২০২৪ সালের রোজার ক্যালেন্ডার - রমজান মাসের ক্যালেন্ডার ১৪৪৫

চলে এলো সিয়াম সাধনার মাস মাহে রমজান। প্রত্যেকটা মাসলমানের কাছে রমজানের গুরুত্ব অনেক বেশি। যেহেতু এই মাসটি রহমাতের মাস, মাগফিরাতের মাস। তাই এই মাসের ক্যালেন্ডার সবার বাড়িতে থাকাটা অত্যান্ত জরুরী।
২০২৪ সালের রোজার ক্যালেন্ডার - রমজান মাসের ক্যালেন্ডার ১৪৪৫
তাহলে আর দেরি না করে চলুন রমজানের ক্যালেন্ডার ১৪৪৫ (২০২৪) সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাক। এই আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন, নিজে জানুন এবং অন্যদের জানার সুযোগ করে দিন।

ভূমিকাঃ

আরবী ১২টি মাসের মধ্যে সব চাইতে মহিমান্নিত, মর্যাদা পূর্ণ এবং দামি মাস হচ্ছে এই রমজান মাস। অন্য যে কোন মাসের ভালো আমলের ১০গুন বেশি নেকি হয় রোজার মাসে। তাই এই মাসের কদর আল্লাহর কাছে অনেক বেশি।

সূচীপত্রঃ রমজানের ক্যালেন্ডার ১৪৪৫ (২০২৪)

রমজান মাসের ক্যালেন্ডার ১৪৪৫
রোজার নিয়ত সম্পর্কিত মাসয়ালা
যে সব কাজ করলেও রোজা ভাঙ্গেনা
রমজান মাসের রোজার নিয়ত
রোজা কত শ্রেণীতে বিভক্ত
রমজানের রোজার গুরুত্ব
রমজান মাসের ছুটির তালিকা ১৪৪৫
যে সব কারণে রোজা ভেঙ্গে যায়
রমজানের রোজার বিবরণ
রমজান মাসের ফজিলত
রোজা কার উপর ফরজ
রমজান মাসের ইবাদত
রোজার সুন্নত সমূহ
শেষ কথা

