কোমর ব্যথার কারণ ও প্রতিকারে করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
কোমর ব্যথা খুব সাধারণ একটি স্বাস্থ্য সমস্যা। জীবনে কোমর ব্যথা হয়নি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া খুব কঠিন। অনেক মানুষ আছেন এমন যারা অনেক দিন ধরে এই সমস্যা বয়ে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু আমরা কি জানি এই সমস্যা কেন হয় ? আর এর থেকে মুক্তির উপায় বা কি।
হ্যাঁ বন্ধুরা আজ আপনাদের সামনে কোমর ব্যথার কারণ এবং এর থেকে মুক্তির ঘরোয়া পদ্ধতি ও চিকিৎসা সম্পর্কে আলোচনা করবো। সাধারণত কোমরের ব্যথা কিছু ব্যয়ামের মাধ্যমে সেরে যায় সে সম্পর্কেও আলোচনা করবো।
কোমর ব্যথা সারানোর সহজ উপায়
কোমরের ডান পাশে ব্যথা কেন হয়
কোমরের নিচে বাম পাশে ব্যথার কারণ
কোমরের বাম পাশে ব্যথা কেন হয়
অল্প বয়সে কোমর ব্যথার কারণ
কোমর থেকে পা পর্যন্ত ব্যথার কারণ
মহিলাদের কোমর ব্যথার প্রতিকার
কোমর ব্যথার ঔষধ
কোমরের দুই পাশে ব্যথার কারণ কি
লেখকের মন্তব্যঃ
পিঠ ও কোমর ব্যথার সাধারণ কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে—
কোমর ব্যথা সারানোর সহজ কিছু উপায় রয়েছে। যার মাধ্যমে ম্যাজিকের মতো কমতে পারে এই ব্যথা। তবে দীর্ঘদিন এই ব্যথা থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।
১. হালকা গরম সেঁকঃ কোমরের ব্যথাযুক্ত স্থানে হালকা গরম কাপড়ের সেঁক দিতে পারেন। গরম পানিতে কাপড় ভিজিয়েও এ সেক দিতে পারেন। এতে যন্ত্রণা কমবে এবং আরাম পাবেন।
২. তেল মালিশঃ কালো জিরা, মেথি ও রসুন সরিষা তেলে ভেজে নিন। এই তেল একটি পাত্রে রেখে হালকা গরম থাকাবস্থায় কোমরের ব্যথাযুক্ত জায়গায় মালিশ করুন।
৩ খাবারঃ কোমর ব্যথা কমাতে আদা খান। আদার পটাশিয়াম নার্ভের সমস্যা দূর করে। এতে কোমরের ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
৪. ব্যায়ামঃ অনেক সময় বসে কাজ করলে বসা থেকে উঠে মাঝেমধ্যে ব্যায়াম করতে পারেন। এ জন্য কোমর ভাঁজ করে কিছু শরীর চর্চা করতে পারেন। তবে কখনোই মাটিতে বসে কাজ করবেন না।
৫. বিছানাঃ নরম ম্যাট্রেস বা ফোমের বিছানায় ঘুমাবেন না। এতে কোমর ব্যথা বাড়ে।
স্কোলিওসিসঃ স্কোলিওসিস হলো মেরুদণ্ড হঠাৎ করে বেকে যাওয়া। অস্বাভাবিকভাবে বেকে যাওয়ার কারনে পেশী টান টান লাগতে পারে, মেরুদন্ডের একপাশ প্রসারিত হয় এবং অন্যপাশ সংকুচিত হতে পারে। স্কোলিওসিস এ আক্রান্ত প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে অনেকের সাধারণত কোমরের ডান পাশে ব্যথা হয়।
মহিলাদের কোমরের বাম পাশে ডিম্বাশয় এবং ফ্যালোপিয়ান টিউব, সেইসাথে বাম কিডনির নীচের অংশ, বড় অন্ত্রের অংশ, সিগময়েড কোলন, মূত্রাশয়ের একটি অংশ এবং বাম মূত্রনালী কোমরের বাম দিকে অবস্থিত। এগুলোর কোন একটিতে সমস্যার কারণে কোমরের বাম পাশে ব্যথা হতে পারে। এছাড়া কোন আঘাত বা ছুরিকাঘাত হলে ও আপনি কোমরের বাম পাশে ব্যথা অনুভব করতে পারেন।
