পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা ও পেয়ারার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

বাজার থেকে কেনা হোক বা নিজের গাছের হোক প্রায় সারা বছর কম-বেশি আমরা সবাই পেয়েরা খেয়ে থাকি। কিন্তু এই পেয়ারার উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আমরা কতটা জানি ? সারা বছর পাওয়া যায়, এমন একটি ফল পেয়ারা।
পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা ও পেয়ারার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

দেশীয় এই ফলটি দামে সস্তা ও সহজলভ্য। অন্যান্য ফলের তুলনায় পেয়ারার পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। পেয়ারায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি যা আমলকী ছাড়া অন্য যেকোনো ফলে পাওয়া যায় না। পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ পেয়ারার রয়েছে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা। আসুন সেগুলো জেনে নেয়া যাক।

সূচীপত্রঃ

প্রতিদিন পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা
পেয়ারা পুষ্টিগুণ
পেয়ারা খাওয়ার নিয়ম
খালি পেটে পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা
পেয়ারার অপকারিতা
রাতে পেয়ারা খেলে কি হয়
পেয়ারা পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
পেয়ারা খেলে কি ওজন বাড়ে
আপেল নাকি পেয়ারা
লেখকের শেষকথাঃ

প্রতিদিন পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা

(১). ভিটামিন সি সমৃদ্ধঃ পেয়ারায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে এবং এটি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এটি কোষকে রক্ষা করে এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। এছাড়া পেয়ারায় অবস্থিত ভিটামিন সি বিভিন্ন ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে পারে।

(২). রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেঃ পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম রয়েছে যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। নিয়মিত ভাবে লাইকোপিন সমৃদ্ধ গোলাপি পেয়ারা খেলে কার্ডিওভাস্কুলার রোগের ঝুঁকি কমায়। তাছাড়া পেয়ারা ট্রাইগ্লিসারাইড এবং LDL নামক একটি খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় যার ফলে হার্টের অসুখ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়।

(৩). ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেঃ ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের জন্য পেয়ারা দারুণ উপকারী। পেয়ারার ফাইবার দেহে চিনি শোষণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। পেয়ারার রসে থাকা উপাদান ডায়াবেটিস মেলাইটাসের চিকিৎসায় খুবই কার্যকর। পেয়ারাতে প্রচুর ফাইবার এবং কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স থাকার কারণে এটি খেলে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে আর তাই ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুকি কিছুটা কম থাকে।

(৪). রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি এবং শক্তিশালী এন্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে। যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে এবং শরীরকে বিভিন্ন রোগের সাথে যুদ্ধ করার শক্তি প্রদান করে। তাছাড়া যে কোন ইনফেকশন থেকে পেয়ারা শরীরকে সুস্থ রাখে।

(৫). ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করেঃ পেয়ারাতে লাইকোপিন, ভিটামিন সি, কোয়ারসেটিন এর মত অনেকগুলো উপাদান রয়েছে যা শক্তিশালী এন্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে আর এই এন্টি-অক্সিডেন্ট ক্যান্সার হওয়ার ঝুকি কমায় ও শরীরের ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধি রোধ করে। বিশেষ করে এটি প্রোসটেট ক্যান্সার এবং স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।

(৬). দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করেঃ পেয়ারাতে ভিটামিন এ আছে অনেক বেশি। আর ভিটামিন এ চোখের জন্য উপকারী। এতে থাকা ভিটামিন এ কর্নিয়াকে সুস্থ রাখে এবং রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে। তাছাড়া এটি খেলে চোখের ছানি হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা কমে যায়। কাঁচা পেয়ারা ভিটামিন এ এর ভালো উৎস।

(৭). ওজন কমায় এবং ত্বক সুস্থু রাখেঃ পেয়ারা খেলে শরীরের অতিরিক্ত ওজন খুব সহজেই ঝড়ানো যেতে পারে৷ যাদের ওজন অতিরিক্ত হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে তারা পেয়ারা খেতে পারেন৷ পেয়ারা ত্বককে ক্ষতিকর আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি থেকে রক্ষা করে। ত্বক, চুল ও দাঁতের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

