জামের পুষ্টিগুণ ও জাম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
গ্রীষ্মের অনেকগুলো সুস্বাদু ফলের মধ্যে জাম হচ্ছে অন্যতম। আমের নাম নিলে তার সাথে সাথে চলে আসে জামেরও নাম। জাম ছোট-বড় সবায় খেতে ভালোবাসে। কিন্তু অনেকেই জানে না জামের পুষ্টিগুণ উপকারিতা সম্পর্কে।
হ্যাঁ বন্ধুরা আজ আপনাদের সামনে আপনাদের অতিপরিচিত এবং প্রিয় টক-মিষ্টি স্বাদের জামের পুষ্টিগুণ ও জাম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করবো। চলুন আর দেরি না করে শুরু করা যাক।
সূচীপত্রঃ
জামের পুষ্টিগুণ
জাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
যেসব সমস্যা দূর করতে পারে জাম
জামের সাথে যেসব খাবার শরীরের জন্য বিপজ্জনক
জাম খাওয়ার সময় যেসব সতর্কতা মানা জরুরি
জাম পাতার উপকারিতা
জাম গাছের ছালের উপকারিতা
জামের বীজের উপকারিতা
জাম গাছের বৈশিষ্ট্য
লেখকের শেষকথাঃ
জামের পুষ্টিগুণ
পুষ্টিগুণে অতুলনীয় এ ফলটিতে রয়েছে ভিটামিন ‘এ’ ও ‘সি’, ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, স্যালিসাইলেট, গ্লুকোজ, ডেক্সট্রোজ ও ফুকটোজসহ অসংখ্য উপাদান। পুুষ্টি বিশ্লেষণে জামে পাওয়া যায় পানি ৮৩.১৩ গ্রাম, আমিষ ০.৭২ গ্রাম, শর্করা ১৫.৫৬ গ্রাম, ফ্যাট ০.২৩ গ্রাম, আয়রন ০.১৯ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ১৯ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ১৭ মিলিগ্রাম,
ম্যাগনেশিয়াম ১৫ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ৭৯ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম ১৪ মিলিগ্রাম, থায়ামিন (ভিটামিন-বি১) ০.০০৬ মিলিগ্রাম, রিবোফ্লাবিন (ভিটামিন-বি২) ০.১২ মিলিগ্রাম, নিয়াসিন (ভিটামিন-বি৩ ) ০.২৬০ মিলিগ্রাম, প্যানথোনিক অ্যাসিড (ভিটামিন-বি৫) ০.১৬০ মিলিগ্রাম, ভিটামিন-বি৬ ০.১৬০ মিলিগ্রাম, ভিটামিন-সি ১৪.৩ মিলিগ্রাম।
জাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
জাম গ্রীষ্মকালীন ফল হলেও এটি জুন, জুলাই বা আগস্ট মাসেও পাওয়া যায়। এটি ভিটামিন, খনিজ পদার্থসমৃদ্ধ এবং এতে অনেক ঔষধি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এর অনন্য রঙ (বেগুনি কালো) এবং মিষ্টি-টক স্বাদের জন্য অনেকের কাছেই এটি অতি প্রিয়। এতে ক্যালোরির পরিমাণ খুব কম, কিন্তু পুষ্টিতে ভরপুর।
এই ফলের বীজ, পাতা ও ছালের ঔষধি মূল্য রয়েছে এবং এটি বিভিন্ন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাগুলোতে ব্যবহার করা হয়। এই ফল বেশ সহজলভ্য আমাদের দেশে, বিশেষ করে এই সিজনে। গ্রামে কিংবা শহরে সব জায়গাই পাওয়া যায়। আর দেরি না করে চলুন জামের ৮টি স্বাস্থ্য উপকারিতা দেখে নেওয়া যাক।
১. রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে
ডায়াবেটিস প্রতিরোধে এটি বেশ কার্যকরী। অনেকেই জানেন, ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য জাম খুবই উপকারী। কারণ, এতে থাকা অ্যান্টি-ডায়াবেটিক প্রোপার্টিজ-এর কারণে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়, যা স্টার্চ ও চিনিকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং শরীরে শক্তির যোগান দেয়। আরেকটি গবেষণায় দেখানো হয়েছে যে জামের বীজ ৩০%-এর বেশি পরিমাণে রক্তে শর্করার মাত্রা কমায়।
২. হাড়ের শক্তি বৃদ্ধি করে
জাম ক্যালসিয়াম, আয়রন, পটাসিয়াম ও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ একটি ফল। ক্যালসিয়াম ও আয়রন হাড়ের শক্তি বৃদ্ধির জন্য খুবই দরকারি উপাদান। হাড় ক্ষয়ে যাওয়া রোগীদের ও বয়স্ক মানুষদের খাবার তালিকায় এই সুস্বাদু ফলটি রাখা উচিত।
৩. ইনফেকশন দূর করে
এতে ম্যালিক অ্যাসিড, গ্যালিক অ্যাসিড, অক্সালিক অ্যাসিড, এবং ট্যানিনস - এর মতো যৌগ রয়েছে। এতে একইসাথে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটড়ি প্রোপার্টিজ আছে। জাম শরীর থেকে টক্সিন এলিমেন্টস ও ইনফেকশন দূর করতে সহায়তা করে।
8. জন্ডিস ও অ্যানিমিয়া নিরাময় করে
জামের বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানগুলোর মধ্যে আয়রন একটি অন্যতম উপাদান। যাদের শরীরে হিমোগ্লোবিন কম, তাদের জন্য এটি দারুণ উপকারী। জামে থাকা আয়রন অ্যানিমিয়া ও জন্ডিস নিরাময় করে এবং রক্ত স্বল্পতাজনিত সমস্যায় যারা ভুগছেন তাদের জন্য জাম খুব ভালো কাজ করে বলে প্রমানিত।
৫. ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে
বেশ কয়েকটি গবেষণায় জামের কেমো প্রোটেক্টিভ বৈশিষ্ট্য নিয়ে ইনভেস্টিগেট হয়েছে। জে. সি. জ্যাগেটিয়া ও তার কলিগদের একটি গবেষণা অনুযায়ী এই ফলের নির্যাসে প্রোটেক্টিভ বৈশিষ্ট্য আছে, যা প্রমাণ করে যে এই ফলের নির্যাস ক্যান্সার কোষকে প্রিভেন্ট করে। এটি ফ্রি রেডিক্যালসকে নিউট্রিলাইজ করতেও বিশেষ ভূমিকা রাখে।
৬. ইমিউনিটি বৃদ্ধি করে
জাম দেহের ইমিউন সিস্টেম -কে আরো শক্তিশালী করে তোলে। এতে থাকা ভিটামিন-সি ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সাধারণ সিজনাল ফ্লু এর বিরুদ্ধে শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে বুস্ট আপ করে। সেই সাথে এটি মেটাবলিজম বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এটি স্কিনের জন্যও দারুণ উপকারী।
৭. ডায়াবেটিক রোগীদের জটিলতা কমায়
জামে আছে মিনিমাল গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যা ডায়াবেটিস-এর জন্য ভালো। ডায়াবেটিস কন্ট্রোল করতে ও ডায়াবেটিস প্রতিরোধের জন্য এটি বেশ উপকারী, বিভিন্ন গবেষণায় এই তথ্য পাওয়া গেছে। জামের পাতা, ছাল এবং বীজ ডায়াবেটিস-এর জন্য সবচেয়ে উপকারি অংশ। এর মধ্যে জামের বীজ অ্যান্টি-ডায়াবেটিক এলিমেন্ট হিসেবে প্রমাণিত।
৮. হার্টের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখে
জামে আছে অ্যালজিনিক অ্যাসিড বা অ্যালজিট্রিন, অ্যান্থোসিয়ানিন ও অ্যান্থোসায়ানাডিনস -এর মতো পুষ্টিসমূহ যা রক্তের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে এবং এই যৌগগুলো শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসসমৃদ্ধ যা হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সুস্থ অবদান রাখে। এছাড়াও এটি পটাসিয়াম-এর একটি সমৃদ্ধ ভাণ্ডার, যা উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধে সাহায্য করে, যা হার্ট অ্যাটাক-এর ঝুঁকি কমায়।
জাম খাওয়ার অপরিকতা
- জামে অতিরিক্ত চিনি সংক্রান্ত অপকারিতা থাকতে পারে। চিনি মাধ্যমে অতিরিক্ত ক্যালরি আপনার শরীরে সংগ্রহ হতে পারে এবং শরীরের মধ্যে সুগরের স্তর বৃদ্ধি ঘটাতে পারে। এটি মেটাবলিক স্যান্ড্রোম, ডায়াবেটিস, এবং ওজন বৃদ্ধির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
- জাম কার্যকর কর্মক্ষেত্র নষ্ট করতে পারে। যেমন, জামের উচ্চ চিনির পরিমাণ আপনার দাঁতের ক্ষতি করতে পারে এবং দাঁতের ক্ষতির উপাদান হতে পারে।
- কিছু জামে প্রেজারভেটিভ বা প্রেজারভেটিভ বিশিষ্ট অন্তর্নিহিত থাকতে পারে, যা নিম্নলিখিত সমস্যাগুলি সৃষ্টি করতে পারে: অ্যালার্জির অকারণে এ্যাসথমা, পারস্টেটিক রিয়াকশন, গ্যাস্ট্রোইন্টেস্টাইনাল সমস্যা, আগ্নাশয়ের প্রতিক্রিয়া এবং অন্যান্য সমস্যাগুলি।
যেসব সমস্যা দূর করতে পারে জাম
গ্রীষ্মের সুস্বাদু ফলগুলোর মধ্যে জাম অন্যতম। আমের নাম নিলে তার সঙ্গে সঙ্গে চলে আসে জামের নামটিও।
১) হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করে ভিটামিন সি এবং আয়রনে ভরপুর জাম রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে।
২) ব্রণের সমস্যা দূর করে।
৩) চোখের যত্নে।
৪) হার্টের জন্য ভাল।
৫) মাড়ির সমস্যায়।
জামের সাথে যেসব খাবার শরীরের জন্য বিপজ্জনক
- জাম খাওয়ার আগে, জাম খাওয়ার সময় কিংবা পরে বেশ কিছু নিয়ম রয়েছে, যা না মানলে শারীরিক নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন।
- যেমন কখনোই খালি পেটে জাম খাবেন না। এভাবে জাম খাওয়ার কারণে আপনার পেটের বিভিন্ন সমস্যা যেমন: গ্যাস্ট্রিক, বদহজম, অম্বল হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
- পুষ্টিবিদদের মতে, আবার কিছু খাবারের সাথে এই ফল শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক। যেমন জাম ও হলুদ খুবই মারাত্মক জুড়ি। তাই এই দুটো জিনিস কখনো একসঙ্গে খাবেন না। জাম খাওয়ার পর হলুদ দিয়ে তৈরি কোনো খাবারও না খেয়ে এড়িয়ে যেতে চেষ্টা করুন।
- জাম খাওয়ার আগে পানি পান করতে চেষ্টা করুন। জামের পুষ্টিগুণ অটুট রাখতে এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষায় জাম খাওয়ার পর কখনোই পানি পান করবেন না। পানি পান করতে অন্তত আধঘণ্টা অপেক্ষা করুন।
- চিকিৎসকরা বলছেন, জাম খাওয়ার পর দুধ, পনির, দইয়ের মতো দুগ্ধজাত খাবার শরীরের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। তাই জাম খাওয়ার পর কখনোই এসব খাবার খাবেন না।
