বেল খাওয়ার উপকারিতা ও বেলের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জেনে নিন
বন্ধুরা বেল আমরা সবায় চিনি। ছোট-বড় প্রায় সবায় বেল খাই। কিন্তু আমরা কি বেলের পুষ্টিগুণ ও বেল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানি ? হ্যাঁ বন্ধুরা আপনাদের সামনে আজ বেলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করবো।
এখানে আরো জানতে পারবেন, কাঁচা বেল খেলে বেশি উপকার নাকি পাকা বেল খাওয়া বেশি উপকার সে সম্পর্কে। পাকা বেল চিবিয়ে খাওয়া ভালো না শরবত করে খাওয়া বেশি উপকার সে সম্পর্কে বিস্তারিতা আলোচনা থাকছে আজকের আর্টিকেলে। আসুন আর দেরি না করে শুরু করা যাক।
সুচীপত্রঃ
বেল খাওয়ার উপকারিতা
বেল খাওয়ার অপকারিতা
বেলের পুষ্টিগুণ
বেলের শরবতের উপকারিতা
কাঁচা বেল খাওয়ার উপকারিতা ও নিয়ম
খালি পেটে বেল খাওয়ার উপকারিতা
পাকা বেল খাওয়ার অপকারিতা
বেল পাতার উপকারিতা
আমাশয়ে বেলের উপকারিতা
বেল শুট খাওয়ার নিয়ম
লেখকের শেষকথাঃ
বেল খাওয়ার উপকারিতা
বেলের শরবত হজমশক্তি বাড়ায় এবং তা বলবর্ধক। বেলের পাতার রস মধুর সাথে মিশিয়ে পান করলে চোখের ছানি ও জ্বালা উপশম হয়। বেল পাতার রস, মধু ও গোল মরিচ এর গুঁড়া মিশিয়ে পান করলে জন্ডিস রোগ নিরাময় হয়। পেট খারাপ, আমাশয়, শিশুর স্মরণ শক্তি বাড়ানোর জন্য বেল উপকারী।
কাঁচা বেল ডায়েরিয়ার জন্য অব্যর্থ ওষুধ। যদি অনেক দিন ধরে আপনি এই সমস্যায় ভোগেন তাহলে বেল খান। কাঁচা বেল স্লাইস করে কেটে রোদে শুকিয়ে নিন। তারপর তা গুঁড়ো করে নিন আর এই গুঁড়ো ১ চামচ নিয়ে ব্রাউন সুগার আর গরম জলে মিশিয়ে খান। দিনে দু বার খেতে হবে এই জল। আপনাকে ফল পেতে এক সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে।
লিভারের যত্নঃ বেল বিটা ক্যারোটিনের সমৃদ্ধ উৎস। আর বিটা ক্যারোটিন হল লিভার ভালো রাখার অন্যতম মূল চাবিকাঠি। বেলে আছে থিয়ামিন আর রাইবোফ্লেভিন। এই দুই উপাদানই লিভারের শক্তি বাড়ায় খুব ভালো ভাবে। তাই লিভার ভালো রাখতে রোজ বেল খাওয়ার অভ্যেস করুন।
ব্লাড প্রেসার কমায়ঃ যদি আপনি বেলের ভক্ত নাও হন, তাও বেল খান। কারণ বেল আপনার ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখবে। সাধারণ যেমন বেলের শরবৎ খান সেভাবে খেলেই হবে। মিষ্টি এই শরবৎ কিন্তু আপনার এই চাপ থেকে আপনাকে অনেক দূরে রাখবে।
আমাশয় কমায়ঃ আমাশয় হলে কিন্তু আমাদের যন্ত্রণার একশেষ। নাভির কাছে চিনচিনে ব্যথা, টক বমি সব মিলে খুব বাজে ব্যাপার। কিন্তু বেলের কাছে এটি কমাবারও ম্যাজিক আছে। কচি বেল টুকরো করে কেটে জলে ভিজিয়ে রাখুন সারা রাত। সেই জল পরের দিন ছেঁকে নিয়ে খান। দেখবেন এতে খুব ভালো ফল পাবেন।
বেল খাওয়ার অপকারিতা
সাধারণত কোনো জিনিসের অতিরিক্ত কিছুই শরীরের জন্য ভালো নয়। প্রয়োজন বা নিয়মের বেশি সকল কিছু দেহের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনে না। ঠিক তেমনি বেল যেমন মানুষ কে নানা রকম উপকারিতা প্রদান করতে পারে তেমনি ক্ষতিও করে। বেল এর মধ্যে অধিকাংশ বেলই মিষ্টি। আর বেল যদি মিষ্টি না হয় তাহলে এতে স্বাদ পাওয়া যায় না এবং কেউ খেতে চায় না।