(৮). গর্ভবতী মায়ের জন্যঃ পেয়ারা গর্ভবতী মায়েদের জন্যও অত্যন্ত উপকারী। পেয়ারায় বিদ্যমান ফলিক অ্যাসিড গর্ভের শিশুর স্নায়ুতন্ত্র গঠনে ভূমিকা রাখে এবং স্নায়ুতন্ত্রের বিভিন্ন রোগ প্রতিহত করে।

এছাড়া পেয়ারা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি ও লাইকোপিন রয়েছে। এর ফলে রক্ত পরিষ্কার হয় ও ত্বক অনেক বেশি উজ্জ্বল হয়। পেয়ারা চুলের স্বাস্থ্য রক্ষা করে ও চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। পেয়ারা নতুন চুল গজাতেও সাহায্য করে। ভিটামিন সি থাকার কারণে সাধারণ সর্দি-কাশি দূর করতেও সাহায্য করে পেয়ারা।

পেয়ারা পুষ্টিগুণ

বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি পেয়ারায় ৪টি কমলালেবুর সমান পুষ্টিগুণ, বিশেষ করে ভিটামিন সি রয়েছে। একটি পেয়ারায় রয়েছে চারটি আপেল ও চারটি কমলালেবুর সমান পুষ্টিগুণ। এতে আছে প্রচুর পরিমাণ পানি, ফাইবার, ভিটামিন এ, বি, কে, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, প্রোটিন ও খনিজ পদার্থ। পেয়ারা ভিটামিন সি–এর ভালো উৎস।

এতে ২১১ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি পাওয়া যায়। ভিটামিন সি মুখগহ্বর, দাঁত ও মাড়ি সুস্থ রাখে। সাধারণত ফলে ভিটামিন এ সরাসরি পাওয়া যায় না। এটি প্রথমে ক্যারোটিন রূপে থাকে, পরবর্তী সময়ে তা ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়। ক্যারোটিন শরীরের স্বাভাবিক বৃদ্ধি নিশ্চিত করে। চোখের রেটিনা ও কোষের সুস্থতা বজায় রাখতে এটি সাহায্য করে।

প্রতি ১০০ গ্রাম পেয়ারায় শূন্য দশমিক ২১ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি ওয়ান ও শূন্য দশমিক শূন্য ৯ মিলিগ্রাম বি টু পাওয়া যায়। প্রতি ১০০ গ্রাম পেয়ারায় ৭৬ কিলোক্যালরি খাদ্যশক্তি, ১ দশমিক ৪ গ্রাম প্রোটিন, ১ দশমিক ১ গ্রাম স্নেহ ও ১৫ দশমিক ২ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট পাওয়া যায়।

পেয়ারা নানা রকম খনিজ উপাদানে ভরপুর। প্রতি ১০০ গ্রাম পেয়ারায় শূন্য দশমিক ৬ গ্রাম মিনারেল, শূন্য দশমিক শূন্য ৩ মিলিগ্রাম থায়ামিন, শূন্য দশমিক শূন্য ৩ রিবোফ্লেভিন ১ দশমিক ৪ মিলিগ্রাম আয়রন, ২৮ মিলিগ্রাম ফসফরাস ও ২০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়।

পেয়ারা খাওয়ার নিয়ম

কান্ড ব্যতীত পুরো ফলই ভোজ্য। যতক্ষণ না আপনি এটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে ধুয়ে ফেলবেন, ততক্ষণ আপনি কোনও প্রস্তুতি ছাড়াই এবং কোনও সময় ছাড়াই আপনার দাঁতকে এর মিষ্টি স্বাদে ডুবিয়ে দিতে পারেন। আপনি একটি নাশপাতি মত এটি মধ্যে কামড়. অথবা, এটিকে টুকরো টুকরো করে কেটে নিন এবং সেভাবে পেয়ারার উপর স্ন্যাক করুন। 