দীর্ঘক্ষণ এক জায়গায় বসা যাবে নাঃ এক জায়গায় বেশিক্ষণ ধরে বসে থাকলে কোমরে ব্যথা হতে পারে। তাই একটু পর পর জায়গা পরিবর্তন করুন এবং একটু হাঁটুন।
সঠিক বিছানায় ঘুমাবেনঃ অবশ্যই শক্ত ফোম বা ম্যাট্রেসে ঘুমানোর চেষ্টা করবেন। নরম কোন বিছানায় বসবেন না এবং ঘুমাবেন না।
ওজন নিয়ন্ত্রন করুনঃ অতিরিক্ত ওজনের ফলে কোমর থেকে শুরু করে পা পর্যন্ত ব্যথা করতে পারে। তাই সঠিক জীবন যাপনের মাধ্যমে অথবা ব্যায়ামের মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রনে রাখুন।
রসুন ও সরিষার তেল দিয়ে কোমর ম্যাসাজ করুনঃ কয়েকটি রসুন, কালোজিরা এবং সরিষার তেল একটি পাত্রে নিয়ে ভালোভাবে ফুটিয়ে নিন। তারপর ঠান্ডা হয়ে গেলে তেলটি আপনার কোমরে ম্যাসাজ করুন। কয়েকদিন রাতে ঘুমানোর আগে এভাবে ম্যাসাজ করলে আরাম পাওয়া যায়।
গরম পানির ব্যাগ ব্যবহার করুনঃ তলপেটে ব্যথা কোমরের ব্যথার ক্ষেত্রে গরম পানির ব্যাগ অনেক উপকারি। গরম পানির ব্যাগ ব্যবহারের ফলে প্রচন্ড যন্ত্রনা থেকে আরাম পাওয়া যায়।
গরম গরম আদা চা খানঃ আপনার যদি কোমরের ব্যথা থাকে তাহলে আপনি গরম আদা চা খেতে পারেন। এটি কোমরের ব্যথা কমাতে সহায়তা করে।
প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিনঃ এত কিছু করার পরও যদি কোমরের ব্যথা না কমে তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সাধারণ ব্যথা মনে করে কখনোই অবহেলা করবেন না।
ভিভিয়ান প্লাস ৫০ এম জি/৫০০ এম জি ট্যাবলেট (Vivian Plus 50 Mg/500 Mg Tablet)
Duoflam N Tablet.
ম্যাক্সরেল ট্যাবলেট (Maxrel Tablet)
রিয়েক্টিন প্লাস ৫০ এম জি/৫০০ এম জি ট্যাবলেট (Reactin Plus 50 mg/500 mg Tablet)
Dicopin 50 Mg/500 Mg Tablet.
কোমর ব্যথার অনেকগুলি কারণ হতে পারে, তাই এটি বিভিন্ন উপায়ে শ্রেণীবদ্ধ করা যেতে পারে।
ভূমিকাঃ কোমর ব্যথার কারণ ও প্রতিকার।
আমাদের সমাজের জনসংখ্যার প্রায় শতকরা ৭০ থেকে ৮০ ভাগ মানুষ জীবনের কোন না কোন সময় এ সমস্যায় পড়েছেন। বেশিব ক্ষেত্রে মানুষের কোমর ব্যথা শুরু হয় ৩০ বছর বয়স থেকে। তবে এই সমস্যা যে কোন বয়সেই হতে পারে।সূচীপত্রঃ
কোমর ব্যথার কারণকোমর ব্যথা সারানোর সহজ উপায়
কোমরের ডান পাশে ব্যথা কেন হয়
কোমরের নিচে বাম পাশে ব্যথার কারণ
কোমরের বাম পাশে ব্যথা কেন হয়
অল্প বয়সে কোমর ব্যথার কারণ
কোমর থেকে পা পর্যন্ত ব্যথার কারণ
মহিলাদের কোমর ব্যথার প্রতিকার
কোমর ব্যথার ঔষধ
কোমরের দুই পাশে ব্যথার কারণ কি
লেখকের মন্তব্যঃ
কোমর ব্যথার কারণ
লিগামেন্ট হলো সুতার মতো টিস্যু যা বিভিন্ন হাড় ও জয়েন্টের (গিরার) মধ্যে সংযোগ স্থাপন করতে সাহায্য করে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শরীরের পেশি ও লিগামেন্টে হঠাৎ করে টান অথবা চাপ খেলে কোমর ব্যথা হতে পারে।
