পান্তাভাতের অবিশ্বাস্য গুণের কথা ও উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

১লা বৈশাখে বাংলা নববর্ষে পান্তা ভাত খাওয়া নিয়ে সারাদিন ব্যাপি বিভিন্ন অনুষ্ঠান পালন করে থাকেন। এই দিন শহরের অনেক বড় বড় ব্যক্তিত্বরাও পান্তা ভাত খেয়ে দিনটি উৎযাপন করে থাকেন।
পান্তাভাতের অবিশ্বাস্য গুণের কথা ও উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

কিন্তু পান্তা ভাতের গুণের কথা এবং উপকারিতা সম্পর্কে আমরা কতটা জানি ? হ্যাঁ বন্ধুরা আজ পান্তা ভাতের যত গুণের কথা ও উপকারিতা আছে সব আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ। আসুন আর দেরি না করে শুরু করা যাক-

সূচীপত্রঃ

পান্তা ভাতের গুণাগুণ
ভাত খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
কিভাবে পান্তা ভাতের প্রচলন হয় ?
বিশ্বের আর কোন কোন দেশে পান্তা খাওয়া হয় ?
পান্তা ভাত খেলে কি মোটা হয় ?
পান্তা ভাত কখন খাওয়া উচিত ?
পান্তা ভাত তৈরির নিয়ম
পান্তা ভাতের জল তিন পুরুষের বল
যেভাবে ভাত খেলে নিয়ন্ত্রণে থাকবে ডায়াবেটিস
পান্তা ভাত খেলে কি ওজন কমে ?
সকালে খালি পেটে পান্তা ভাত খেলে কি হয় ?
লেখকের শেষকথাঃ

পান্তা ভাতের গুণাগুণ

এই খাবারে যেহেতু তরলের পরিমাণ বেশি থাকে, তাই শরীরকে হাইড্রেটেডও রাখে পান্তা ভাত। ৩) ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালশিয়াম, আয়রনের মতো পুষ্টি রয়েছে পান্তা ভাতে। তাই দিনে একবেলা পান্তা ভাত খেয়ে থাকলেও দেহে পুষ্টির ঘাটতি তৈরি হবে না। এছাড়া এই খাবারে প্রোবায়োটিক রয়েছে, যা অন্ত্রের স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখে।

গবেষনায় দেখা গেছে যে, পান্তাভাতে নানা ধরনের মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট বা পুষ্টিকর খনিজ পদার্থ রয়েছে। এগুলো হচ্ছে, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, জিংক, ফসফরাস, ভিটামিন-বি ইত্যাদি। সাধারণ ভাতের তুলনায় পান্তাভাতে এসব পুষ্টিদায়ক পদার্থের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে বলে দেখেছে গবেষক দল। 

যেমন ১০০ মিলিগ্রাম সাধারণ ভাতে আয়রনের পরিমাণ থাকে ৩.৫ মিলিগ্রাম, কিন্তু ১২ ঘন্টা ভিজিয়ে তৈরি পান্তাভাতে এর পরিমাণ বেড়ে গিয়ে ৭৩ দশমিক ৯ মিলিগ্রামের দাঁড়ায়। একইভাবে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ ও অনেক বেড়ে যায়। ১০০ মিলিগ্রাম সাধারণভাবে যেখানে ক্যালসিয়াম থাকে ২১ মিলিগ্রাম, সেখানে পান্তাভাতে এর পরিমাণ দাঁড়ায় ৮৫০ মিলিগ্রাম। 

 গবেষকরা বলেছেন, ফারমেন্টেশন এর কারণে পান্তাভাতের ফাইটের দুর্বল হয়ে পড়ে এবং তখন পুষ্টিকর পদার্থগুলো উন্মুক্ত হয়ে পড়লে আমাদের শরীর সেগুলো গ্রহণ করতে পারে।