জাম খাওয়ার সময় যেসব সতর্কতা মানা জরুরি
- যেমন কখনোই খালি পেটে জাম খাবেন না। এভাবে জাম খাওয়ার কারণে আপনার পেটের বিভিন্ন সমস্যা যেমন: গ্যাস্ট্রিক, বদহজম, অম্বল হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পুষ্টিবিদদের মতে, আবার কিছু খাবারের সঙ্গে এই ফল শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক। যেমন জাম ও হলুদ খুবই মারাত্মক জুড়ি।
- প্রতিদিন ১০০ গ্রামের বেশি জাম খাওয়া উচিত নয়।
- জাম খাওয়ার আগে অবশ্যই তা লবণ-পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে।
- খালি পেটে কখনো জাম খাবেন না।
- জাম খাওয়ার আগে ও পরে প্রায় দু’ঘণ্টা দুধ খাবেন না।
- গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মায়েদের জাম না খাওয়াই ভালো।
- ডায়াবেটিস রোগীরা অবশ্যই জাম অল্প পরিমাণে খাবেন।
- ফলের পাশাপাশি জামের মধু, ভিনেগারও খেতে পারেন।
- এছাড়া জামের পাতা ও ছাল শুকিয়ে গুঁড়া করে খেলেও উপকার মিলবে।
জাম পাতার উপকারিতা
আয়ুর্বেদিক ঔষধে জাম পাতা ব্যবহার করা হয় ডায়রিয়া ও আলসার নিরাময়ে। এছাড়াও মুখের স্বাস্থ্যগত বিভিন্ন সমস্যার ঔষধ তৈরিতেও ব্যবহার হয় জামপাতা। জাম খেলে মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়, দাঁত ও মাড়ি শক্ত ও মজবুত করে এবং দাঁতের মাড়ির ক্ষয় রোধে সাহায্য করে। বিভিন্ন গবেষণায় জামের কেমোপ্রোটেক্টিভ বৈশিষ্ট্য প্রমাণিত হয়েছে।
ওজন কমাতে জাম পাতার রস বেশ উপকারী। গরম পানিতে জাম পাতা ১০ মিনিট ধরে ফুটিয়ে পানির রং সবুজ হয়ে এলে নামিয়ে নিন। এই পদ্ধতিতে প্রতিদিন সকালে পান করুন। একইভাবে নিম পাতার সঙ্গে ফুটিয়ে পান করলে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
ওজন কমাতে জাম পাতার রস বেশ উপকারী। গরম পানিতে জাম পাতা ১০ মিনিট ধরে ফুটিয়ে পানির রং সবুজ হয়ে এলে নামিয়ে নিন। এই পদ্ধতিতে প্রতিদিন সকালে পান করুন। একইভাবে নিম পাতার সঙ্গে ফুটিয়ে পান করলে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
জাম গাছের ছালের উপকারিতা
ঐতিহ্যগতভাবেই জাম গাছের বাকল, পাতা ও বীজ ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়ে আসছে। ম্যালিক এসিড, অক্সালিক এসিড এবং ট্যানিন থাকে জাম উদ্ভিদে। একারণেই জাম উদ্ভিদ ও এর ফল ম্যালেরিয়া রোধী, ব্যাকটেরিয়ারোধী এবং গ্যাস্ট্রোপ্রোটেক্টিভ হিসেবে কাজ করে।
শরীরে কোন জায়গায় ক্ষত হলে সেই ক্ষত যদি পুরোপুরিভাবে ভালো না হয় তাহলে আপনারা জাম গাছ থেকে গাছের ছাল নিয়ে এসে ভালোভাবে থেঁতো করে রস সহ জাম গাছের ছালের থেঁতোটি ক্ষতস্থানে লাগালে দেখবেন যে এক থেকে দুই দিনের মধ্যে ক্ষতস্থানটি ভালো হয়ে গেছে।
এর আরো অনেক উপকারিতা রয়েছে যেমন আপনাদের যদি রক্ত পায়খানা হয় তাহলে জাম গাছের রস ১ থেকে ২ চামচ ছাগলের দুধের সঙ্গে খেলে রক্ত পায়খানা বন্ধ হয়ে যায়। দাঁতের মাড়ি থেকে রক্ত পড়লে জাম গাছের ছালের গুড় দিয়ে দাঁত মাজলে দাঁত থেকে রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে যায়।