মেরুদণ্ডের হাড়গুলোর মাঝে কিছু বিশেষ চাকতি বা ডিস্ক থাকে। এসব ডিস্ক সরে গেলে পিঠ ও কোমর ব্যথা হয়। পাশাপাশি কোমর, নিতম্ব ও পায়ে ঝিম ঝিম বা খচখচ্ করা, বোধ কমে যাওয়া ও দুর্বলতার মতো লক্ষণগুলো দেখা দিতে পারে। কখনো কখনো সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই ব্যথা হতে পারে। এমনকি মানসিক চাপে থাকলেও এই ধরনের ব্যথা হয়।
পিঠ ও কোমর ব্যথার সাধারণ কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে—
- ভারী জিনিস তোলা
- আকস্মিক শারীরিক নড়চড়
- দীর্ঘ সময় ধরে একই ভঙ্গিতে বসে থাকা
- নিয়মিত ব্যায়াম না করা
- হঠাৎ করে অতিরিক্ত পরিশ্রম করা অথবা ভারী ব্যায়াম করা
- নরম বিছানায় অথবা উঁচু বালিশে ঘুমানো
- ওয়ার্ম আপ বা হালকা ব্যায়াম না করে খেলাধুলা করা এবং খেলার সময়ে পেশিতে টান পড়া
- শরীরের জন্য অনুপযোগী উচ্চতা বা আকারের চেয়ার অথবা সোফাতে বসলে
- অস্বাস্থ্যকর দেহভঙ্গিতে মোবাইল ফোন ও কম্পিউটার চালানো অথবা টিভি দেখা
- আঘাত অথবা দুর্ঘটনার সম্মুখীন হওয়া
- গর্ভবতী হওয়া
- হাড় ক্ষয় বা অস্টিওপোরোসিস
- মেরুদণ্ডের ফাটল, ইনফেকশন কিংবা জন্মগত সমস্যা
- ‘সায়াটিকা’ নামক কোমরের নার্ভ বা স্নায়ুর সমস্যা
- বিভিন্ন ধরনের আর্থ্রাইটিস
- কিডনি, পিত্তথলি, অগ্ন্যাশয় ও নারী প্রজননতন্ত্রের কিছু রোগ
- অটোইমিউন রোগ
- হাড়ে ক্যান্সার হওয়া অথবা ভিন্ন কোনো অঙ্গের ক্যান্সার হাড়ে ছড়িয়ে পড়া
কোমর ব্যথা সারানোর সহজ উপায়
বেশির ভাগ কোমর ব্যথারই প্রকৃত কোনো কারণ অজানা থেকে যায় রোগী এবং ডাক্তারের কাছে। প্রয়োজনীয় ঔষুধ আর ব্যায়ামের মাধ্যমে কোমর ব্যথায় আক্রান্ত রোগী সাধারণত তিন মাসের মধ্যেই সুস্থ হয়ে ওঠেন। কিন্তু এর চেয়ে বেশি সময় ধরে যদি কোমর ব্যথায় ভোগেন, তাহলে তা অবশ্যই চিন্তার বিষয়। তা ছাড়া প্রায়ই যদি আপনি কোমর ব্যথায় ভোগেন, তবে তা বিপদ সংকেতও বটে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোমরের প্রধান ৫টি হাড়ে সমস্যা কিংবা ক্ষয় শুরু হলে হাড়ের ডিস্ক, মাংসপেশি, স্নায়ুর সামঞ্জস্য নষ্ট হলে, মেরুদণ্ডে টিউমার ও ইনফেকশন হলে কোমর ব্যথায় ভোগেন রোগীরা। একটানা বসে থাকার কারণেও কোমর ব্যথায় আক্রান্ত হন কেউ কেউ। আবার কেউ কেউ ভারি কাজ করতে গিয়েও কোমর ব্যথাকে সঙ্গী করে নেন চিরদিনের মতো।
কোমর ব্যথা সারানোর সহজ কিছু উপায় রয়েছে। যার মাধ্যমে ম্যাজিকের মতো কমতে পারে এই ব্যথা। তবে দীর্ঘদিন এই ব্যথা থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।
১. হালকা গরম সেঁকঃ কোমরের ব্যথাযুক্ত স্থানে হালকা গরম কাপড়ের সেঁক দিতে পারেন। গরম পানিতে কাপড় ভিজিয়েও এ সেক দিতে পারেন। এতে যন্ত্রণা কমবে এবং আরাম পাবেন।