পুষ্টিবিদ শ্বেতা শাহ বলেছেন, পান্তা ভাত মাইক্রোফ্লোরা সমৃদ্ধ, যা একটি প্রিবায়োটিক হিসাবে কাজ করে। এটি অন্ত্রের সংক্রমণ রোধ, শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, ভালো হজমশক্তি, ত্বকের উজ্জ্বলতা এবং সুন্দর চুলের জন্য কাজ করে। পান্তা ভাত একটি ইলেক্ট্রোলাইট হিসাবে কাজ করে তাই এটি ক্লান্তি, দুর্বলতা এবং ডিহাইড্রেশন নিরাময় করে। 

ভাত পান্তা করা হলে এটি বিভিন্ন অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পদার্থ, মেটাবোলাইট যেমন ফেনোলিক্স, ফ্ল্যাভন, ভিটামিন ই, ফাইটোস্টেরল, লিনোলিক অ্যাসিড, অ্যান্থোসায়ানিন ইত্যাদি সমৃদ্ধ হয়। এই শরীর-বান্ধব ব্যাকটেরিয়া কোলেস্টেরল কমাতে, পেরিস্টালসিস উন্নত করতে এবং ডায়রিয়া প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

পান্তা ভাত খাওয়ার উপকারিতা 

বিজ্ঞানীরা বলছেন, পান্তা ভাতে থাকা পুষ্টিকর পদার্থগুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউনিটিকে শক্তিশালী করে তোলে। দেহের রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়াতে সহায়তা করে আয়রন, যেটা পান্তাভাতের প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় জানিয়েছেন গবেষকরা। শরীরের হাড় গুলো কে শক্ত রাখে ক্যালসিয়াম। 

শরীরে নিঃসৃত এনজাইম কে সক্রিয় করতে সহায়তা করে ম্যাগনেসিয়াম। এছাড়াও তারা গবেষণায় দেখেছেন যে, পান্তাভাতে প্রচুর পরিমাণে বিটা সিস্টোস্টরল, কেম্পেস্ট্রোরোল মত মেটাবলাইটস রয়েছে যা শরীরকে প্রদাহ বা যন্ত্রণা থেকে রক্ষা করে। কোলেস্টেরল কমাতে ও এসব উপাদান সাহায্য করে।

আবার পান্তাভাতে রয়েছে আইসোরহ্যামনেটিন সেভেন, গ্লুকোসাইড ফ্ল্যাভোনয়েডের এর মত মেটাবলাইটস যা ক্যানসার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, পান্তাভাতের ল্যাকটিক অ্যাসিড ব্যাকটেরিয়া রয়েছে, যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। সাধারণত দইয়ের মধ্যে এই ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যায়। এছাড়াও গরমের সময়ে পান্তাভাত শরীরকে ঠাণ্ডা রাখে।

ভিটামিন বি ১২ঃ ফার্মেন্টেশনের ফলে পান্তা ভাতে ভিটামিন বি ১২ বেড়ে যায়। এটি ক্লান্তিভাব ও অনিদ্রা দূর করতেও সাহায্য করে।

অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তিঃ পান্তাভাত পিএইচ ব্যালেন্স করতে সাহায্য করে। আলসার রোগীদেরও সুফল দেয়।

নতুন মায়েদের জন্যঃ ফারমেন্টেশনের ফলে ল্যাকটিক অ্যাসিড তৈরি হয়। মায়েদের দুগ্ধ উৎপাদনে সাহায্য করে।

কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাঃ ন্যাচারাল ল্যাক্সেটিভ হিসাবে কাজ করে। কোষ্ঠকাঠিন্য কমায়।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণঃ রক্তচাপের রোগীদের ক্ষেত্রে এটি বেশ কার্যকর। সাধারণ ভাতের তুলনায় এতে সোডিয়ামের পরিমাণ কম। অন্যদিকে পটাশিয়ামের পরিমাণ যথেষ্ট বেশি।

রিহাইড্রেশনঃ পান্তা ‘বডি রিহাইড্রেটিং ফুড’ হিসাবে পরিচিত। গরমকালের খাবার হিসাবে পান্তা উপকারী।