রমজান মাসের ক্যালেন্ডার ১৪৪৫ নিচে উল্লেখ করা হলোঃ 

ঢাকার জন্য ইফতরির সময়সূচী

ইংরেজী তারিখ - বার     -     হিজরী তারিখ     -     সাহরীর শেষ সময়     -     ইফতারের সময়
১২ - মার্চ - ২০২৪ - মঙ্গল - ১ - রমজান - ১৪৪৫                    ৪.৫৩        -          ৬.০৭
১৩ - মার্চ - ২০২৪ - বুধ - ২ - রমজান - ১৪৪৫                        ৪.৫২         -         ৬.০৭
১৪ - মার্চ - ২০২৪ - বৃহস্পতি - ৩ - রমজান - ১৪৪৫               ৪.৫১         -         ৬.০৮
১৫ - মার্চ - ২০২৪ - শুক্র - ৪ - রমজান - ১৪৪৫                     ৪.৫০         -        ৬.০৮
১৬ - মার্চ - ২০২৪ - শনি - ৫ - রমজান - ১৪৪৫                     ৪.৪৯         -         ৬.০৮
১৭ - মার্চ - ২০২৪ - রবি - ৬ - রমজান - ১৪৪৫                       ৪.৪৮         -         ৬.০৯
১৮ - মার্চ - ২০২৪ - সোম - ৭ - রমজান - ১৪৪৫                    ৪.৪৭           -        ৬.০৯
১৯ - মার্চ - ২০২৪ - মঙ্গল - ৮ - রমজান - ১৪৪৫                   ৪.৪৬         -         ৬.১০
২০ - মার্চ - ২০২৪ - বুধ - ৯ - রমজান - ১৪৪৫                       ৪.৪৫          -        ৬.১০
২১ - মার্চ - ২০২৪ - বৃহস্পতি - ১০ - রমজান - ১৪৪৫            ৪.৪৪           -        ৬.১১
২২ - মার্চ - ২০২৪ - শুক্র - ১১ - রমজান - ১৪৪৫                  ৪.৪৩          -         ৬.১১
২৩ - মার্চ - ২০২৪ - শনি - ১২ - রমজান - ১৪৪৫                   ৪.৪২          -        ৬.১১
২৪ - মার্চ - ২০২৪ - রবি - ১৩ - রমজান - ১৪৪৫                    ৪.৪১          -        ৬.১২
২৫ - মার্চ - ২০২৪ - সোম - ১৪ - রমজান - ১৪৪৫                 ৪.৪০         -        ৬.১২
২৬ - মার্চ - ২০২৪ - মঙ্গল - ১৫ - রমজান - ১৪৪৫               ৪.৩৯         -       ৬.১২
২৭ - মার্চ - ২০২৪ - বুধ - ১৬ - রমজান - ১৪৪৫                    ৪.৩৮         -        ৬.১৩
২৮ - মার্চ - ২০২৪ - বৃহস্পতি - ১৭ - রমজান - ১৪৪৫           ৪.৩৭         -        ৬.১৩
২৯ - মার্চ - ২০২৪ - শুক্র - ১৮ - রমজান - ১৪৪৫                 ৪.৩৬         -        ৬.১৪
৩০ - মার্চ - ২০২৪ - শনি - ১৯ - রমজান - ১৪৪৫                  ৪.৩৪         -        ৬.১৪
৩১ - মার্চ - ২০২৪ - রবি - ২০ - রমজান - ১৪৪৫                   ৪.৩৩         -        ৬.১৪
১ - এপ্রিল - ২০২৪ - সোম - ২১ - রমজান - ১৪৪৫                ৪.৩২         -        ৬.১৫
২ - এপ্রিল - ২০২৪ - মঙ্গল - ২২ - রমজান - ১৪৪৫              ৪.৩১          -        ৬.১৫
৩ - এপ্রিল - ২০২৪ - বুধ - ২৩ - রমজান - ১৪৪৫                  ৪.৩০        -          ৬.১৫
৪ - এপ্রিল - ২০২৪ - বৃহস্পতি - ২৪ - রমজান - ১৪৪৫         ৪.২৯         -          ৬.১৬
৫ - এপ্রিল - ২০২৪ - শুক্র - ২৫ - রমজান - ১৪৪৫              ৪.২৮         -          ৬.১৬
৬ - এপ্রিল - ২০২৪ - শনি - ২৬ - রমজান - ১৪৪৫               ৪.২৭           -        ৬.১৭
৭ - এপ্রিল - ২০২৪ - রবি - ২৭ - রমজান - ১৪৪৫                 ৪.২৬          -         ৬.১৭
৮ - এপ্রিল - ২০২৪ - সোম - ২৮ - রমজান - ১৪৪৫             ৪.২৫         -          ৬.১৮
৯ - এপ্রিল - ২০২৪ - মঙ্গল - ২৯ - রমজান - ১৪৪৫             ৪.২৪          -          ৬.১৮
১০ - এপ্রিল - ২০২৪ - বুধ - ৩০ - রমজান - ১৪৪৫                ৪.২৩         -         ৬.১৯

রোজার নিয়ত সম্পর্কিত মাসয়ালা

রোজার নিয়ত সম্পর্কিত মাসয়ালা গুলোর মধ্যে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রয়েছে যা হয়ত আমাদের মধ্যে অনেকেরই জানা আবার অনেকেরই অজানা। আবার যারা জানার মধ্যেও অনেক ভূল রয়েছে। রমজানুল মোবারকে রোজার নিয়ত: যেদিন রোজা, সে দিনের পূর্ব রাতেই আপনি যদি মনে মনে নিয়ত করে নেন তাতেও ফরজ আদায় হয়ে যাবে। মুখে উচ্চারণ করে নিয়ত পড়ার কোন বিধান নেই।

আপনি রোজা রাখার নিয়তে সাহরি খেতে উঠেছেন, এটাই আপনার জন্য রোজার নিয়ত হয়ে যাবে। অথবা ঘুমানোর আগে আপনি নিয়ত করে রেখেছেন আগামী কাল রোজা রাখবেন, কিন্ত সাহরির সময় আপনার ঘুম ভাংলোনা ফজরের আযান শুনতে পাচ্ছেন, এমন সময় শুধু রোজার নিয়ত করে নেবেন, আর কোন কিছু খাবেন না, রোজা হয়ে যাবে।