২. তেল মালিশঃ কালো জিরা, মেথি ও রসুন সরিষা তেলে ভেজে নিন। এই তেল একটি পাত্রে রেখে হালকা গরম থাকাবস্থায় কোমরের ব্যথাযুক্ত জায়গায় মালিশ করুন।
৩ খাবারঃ কোমর ব্যথা কমাতে আদা খান। আদার পটাশিয়াম নার্ভের সমস্যা দূর করে। এতে কোমরের ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
৪. ব্যায়ামঃ অনেক সময় বসে কাজ করলে বসা থেকে উঠে মাঝেমধ্যে ব্যায়াম করতে পারেন। এ জন্য কোমর ভাঁজ করে কিছু শরীর চর্চা করতে পারেন। তবে কখনোই মাটিতে বসে কাজ করবেন না।
৫. বিছানাঃ নরম ম্যাট্রেস বা ফোমের বিছানায় ঘুমাবেন না। এতে কোমর ব্যথা বাড়ে।
এ ছাড়া হলুদ, লেবু, অ্যালোভেরা খেলেও কোমরের ব্যথা কমে। ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম জাতীয় খাবার যেমনঃ দুধ, ঘি, পনির, ফল, শাকসবজি, বাদাম ইত্যাদি খেলেও কোমরের ব্যথা থেকে দ্রুত মুক্তি পাওয়া যায়।
কোমরের ডান পাশে ব্যথা কেন হয়
কোমরের ব্যথা বা কোমরের ডান পাশে ব্যথা বিভিন্ন কারনে হতে পারে যেমন-টিস্যু ইনজুরিঃ আমাদের কোমরে স্পাইনাল স্ট্রাকচারের চারদিকে বিভিন্ন ধরনের কিছু সফট টিস্যু থাকে বিশেষ করে লিগামেন্ট, টেন্ডন, ম্যাসেল, ডিস্ক। এই সফট টিস্যুগুলিতে যদি ইনজুরি হয় তাহলে আমাদের কোমরের একপাশে ব্যথা হতে পারে। হাড়ের সমস্যা যেমন আর্থ্রাইটিস, হাড় বেড়ে যাওয়া, হাড় ক্ষয় যাওয়া এসবের জন্যও কোমরের ডান পাশে বা এক পাশে ব্যথা হতে পারে।
ইন্টারনাল অর্গান যেমন কিডনি, কোলন, পেনক্রিয়াস, পাকস্থলী এসবের সমস্যা থেকেও অনেক সময় কোমরের সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে কিডনির সমস্যা যেমন কিডনিতে পাথর বা ইনফেকশন হলেও আমাদের এটা থেকে কোমরের একপাশে ব্যথা হতে পারে। তবে কিডনিতে সমস্যা হলে কোমরের একপাশে ব্যথার পাশাপাশি আরো অনেক সমস্যা হতে পারে যেমন প্রস্রাবের সমস্যা, জ্বর, বমি ইত্যাদি।
স্কোলিওসিসঃ স্কোলিওসিস হলো মেরুদণ্ড হঠাৎ করে বেকে যাওয়া। অস্বাভাবিকভাবে বেকে যাওয়ার কারনে পেশী টান টান লাগতে পারে, মেরুদন্ডের একপাশ প্রসারিত হয় এবং অন্যপাশ সংকুচিত হতে পারে। স্কোলিওসিস এ আক্রান্ত প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে অনেকের সাধারণত কোমরের ডান পাশে ব্যথা হয়।
কোমরের নিচে বাম পাশে ব্যথার কারণ
কোমরের বাঁ দিকে অনেক অঙ্গ বা অঙ্গের অংশ রয়েছে। এই অঙ্গগুলির কোনও আঘাত বা রোগ এই কোমরের ব্যথার কারণ হতে পারে। কখনও কখনও, পেটের ডান দিকে একটি নির্দিষ্ট ব্যাধি কারণে ব্যথা, বাম দিকে করতে পারে। এই অবস্থায়, বাম দিকের পেটে ব্যথা নির্ণয় করা কিছুটা কঠিন হয়ে যায়।
