গাজর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং গাজর খাওয়ার নিয়ম জানুন
আমি আপনি প্রতিনিয়ত গাজর খেয়ে থাকি। কিন্তু আপনি কি জানেন গাজরের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে। তাহলে আজ এই আর্টিকেল পড়ে জেনে নিন গাজরের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে এবং গাজর খাওয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া গুলোও জেনে রাখা ভালো।
আসলে গাজর মুলত একটি শীতকালীন সবজি। এর মধ্যে রয়েছে অসাধারণ পুষ্টিগুণ এবং খেতেও চকৎকার। এই সবজিটি খেলে স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারি এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া জানতে নিচের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
সূচীপত্রঃ
গাজরে থাকা চকৎকার স্বাস্থ্য ও পুষ্টিগুণ
গাজরের মধ্যে কোন ভিটামিন বেশি থাকে
দৃষ্টি শক্তি বাড়াতে গাজরের উপকারিতা
গাজর খাওয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
সেক্সে গাজরের উপকারিতা
প্রতিদিন গাজর খাওয়ার উপকারিতা
গাজর খাওয়ার নিয়ম
খালি পেটে গাজর খাওয়ার উপকারিতা
প্রতিদিন কতটুকু গাজর খাওয়া উচিত
কাঁচা গাজর খাওয়ার নিয়ম
শসার উপকারিতা ও অপকারিতা
শেষ কথা
গাজরে থাকা চকৎকার স্বাস্থ্য ও পুষ্টিগুণ
গাজরে চমৎকার স্বাস্থ্য ও পুষ্টিগুণ পাওয়া যায়। কিন্তু আমাদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষ এই বিষয়গুলো সম্পর্কে জানেনা। শীতকালে যে সকল শাকসবজি পাওয়া যায় এগুলোর মধ্যে অন্যতম সবজি হলো গাজর। শীতকাল ছাড়া অন্য কোন সময়ে তেমন ভাবে গাজর পাওয়া যায় না। এখন আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণে গাজর খেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে গাজর সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে।
ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করেঃ ক্যান্সার হল একটি মরণব্যাধি রোগ। বেশ কিছু খাবার আমরা খেয়ে থাকি সাধারণত এই খাবারগুলোর মধ্যে ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকটাই থাকে। আপনাদের মধ্যে কাওরি যদি এই মরণব্যাধি রোগ হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই নিয়মিত গাজর খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে থাকেঃ একটা নির্দিষ্ট বয়স হওয়ার পর সাধারণত আমাদের দৃষ্টি শক্তি অনেকটাই কমে যায়। যদি আপনার ক্ষেত্রেও এরকম হয়ে থাকে তাহলে গাজর খাওয়া শুরু করুন। কারণ গাজরের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ বিটা ক্যারোটিন। এই উপাদান আমাদের চোখের বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সমাধান করে এবং দৃষ্টিশক্তি আগের তুলনায় বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে থাকেঃ যদি আপনি আপনার স্মৃতিশক্তি ধরে রাখতে চান তাহলে বেশ কিছু খাওয়ার রয়েছে এই খাবারগুলো খেতে হবে এদের মধ্যে গাজর অন্যতম। গাজরের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে বিটা ক্যারোটিন সাধারণত এটি মস্তিষ্কের ক্ষয় রোধে ভূমিকা রাখে এবং মস্তিষ্কের ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
দাঁতের সমস্যা সমাধান করেঃ আমাদের অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে কেউ দাঁতের সমস্যার অতিরিক্ত ভুগে থাকে। যদি আপনি দাঁতের এই সমস্যাগুলো সমাধান করতে চান তাহলে নিয়মিত গাজর খেতে পারেন। দাঁতের জন্য গাজরের রস খুবই উপকারী একটি উপাদান। তাছাড়া গাজরের মধ্যে পাওয়া যায় ভিটামিন সি সহ বিভিন্ন ধরনের উপাদান যা আমাদের দাঁতের সমস্যা দূর করে।
রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করেঃ আমাদের শরীরের যদি রক্তস্বল্পতা দেখা দেয় তাহলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে। তাই আপনি যদি রক্তস্বল্পতা দূর করতে চান তাহলে নিয়মিত গাজর খাওয়ার অভ্যাস করুন। গাজরের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন সাধারণত এটি আমাদের রক্তস্বল্পতা দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
হৃদপিণ্ড ভালো রাখতে সাহায্য করেঃ যারা অতিরিক্ত পরিমাণে তার জাতীয় খাবার খায় সাধারণত তাদের হৃদপিণ্ডের সমস্যা বেশি হয়। যদি হৃদপিন্ডের সমস্যা দূর করতে চান এবং আপনার হৃদপিণ্ড ভালো রাখতে চান তাহলে নিয়মিত গাজর খেতে পারেন। কারণ গাজরের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই উপাদান গুলো আমাদের হৃদপিণ্ড ভালো রাখতে সাহায়তা করে।
হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করেঃ যাদের হজমের সমস্যা রয়েছে তাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। এই হজমের সমস্যার কারণে যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যসহ আরো বেশ কিছু জটিল রোগ দেখা দেয়। হজমের সমস্যা দূর করার জন্য তাদের নিয়মিত গাজর খাওয়া উচিত। প্রতিদিন খাঁচা গাজর খেলে হজমের সমস্যা দূর হয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য কমে যায়।
জন্ডিস প্রতিরোধ করেঃ জন্ডিস হলো মারাত্মক একটি রোগ। অপরিষ্কার পানি এছাড়া আরো বেশ কিছু কারণে জন্ডিস হয়ে থাকে। যদি আপনি জন্ডিস রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন এবং আপনি জন্ডিস থেকে মুক্তি পেতে চান তাহলে গাজরের রস অথবা কাঁচা গাজর প্রতিদিন সকালে খাওয়ার অভ্যাস করুন। এই উপাদানটি খেলে দ্রুত জন্ডিসের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।
সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে বাঁচাতে সাহায্য করেঃ যারা দীর্ঘ সময় ধরে সূর্যের তাপের মধ্যে কাজ করেন সাধারণত তাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান হলো গাজর। যদি নিয়মিত গাজর খেতে পারেন তাহলে আপনার শরীর সুস্থ থাকবে এবং রোদের ক্ষতি থেকে রক্ষা পাবেন। তাছাড়া ক্ষতিকর সূর্যের রশ্মি থেকে বাঁচতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই গাজর ব্যবহার করতে হবে।
ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করেঃ আপনি যদি আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করার জন্য বিভিন্ন ধরনের উপাদান ব্যবহার করে থাকেন এবং কোন ফল না পান তাহলে আজকে থেকে গাজর ব্যবহার শুরু করুন। যদি আপনি নিয়মিত গাজর খেতে পারেন তাহলে আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়বে।
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ আপনার শরীরে যদি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে তাহলে একটুতেই বিভিন্ন ধরনের রোগ আক্রমণ করে। নিজেকে এবং নিজের শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো খুবই দরকার। আপনি নিয়মিত গাজর খাওয়া শুরু করেন। এতে করে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই বৃদ্ধি পাবে আগের তুলনায়।
যৌন শক্তি বৃদ্ধি করেঃ অনেক সময় বিভিন্ন কারণে অথবা বয়সের বাড়ে আমাদের অনেকের যৌন শক্তি কমে যেতে পারে। যদি এমনটা হয় তাহলে দাম্পত্য জীবনে সমস্যা দেখা যায়। যদি আপনি এই সমস্যাগুলো সমাধান করতে চান তাহলে নিয়মিত শাকসবজি বেশি করে খাবেন এগুলোর মধ্যে গাজর অন্যতম।
গাজরের মধ্যে কোন ভিটামিন বেশি থাকে