ত্বকের ঔজ্জ্বল্যঃ ‘বিউটি সিক্রেট অফ এশিয়া’ নামে পান্তা ভাত পরিচিত। কারণ এটি কোলাজেন তৈরিতে সাহায্য করে। যা ত্বকের ইলাস্ট্রিসিটি বৃদ্ধি করে, ফলে ত্বক মসৃণ, টানটান ও উজ্জ্বল দেখায়।

মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টে ভরপুরঃ পান্তা ভাতে মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টের প্রাপ্যতা অনেক বেড়ে যায়। উদাহরণস্বরূপ - ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালশিয়াম, আয়রনের মতো উপাদানের প্রাপ্যতা বৃদ্ধি পায়। ১০০ গ্রাম সাধারণ ভাতে ৩.৪ এমজি আয়রন থাকে। অন্যদিকে পান্তা ভাতের ক্ষেত্রে সেটাই দাঁড়ায় প্রায় ২১ গুণ, ৭৩.৯১এমজি।

উপকারী ব্যাকটিরিয়াঃ প্রোবায়োটিক্সে ভরপুর পান্তা ভাত। এটি হজমশক্তি রক্ষায় সাহায্য করে। সেই সঙ্গে পান্তা সারাদিন কাজ করার জন্য শক্তি জোগাতে সাহায্য করে।

পান্তা ভাতের অপকারিতা

আসাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় পাওয়া তথ্য মতে, পান্তা ভাতের কোন খারাপ দিক পাওয়া যায়নি। তবে ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য এই খাবার ক্ষতিকর কিনা সেটা জানতে তারা এখনো গবেষণা চলমান। গবেষকদের মতে, ১২ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ভাতের ফারমেন্টেশন হলে সেখানে অ্যালকোহলের উপাদান তৈরী হয় 

এবং সেই পান্তা ভাত খাওয়ার পর শরীর ম্যাজম্যাজ করে এবং ঘুম পেতে পারে। এছাড়াও পান্তাভাত যদি পরিষ্কার পাত্রে বিশুদ্ধ পানি দিয়ে তৈরি করা না হয় তাহলে সেখানে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া তৈরি হতে পারে। সেই ভাত খেলে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেছেন গবেষক দল।

কিভাবে পান্তা ভাতের প্রচলন হয় ?

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় যেসব অঞ্চলে প্রচুর ধান উৎপন্ন হয় এবং যেসব দেশে ভাত প্রধান খাবার, মূলত সেসব দেশে পানিতে ভিজে খাওয়ার সংস্কৃতি চালু আছে। এসব এলাকার আবহাওয়া অত্যন্ত গরম এবং আদ্র হওয়ার কারণে খুব সহজেই ভাত নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু পানিতে ভিজিয়ে রাখার কারণে এই খাবার দ্রুত নষ্ট হয় না। 

মূলত ভাত নষ্ট হওয়ার হাত থেকে বাঁচতে এবং সংরক্ষণের কথা বিবেচনা করেই এই পান্তাভাতের প্রচলন শুরু হয়। ভাতকে ১০/১২ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখলেই সেটা পান্তা ভাতে পরিনত হয় এবং গরম ভাতের তুলনায় এর পুষ্টিগুণ অনেক গুণে বেড়ে যায়।

বিশ্বের আর কোন কোন দেশে পান্তা খাওয়া হয় ?

বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ আসাম, বিহার, উড়িষ্যা, দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশে, কেরালা এসব অঞ্চলের জনপ্রিয় খাবার এই পান্তাভাত.। তবে একেক জায়গায় পান্তা ভাতকে একেক নামে ডাকা হয়। থাইল্যান্ড, মিয়ানমার-চীন, ইন্দোনেশিয়াতে ও ফারমেন্টেড রাইস খাওয়া হয়। তবে সেটা তৈরি করার প্রক্রিয়া এবং স্বাদ পান্তা ভাতের চেয়ে আলাদা।

পান্তা ভাত খেলে কি মোটা হয় ?