মহিলাদের কোমরের বাম পাশে ডিম্বাশয় এবং ফ্যালোপিয়ান টিউব, সেইসাথে বাম কিডনির নীচের অংশ, বড় অন্ত্রের অংশ, সিগময়েড কোলন, মূত্রাশয়ের একটি অংশ এবং বাম মূত্রনালী কোমরের বাম দিকে অবস্থিত। এগুলোর কোন একটিতে সমস্যার কারণে কোমরের বাম পাশে ব্যথা হতে পারে। এছাড়া কোন আঘাত বা ছুরিকাঘাত হলে ও আপনি কোমরের বাম পাশে ব্যথা অনুভব করতে পারেন।
কোমরের বাম পাশে ব্যথা কেন হয়
- গর্ভধারণ
- সায়াটিকা
- অস্টিওপোরোসিস
- ফিব্রমিয়াল্গিয়া
- কাডা ইকুইনা সিন্ড্রোম
- ডিম্বাশয় সিস্ট
- গ্যাস্ট্রাইটিস
- ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (ইউটিআই)
- কিডনিতে পাথর
- ডাইভারটিকুলিসিস
- আলসার
- প্যানক্রিয়াটাইটিস
যেহেতু আপনার কোমরের বাম দিকে ব্যথার অনেকগুলি সম্ভাব্য কারণ থাকতে পারে, তাই আপনি যদি কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত না হন এবং না জানেন তাহলে একজন ডাক্তারের সাথে দেখা করাই ভাল,- উদাহরণস্বরূপ, আপনি যোগব্যায়াম অনুশীলন করার সময় আপনার পেশীতে টান লেগেছে। যদি ব্যথা বেশি হয় তাহলে আপনার ডাক্তারের কাছে যাওয়াই উত্তম।
অল্প বয়সে কোমর ব্যথার কারণ
অল্প বয়সে কোমর ব্যথা? ব্যথা ক্রমেই কোমর থেকে পায়ের দিকে চলে যায়? এই ব্যথার ধরন একটু অদ্ভুতই! অনেকটা ঝিম ঝিম বা অবশ লাগে। অনেকে ভাবেন একটানা বসে থেকে এই সমস্যা হয়। তবে দিনদিন অস্বস্তি বাড়েই। কেন এমনটা হয়?
- দীর্ঘক্ষণ একই ভঙ্গিতে বসে থাকলে।
- বসার চেয়ার ঠিক না হলে ও সামনে-পেছনে ঝুঁকে বসলে এই সমস্যা হয়।
- ড্রাইভিং এর সময় বেশি সামনে ঝুঁকে চালালে।
- শুয়ে বা কাঁত হয়ে অনেকক্ষণ বই পড়লে।
- ভারি জিনিস নিয়মিত বহন করলে।
- প্রথমে কোমরে হালকা ব্যথা থাকলেও সময়ে বাড়ে।
- অনেক সময় হাঁটা কঠিন হয়।
- ব্যথা কোমর থেকে ছড়িয়ে পড়ে।
- চিত হয়ে শুলে ব্যথার কিছুটা উপশম হয়।
- একটু নড়াচড়াতেই কোমরের ব্যথা বাড়ে।
- ঘুম থেকে উঠে পা ফেলতে অসুবিধে।
- হাঁটতে গেলেই পা খিচে আসে।
- পা অবশ ও ভারি হয়ে যায়।
- কোমরের মাংসপেশিতে কামড়ানো ভাব থাকে।
কোমর থেকে পা পর্যন্ত ব্যথার কারণ
আমাদের শরীরে সায়াটিক নার্ভ নামে একটি দীর্ঘ স্নায়ু আছে। এটি স্পাইনাল কর্ড থেকে মেরুদণ্ডের শেষ প্রান্তে ঊরুর পেছনের দিক দিয়ে পায়ের আঙুল পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে গেছে। কোনো কারণে এ স্নায়ুতে চাপ পড়লে কোমর থেকে পায়ের নিচ পর্যন্ত তীব্র ব্যথা ছড়িয়ে পড়ে। তখন একে সায়াটিকা বলে।
- একটানা অফিসের চেয়ারে বসে কাজ। প্রয়োজনে উঠতে গেলেই কোমর থেকে পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত অসহ্য যন্ত্রণা করে। সেই যন্ত্রণার তীব্রতা এতটাই বেশি যে, উঠে দাঁড়ানোর ক্ষমতাটুকুও থাকে না অনেকের।
- এই ধরনের ব্যথা কিন্তু সায়াটিকা স্নায়ু থেকেও হতে পারে। তাই ফেলে না রেখে ঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু করা প্রয়োজন। সঠিক ওষুধ এবং ব্যায়ামের সাহায্যে এই ব্যথা অনেকটাই আয়ত্তে রাখা যায়।