তবে আপেলের বিপরীতে , বীজ থুতু ফেলা বা শক্ত কোরের মুখোমুখি হওয়ার বিষয়ে চিন্তা করার দরকার নেই। গোশত জুড়ে ছিটিয়ে থাকা বীজগুলি খাওয়া যেতে পারে।

আপনি যদি চান তবে আপনি এটির খোসা ছাড়তে পারেন, তবে সমস্ত ফলের মতো, খোসা থেকে সংগ্রহ করার জন্য পুষ্টির মান রয়েছে, তাই এটি সম্পূর্ণ পছন্দের বিষয়। খোসা ছাড়ানোর একটি বিকল্প হল মাংস বের করা, যেমন আপনি একটি আঙ্গুর বা অ্যাভোকাডোর চামচ বের করেন। গোশত জুড়ে ছিটিয়ে থাকা বীজগুলি খাওয়া যেতে পারে।

খালি পেটে পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা

এটি আপনার স্মৃতিশক্তি বাড়াতেও খুব সহায়ক, তাই আপনার প্রতিদিন পেয়ারা খাওয়া উচিত। এতে অনেক ভিটামিন পাওয়া যায় যা আপনার মস্তিষ্ককে শক্তিশালী করতে খুবই সহায়ক। এটি সঠিক রক্ত ​​সঞ্চালন বজায় রাখতেও সাহায্য করে। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর খালি পেটে এটি খাওয়া উচিত যাতে আপনার পেট পরিষ্কার হবে।

অনেকেই পেয়ারা খেতে পছন্দ করেন। এটি খেলে অনেক সমস্যার উপশম হয়। এটি খালি পেটে খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায় বলে মত বিশেষজ্ঞদের। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করতে এটি খেতে পারেন। আপনি যদি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভুগে থাকেন তবে আপনার এটি সকালে খালি পেটে খাওয়া উচিত। এতে আপনার পেটে অনেক আরাম পাওয়া যায় এবং পেটের ভেতরের ময়লা সহজেই দূর হয়।

পেটে জ্বালাপোড়ার সমস্যা থাকলেও পেয়ারা খাওয়া উচিত। তৈলাক্ত এবং মসলাযুক্ত জিনিসের অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে এই সমস্যাটি প্রায়শই দেখা যায়, তাই আপনার খুব মশলাদার খাবার খাওয়া উচিত নয়। পাইলস রোগ থেকে বাঁচতে খালি পেটে পেয়ারা খাওয়া খুবই প্রয়োজন।

পেয়ারার অপকারিতা

অন্যান্য ফলের মতো পেয়ারাও স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো। তবে, অতিরিক্ত মাত্রায় খাওয়ার ফলে অনেক রোগের শিকার হতে পারেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, পেয়ারা ভালো, তবে যখন অতিরিক্ত মাত্রায় খাওয়া হয়ে যায় তখন তা ক্ষতিকারক হয়ে যায়। পেয়ারায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে, যা হজমে সমস্যা হতে পারে।

সর্দি-কাশির আশঙ্কা রয়েছেঃ যাদের প্রায়ই সর্দি এবং কাশির সমস্যা রয়েছে তাদের পেয়ারা খাওয়া এড়ানো উচিত। কারণ পেয়ারা খুব ঠান্ডা। এটি বেশি খাওয়ার কারণে সর্দি-কাশি বাড়তে পারে।

গর্ভবতী মহিলাদের বেশি খাওয়া উচিত নয় ঃ গর্ভবতী এবং দুগ্ধদানকারী মহিলাদের এটি বেশি খাওয়া উচিত নয়। এর অতিরিক্ত গ্রহণের ফলে ফাইবার বাড়ে, যা হজমে সমস্যা সৃষ্টি করে।

