়া বেশ কঠিন। আবার পড়াশোনা জন্য ভিসা প্রাপ্তি সহজ। সেক্ষেত্রে ভালো আইইএলটিএস স্কোর ও শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হবে।
হাঙ্গেরি
বাংলাদেশ থেকে হাঙ্গেরিতে পড়াশোনার জন্য ভিসা প্রাপ্তি অনেক সহজ। এক্ষেত্রে অবশ্যই সকল শর্ত পূরণ করতে হবে আপনাকে। সেই শর্তগুলোও বেশ সহজ। এছাড়া হাঙ্গেরিতে কাজের জন্য ভিসা চালু করা হচ্ছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী দেখা গিয়েছে, ২০২১ সালে আবেদনকারীদের মধ্যে ৯৫ শতাংশ হাঙ্গেরির ভিসা পেয়েছে। বাকী ৫ শতাংশ ভিসা কাগজপত্রের গরমিলের জন্য বাতিল করা হয়।
নেদারল্যান্ড
বর্তমানে নেদারল্যান্ডসের শিক্ষা ভিসাও অনেক সহজ। বিগত কয়েক বছরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যেসব শিক্ষার্থী নেদারল্যান্ডসে শিক্ষা ভিসার আবেদন করেছে, তাদের সকলেই ভিসা পেয়েছে। কিন্তু সেক্ষেত্রে আইইএলটিএস স্কোর কমপক্ষে ৬.৫০ থাকতে হবে এবং লেখাপড়ায় ভালো হতে হবে।
লিথুয়ানিয়া
সুইডেনের বিপরীত পাশে অবস্থিত লিথুয়ানিয়ার শিক্ষার হার প্রায় ৯৯ শতাংশ। বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি শিক্ষা ভিসায় সুবিধা পাওয়া যায় এই দেশটিতে। তবে লিথুনিয়ায় কাজের জন্য ভিসা পাওয়া বেশ কঠিন। তবে এই সব দেশে পড়ার পাশাপাশি কাজের মাধ্যমে ইনকামের ব্যবস্থা রয়েছে।
লাটভিয়া
বাল্টিক সাগরের পূর্বদিকে অবস্থিত লাটভিয়া। দেশটিতে শিক্ষা ভিসার প্রক্রিয়া বেশ সহজ। এছাড়া কাজের জন্যও ভিসা দিয়ে থাকে দেশটি। সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী ইউরোপের এই দেশগুলোতে ভিসা প্রাপ্তির হার অনেক বেশি। সকল প্রক্রিয়া সঠিকভাবে সম্পন্ন করলে খুব সহজেই ভিসা পেয়ে যাবেন। ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন অনলাইনেই।
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে খরচ তুলনামূলকভাবে অনেক কম। এর মধ্যে রোমানিয়া, ফ্রান্স, পর্তুগাল, সুইজারল্যান্ড, নেদারল্যান্ড, মালটা এই দেশগুলোতে আপনি অনেক কম খরচে যেতে পারবেন।
ইউরোেপের কোন দেশে যাওয়া সহজ
এখন বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ থেকে ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশের ভিসা চালু রয়েছে। আর এই সবগুলো দেশের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে পর্তুগাল, ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড, মালটা, হাঙ্গেরি, নেদারল্যান্ড, পোল্যান্ড, ডেনমার্ক, অস্ট্রেলিয়া, এবং রোমানিয়া ইত্যাদি। আপনাদের মধ্যে যারা ইউরোপের বিভিন্ন দেশগুলোতে পড়াশোনা বা ভ্রমন করতে যেতে ইচ্ছুক তারা ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশের ভিসা খুব সহজেই পেয়ে যাবেন।
সরকারি ভাবে বিদেশ যাওয়ার উপায়
আপনি যদি সরকারি ভাবে বিদেশ যাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আজকের এই পোস্টটি আপনার জন্য। কেননা এখন আমি এখন যে বিষয়ে আলোচনা করতে চলেছি সেটি হচ্ছে সরকারি ভাবে বিদেশ যাওয়ার উপায় সম্পর্কিত যাবতীয় সকল তথ্য। এখন আপনি যদি শ্রমিক বা চাকরিজীবী হিসেবে সরকারিভাবে বিদেশে যেতে চান।
তাহলে আপনাকে সর্বপ্রথমে প্রাথমিকভাবে একটি বিদেশে যাওয়ার নিবন্ধন করতে হবে। শ্রমিক নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারিভাবে বিদেশে যেতে যারা ইচ্ছুক। সে সকল প্রার্থীদের জন্য সর্বপ্রথমে নির্ধারিত তারিখের মধ্যে প্রবাসী কল্যাণ এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে অধীনস্ত প্রতিষ্ঠান এবং
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর কেন্দ্রীয় যে ডাটা ব্যাংক সেখানে আপনাকে নিবন্ধন করতে হবে। তারপর জনশক্তি কর্মসংস্থান এবং পরিসংখ্যান ব্যুরোর মাধ্যমে দক্ষ, স্বল্প দক্ষ, অদক্ষ, নারী এবং পুরুষ, সকল শ্রমিক ইত্যাদি সেক্টর বা প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক যেকোনোভাবে বিভিন্ন দেশে সরকারিভাবে বিদেশে যাওয়ার জন্য নিবন্ধন করা হয়ে থাকে।
ইউরোপের কোন দেশ চাকরির জন্য ভালো