- বাঙুর ইনস্টিটিউট অফ নিউরো সায়েন্স’–এর বিভাগীয় প্রধান ডাক্তার গৌতম গঙ্গোপাধ্যায় বললেন, “সায়াটিকা আমাদের শরীরের দীর্ঘতম ও সবচেয়ে মোটা স্নায়ু। যা শুরু হয় স্পাইন বা মেরুদণ্ড থেকে। এর একাধিক রুটের মধ্যে কিছু আসছে কোমরের নীচের দিকে ‘লাম্বার স্পাইন’ থেকে। সেখানে কোনও ভাবে আঘাত পেলেও এই ব্যথা হয়।”
- এই ব্যথাকে ‘লাম্বোসায়াটিকা পেন’ও বলা হয়। আর বাকি রুটের উৎপত্তি মেরুদণ্ডের শেষ অংশ থেকে, যাকে ‘স্যাক্রাম’ বলে। এই স্নায়ুর শেষ প্রান্তগুলি একত্রিত হয়ে ডান-বাম দিকে কোমর ও নিতম্বের নীচ থেকে একেবারে পায়ের গোড়ালি অবধি চলে যায়।
মহিলাদের কোমর ব্যথার প্রতিকার
নিয়মিত ব্যায়াম করুনঃ ঘরোয়া উপায়ে কোমরের ব্যথা দূর করার জন্য নিয়মিত কমপক্ষে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করা উচিৎ। নিয়মিত একই সময় ব্যায়াম করার ফলে পিঠে ও কোমরের ব্যাথা ভালো হয়ে যায়। মেয়েদের গর্ভাবস্থায় কোমরের ব্যথা হবে এটা স্বাভাবিক, তবে ব্যায়ামের মাধ্যমে সেটা দূর করা সম্ভব।
দীর্ঘক্ষণ এক জায়গায় বসা যাবে নাঃ এক জায়গায় বেশিক্ষণ ধরে বসে থাকলে কোমরে ব্যথা হতে পারে। তাই একটু পর পর জায়গা পরিবর্তন করুন এবং একটু হাঁটুন।
সঠিক বিছানায় ঘুমাবেনঃ অবশ্যই শক্ত ফোম বা ম্যাট্রেসে ঘুমানোর চেষ্টা করবেন। নরম কোন বিছানায় বসবেন না এবং ঘুমাবেন না।
ওজন নিয়ন্ত্রন করুনঃ অতিরিক্ত ওজনের ফলে কোমর থেকে শুরু করে পা পর্যন্ত ব্যথা করতে পারে। তাই সঠিক জীবন যাপনের মাধ্যমে অথবা ব্যায়ামের মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রনে রাখুন।
রসুন ও সরিষার তেল দিয়ে কোমর ম্যাসাজ করুনঃ কয়েকটি রসুন, কালোজিরা এবং সরিষার তেল একটি পাত্রে নিয়ে ভালোভাবে ফুটিয়ে নিন। তারপর ঠান্ডা হয়ে গেলে তেলটি আপনার কোমরে ম্যাসাজ করুন। কয়েকদিন রাতে ঘুমানোর আগে এভাবে ম্যাসাজ করলে আরাম পাওয়া যায়।
গরম পানির ব্যাগ ব্যবহার করুনঃ তলপেটে ব্যথা কোমরের ব্যথার ক্ষেত্রে গরম পানির ব্যাগ অনেক উপকারি। গরম পানির ব্যাগ ব্যবহারের ফলে প্রচন্ড যন্ত্রনা থেকে আরাম পাওয়া যায়।
গরম গরম আদা চা খানঃ আপনার যদি কোমরের ব্যথা থাকে তাহলে আপনি গরম আদা চা খেতে পারেন। এটি কোমরের ব্যথা কমাতে সহায়তা করে।
প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিনঃ এত কিছু করার পরও যদি কোমরের ব্যথা না কমে তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সাধারণ ব্যথা মনে করে কখনোই অবহেলা করবেন না।
কোমর ব্যথার ঔষধ
Esgipyrin 50 Mg/500 Mg Tablet এই ওষুধের জন্য কি অন্য কোন বিকল্প আছে?ভিভিয়ান প্লাস ৫০ এম জি/৫০০ এম জি ট্যাবলেট (Vivian Plus 50 Mg/500 Mg Tablet)
Duoflam N Tablet.
