ঢাকা এবং এর পার্শ্ববর্তি এলাকার জন্য সাহরি ও ইফতারের সময়সূচী ২০২৪
বন্ধুরা আজ আপনাদের জানাবো ঢাকা জেলার সাহরি ও ইফতারের সময়সূচী ২০২৪। অনেকে রমজান মাসের ইফতার শুরুর সময় এবং সাহরির শেষ সময় জানতে ইসলামী ফাউন্ডেশন সহ বিভিন্ন ওয়েবসাইটে বিচরণ করে থাকেন, বিশেষ করে তাদের জন্যই এই আর্টিকেলটি।
ঢাকা বাংলাদেশের রাজধানী হওয়ার কারণে প্রতিদিন দেশে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অসংখ্য মানুষ আসেন বিভিন্ন কাজ নিয়ে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসার কারণে অনেকের কাছে অজানা থাকে এই সময়সূচী। তো আসুন আর দেরি না করে শুরু করা যাক।
সূচীপত্রঃ
ঢাকা জেলার সাহরির শুরু এবং শেষ সময়সূচী
ঢাকা জেলার ইফতার শুরুর সময়সূচীয
ঢাকা জেলার সেহরির শেষ সময়
ইফতারের আগে যেই দোয়া পড়বেন
সেহরির পর রোজা রাখার নিয়ত
উপসংহার
ঢাকা জেলার সাহরির শুরু এবং শেষ সময়সূচী
ঢাকা জেলার সেহরি খাওয়ার শুরু এবং শেষ সময় কখন হতে পারে সেই সম্পর্কে রমজান শুরু হওয়ার পূর্ব থেকে একটি ধারণা থাকা প্রয়োজন। কারণ যখনই রোজা শুরু হয়ে যাবে তখনই সেহরি খাওয়ার সময়সূচী আপনার জানা দরকার হবেই। তাই আগে থেকেই যদি আপনার হাতের কাছে সেহরি খাওয়ার শুরু এবং শেষ সময়সূচী থাকে তাহলে ঠিক সময় মত আপনি রোজার সাহরি খেতে পারবেন।
যেহেতু বছরের সব সময় দিন-রাত এক সমান নয়। প্রতিদিনই সূর্যাস্ত ও সূর্য ওঠার সময় পরিবর্তন হয়। মাহে রমজানে সেহরি শেষ রাতে খাওয়া হয়। তাই এই সময় আপনি সময়সূচী দেখে রোজা রাখতে পারবেন। অন্যান্য জেলা থেকে ঢাকা জেলার লোকসংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় বিভিন্ন খাবারের হোটেলে সেহরির সময়সূচী দেখা যায়।
বিশেষ করে যারা অন্য জেলা থেকে ঢাকায় আসেন, তাদের জন্য বেশি দরকার হয়ে পড়ে সময়সূচী জানার। কারণ এই সময়টি মাহে রমজানের খুবই গুরুত্বপূর্ণ সময়। যদি সময়সূচী হাতের কাছে না থাকে তাহলে রোজা রাখা আপনার জন্য খুবই কষ্টকর হতে পারে। তাই নিজের কষ্ট কমাতে হলেও আপনাকে সময়সূচী দেখতে হবে। আপনি চাইলে মোবাইল থেকেও সরাসরি সেহরি খাওয়ার সময়সূচী দেখতে পারেন।
ঢাকা জেলার ইফতার শুরুর সময়সূচী
ঢাকা জেলায় ইফতারের সময়সূচী মাহে রমজান শুরু হওয়ার সময় থেকেই শুরু হয়ে যায়। শুধু তাই নয় ঢাকায় ইফতারি কোন সময় থেকে শুরু হবে এর পুরো বিস্তারিত আপনি এখানে পেয়ে যাবেন। কিন্তু এর জন্য আপনাকে সঠিক সময়সূচীর তালিকা দেখতে হবে। অনেক সময় সময়সূচী না জানার কারণে অনেক বড় ভূল হয়ে যেতে পারে। তাই সঠিকটা এখান থেকে জেনে নিন।
অন্য জেলা থেকে আসলে কিন্তু আপনার ইফতারের সময়সূচী কোনভাবেই মিলবে না। এই অবস্থায় যদি আপনার সময়সূচী কোন ভাবেই জানা না থাকে তাহলে কিন্তু আপনি সমস্যায় পড়তে পারেন। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক ঢাকার ইফতারের শুরু এবং শেষ সময়সূচী কি রয়েছে।
ঢাকা জেলার জন্য সাহরি ও ইফতারের সময়সূচী ২০২৪ প্রথম রহমতের দশ দিন সম্পর্কে প্রথমে জানা উচিত।