ভোরের পূর্ব পর্যন্ত রোজা রাখার ইচ্ছা ছিল না, এমনকি ভোর হওয়ার পরও রোজা রাখার কোন ইচ্ছা ছিল না। কিন্তু দিনের কিছু অংশ যাওয়ার পর ভাবলেন, আল্লাহর একটি ফরজ লংঘন করা উচিত নয়। এভাবে সেদিন তার রোজার নিয়ত করলেন। এতেও রোজা শুদ্ধ হবে। রমজানের রোজার জন্য আজ আমি রোজা আছি শুধু এতটুকু মনে মনে নিয়ত করলেও রোজা আদায় হবে।

যে সব কাজ করলেও রোজা ভাঙ্গেনা

যেসব কাজে রোজা ভঙ্গ হয় না সে সমস্ত বিষয়গুলো নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ

  • রোজা রাখা অবস্থায় ভুলবশত কোন কিছু খেয়ে ফেললে তবে রোজার কথা মনে পড়লে মুখে যা আছে সব ফেলে দিতে হবে।
  • গায়ে তেল মালিশ করলে রোজা ভাঙ্গে না।
  • মুখের থুথু গিলে ফেললে রোজা ভাঙ্গে না।
  • সামান্য পরিমাণ বমি হলেও রোজা ভাঙ্গে না।
  • নাকে কিংবা কানের ভেতর পানি ঢুকলে রোজা ভাঙ্গে না।
  • আতর, লোবান, আগরবাতি প্রভৃতির সুবাস গ্রহণ করলে রোজা ভাঙ্গে না।
  • স্বপ্নদোষ হলেও রোজা ভাঙ্গে না।
  • চোখের মধ্যে সুরমা লাগালেও রোজা ভাঙ্গে না।

রমজান মাসের রোজার নিয়ত

রমজান মাসের রোজার আলাদা গদ বাধা কোন নিয়ত নাই। আমাদের সমাজে প্রচলিত যে নিয়ত আছে যা অনেকে মুখে উচ্চারণ করে পড়ে থাকেন সেটা আসলে সঠিক নয়। রাসুলে করিম (সাঃ), চার খলিফা ও সাহাবি দ্বারা এর কোন ভিত্তি খুজে পাওয়া যায় না। এটা মানুষের মন গড়া তৈরি করা একটি দোয়।

আসলে যে কোন আমলের জন্য মুখে উচ্চারণ করে নিয়ত পড়ার দরকার নেই। নিয়তটা হচ্ছে মনের সংকল্প। আপনি যখনই সাহরি খেতে উঠবেন তখনই তো নিয়ত হয়ে গেল, যে আপনি কি জন্য উঠেছেন। রোজা রাখার উদ্দেশ্য ছাড়া ঐ সময় কেউ খেতে উঠেনা। শুধুমাত্র যারা রোজা রাখে তারাই সাহরি খেতে উঠেন।

রোজার প্রকারভেদঃ

রোজার প্রকারভেদ সম্বন্ধে আমাদের অনেকেরই জানা নেই। কোন কোন তারিখে রোজা রাখতে হয় কোন কোন সময় রোজা রাখতে হয় এ সম্বন্ধে আমরা প্রায় সকলেই জানি কিন্তু রোজা কত শ্রেণীতে বিভক্ত এ বিষয়টি অনেকেরই ধারনা নেই। নিচে রোজার শ্রেণীবিভাগ আলোচনা করা হলোঃ

রোজা ৪ ভাগে বিভক্ত। যথাঃ-

ফরজ রোজাঃ পবিত্র রমজান মাসের পূর্ণ এক চন্দ্র মাসের রোজা এবং কাজা ও কাফফারা রোজা আদায় করা ফরজ। আল্লাহ সুবহানাহু ওতাআলা কোরআনুল করিমে বলেন, হে ঈমানদারগণ, তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের ওপর, যেনো তোমরা পরহেযগারী অর্জন করতে পারো। (সূরা বাকারা, আয়াত ১৮৩)

