কিভাবে ইউটিিউব চ্যানেল খুলে টাকা ইনকাম করা যায় জেনে নিন

আপনি কি বেকার ? বেকারত্ব থেকে মুক্তি পেতে চান ? আপনার বেকারত্ব দূরিকরণের মাধ্যম হতে পারে ইউটিউব। ইউটিউব এখন শুধু বিনোদনের মাধ্যমই নয়, এটি এখন অনেকেরই কাছে আয়ের অন্যতম মাধ্যম।
কিভাবে ইউটিিউব চ্যানেল খুলে টাকা ইনকাম করা যায় জেনে নিন

এখানে আরো জানতে পারবেন- জনপ্রিয় এই ভিডিও প্ল্যাটফর্ম থেকে ব্লগাররা কিভাবে লাখ লাখ মার্কিন ডলার রোজগার করছেন। আপনিও চাইলে ঘরে বসেই মাসে লাখ টাকা ইনকাম করতে পারেন। তাহলে কিভাবে ইউটিিউব চ্যানেল খুলে টাকা ইনকাম করা যায় জেনে নিন।

ভূমিকা

বিশ্বব্যাপী ২০০ কোটির বেশি মানুষ নিয়মিত ইউটিউবে ভিডিও দেখে থাকেন। প্রত্যেক মিনিটে ইউটিউব ফ্ল্যাটফর্মে প্রায় ৫০০ ঘন্টা ভিডিও স্ট্রিম হয়। অনেকের কাছে এটি বিনোদনের মাধ্যম হলেও, অনেকের কাছে এটি স্বাবলম্বী হওয়ার চাবিকাঠিও বটে। 

বেকারত্ব থেকে মুক্তি পেয়েছেন অনেক ছেলেমেয়ে। চাইলে আপনিও শুরু করতে পারেন। আর দেরি না করে কিভাবে ইউটিিউব চ্যানেল খুলে টাকা ইনকাম করা যায় জেনে নিন। আর নিজের ক্যারিয়ার শুরু করে দিন ইউটিউব ফ্ল্যাটফর্মে যুক্ত হয়ে।

সূচীপত্রঃ

ইউটিউব কি
চ্যানেল খোলার স্টেপ বাই স্টেপ নিয়ম
ইউটিউব থেকে আয় করার ৫টি উপায়
ইউটিউব থেকে মাসে কত টাকা ইনকাম করা যায়
ভিডিও না বানিয়ে ইউটিউব থেকে ইনকাম
ইউটিউব চ্যানেল খুলতে কত টাকা লাগবে
ইউটিউব চ্যানেল খুলে স্বাভাবিক ভাবে কত দিন পর ইনকাম শুরু হয়
ইউটিউব থেকে টাকা তোলার উপায়
ইউটিউব থেকে আয় কি হালাল
ইউটিউবে কত ভিউতে কত টাকা

ইউটিউব কি

বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম হলো ইউটিউব। প্রতিদিন এখানে লাখ লাখ ভিডিও আপলোড করা হয়। ইউটিউবে পৃথিবীর যে কোন প্রান্তের মানুষ বা প্রতিষ্ঠান নিজেদের ভিডিও আপলোড করতে পারে এবং যে কোন মানুষ সেটি বিনামূল্যে দেখতে পারে। ইউটিউব থেকে টাকা আয় করার জন্য একটি ইউটিউব চ্যানেল থাকতে হবে। বিশ্বের যে কোন প্রান্তের যে কোন মানুষ বিনামূল্য এটি খুলতে পারে।

চ্যানেল খোলার স্টেপ বাই স্টেপ নিয়ম

ইউটিউব হচ্ছে গুগল এর একটি প্রতিষ্ঠান। তাই ইউটিউব চ্যানেল খোলার জন্য আপনার অবশ্যই একটি জিমেইল অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে। যদি আপনার জিমেইল অ্যাকাউন্ট না থাকে প্রথম কাজ হবে একটি জিমেইল অ্যাকাউন্ট খোলা। তারপরেই আপনি ইউটিউব চ্যানেল খোলার কাজ শুরু করতে পারবেন।