গাজরে পাওয়া যায় প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ। এই ভিটামিন টি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া গাজরের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে বিটা ক্যারোটিন দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। অন্যান্য ভিটামিন তেমন না থাকলেও গাজরের মধ্যে পাওয়া যায় ভিটামিন এ। তাই আপনার শরীরে যদি ভিটামিন এ এর ঘাটতি থাকে তাহলে গাজর খেয়ে অভাব পূরণ করতে হবে।
দৃষ্টি শক্তি বাড়াতে গাজরের উপকারিতা
গাজরে রয়েছে উচ্চ পরিমাণে বিটা ক্যারোটিন। এই বিটা ক্যারোটিন লিভারে পৌঁছে ভিটামিন 'এ'-তে রূপান্তরিত হয়, যা চোখের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। হার্ট ভালো রাখে: গাজরে থাকা প্রচুর পরিমাণে ডায়েটরি ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হার্ট সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
আপনি যদি নিয়মিত গাজর খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন তাহলে আপনার শরীরে চোখের জন্য উপকারী বিটা ক্যারোটিন এই উপাদান বৃদ্ধি পাবে। আর এই উপাদানটি যদি বৃদ্ধি পায় তাহলে আপনার চোখের কোন সমস্যা থাকবে না বিশেষ করে আপনার দৃষ্টি শক্তি আগের তুলনায় অনেকটাই বেড়ে যাবে।
গাজর খাওয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
- গাজর খাওয়ার অনেকগুলো উপকারিতা এর মধ্যে আমরা জেনেগেছি। বেশ কিছু কারণে গাজর খেলে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। তাই উপকারিতার পাশাপাশি আমাদের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কেও ধারণা রাখতে হবে।
- যাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে সাধারণত তারা যদি নিয়মিত এবং অতিরিক্ত পরিমাণে গাজর খেয়ে থাকে অথবা খেতে চাই তাহলে ডায়াবেটিসের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে কারণ গাজরের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমানে চিনি। তাই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাওয়া উচিত।
- নতুন সন্তান প্রসব করা মায়ের অতিরিক্ত পরিমাণে গাজর খাওয়া উচিত নয়। অতিরিক্ত পরিমাণে গাজর খেলে মায়ের দুধের স্বাদ পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে। তাই এই বিষয়টি লক্ষ্য রেখে এই সমস্ত মায়েদের গাজর খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
- এছাড়া যাদের হজম জনিত সমস্যা রয়েছে তারা যদি অতিরিক্ত পরিমাণে গাজর খেয়ে থাকে তাহলে হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। আর এই হজমের সমস্যা হলে তাদের জটিল রোগসহ কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। এ বিষয়টি অবশ্যয় লক্ষ্য রাখতে হবে।
সেক্সে গাজরের উপকারিতা
গাজরে থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন ই এবং বিটা-ক্যারোটিন। এগুলো শুক্রাণু তৈরি করতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব পুরুষরা নিয়মিত গাজর খান তাদের দেহে বেশি শুক্রাণু তৈরি হয়। টেস্টোস্টেরন বৃদ্ধি করে: গাজরে থাকে ভিটামিন এ আর ভিটামিন এ লিভার এর ফাংশনেও অবদান রাখে
গাজর ও গাজরের পাতায় রয়েছে পিটুইহারি গ্ল্যান্ডের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির উপাদান। যা সেক্স হরমোন বাড়িয়ে তোলে। তাই অস্বাভাবিক শুক্রক্ষয় হয়ে থাকলে কিছুদিন গাজরের হালুয়া খেলে উপকার পাওয়া যায়।
প্রতিদিন গাজর খাওয়ার উপকারিতা
- প্রতিদিন এক গ্লাস গাজরের জুস শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আশ্চর্যজনকভাবে বৃদ্ধি করে। শরীরে ক্ষতিকর জীবাণু, ভাইরাস এবং বিভিন্ন ধরনের প্রদাহের বিরুদ্ধে কাজ করে। গাজরের জুসে ভিটামিন ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের খনিজ, পটাশিয়াম, ফসফরাস ইত্যাদি থাকে যা হাড় গঠন, নার্ভাস সিস্টেমকে শক্ত করা ও মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