ম্যাক্সরেল ট্যাবলেট (Maxrel Tablet)
রিয়েক্টিন প্লাস ৫০ এম জি/৫০০ এম জি ট্যাবলেট (Reactin Plus 50 mg/500 mg Tablet)
Dicopin 50 Mg/500 Mg Tablet.
কোমরের দুই পাশে ব্যথার কারণ কি
- হাড় ক্ষয় বা অস্টিওপোরোসিস
- মেরুদণ্ডের ফাটল, ইনফেকশন কিংবা জন্মগত সমস্যা
- 'সায়াটিকা' নামক কোমরের নার্ভ বা স্নায়ুর সমস্যা
- বিভিন্ন ধরনের আর্থ্রাইটিস
- কিডনি, পিত্তথলি, অগ্ন্যাশয় ও নারী প্রজননতন্ত্রের কিছু রোগ
- অটোইমিউন রোগ
- হাড়ে ক্যান্সার হওয়া অথবা ভিন্ন কোনো অঙ্গের ক্যান্সার হাড়ে ছড়িয়ে পড়া
কোমর ব্যথার অনেকগুলি কারণ হতে পারে, তাই এটি বিভিন্ন উপায়ে শ্রেণীবদ্ধ করা যেতে পারে।
- তীব্রতা অনুযায়ী
- তীব্র কোমর ব্যথাঃ এটি হঠাৎ করে শুরু হয় এবং কয়েক দিন বা সপ্তাহের মধ্যে চলে যায়।
- দীর্ঘস্থায়ী কোমর ব্যথাঃ এটি তিন মাসের বেশি সময় ধরে থাকে।
- কারণ অনুযায়ী
- পেশী বা টেন্ডন আঘাতঃ এটি কোমর ব্যথার সবচেয়ে সাধারণ কারণ। এটি হঠাৎ করে বাঁকানো, মোচড়ানো বা ভারী বস্তু উত্তোলনের ফলে হতে পারে।
- অন্যান্য চিকিৎসা অবস্থাঃ কোমর ব্যথা অন্যান্য চিকিৎসা অবস্থার লক্ষণ হতে পারে, যেমন দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা সিন্ড্রোম, মূত্রনালীর সংক্রমণ বা গুরুতর সংক্রমণ।
- অন্যান্য শ্রেণীবিভাগ
- অস্ত্রোপচারমূলক কোমর ব্যথাঃ এটি এমন কোমর ব্যথা যা অস্ত্রোপচারের ফলে হয়।
- জন্মগত কোমর ব্যথাঃ এটি এমন কোমর ব্যথা যা জন্মগত ত্রুটির ফলে হয়।
- প্রদাহজনক কোমর ব্যথাঃ এটি এমন কোমর ব্যথা যা প্রদাহের ফলে হয়।
- কোমর ব্যথার কারণ নির্ধারণ করা গুরুত্বপূর্ণ যাতে সঠিক চিকিৎসা পাওয়া যায়।
লেখকের শেষকথাঃ
কোমর ব্যথা একটি কমন সমস্যায় পরিনত হয়েছে। নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ-যাবক প্রায় সবায় এই সমস্যায় ভূগছেন। কাউরি কায়িক প্ররিশ্রমের ফলে, কাউরি আবার ঠিক মত না বসার কারণে, কাউরি আবার অতিরিক্ত ওজনের কারণেও কোমর ব্যথা হয়ে থাকে। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে উপরে বর্ণিত পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করলে আশানুরুপ ফল পাবেন ইনশাআল্লাহ। পড়ে উপকৃত হলে বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করুন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url