তবে এসব মিষ্টি বেল অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে ডায়বেটিস রোগীর জন্য বেশ ক্ষতিকর। ফলে তাদের শরীরে সুগার এর মাত্রা বেড়ে যায়। যার ফলে তাদের ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে না। এতে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। তাই অতিরিক্ত বা মিষ্টি বেল ডায়বেটিস রোগীর জন্য উপকারিতার পাশাপাশি ক্ষতিও সাধন করে। আবার অতিরিক্ত বেল খাওয়ার ফলে যৌ-ন শক্তি কমে যায়।
যারা অতিরিক্ত বেল খায় তারা তাদের যৌ-ন শক্তি খুব দ্রুত হারিয়ে ফেলে। এছাড়া বেল যদি অতিরিক্ত খায় তাহলে শরীরে অনেক রকমের রোগের দেখা মিলে। ফলে নানান সমস্যার সৃষ্টি হয়। তাই বেল খাওয়ার উপকারিতা গ্রহণ করতে হলে একে পরিমাণ মতো করে খেতে হবে।
বেলের পুষ্টিগুণ
বেলের প্রতি ১০০ গ্রাম শাঁসে পুষ্টি উপাদান হলো খাদ্যশক্তি ১৪০ কিলোক্যালরি, পানি ৭৭.৫ গ্রাম, আমিষ ২.৬০ গ্রাম, শর্করা ৩১.৮ গ্রাম, ভিটামিন-এ ৫৫ মিলিগ্রাম, খনিজ পদার্থ ১.৭ গ্রাম, আঁশ ২.৯ গ্রাম, চর্বি ০.২ গ্রাম, থায়ামিন (ভিটামিন-বি-১) ০.১৩ মিলিগ্রাম, রিবোফ্লাভিন (ভিটামিন বি-২) ১.১৯ মিলিগ্রাম, এসকরবিক এসিড বা ভিটামিন সি-৬০ মিলিগ্রাম, নিয়াসিন (ভিটামিন বি-৬) ১.১ মিলিগ্রাম টারটারিক এসিড ২.১১ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ৩৮ মিলিগ্রাম, লৌহ ১.১ মিলিগ্রাম।
বেলের শরবতের উপকারিতা
১. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ রমজানে অনেকেরই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হয়। এটি বেশ অস্বস্তিদায়ক। তাই এর থেকে নিষ্কৃতি পেতে ইফতারে খেতে পারেন বেলের শরবত। শুধু ইফতারে বেলের শরবত খেলেই উপকার পাবেন, অন্য সময় খেলে উপকার পাবেন না এমনটি নয়, সারা বছর যে কোন সময় এই শরবত খেলে আপনি নিম্ন বর্ণিত উপকার গুলো পাবেন।
কারণ বিশেষজ্ঞদের মতে, বেলের শরবত খেলে তা কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে ও পেট পরিষ্কার করতে কাজ করে। ইফতারের সময়ই কেবল নয়, বছরের অন্যান্য সময়েও বেল খেতে পারলে এ ধরনের সমস্যায় উপকার পাবেন।
২. গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করেঃ যারা গ্যাস্ট্রিকের বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছেন তারা ইফতারে বেলের শরবত খেতে পারেন। কারণ এই ফলের শাঁসে থাকে ফাইবার, যা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে কাজ করে। প্রতিদিনের ইফতারে বেলের শরবত রাখতে চেষ্টা করুন। তা সম্ভব না হলে সপ্তাহে তিনদিন অন্তত খাবেন।
৩. ডায়াবেটিস দূরে রাখেঃ যারা ডায়াবেটিসের সমস্যায় ভুগছেন তারা ইফতারে নিয়মিত বেলের শরবত খেতে পারেন। কারণ এটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে। তবে এক্ষেত্রে শরবতের সঙ্গে চিনি যোগ করা যাবে না। বেলে থাকা মেথানল নামক একটি উপাদান ব্লাড সুগার কমাতে অনবদ্য কাজ করে। যে কারণে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়।