- গাজরে প্রচুর ভিটামিন এ থাকে। ভিটামিন এ ত্বকের কোষের বৃদ্ধি ও পুনর্জন্মে সাহায্য করে। এটি ত্বকের বলিরেখা, ব্রন, দাগছোপ দূর করতে এবং ত্বককে উজ্জ্বল ও সুন্দর রাখতে সাহায্য করে।
- গাজরে প্রচুর পরিমাণে বিটা ক্যারোটিন থাকে। বিটা ক্যারোটিন শরীরে ভিটামিন এ তে রূপান্তরিত হয়। ভিটামিন এ চোখের রেটিনায় অবস্থিত রড ও কোন কোষের জন্য অপরিহার্য। এটি চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি, রাতের অন্ধত্ব প্রতিরোধ এবং ছানি পড়ার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
- শীতে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায় দ্রুত। গাজর খেলে ত্বকে পটাশিয়ামের অভাব দূর হবে এবং ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকবে।
- গাজরে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ভিটামিন ই এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। এগুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
- চুল পড়া রোধে গাজরে থাকা ভিটামিন ও মিনারেল কার্যকর। গাজর চুল পড়া কমায়, চুলকে শক্ত ও মজবুত করে।
- গাজরের থাকা বিটা ক্যারোটিন ভিটামিন এ তে রূপান্তরিত হয়। ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তি প্রখর করে।
গাজর খাওয়ার নিয়ম
একেক জন একেক ভাবে গাজর খেয়ে থাকেন। তবে বেশিরভাগ মানুষ গাজর রান্না করে খাই আবার কিছু সংখ্যক মানুষ রয়েছে যারা কাঁচা গাজর খেতে বেশি পছন্দ করে থাকে। আপনি যেভাবেই খান না কেন এর উপকারিতাগুলো পাবেন। বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন যে যদি কাঁচা গাজর নিয়মিত খাওয়া যায় তাহলে বেশি উপকারিতা পাওয়া যাবে। রান্না করলে নাকি অনেক উপকারিতা কমে যায়।
খালি পেটে গাজর খাওয়ার উপকারিতা
একটু ভারী খাবার খেলে হজমের সমস্যা হয় বা পেটে গ্যাসের সমস্যা দেখা দেয়। এক্ষেত্রে আপনাকে যা করতে হবে আপনি নিয়মিত খালি পেটে গাজর খেতে পারেন। কেননা গাজরের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এবং প্রয়োজনীয় খনিজ পদার্থ। ফাইবার দ্রুত খাদ্য হজমে সাহায্য করে।
প্রতিদিন একটি করে গাজর চিবিয়ে খেলে দাঁতের বেশ উপকার হয়। বিশেষ করে দাঁত শক্ত হয়, দাঁতের ক্ষয় রোধ করে, মাড়ি থেকে রক্ত পড়া বন্ধ করে। তাই আমি বলব আপনারা প্রতি দিন অন্তত একটি করে গাজর খাবেন। প্রতিদিন মর্নিং ওয়ার্কের পরে এক গ্লাস গাজরের জুস আপনার সারাদিনের কর্মক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেবে।
প্রতিদিন কতটুকু গাজর খাওয়া উচিত
প্রতিদিন এক গ্লাস গাজরের জুস শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আশ্চর্যজনকভাবে বৃদ্ধি করে। শরীরে ক্ষতিকর জীবাণু, ভাইরাস এবং বিভিন্ন ধরনের প্রদাহের বিরুদ্ধে কাজ করে। গাজরের জুসে ভিটামিন ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের খনিজ, পটাশিয়াম, ফসফরাস ইত্যাদি থাকে যা হাড় গঠন, নার্ভাস সিস্টেমকে শক্ত করা ও মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
কাঁচা গাজর খাওয়ার নিয়ম
- গাজর ভালোভাবে ধুয়ে খাওয়া উচিত।
- কাঁচা খাওয়ার সময় খোসা ছাড়িয়ে নেওয়া উচিত।
- গাজর বেশিক্ষণ রান্না করা উচিত নয়।
- গাজর দিয়ে তৈরি খাবার ঠান্ডা হয়ে গেলে খাওয়া উচিত।
শসার উপকারিতা ও অপকারিতা