দাঁতের হলুদ ছোপ বা কালো ছোপ থাকলে কয়েকদিন পর পর জাম গাছের ছালের গুড়ো দিয়ে দাঁত মাজলে দাঁত পরিষ্কার হয়ে যায়। পেট পরিষ্কার রাখার জন্য জাম গাছের রস অনেক উপকার করে। তাই আমরা প্রতিনিয়ত জাম গাছের ছালের রস ব্যবহার করব। তাহলে আমাদের এইগুলো রোগের ঝুঁকি থেকে রেহাই পাব। জাম গাছের রস খেলে মুখ থেকে দুর্গন্ধ দূর হয়ে যায়।
জামের বীজের উপকারিতা
আমরা আগে বাজার থেকে কালো জাম কিনে আনব তারপর রোদে শুকিয়ে গেলে তার উপরে যে রসালো অংশটি রয়েছে সেটিকে ফেলে দিব। তারপর বীজটি কে বের করিয়ে বীজের উপরে থাকা ধসার রঙের যে চামড়াটি রয়েছে সেটিকে ফেলে দিব। বীজের সবুজ যে অংশটি রয়েছে সেটিকে আমরা নিব।
সেটিকে আবার ভালো করে শুকিয়ে গুড়ো করে নিলেই আমাদের ওষুধ তৈরি হয়ে যাবে। এখন আমরা জানবো এই বীজের গুড়ো দিয়ে কোন কোন রোগের উপকার হবে। এই কালো জামের বীজ ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।ডায়াবেটিস প্রচুর পরিমাণে দেখা দিলে আপনারা যদি মনে করেন যে আমরা চিকিৎসা না নিয়ে ঘরোয়া পদ্ধতিতে ডায়াবেটিসের চিকিৎসা করব।
তাহলে আপনি জাম-বীজের গুঁড়ো দিয়ে চিকিৎসা করতে পারেন। অবশ্যই আপনার ডায়াবেটিসকন্ট্রোলে রাখতে পারবেন।যাদের স্কিনের সমস্যা রয়েছে তারাও এই জামের বীজের গুড়ো খেলে স্কিন স্মুত হবে। এই বীজের মধ্যে রয়েছে: গেলিক অ্যাসিড, এলার্জিক অ্যাসিড, ইত্যাদি। এটিতে ভিটামিন A এবং ভিটামিন C থাকার জন্য আমাদের হার্ট কে মজবুত করার জন্য সাহায্য করে। তাই হার্ট কে ভালো রাখতে এই বীজটি গুড়ো খেতে পারি।
জাম গাছের বৈশিষ্ট্য
গাছ ১৪ থেকে ৬০ ফুট বা এর বেশিও লম্বা হতে পারে। পাতা সরল, বড়, চামড়া পুরু এবং চকচকে। গাছ চিরসবুজ। চকচকে পাতা এবং চিরসবুজ হবার কারণে এর আলংকরিক মান বেশ ভালো। একটি গাছ একটি লম্বা উদ্ভিদ যা দীর্ঘ সময় বেঁচে থাকতে পারে। এটির একটি একক কাণ্ড বা কাণ্ড রয়েছে, যার শাখাগুলিতে পাতা রয়েছে।
গাছটির মাটির নিচে শিকড় রয়েছে যা এটিকে নিরাপদ রাখে এবং গাছের জন্য পুষ্টি সরবরাহ করে। এই সহজ বর্ণনার বাইরেও অনেক রকমের গাছ আছে।
লেখকের শেষকথাঃ
জাম টক-মিষ্টি সুস্বাদু একটি গ্রীষ্মকালীন ফল। যা বছরের জুন-জুলাই মাসে পাওয়া যায়। জাম খুব উপকারি ফল। এই গরমের সময় গ্রামে কিংবা শহরে সব জায়গাতেই জাম পাওয়া যায়। এই জাম টক-মিষ্টির কারণে অনেকের কাছেই প্রিয়। অনেকের কাছে অপছন্দনীয় হলেও প্রতিবছর জামের সময় বেশি পরিমানে না হলেও অল্প পরিমান খাওয়া উচিৎ।
পুষ্টিগুন এবং স্বাস্থ্য উপকারিতা বিবেচনায় নিয়মিত জাম খান। শুধু জাম নয় যখন যেই ফলের সময় তখনই সেই ফল খাবেন, খেতে ভালো না লাগলেও অল্প পরিমানে হলেও খাবেন। কারণ ফলের মধ্যেই রয়েছে মানব শরীরের প্রয়োজনীয় এবং দরকারি পুষ্টি উপাদান সমূহ। ভালো থাকুন, সুস্থ্য থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url