৪. আর্থ্রারাইটিস দূরে রাখেঃ নিয়মিত বেলের শরবত খেলে তা আপনাকে আর্থ্রারাইটিস থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করবে। এই ফলে থাকা বিভিন্ন উপকারী উপাদান বাতের ব্যথা ভালো করতে কাজ করে। তাই ইফতারে রাখতে পারেন বেলের শরবত। তবে এক্ষেত্রে শরবতের সঙ্গে অতিরিক্ত চিনি মেশানো থেকে বিরত থাকতে হবে।
৫. শক্তি বৃদ্ধি করেঃ সারাদিন রোজা রাখার ফলে স্বাভাবিকভাবেই আমাদের শক্তি অনেকটা কমে যায়। যে কারণে দুর্বলতা বা ক্লান্তি দেখা দেওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু আপনি যদি ইফতারে বেলের শরবত খান তাহলে তা আপনাকে শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতি ১০০ গ্রাম বেলে ১৪০ ক্যালোরি থাকে। সেইসঙ্গে এটি মেটাবলিক গতি বাড়াতেও কাজ করে।
কাঁচা বেল খাওয়ার উপকারিতা ও নিয়ম
কাঁচা বেল খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে কাঁচা বেল খেলে শরীরের জন্য অনেক উপকারী বলা হয়ে থাকে। কারণ এতে বিভিন্ন ধরনের ক্যালসিয়াম ম্যাগনেসিয়াম পটাশিয়াম পুষ্টি ইত্যাদি সমস্যা সমাধান হয়ে থাকে। সবচেয়ে উপকারী হচ্ছে কাঁচা বেল। কাঁচা বেল খেলে আপনার শরীরে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান পেয়ে যাবেন।
শরীরের পুষ্টির পরিমাণ বেশি থাকে এটা আপনি পুড়িয়ে খেতে পারেন বা এটা যদি আপনি শুটকি বানিয়ে খান সেটাও খেতে পারেন যেকোন ভাবে আপনি খেলে আপনার দেহের শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। কাঁচা বেল আপনারা গরম পানিতে সিদ্ধ করে শরবত বানিয়ে খেতে পারেন এটি একটি সঠিক নিয়ম।
বেল খাওয়ার সঠিক সময় আমি বলব দুপুরের খাবারের পর থেকে রাতের খাবার আগ পর্যন্ত বেল খাওয়ার একটি উপযুক্ত সময় অথবা দুপুরের কাজ করার পরবর্তী সময়ে বেলের শরবত খেয়ে নিলে নিজের মাঝে এনার্জি সঞ্চয় হবে যার ফলে ওই সময়টি আপনারা খেতে পারেন।
কাঁচা বেল ডায়েরিয়ার জন্য মহাঔষধ। যদি অনেক দিন ধরে আপনি এই সমস্যায় ভোগেন তাহলে বেল খান। কাঁচা বেল স্লাইস করে কেটে রোদে শুকিয়ে নিন। তারপর তা গুঁড়া করে নিন আর এই গুঁড়া ১ চামচ নিয়ে ব্রাউন সুগার আর গরম পানিতে মিশিয়ে খান। দিনে দুই বার খেতে হবে এই পানি। আর ফল পেতে এক সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে।
খালি পেটে বেল খাওয়ার উপকারিতা
ডায়রিয়া, আমাশয়, জন্ডিস, যক্ষ্মা, অপুষ্টিতেও ভালো কাজে আসে এই বেল। বেল পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি ফল। সেই সঙ্গে এতে আছে নানান ঔষধি গুণ, যা আমাদের দেহের অনেক উপকার করে থাকে। প্রাচীন সময় থেকেই আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে শরীরের জন্য উপকারী হিসেবে পাকাপোক্ত জায়গা করে নিয়েছে এ ফল।উপকারী গুণের পাশাপাশি গরমে ঠান্ডা এক গ্লাস বেলের শরবত।