বিশেষজ্ঞদের মতে, শসায় প্রচুর পরিমাণে পানিসহ ভিটামিন সি এবং কে রয়েছে, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে। শসায় যে পানি থাকে, তা আমাদের দেহের বর্জ্য ও বিষাক্ত পদার্থ অপসারণে অনেকটা অদৃশ্য ঝাড়ুর মতো কাজ করে। নিয়মিত শসা খাওয়ার ফলে কিডনিতে সৃষ্ট পাথরও গলে যায়।
এক নজরে শসার কিছু উপকারিতা
১. ফাইবার ও ফ্লুইডসমৃদ্ধ শসা শরীরে ফাইবার এবং পানির পরিমাণ বাড়ায়। পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও ফাইবার থাকার কারণে শসা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে থাকে।
২. শসায় রয়েছে স্টেরল নামের এক ধরনের উপাদান, যা কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এ ক্ষেত্রে মনে রাখা প্রয়োজন, শসার খোসায়ও স্টেরল থাকে।
৩. ওবেসিটি নিয়ন্ত্রণে শসা খুব উপকারী।
৪. কিডনি, ইউরিনারি, ব্লাডার, লিভার ও প্যানক্রিয়াসের সমস্যায় শসা বেশ সাহায্য করে থাকে।
৫. এরেপসিন নামক অ্যানজাইম থাকার কারণে শসা হজম ও কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা সমাধান করে থাকে।
৬. শসা বা শসার রস ডায়াবেটিস রোগীর জন্যও বেশ উপকারী।
৭. শসার রস আলসার, গ্যাস্ট্রাইটিস, অ্যাসিডিটির ক্ষেত্রেও উপকারী।
৮. মিনারেলসমৃদ্ধ শসা নখ ভালো রাখতে, দাঁত ও মাড়ির সমস্যায় সাহায্য করে।
৯. ডাক্তারের পরামর্শনুযায়ী শসার রস খেলে আর্থ্রাইটিস, অ্যাগজিমা, হার্ট ও ফুসফুসের সমস্যায় উপকার হতে পারে।
১০.গাজরের রসের সাথে শসার রস মিশিয়ে খেতে পারেন, ইউরিক অ্যাসিড থেকে ব্যথার সমস্যা হলে অনেক কাজে দেবে।
শশার অপকারিতা
শশা হচ্ছে, একটি লো ক্যালরি বা খুব কম ক্যালরিযুক্ত একটি খাবার। শশার মধ্যে পানির পরিমাণ অনেক। ১০০ গ্রাম শসাতে পানির পরিমাণ ৯৪.৯ গ্রাম এবং ক্যালরি ২২ কিলো ক্যালরি এছাড়াও শশা একটি ভাল মানের এন্টিঅক্সিডেন্ট জাতীয় খাবার।
শশাতে কিছু পরিমাণ ভিটামিন, মিনারেলস এবং আঁশ থাকে। কিন্তু ভাল একটি খাবার শশাও মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর হয়ে যায় যখন কেউ মনে করে শুধুমাত্র শশা খেয়ে ওজন কমানো যায়। শশাকে ওজন কমানোর একমাত্র ওষুধ মনে করে। ডায়টেশিয়ানরা ডয়েট চার্টে শসাটা রাখেন। কিন্তু শুধু শশা খেয়ে আমরা ওজন কমাতে বলি না। কিন্তু অনেকেই ওজন কমানোর জন্য শশাকে ওষুধ হিসবে ধরে নিয়ে সারাদিন ধরে শশা খেতে থাকে। যখনই ক্ষুধা লাগে শশা খেতে শুরু করে।
যেহেতু শশা একটি কম ক্যালরিযুক্ত খাবার তাই শশা কেন অন্য যেকোন কম ক্যালরি যুক্ত খাবার একনাগারে খেতে থাকলে ওজন কমে যাবে। কিন্তু সেই সঙ্গে আপনার শরীরে দেখা দেবে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদনের ঘাটতি। অন্য খাবার কম খেয়ে সারাদিন বা অতিরিক্ত পরিমানে শশা খেতে থাকলে বা ক্ষুধা লাগলেই শশা খেলে বদহজম, গ্যাসের সমস্যাসহ পেট ফাঁপা, পেট ব্যাথা, বমি বমি ভাব ইত্যাদি দেখা দেয়।
প্রায় এক মাস ধরে ওজন কমাতে সারাক্ষণ শশা খেলেই ঘটবে নানা বিপত্তি। শরীরে পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাবে শরীর ভীষণ দুর্বল হয়ে যাবে। কাজ করার শক্তি পাবেন না। রক্ত কমে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। এছাড়াও রক্তে গ্লুকোজের অভাবে মাথা ঘুরে পরে যাওয়ার মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাও ঘটতে পারে।
শেষ কথাঃ
ইতিমধ্যে গাজরের চমৎকার স্বাস্থ্য ও পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আলোচনাটা পড়ে ফেলেছেন নিশ্চয়। যদি আপনি গাজর খেতে খুব বেশি পছন্দ করে থাকেন, তবে আর্টিকেলে বর্ণিত পদ্ধতি মেনে গাজর খান কোন সমস্যা হবে না ইনশাআল্লাহ। এক কথায় বলা চলে গাজর হচ্ছে পুষ্টির আধার। নিয়ম মেনে গাজর খান, ভালো থাকুন, সুস্থ্য থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url