স্বাস্থ্য সমস্যা ঃ আপনি যদি অন্য কোনও স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগে থাকেন, তবে পেয়ারা এড়ানো শ্রেয়। এর মধ্যে পটাসিয়াম এবং ফাইবার থাকে, আপনি ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করার আগে একজন চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিন।

পাতাও ক্ষতি করে ঃ শুধু পেয়ারা নয়, এর পাতাগুলি খাওয়াও ক্ষতিকর। পেয়ারা পাতা রক্তাল্পতা, মাথাব্যথা এবং কিডনির সমস্যা তৈরি করতে পারে।

পেট খারাপ হতে পারে ঃ পেয়ারার বেশি খেলে পেটের রোগও হতে পারে। এটি আপনার হজম সিস্টেমে খারাপ প্রভাব ফেলে এবং হজম শক্তি দুর্বল হতে শুরু করে।

পেট ফুলে যায় ঃ বেশি পরিমাণে পেয়ারা খেলে পেট ফাঁপা হতে পারে। আসলে এই ফলের মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে চিনি থাকে, যা ফ্রুক্টোজ হিসাবে পরিচিত। আমাদের শরীরে ফ্রুকটোজ হজম ও শোষণ করতে সমস্যা হয়। খাওয়ার কারণে পেটে ফোলাভাব এবং গ্যাস হতে পারে।

দাঁতে ব্যথা হতে পারে ঃ অনেক মহিলাকে পাকা পেয়ারা বেশি সুস্বাদু মনে হয় তবে পাকা বা আন্ডার রান্না করা পেয়ারা খাওয়ার ফলে দাঁত ব্যথা বা অন্য কোনও দাঁতজনিত রোগ হতে পারে।

একজিমার ঝুঁকি ঃ পেয়ারা পাতার নির্যাস একজিমা হতে পারে। এই পাতা ত্বকের জ্বালাভাব সৃষ্টি করে। যদি আপনার একজিমা গুরুতর অবস্থায় থাকে তবে সাবধানতার সঙ্গে পেয়ারা পাতার নির্যাস ব্যবহার করুন।

ডায়াবেটিস রোগীদের খেতে দেবেন না ঃ ডায়াবেটিস রোগীদের পেয়ারা খাওয়া এড়ানো উচিত। পেয়ারা রক্তে শর্করাকে হ্রাস করে। আপনার যদি ডায়াবেটিস হয় এবং আপনি পেয়ারা খেতে চান তবে প্রথমে আপনার রক্তে চিনির পরীক্ষা করে নিন।

রাতে পেয়ারা খেলে কি হয়

ফাইবারসমৃদ্ধ হওয়ায় অতিরিক্ত ওজন কমাতে পেয়ারা বেশ কার্যকর। তবে রাতে পেয়ারা না খাওয়াই ভালো। ফাইবার থাকলেও কারও কারও পেয়ারা খেয়ে গ্যাস হয়। পেয়ারা খেয়ে অনেকেই পেট ফাঁপার সমস্যায় ভোগেন। তাই দিনের বেলা হাঁটাচলার সময় পেয়ারা খাওয়া ভালো হলেও রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এই ফল খাওয়া ঠিক নয়।

পেয়ারা পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা

পেয়ারা পাতার রস ক্যান্সার প্রতিরোধী এবং সংক্রমণ, প্রদাহ, ব্যথা জ্বর, বহুমূত্র, আমাশয় প্রভৃতি রোগে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। পেয়ারার মধ্যে রয়েছে ভিটামিন এ, সি, পটাশিয়াম, লাইকোপেন। তবে আপনি কি জানেন পেয়ারার পাতায়ও রয়েছে অনেক গুণ? স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট হেলথ ডাইজেস্ট জানিয়েছে পেয়ারার পাতার কিছু অসাধারণ স্বাস্থ্যকর গুণের কথা