ওয়াজিব রোজাঃ নির্দিষ্ট অথবা অনির্দিষ্ট মানোতের রোজা ওয়াজিব। নফল রোজা রেখে ভঙ্গ করলে পরবর্তীতে তা আদায় করা ওয়াজিব।

নফল রোজাঃ রমজান মাস ব্যতীত আর সকল মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ আইয়ামে বীজের রোজা মহররমের ৯ এবং ১০ তারিখের রোজা এবং নিষিদ্ধ দিনগুলো ব্যতীত অন্য যে কোন দিন আল্লাহর সন্তষ্টি অর্জনের জন্য রোজা রাখা নফল রোজার অন্তর্ভূক্ত।

মাকরূহ রোজাঃ শুধু শুক্রবারের দিন নির্দিষ্ট করে রোজা রাখা, সারা বছর রোজা রাখা এবং কুফুতি রোজা অর্থাৎ রোজাদার অবস্থায় কথাবার্তা একেবারে বন্ধ করে দেওয়া, তসবিহ তাহলিল ও জিকির কিছুই না করা এ সকল রোজা মাকরূহ রোজা হিসেবে বিবেচিত। এছাড়াও ঈদুল ফিতরের দিন এবং জিলহজ্জ চাঁদের ১০, ১১, ১২ ও ১৩ তারিখের রোজা হারাম।

গড়গড়া করা বা নাকের ভেতর পানি টেনে নেওয়ায় রোজা মাকরুহ হয়। আর এসব করার সময় পেটে পানি চলে গেলে রোজা ভেঙে যায়। মুখের লালা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় পেটে গেলে ক্ষতি নেই, তবে ইচ্ছাকৃত দীর্ঘ সময় মুখে থুথু ধরে রেখে পরে গিলে ফেললে রোজা মাকরুহ হবে। রমজানের সারাটি দিন শরীর নাপাক রাখলেও রোজা মাকরুহ হবে।

রমজানের রোজার গুরুত্ব

রমজানের রোজার গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম। পবিত্র রমজানের রোজা সম্বন্ধে ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষরা তো সকলেই জানেন। তবে রমজান মাস সম্বন্ধে এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রয়েছে যা অনেকের কাছে অজানাও হতে পারে। ইসলামের পঞ্চম স্তম্ভের মধ্যে নামাযের পরে রোজার স্থান।ইবাদত সমূহের মধ্যে রোজার একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য আছে। রোজার দ্বারা গরিবদের দুঃখ ও ক্ষুধার কষ্ট অনুভবের সুযোগ হয়।

আর তা দ্বারা গরিবদের প্রতি করুণা এবং দয়া মমতা সৃষ্টি হয় দানশীলতা ও পর উপকার করার আগ্রহ সৃষ্টি হয়। তাছাড়াও রোজা দ্বারা মানুষের সংযম, ধৈর্য, গুণ এবং স্বাস্থ্যগত উপকার সাধিত হয়। রোজাদার মানুষ কর্মী, সক্রিয়, সহনশীল, কষ্ট সহিষ্ণু, নিয়মানুবর্তিতা, এবং পরিশ্রমী হতে সুযোগ লাভ করে। দীর্ঘ এক মাস রোজা রাখার ফলে শরীরের অনেক উপকার হয়। এটা বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমানীত।

রমজান মাসের ছুটির তালিকা ২০২৪

রমজান মাসের ছুটির তালিকা ২০২৪ বা রমজান মাসে কোন কোন দিন ছুটি রয়েছে তা জানতে আপনাকে রমজান মাসের ক্যালেন্ডার ১৪৪৫ লক্ষ্য করতে হবে। ২০২৪ সালে মার্চ মাসের ১২ তারিখে রমজান মাসের প্রথম। প্রথম রোজাতে কোন ছুটি নাই। অন্যান্য বছর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি রোজার মাস পুরো ছুটি থাকলেও এবার কিন্ত ১৫ রোজা পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে।

তবে যেহেতু মার্চ মাসে রোজার মাস পড়ছে সেহেতু ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস হিসেবে এক দিন ছুটি রয়েছে। যেটি আরবী মাসের ১৫ই রমজান। তারপর এপ্রিল মাসের ৭ তারিখ একটি ছুটির দিন আছে যে দিনটা রমজান মাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন ২৭ রমজান। এই দিন লাইলাতুল কদরের সরকারি ছুটি থাকে।