আপনি চাইলে দুই ধরণের ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করতে পারেন। (১) ব্যক্তিগত ইউটিউব চ্যানেল (২) ব্র্যান্ড হিসেবে ইউটিউব চ্যানেল। ব্যক্তিগত চ্যানেল তৈরি করতে সাধাররণ জিমেইল অ্যাকাউন্ট পাসওয়ার্ড দিয়ে ইউটিউব্ ওয়েবসাইটে লগইন করে ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করা যায়।

লগইন এর পর প্রোফাইল আইকনে ক্লিক করে “Create a Channel” অপশনে ক্লিক করুন। সাধারণত আপনার জিমেইল অ্যাকাউন্টে যে নাম থাকে সে নামে চ্যানেল খোলা হয়ে থাকে। তবে আপনি চাইলে ভিন্ন নামে চ্যানেল খুলতে পারেন। সরাসরি আপনার জিমেইল অ্যাকাউন্ট এর তথ্য দিয়ে এভাবে ব্যক্তিগত ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করতে পারবেন।

বর্তমানে যেহেতু ইউটিউব চ্যানেল এর মাধ্যমে আয় করা হয়, তাই দীর্ঘমেয়াদী ভালো ফলাফলের জন্য ব্র্যান্ড ইউটিউব চ্যানেল খোলা উচিত।

ইউটিউব চ্যানেল খোলার প্রথম স্টেপ

ইউটিউব চ্যানেল খোলার জন্য প্রথম আপনাকে ইউটিউব এর ওয়েবসাইট এ যেতে হবে। আগে থেকেই আপনার জিমেইল অ্যাকাউন্টে লগইন করা থাকলে আপনি সরাসরি ইউটিউবে লগইন করতে পারবেন। যদি জিমেইল অ্যাকাউন্ট লগইন করা না থাকে, আপনি ইউটিউব ওয়েবসাইট এ সাইন ইন অপশনে যাবেন। অতপর আপনার জিমেইল এর আইডি পাসওয়ার্ড দিয়ে ইউটিউব এ লগইন করবেন।

ইউটিউব চ্যানেল খোলার দ্বিতীয় স্টেপ

ইউটিউব এ লগইন করার পর ইউটিউব এর ড্যাস বোর্ড আপনার সামনে চলে আসবে। যার ডান পাশে প্রোফাইল আইকনে ক্লিক করতে হবে। তারপর আপনার সামনে কতগুলো অপশন আসবে। তখন‍ “Setting” অপশনে এ ক্লিক করার মাধ্যমে আপনি ইউটিউব চ্যানেল খোলার কাজ শুরু করবেন। এখন আপনি নতুন একটা পেজ পাবেন। যাতে “Your Channel” অপশন দেখতে পাবেন। ঠিক তার নিচে তিনটি অপশন দেখতে পাবেন। আর তা হলো-

Channel Status and Features
Create a New Channel
View Advanced Settings

তখন “Create a New Channel” অপশনে ক্লিক করলে “Create Your Channel Name” অপশন আসবে। সেখানে আপনার চ্যানেলের নাম দিয়ে দিবেন। নাম দেয়ার পরে ক্লিক করলেই আপনার ইউটিউব চ্যানেল তৈরি হয়ে যাবে। আপনি নাম হিসেবে আপনার নামে অথবা আপনি যে নাম দিয়ে ইউটিউব চ্যানেল খুলতে চান তা দিতে পারেন। এটা মূলত ব্র্যান্ড এর নামে হয়ে থাকে।