- প্রথম রোজার দিন ৬-১৪ মিনিট থেকে ইফতারের সময়সূচী শুরু হবে।
- পরবর্তী দিন দ্বিতীয় রোজার দিন ৬-১৫ মিনিট থেকে শুরু হবে।
- একইভাবে তৃতীয় দিন ৬-১৫ মিনিট থেকে ইফতারের সময়সূচী শুরু হবে।
- পরবর্তীতে চতুর্থ রোজার দিন ৬-১৬ থেকে শুরু হবে।
- ৫ম রোজার দিন ৬-১৭ মিনিটে এবং ছয় রোজায় ইফতারি ৬-১৭মিনিটে ইফতার শুরু হবে।
- এরপর সাত রোজার সময় ইফতারের সময়সূচী শুরু হবে ৬-১৭ মিনিট থেকে।
- একইভাবে ৬-১৮ মিনিট অষ্টম রোজায় ইফতারি শুরু করতে হবে।
- এরপর নবম এবং দশম দিনে ৬-১৯ মিনিটে ইফতারি করতে হবে।
- এগারো এবং বারো রোজার সময় ইফতারের সময়কাল ৬-১৯ পর্যন্ত হতে পারে।
- তের এবং চৌদ্দ রোজার ইফতারির সময় ৬-২০ মিনিট।
- পনের, ষোল এবং সতের রোজার ইফতারের সময় ৬-২১ মিনিট হতে শুরু হবে।
- আঠারো এবং ঊনিশ রোজায় ৬-২২ মিনিটে ইফতারির সময়কাল শুরু হতে পারে।
- বিশ, একুশ ও বাইশ রোজার ইফতারের সময় ৬-২৩ মিনিটেই শুরু হতে শুরু হবে।
- তেইশ, চব্বিশ ও পঁচিশ রোজার ইফতারের সময় ৬-২৪ মিনিটে হতে শুরু হবে।
- একইভাবে ছাব্বিশ এবং সাতাশ রোজার ইফতারের সময় ৬-২৫ মিনিট হতে শুরু হবে।
- আটাশ এবং ঊনত্রিশ রোজার ইফতারের সময় ৬-২৬ মিনিটে হতে শুরু হবে।
- ত্রিশ রোজার দিন ইফতারের সময় ৬-২৭ মিনিটে শুরু হবে।
যেই তথ্যগুলো উপরে উল্লেখিত হয়েছে ঢাকা জেলার জন্য সাহরি ও ইফতারের সময়সূচী এর সময়কাল সেইগুলো ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর প্রকাশ করার সময়সূচী থেকে নেওয়া হয়েছে।
ঢাকা জেলার সাহরির শেষ সময়সূচী
ঢাকা জেলার সাহরির শেষ সময়সূচী অনেকের জানা নাও থাকতে পারে। বিশেষ করে যারা ঢাকায় থাকেন তাদের অনেকের কাছেই সাহরির সময়সূচী জানার কোন ধরনের ক্যালেন্ডার হয়তোবা আছেই। বিশেষ করে যারা ঢাকার বাইরে থেকে আসেন তাদের কাছে ঢাকার সাহরির সময়সূচী নাও থাকতে পারে। এইক্ষেত্রে আপনি বিপদে পড়ে যেতে পারেন।
কারণ আপনার যদি সময়সূচী না জানা থাকে তাহলে আপনি কিভাবে ঠিক সময়মতো সাহরি খাবেন। তাই ঠিক সময়ে সাহরি অর্থাৎ রাতের শেষ ভাগে উঠার জন্য আপনাকে সময়সূচী জানতেই হবে। তাহলে চলুন সেহরির শেষ সময়সূচি সম্পর্কে জেনে আসা যাক।
- ঢাকা জেলার সাহরির প্রথম দশ দিনের সময় ৪-৪৪ মিনিট থেকে শুরু হবে।
- সেই সাথে পরবর্তী দশ দিনের সাহরির সময় ৪-৩২ মিনিট থেকে শুরু হবে।
- ধীরে ধীরে যত রোজার দিন বাড়তে থাকবে ততই সাহেরির সময় নিয়মিত সময় থেকে সময় ধীরে ধীরে প্রায় এক মিনিট করে কমতে শুরু করবে।
- এমনকি রোজার শেষ দশ দিনের সাহরির সময় ৪-২২ মিনিট থেকে শুরু হবে।
- শেষ রোজার দিন ৪-১২ মিনিট থেকে সাহরি সময় শুরু হবে।
এইভাবে উপরে উল্লেখিত ঢাকা জেলার জন্য সাহরি ও ইফতারের সময়সূচী ২০২৪ এর সময় দেখে নিয়মিত রোজার এক মাস পালন করতে হবে।
প্রচলিত ভাবে আমাদের সমাজে যেভাবে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে আসলে সেটা ঠিক নয়। পুরো মাসটায় রহমতের, পুরো মাসটায় ফজিলতের, পুরো মাস জুড়ে আল্লাহ তার বান্দাদের উপর রহমত বর্ষণ করে থাকেন। এবং পুরো মাসেই অনেক জাহান্নামিকে আল্লাহ জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন।