যে সব কারণে রোজা ভেঙ্গে যায়

রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
  • রোজা অবস্থায় মুখ ভর্তি বমি করলে রোজা ভেঙে যায়।
  • ভুলবশত পানাহার করে ফেললে পরে মনে পড়ার পরও পানাহার করলে রোজা ভেঙে যায়।
  • অচেতন অবস্থায় পানাহার করলে রোজা ভেঙে যায়।
  • ইচ্ছাকৃতভাবে ঔষধ সেবন করলে রোজা ভেঙে যায়।
  • দাঁত হতে বুট বা তার চেয়ে বড় কোন জিনিস বের করে গিলে ফেললে রোজা ভেঙে যায়।
  • কুলি করার সময় গলার ভেতরে পানি চলে গেলে রোজা ভেঙে যায়।
  • থুথুর সাথে অর্ধেকের বেশি রক্ত গিলে ফেললে রোজা ভেঙে যায়।
  • মুখের থুথু বের করে পুনরায় তা গিলে ফেললে রোজা ভেঙে যায়।
  • নাকের সাহায্যে কোন নস্যি টেনে নিলে রোজা ভেঙে যায়।
  • রাত আছে মনে করে প্রভাতে সেহরি করলে রোজা ভেঙে যায়।

রমজানের রোজার বিবরণ

রমজানের রোজার বিবরণ সম্বন্ধে আমরা বিভিন্ন ইসলামিক বই পড়ে এ সম্বন্ধে জ্ঞান অর্জন করে থাকি। সাওম আরবী শব্দ। আর রোজা ফার্সি শব্দ। সাওম শব্দের অর্থ বিরত থাকা, আত্ম সংযম ও কঠোর সাধনা। আর রোজা শব্দের অর্থ জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া। তাই এ মাসটিকে সাওম ও রোজা হিসেবে নামকরণ করা হয়েছে।

শরীয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে রোজা হচ্ছে মহান আল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্টির নিয়তে সুবহে সাদেক হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার ও স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকা। এ রোজা হচ্ছে ইসলামের পঞ্চম স্তম্ভের মধ্যে তৃতীয়। আল্লাহ সুবহানাহু তা'আলা এই মাসে সমস্ত ভালো কাজের জন্য ১০ থেকে ৭০০ গুন পর্যন্ত সওয়াব বৃদ্ধি করে দেন।

রমজান মাসের ফজিলত

রমজান মাসের ফজিলত ও তাৎপর্য সম্বন্ধে বলে শেষ যাবেনা। আল্লাহ তা'আলা কোরআন শরীফে বলেন, রমজান এমন এক মহিমান্নিত ও গৌরব মন্ডি মাস, এই মাসে আল্লাহ তা'আলার মহা গ্রন্থ কোরআন মাজীদ অবতীর্ণ করেছেন। আসমানী কিতাব সমূহের সর্বশেষ কিতাব জীবন ব্যবস্থার হিসেবে আল কোরআন রমজান মাসের নাযিল করেছেন।

এটা রমজান মাসের বিশেষ ফজিলতের কথা প্রমাণ করে। রমজান মাসে কোরআন অবতীর্ণ করা হয়েছে এ কথাটির তাৎপর্য হয়েছে এই যে এই মাসের সমগ্র কোরআন মাজীদকে একসাথে লওহে মাহফুজে অবতীর্ণ করা হয়। সেখান থেকে ধীরে ধীরে হযরত নবী কারীম (সাঃ) এর কাছে জিব্রাইল (আঃ) এর মাধ্যমে ওহী রূপে প্রেরণ করা হয়।

রোজা কার উপর ফরজ

রোজা কার উপর ফরজ এ সম্বন্ধে আমরা সকলেই কমবেশি জানি। বালেগ মুসলিম নর-নারীর উপর রমজান মাসের রোজা রাখা ফরজ। নাবালোক ও জ্ঞানশূন্য অর্থাৎ পাগল ব্যক্তিদের উপর রোজা ফরজ নয়। মোট কথা রোজা ফরজ হওয়ার তিনটি শর্ত। যেমনঃ-