এ খাবারটি শুধু বাংলাতেই নয়, ভিয়েতনাম, উড়িষ্যা, তামিলনাড়ু, চীনসহ অনেক দেশেই খুব জনপ্রিয় একটি খাবার। তবে মোটা হয়ে যাওয়ার ভয়ে অনেকেই এ খাবার এড়িয়ে চলেন। কিন্তু আপনি কি জানেন, পান্তা খেলে মোটেও ওজন বাড়ে না। তাই নিয়মিত পান্তা খেলে মোটা হওয়ার ভয় একদমই নেই বলতে পারেন।

পান্তা ভাত কখন খাওয়া উচিত ?

নৈশভোজের জন্য রান্না করা ভাত বেঁচে গেলে সংরক্ষণের জন্য জলে ভিজিয়ে রাখা হয়। পরদিন এই জলে ভিজিয়ে রাখা ভাত খাওয়া হয়। যাকে পান্তা ভাত বলা হয়। গ্রামীণ বাংলায় পান্তা ভাত সকালের খাবার হিসাবে খাওয়া হয়। তবে এই দুপুরেও খাওয়া যায় যদি ভালো করে সংরক্ষণ করা হয়।

পান্তা ভাত তৈরির নিয়ম

নির্দিষ্ট পরিমাণ ভাতকে জলে প্রায় এক রাত ডুবিয়ে রাখলেই তা পান্তায় পরিণত হয়। ভাত মূলত পুরোটাই শর্করা (Carbohydrate)। ভাতে জল দিয়ে রাখলে বিভিন্ন গাজনকারি (Fermentation) ব্যাক্টেরিয়া (Bacteria) বা ইস্ট (Yeast) শর্করা ভেঙ্গে ইথানল ও ল্যাকটিক এসিড তৈরি করে। এই ইথানলই পান্তাভাতের ভিন্ন রকম স্বাদের জন্য দায়ী।

পান্তা ভাতের জল তিন পুরুষের বল

পান্তা ভাত গ্রামীণ বাঙালি জনগোষ্ঠীর একটি জনপ্রিয় খাবার। নৈশভোজের জন্য রান্না-করা ভাত বেঁচে গেলে সংরক্ষণের জন্য পানিতে ভিজিয়ে রাখা হতো। পরদিন এই পানিতে ভিজিয়ে-রাখা ভাতের নাম হতো পান্তা ভাত। পান্তা ভাত গ্রামীণ মানুষ সকালের নাশতা হিসেবে খেয়ে থাকে।

সাধারণত লবণ, কাঁচা মরিচ ও পেঁয়াজ মিশিয়ে পান্তা ভাত খাওয়া হয়, অনেকেই আবার এর সাথে আলু ভর্তা, বেগুন ভর্তা, ডাল ভর্তা, শুঁটকি ভর্তা বা সরিষার তেল দিয়ে পান্তা ভাতের রুচি বৃদ্ধি করে থাকে। তবে পান্তা ভাতের পুরোপুরি ‍উপকার পেতে হলে পান্তা ভাতের সেই পানিটাও খেতে হবে।

যেভাবে ভাত খেলে নিয়ন্ত্রণে থাকবে ডায়াবেটিস

ডায়াবেটিস রোগীর জন্য পান্তাভাত হচ্ছে ফার্মান্টেড খাবার। ডায়াবেটিস রোগীর ক্ষেত্রে পান্তাভাত খাওয়ার নিয়ম হিসেবে বলা যায়- বেশি অসুস্থ্য থাকলে ডায়াট হিসেবে পান্তাভাত না রাখায় ভালো। পান্তাভাত রাখার সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন কোন প্রকার ব্যাকটেরিয়া না ছড়ায়।

পান্তাভাতে পানি দেয়ার পর থেকে ১২ ঘন্টা থেকে ২ দিনের মধ্যে খেয়ে নিতে হবে। ২দিনের বেশি পুরনো পান্তাভাত ডায়াবেটিস রোগীদের না খাওয়াই ভালো। পান্তাভাতের সাথে অনেকে আলু ভর্তা খেয়ে থাকেন, তবে ডায়াবেটিস রোগীর ক্ষেত্রে পান্তাভাতের সাথে আলু খাওয়া যাবে না। বিভিন্ন শাক-সবজি, মাছ এই সব রাখতে হবে।

পান্তা ভাত খেলে কি ওজন কমে ?