প্রথম দশ দিন রহমতের বলা হয়ে থাকে, তাহলে কি দশ দিন পর রহমতের দরজা বন্ধ হয়ে যায় ? আসলে এমনটি নয়। পুরো রমজানটাই হচ্ছে একটা প্যাকেজ। নেকি কুড়ানোর, বেশি বেশি ভালো কাজ করার, দান সদকা করার। এই মাসের কেউ যদি নেকির আসায় রোজা রেখে ভালো কাজ করে তবে তার জন্য আাল্লাহ সুবহানাহু তা’আলা
প্রতিটি ভালো কাজের জন্য ১০ হতে ৭০০ গুন পর্যন্ত সওয়াব বাড়িয়ে দেন। রমজান মাসের শেষের দিকে আরো একটি রাত আছে যার ফজিলত হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। সেটি হচ্ছে লাইলাতুল কদর। ২০ রমজানের পর থেকে প্রতিটি বিজোড় রাতে লাইলাতুল কদর এর সন্ধান করতে বলেছেন রাসুল (সাঃ)।
ইফতারের আগে যেই দোয়া পড়বেন
আমরা সারাদিন পানাহর বর্জণ করে এবং হালাল স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও সহবাস থেকে বিরত থাকার পর ইফতারের জন্য আকুল হয়ে থাকি, কখন ইফতারের সময় হবে, আর আমরা ইফতার করবো। কিন্তু ইফতারের সঠিক দোয়া কি আমরা সবায় জানি ? আমাদের সমাজে প্রচলিত যে দোয়া আছে সেটি আসলে সহীহ নয়। ইফতার সহ যে কোন খাবার খেতে হলে বিসমিল্লাহ বলে খেতে হবে।
ইফতার করতে হবে সূর্য ডোবার সাথে সাথেই। দেরি করে ইফতার করা ইহুদিদের অভ্যাস। এর রোজাদার ব্যক্তিকে ইফতার করালে রোজা রেখে তিনি যতখানি সওয়াব পাবেন, ঠিক ততখানি ইফতার করানো ব্যক্তিও সওয়াব পাবেন। এতে রোজাদার ব্যক্তির সওয়াব কমে যাবে না।
সাহরি খাওয়ার পর রোজা রাখার নিয়ত
সাহরি খাওয়ার পর রোজা রাখার নিয়ত জানা খুবই জরুরী। রোজা রাখতে হলে প্রতিদিনই সাহরি খেতে হয়। কেননা সাহরি খাওয়ার মধ্যে বরকত রয়েছে। মাহে রমজান মাসের নিয়মিত রুটিন। তবে অবশ্যয় নিয়ত করতে হবে। আপনি সাহরি খাওয়ার জন্য ঘুম থেকে উঠেছেন, কেন উঠেছেন রোজা রাখার জন্য খাবেন, এটাই আপনার জন্য যথেষ্ট।
রোজার নিয়ত মুখে উচ্চারণ করে বলা লাগেনা। আমাদের সমাজে রোজার নিয়ত হিসেবে যে দোয়াটি চালু আছে সেটি মূলত সহী নয়। নিয়ত হচ্ছে মনে মনে সংকল্প করা। রাসুল (সাঃ) বা তার কোন সাহাবি মুখে উচ্চারণ করে নিয়ত পড়েছেন এই মর্মে কোন বর্ণনা পাওয়া যায় না।
উপসংহারঃ
প্রিয় পাঠক, মাহে রমজান চলে আসলেই সাহরি এবং ইফতারের সময়সূচী খুজার হিড়িক পড়ে যায়। ঢাকা জেলার জন্য সাহরি ও ইফতারের সময়সূচী ২০২৪ সম্পর্কে উপরের উল্লিখিত আর্টিকেল থেকে বিস্তারিত পড়ার পর এখন নিশ্চয়ই সময়সূচী নিয়ে আর কোন সমস্যা হবে না। সাহরি এবং ইফতারের সময়সূচি ২০২৪ জেনে উপকৃত হলে বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিন।
পূর্ণ একমাস রোজা রাখুন। বেশি বেশি ভালো কাজ করুন। বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত করুন। কোরআন পড়া না জানলে এই একমাসের মধ্যে শিখে নিন। গরিব দুখিদের মাঝে বেশি বেশি দান, সদকা করুন। মনে রাখবেন মহান রব্বুল আলামিন প্রত্যেকটা ভালো কাজের জন্য এই মাসে ১০ গুন থেকে ৭০০ গুন নেকি বৃদ্ধি করে দিবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url