মুসলমান হওয়া।
বালেগ হওয়া।
সুস্থ হওয়া অর্থাৎ হুশ চেতনা বহাল থাকা।

আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকার কারণে রমজান শরীফের চাঁদ দেখা গেল না কিন্তু কোন একজন দ্বীনদার পরহেজগার সত্যবাদী লোক নিজ চোখে চাঁদ দেখেছে বলে সাক্ষী দিলে চাঁদ ওঠা প্রমাণিত হবে। কিন্তু ঈদের চাঁদের বেলায় এই হুকুম প্রযোজ্য নয়। অর্থাৎ ২৯ রমজান তারিখে মেঘের কারণে ঈদের চাঁদ দেখা না গেলে ৩০টা রোজা পূর্ণ করতে হবে। 

 শুধু ওই রূপ একজন লোকের সাক্ষীতে রোজা ভঙ্গ করা চলবে না। বরং ঐরকম দুইজন বিশ্বাসী পুরুষ অথবা একজন পুরুষ ও দুইজন স্ত্রী লোকের সাক্ষী প্রযোজ্য হবে। পুরুষ ছাড়া শুধু স্ত্রীলোক চারজন হলেও তার কথায় বিশ্বাস করা যাবে না।

রমজান মাসের ইবাদত

রমজান মাসের ইবাদত ও ফজিলত সম্বন্ধে বহু হাদিসে এবং বিশেষ করে আল কুরআন মাজেদে রমজান মাসের ইবাদত ও ফজিলত সম্বন্ধে বহু বর্ণনা খুঁজে পাওয়া যায়। পবিত্র রমজান মাস আরবী বছরের নবম মাস। ফজিলত এবং মর্যাদা দিক দিয়ে পবিত্র রমজান মাস বছরের সর্বশ্রেষ্ঠ মাস। এই মাসটিতে মহান আল্লাহ তা'আলা খাস এবং সর্বাধিক ফজিলত দান করেন। 

তাই এ মাসের ইবাদতে ১০ থেকে ৭০০ গুণ বেশি সওয়াব লাভ করা যায়। পবিত্র রমজান মাসের ফজিলত সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে এবং হাদিসে অসংখ্য বর্ণনা পাওয়া যায়। এই মাসে বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়া ও নফল নামাজের কথা বলা হয়েছে। 

অধিক নেকির লাভের জন্য এই মাসের অতিরিক্ত নামাজ হিসেবে তারাবির নামাজ আদায় করা হয়। এই মাসের ফজিলতের কারণে রাসুল (সাঃ) বেশি বেশি দান করতেন। এই মাসের সব চেয়ে উত্তম দান হচ্ছে, অন্য রোজাদার ব্যক্তিকে ইফতার করানো।

রোজার সুন্নত সমূহ

রোজার সুন্নত সমূহ নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
  • সর্বদা নেক বা ভালো কাজ করা।
  • গরীব, এতিম, অসহায় মানুষ, মসজিদ ও মাদ্রাসায় দান করা।
  • সময় মতো ইফতার করা।
  • পবিত্র রমজান মাসের মধ্যে ইত্তেকাফ করা।
  • তারাবির নামাজ পড়া
  • পবিত্র কোরআন শরীফ বেশি বেশি তেলাওয়াত করা (খতম করা) অথবা শোনা।

শেষ কথা

এই আর্টিকেলে আজ আপনাদের সাথে আলোচনার মুখ্য বিষয় ছিল রমজান মাসের ক্যালেন্ডার ১৪৪৫। এছাড়াও আপনাদের সাথে আলোচনা করেছি রমজান মাসের রোজার নিয়ত সম্পর্কিত মাসয়ালা কি কি এবং রমজান মাসের রোজার নিয়ত কি এবং কোন সময় নিয়ত করতে হয় এবং যেসব কাজে রোজা ভঙ্গ হয় না এ সমস্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনি নিশ্চয় কিছুটা হলেও উপকৃত হয়েছেন এবং রমজান মাসের কোন আলোচনা যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তবে অবশ্যয় বন্ধুদের মাঝ শেয়ার করে দেবেন। পবিত্র রমজানের রোজা রাখুন, পরিবারসহ অন্যদের রোজা রাখতে উৎসাহিত করুন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।






















এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