এই প্রচন্ড গরমে ডিহাইড্রেশন হওয়ার একটা সম্ভাবনা থাকে, তাই চেষ্টা করুন পান্তা ভাত খেতে। এই খাবার খেলে আপনার শরীর প্রচুর পরিমাণে জল পাবে। এই খাবারে পাশাপাশি থাকে আয়রন, ক্যালসিয়াম, জিঙ্ক এবং আরও নানা পুষ্টিকর খনিজ দ্রব্য। পান্তা ভাত খেলে শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়ে এবং নানা রকম যন্ত্রণা কমাতে সাহায্য করে।

সবথেকে অবাক করা বিষয় বিজ্ঞানীরা এখনও পান্তা ভাতে কোনও রকম খারাপ কিছু বা অপকারীতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে ডায়বেটিক রোগীদের এই খাবার খাওয়া উচিত কিনা তা জানতে পরীক্ষা চালাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। যদিও অনেক উপকৃত মানুষই জানিয়েছেন, রুটির থেকে বেশি পান্তা ভাত খেলে ডায়বেটিস কমছে বলে জানিয়েছেন। পাশাপাশি সাধারণ সিদ্ধ ভাতের থেকে বেশি পান্তা ভাত খেলে কমবে আপনার ওজন।

সকালে খালি পেটে পান্তা ভাত খেলে কি হয় ?

পান্তা ভাতে আয়রনের পরিমাণ বাড়ে ২১ গুণ যা আয়রন ডিফিশিয়েন্সি কিংবা এনিমিয়া বা রক্তশূন্যতা কমায়। ২. মাত্র একশগ্রাম পান্তা ভাতে প্রায় তিন ট্রিলিয়ন ভালো ব্যাকটেরিয়া থাকে যাদের প্রোবায়োটিকস বলে। যার কাজ হলো শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে উন্নত করা।

এ খাবারটি শুধু বাংলাতেই নয়, ভিয়েতনাম, উড়িষ্যা, তামিলনাড়ু, চীনসহ অনেক দেশেই খুব জনপ্রিয় একটি খাবার। তবে মোটা হয়ে যাওয়ার ভয়ে অনেকেই এ খাবার এড়িয়ে চলেন। কিন্তু আপনি কি জানেন, পান্তা খেলে মোটেও ওজন বাড়ে না। তাই নিয়মিত পান্তা খেলে মোটা হওয়ার ভয় একদমই নেই বলতে পারেন।

লেখকের শেষকথাঃ

পান্তাভাত গ্রামীণ বাঙালি জনগোষ্ঠীর একটি জনপ্রিয় এবং ব্যাপক প্রচলিত সকালের খাবার। নৈশভোজের পর বেচে যাওয়া ভাত নষ্ট হওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরের দিন সকালে খাওয়ার উদ্দেশ্য রাখায় হচ্ছে পান্তাভাত। লবণ, কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজ, আলু ভর্তা ও বিভিন্ন তরকারি দিয়ে পান্তাভাত ভাওয়া হয়।

পান্তাভাতের এতো উপকারিতা ও গুণাগুণ তা কিন্তু প্রথম দিকে কেউ জানতো না। বিভিন্ন দেশের গবেষনা থেকে জানা যায় যে, পান্তাভাতের নানা উপকারিতা ও গুণের কথা। পান্তাভাত বাংলা নববর্ষের উৎযাপনের প্রধান উপকরণ বা আইটেম বলা যায়। এই দিন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বসহ উচ্চ পর্যায়ের লোকজনরাও পান্তা ও ইলিশ খেয়ে উৎযাপন করে থাকেন। 

নিদৃষ্ট একটি দিনে নয়, পান্তাভাত খাওয়ার সুযোগ থাকলেই প্রায় প্রতিদিন এই গরমে পান্তাভাত খেতে পারেন। এতে উপকার পাবেন, ক্ষতি হবে না। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।






















এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