১. পেয়ারা পাতার চা নিয়মিত খেলে রক্তের বাজে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে। এটি ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়াতে কাজ করে।
২. পেয়ারা পাতার চায়ের মধ্যে থাকা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদানের জন্য এটি ডায়রিয়া ও ডিসেনট্রি কমাতে কাজ করে।
৩. কফ ও ব্রঙ্কাইটিস কমাতেও পেয়ার পাতার চা বেশ কার্যকর।
৪. পেয়ারা পাতার চা ওজন কমাতে সাহায্য করে। এটি চর্বি কমাতে কাজ করে এবং পেট ভরা ভরা ভাব রাখে। এতে ওজন কমে।
৫. ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নিয়মিত পেয়ারার পাতার চা পান করা ভালো। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে কাজ করে।
৬. পেয়ারা পাতার অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদানের জন্য এটি পাকস্থলীর সমস্যারোধে ভালো কাজ করে। এটি ফুড পয়জনিং রোধেও উপকারী।
৭. পেয়ারার পাতা পানিতে ফুটান। একে ঠান্ডা হতে দিন। এরপর পানিটি মাথায় ম্যাসাজ করুন। চুল পড়া প্রতিরোধ হবে।

পেয়ারা খেলে কি ওজন বাড়ে

সব মৌসুমে যেসব ফল পাওয়া যায় তারমধ্যে পেয়ারা অন্যতম। পেয়ারা যেমন খেতে সুস্বাদু তেমনি এর পুষ্টিগুণও রয়েছে। আবার পেয়ারায় গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বা জিআই কম হওয়ার কারণে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ে না। এছাড়া হৃদরোগীদের জন্যও ভালো পেয়ারা। ওজন নিয়ন্ত্রণে ভালো কাজ করে পেয়ারা। পেয়রার গুণাবলী চলুন জেনে নেওয়া যাক।

ওজন কমানোর কথা আসলে অন্য সব ফলকে টেক্কা দিতে পারে পেয়ারা। পেয়ারায় আছে প্রোটিন এবং প্রচুর পরিমাণে ফাইবার৷ এই দুই উপাদানই পরিপাক হতে অনেক সময় লাগে৷ ফলে অনেকক্ষণ পেট ভরা থাকে এবং সহজে ক্ষুধাও লাগে না। পেয়ারার ফাইবার নিয়ন্ত্রণ করে মেটাবলিজম৷ বেশি পাকা না এমন পেয়ারায় প্রাকৃতিক চিনির পরিমাণ আপেল,কমলালেবু, আঙুরের তুলনায় কম।

পেয়ারা খেলে আপনার দৈনিক ফাইবার-প্রয়োজনের ১২ শতাংশ পর্যন্ত সম্পূর্ণ হয়। এছাড়া পেটের বাড়তি মেদ ঝরিয়ে ফেলতে সাহায্য করে পেয়ারা। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেও পেয়ারা কার্যকর৷ পরিপাক ক্রিয়া সুস্থ হলে তার প্রভাব পড়ে ওজন নিয়ন্ত্রণেও৷

আপেল নাকি পেয়ারা

সব ধরনের ফল খাওয়া উচিত। আপেলের কিছু কিছু পুষ্টিগুণ আছে যা পেয়ারাতে নেই। আবার পেয়ারা একটু শক্ত হয় যেহেতু প্রচুর দানা থাকে। তাই অনেকে খেতে পারেন না। শিশু এবং বয়স্কদের খেতে অসুবিধে হয় অনেক সময়। বিপরীতে আপেল সব বয়সীরাই সহজে খেতে পারেন। পরিস্থিতি বিবেচনায় যার যেমন সামর্থ্য সেই অনুযায়ী আপেল ও পেয়ারা দুটোই খাওয়ার পরামর্শ পুষ্টিবিদের।

লেখকের শেষকথাঃ

প্রিয় বন্ধুরা আশা করছি উপরের আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়েছেন এবং জেনে গেছেন পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ পেয়ারার উপকারিতা সম্পর্কে। নিয়মিত পেয়ারা খান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ান এবং সুস্থ সুন্দর জীবন যাপন করুন। আলোচনাটি ভালো লাগলে বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