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) চারটি দেশ তাদের ছয়টি খাতে বাংলাদেশ থেকে দক্ষ কর্মী নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ইউরোপের চার দেশে দক্ষ কর্মী পাঠাতে জুনের মধ্যে রোডম্যাপ চূড়ান্ত করা হচ্ছে। দক্ষ কর্মী পাঠানোর সামর্থ্য অর্জনের লক্ষ্যে প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশকে ৩০ লাখ ইউরোর আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে ইউরোপের ওই চার দেশ হলো ইতালি, জার্মানি, গ্রিস ও রোমানিয়া।
বাংলাদেশ থেকে দক্ষ কর্মী নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিটি দেশের চাহিদা আলাদা। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, ইতালি তৈরি পোশাক ও জাহাজ নির্মাণ শিল্পের জন্য বাংলাদেশের কর্মী নিতে চায়। জার্মানি চাইছে পর্যটন ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কর্মী। রোমানিয়ার চাহিদা নির্মাণশিল্পের দক্ষ কর্মী। আর গ্রিস চায় বাংলাদেশের কৃষি খাতের দক্ষ কর্মী।
ইউরোপের কোন দেশে বেতন বেশি
উচ্চ বেতনের চাকরি ও উন্নত জীবন যাপনের জন্য ইউরোপ মহাদেশ একটি আদর্শ চয়েজ প্রবাসীদের কাছে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন বেতন স্কেল নির্ধারণ করা হয়ে থাকে কাজ এবং দক্ষতার উপর নির্ভর করে।
সুইজারল্যান্ডঃ স্বপ্নের দেশ বলা হয় সুইজারল্যান্ডকে। সুইজারল্যান্ডে একজন শ্রমিকের মাসিক আয় প্রায় ৮ লাখ টাকা থেকে ৯ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে সুইজারল্যান্ডে একজন দক্ষ শ্রমিক প্রতি মাসে ১২ লাখ টাকা পর্যন্ত ইনকাম করতে পারে।
জার্মানিঃ ইউরোপের আরেকটি উন্নতশীল রাষ্ট্র জার্মানি। জার্মানিতে একজন প্রবাসী প্রতি মাসে ৮ লক্ষ টাকা থেকে ৯ লক্ষ টাকা উপার্জন করে। এছাড়াও যাদের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা বেশি তারা প্রতি মাসে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত উপার্জন করতে পারে।
সুইডেনঃ অধিকাংশ প্রবাসীর মত অনুযায়ী ইউরোপে সবথেকে সুরক্ষা ও কাজের পরিবেশ রয়েছে সুইডেনে। সুইডেন একজন শ্রমিক মাসে নূন্যতম প্রায় ৭ থেকে ৮ লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করে।
নরওয়েঃ নরওয়ে একজন শ্রমিকের মাসিক বেতন প্রায় ৬ লাখ থেকে ৭ লাখ টাকা। তবে ওভারটাইম করলে ৮ লাখ টাকা পর্যন্ত বেতন হয়ে থাকে।
অস্ট্রিয়াঃ বর্তমান সময়ে ইউরোপের উন্নতশীল দেশগুলোর মধ্যে অস্ট্রিয়া অন্যতম। প্রতি বছর অস্ট্রিয়া হাজার হাজার শ্রমিক আমদানি করা হয়।
অস্ট্রিয়াতে একজন শ্রমিকের মাসিক গড় আয় ৬ লাখ থেকে ৭ লাখ টাকা। তবে যারা ওভারটাইম করে তাদের বেতন ন্যূনতম ৯ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হবে পারে।
এছাড়াও লুক্সেমবার্গ, আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, ফ্রান্স, স্পেন, স্লোভেনিয়া, মাল্টা ও পর্তুগালে একজন শ্রমিক প্রতি মাসে সর্বনিম্ন প্রায় ৭ লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ প্রায় ৯ লাখ টাকা পর্যন্ত বেতন পেয়ে থাকে।
ইউরোপে সর্বনিম্ন বেতন কত
ইউরোপে একজন প্রবাসীর সর্বনিম্ন মাসিক বেতন প্রায় ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা। ইউরোপের দেশ ও কাজের ধরনের উপর ভিত্তি করে বেতন কমবেশি হয়ে থাকে। এছাড়া বেসিক ডিউটি পালনের পর ওভারটাইম করে এবং ধীরে ধীরে কাজের প্রতি দক্ষতা করলে একজন শ্রমিক প্রতি মাসে সর্বনিম্ন প্রায় ৫ লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ প্রায় ৯ লাখ টাকা পর্যন্ত ইনকাম করতে পারে।
লেখকের মন্তব্যঃ
অন্যান্য দেশের তুলনায় ইউরোপ মহাদেশের দেশগুলোতে বেতন অপেক্ষাকৃত অনেক বেশি হয়ে থাকে। এছাড়া ইউরোপ মহাদেশের দেশগুলোতে কাজের অনেক সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায়। ইউরোপে মহাদেশে যেতে যেমন লাখ লাখ টাকা খরচ হয় তেমন লাখ লাখ টাকা ইনকাম করা যায়। ইউরোপে দেশ অনুযায়ী ন্যূনতম ৯০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৫ থেকে ৯ লাখ টাকা পর্যন্ত ইনকাম করা যায়।
ইউরোপের কোন দেশের বেতন কত টাকা তা সঠিক ভাবে বলা যায় না। কারণ সকল কর্মীর কাজের দক্ষতা সমান নয়। ইউরোপের দেশগুলোতে দক্ষতা অনুযায়ী কাজের বেতন কমবেশি হতে পারে। তাই ইউরোপ নির্দিষ্ট কাজে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। তো কাজের দক্ষতা অর্জণ করুন তারপর পাড়ি জমান ইউরোপের পছন্দের দেশে। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url