নিমেষেই আপনাকে প্রশান্তি এনে দিতে পারে। তাই গরমের এই সময়টায় সকালের শুরুটা বেলের শরবতকে সঙ্গী করে নিতে পারেন। নিয়মিত বেল খেলে এর ল্যাকোটিভগুণ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে ও মুখের ব্রণ দূর হয় এবং ত্বক ভালো থাকে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে বেল। পাকা বেলে আছে মেথানল নামের একটি উপাদান, যা ব্লাড সুগার কমাতে অনবদ্য কাজ করে।
খালি পেটে বেল খেলে আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর হয়। আমাদের ত্বকে যদি ব্রণের সমস্যা থাকে তাহলে এই সমস্যার সমাধান করতে পারে বেল। খালি পেটে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়। কাঁচা বেলে এ ধরনের বিপদের কোনো আশঙ্কা থাকে না। পাকা বেল পেটে দুর্গন্ধ বায়ু তৈরি করে কিন্তু কচি কাঁচা বেল উপকারী।তো আমরা জেনে নিলাম খালি পেটে বেল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে।
পাকা বেল খাওয়ার অপকারিতা
ডায়াবেটিস কমায়ঃ পাকা বেলে আছে মেথানল নামের একটি উপাদান যা ব্লাড সুগার কমাতে কাজ করে।কোষ্ঠকাঠিন্য কমায় বেল মল পরিষ্কার হতে সাহায্য করে। পাকা বেল খাওয়ার উপকারিতা অনেক।কাচা পাকা দুটোই সমান উপকারী। বেল কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে ও আমাশয়ে উপকার করে।কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে ও পেট পরিষ্কার করতে বেল খুব ভালো কাজ করে।
গরমে পাকা বেলের চাহিদা ব্যাপক থাকে বাজারে। পাকা বেল ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। বেল এমন একটি ফল যার উপকারের কোনও শেষ নেই। ক্যান্সারে অ্যান্টি প্রলেফিরেটিভ ও অ্যান্টি মুটাজেন উপাদান খুবই উপকারী। যা বেলে উপস্থিত থাকে। এর ফলে ক্যান্সারের ক্ষেত্রে বেলের উপকারিতা অসামান্য।
বেল পাতার উপকারিতা
বেলপাতা বদহজম, গ্যাস-অম্বল এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করে। হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য দারুণ উপকারী বেলপাতা। বেলপাতার মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা হৃদযন্ত্রকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। রোজ সকালে খালি পেটে বেলপাতা খেলে হার্ট অ্যাটাক, উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমে।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও বেলপাতা খুবই উপকারী। ডায়াবেটিস রোগীরা প্রতিদিন সকালে খালি পেটে বেলপাতা খেতে পারেন। বেলপাতায় উপস্থিত ফাইবার এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। সুস্থ থাকার জন্য শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হওয়া খুবই জরুরি।
তাজা বেলপাতা বেটে বা ব্লেন্ড করে এর রস বের করে নিন। এই রসে কয়েক ফোঁটা তুলসির রস এবং আদার রস মেশান। এবার এই মিশ্রণ একটি পাত্রে নিন ফুটিয়ে পান করুন। বেলের পাতার রস মধুর সাথে মিশিয়ে পান করলে চোখের ছানি ও জ্বালা উপশম হয়। পাতার রস, মধু ও গোল মরিচ এর গুঁড়া মিশিয়ে পান করলে জন্ডিস রোগ নিরাময় হয়।
আমাশয়ে বেলের উপকারিতা
বেল কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে ও আমাশয়ে উপকার করে। আধাপাকা সিদ্ধ ফল আমাশয়ে অধিক কার্যকরী। বেলের শরবত হজমশক্তি বাড়ায় এবং তা বলবর্ধক। বেলের পাতার রস মধুর সাথে মিশিয়ে পান করলে চোখের ছানি ও জ্বালা উপশম হয়।
আমাশয়ের জন্য বেলের অনেক উপকারিতা রয়েছে বেল মানুষের দেহের অনেক উপকার করে থাকে। মানুষের দেহে যে সকল সমস্যা করে রয়েছে সব সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে এবং আপনি যদি টানা তিন মাস বেলের শরবত বানিয়ে খেতে পারেন আপনার মল কঠিন থাকবে না, পাকা বেলের শরবত বানিয়ে যদি খেতে পারেন তাহলে এটি ডায়রিয়া প্রকট কমিয়ে থাকে।
বেল শুট খাওয়ার নিয়ম
কচি বেল টুকরা করে কেটে রোদে শুকিয়ে নিলে তাকে বেল শুট বলে। যাদের আলসার আছে, তারা বেল শুটের সঙ্গে পরিমাণমতো বার্লি মিশিয়ে রান্না করে নিয়মিত খেলে আলসার দ্রুত সেরে যায়। বেল পেট ঠান্ডা রাখে। গরমের সময় পরিশ্রমের পর বেলের শরবত খেলে ক্লান্তি ভাব দূর হয়।
১। পাকস্থলীর আলসার, পাইলস রোগে উপকারী। এটি শক্তিবর্ধক হিসেবে কাজ করে।
২। অন্ত্রের কৃমিসহ অন্যান্য জীবাণু ধ্বংস করে ডায়রিয়া এবং আমাশয় প্রতিরোধ করে।
৩। বেলের ল্যাক্সিটেভ গুণ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং আমাশয় রোগে খুব কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। হজমেও উপকারী।
৪। বেলে ন্যাচারাল ডাই ইউরেটিক আছে, যা শরীরে পানি জমা প্রতিরোধ করে।
৫। ত্বককে সূর্যরশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে বেলের শাঁস এবং ত্বকের স্বাভাবিক রং বজায় রাখে।
৬। বেলের থায়ামিন ও রিবোফ্লোবিন হার্ট এবং লিভার ভালো রাখে।
৭। বেল থেকে পাওয়া বেটাক্যারোটিন রঞ্জক মানবদেহের টিউমার কোষের বৃদ্ধি রোধ করে। বিশেষ করে মহিলারা নিয়মিত বেল বা বেলের শরবত খেলে ব্রেস্ট ক্যান্সার ও জরায়ু ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে।
৮। প্রস্টোজেন হরমোন লেভেল বাড়িয়ে মহিলাদের ইনফার্টিলিটির ঝুঁকি কমায়। তা ছাড়া প্রসব-পরবর্তী ডিপ্রেশন কমাতেও খুবই কার্যকরী।
৯। বেলের ভিটামিন-সি স্কার্ভি প্রতিরোধ করে। ভিটামিন-সি হলো শক্তিশালী প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা মানবদেহের বিভিন্ন সংক্রমণ রোধ করে।
বেল খাওয়ার সঠিক সময়
সাধারণত গ্রীষ্মকালীন সময়ে পাকা বেল পাওয়া যায়। পাকা বেল বা বেলের শরবত সকাল, দুপুর অথবা বিকাল যে কোনো সময়ে খাওয়া যেতে পারে। খালিপেটে বেল খাওয়া যাবে কিনা এই ব্যাপারে ভিন্নমত রয়েছে তবে কারো ক্ষেত্রে যদি খালিপেটে খেলে কোনো সমস্যা (যেমনঃ এসিডিটি, পেট ফাঁপা, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি) না হয় তবে নির্বিঘ্নে খাওয়া যাবে।
লেখকের শেষকথাঃ
বন্ধুরা এতক্ষণে নিশ্চয়ই বেলের উপকারিতা পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জেনে গেছেন। বেল সবার কাছে পরিচিত একটি ফল। বেল খেলে উপকার পাওয়া যায় এটা সবায় জানে। কিন্তু কি কি উপকার পাওয়া যায় ? কোন কোন রোগের প্রতিসেধক হিসেবে কাজ করে সেটাও জানা হয়ে গেল। আজকের আর্টিকেল পড়ে উপকৃত হলে বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url