ইউটিউব চ্যানেল খোলার তৃতীয় স্টেপ

আপনার ইউটিউব চ্যানেল এখন তৈরি হয়ে গেল। আপনি এখন চ্যানেলকে আপনার মতো করে সাজাতে পারেন। আর এটাকে চ্যানেল কাস্টমাইজ বলা হয়। আপনি এখন প্রোফাইল আইকনে ক্লিক করুন। তারপর “Your Channel” অপশনে ক্লিক করুন। তখন উপরে ডান দিকে “CUSTOMIZE CHANNEL” অপশনটি পাবেন। এখানে ক্লিক করলে ইউটিউব এর বর্তমান থিম অনুযায়ী তিনটি অপশন থাকবে। আর তা হলো Layout, Branding, Basic Info

Basic Info তে ক্লিক করে আপনার চ্যানেল সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে পারবেন, আপনার সাথে যোগাযোগের মেইল, ভাষা, লিংক শেয়ার করতে পারবেন। আপনি যদি “Branding” অপশনে ক্লিক করেন তখন তিনটি অপশন তথা প্রোফাইল পিকচার, ব্যানার ইমেজ ও ভিডিও ওয়াটারমার্ক অপশন দেখতে পাবেন। আপনি নিজের মতো করে এগুলো যোগ করে নিতে পারবেন।

ইউটিউব চ্যানেল খোলার পর আপনাকে ভিডিও আপলোড করতে হবে। এজন্য আপনাকে ভালো মানের ও সৃজনশীল উপায়ে ভিডিও তৈরি করতে হবে। আপনার ভিডিও যেন ভিউয়ার এর চাহিদা অনুযায়ী হয় এবং ইউনিক হয়। যাতে সকল ধরণের কপিরাইট ইস্যু থেকে মুক্ত থাকে। কেননা ইউটিউবে নকল ভিডিও আপলোড দিলে আপনার চ্যানেল বাতিল হয়ে যাবে।

ইউটিউব থেকে আয় করার ৫টি উপায়

ভিডিওতে ডেসক্রিপশন অ্যাফিলিয়েট লিংকঃ অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হচ্ছে অন্য কারো পণ্যের প্রচার করা। এতে সেই প্রডাক্ট যত বেশি বিক্রি হবে, আপনার তত বেশি উপার্জন হবে। তাই আপনার ভিডিও ডেসক্রিপশন বক্সে এমন কিছু অনুমোদিত অ্যাফিলিয়েট লিংক যুক্ত করুন, যাতে আয় বাড়ে।

স্পনসর্ড ইউটিউব ভিডিও তৈরি করুনঃ ইউটিউবারদের অর্থ উপার্জনের সবথেকে জনপ্রিয় উপায় হল স্পনসর্ড ভিডিও তৈরি করা। বিভিন্ন কোম্পানির জন্য অর্থের বিনিময়ে ভিডিও তৈরি করে নিজের চ্যানেল আপলোড করতে পারেন। এতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকেও টাকা পাবেন, আবার ইউটিউব ভিউ থেকেও টাকা আয় করতে পারবেন।

প্রডাক্ট বিক্রিঃ ইউটিউব থেকে ভালো আয়-রোজগারের আরেকটি উপায় হলো প্রডাক্ট বিক্রি। আপনার চ্যানেলে বিভিন্ন সামগ্রী বা ব্র্যান্ডিং সম্পর্কিত পণ্য বিক্রির মাধ্যমেও অর্থ উপার্জন করতে পারেন। এছাড়াও আপনি লাইভ ইভেন্টেরও আয়োজন করতে পারেন। সেখানে পণ্য বিক্রি করার পাশাপাশি টিকিটের জন্যও চার্জ করতে পারেন।

মানসম্মত কন্টেন্ট তৈরিঃ কন্টেন্ট ভালো হলে, দর্শক দেখবেই। আর যত বেশি ভিউ হবে, তত বেশি টাকা। তাই ছোট ভিডিও একবারেই তৈরি করবেন না। অন্তত ৩ মিনিট বা তার বেশি সময়ের ভিডিও তৈরি করুন। আর সেই ভিডিওর প্রথম ১ মিনিট এতটাই এনগেজিং এবং আকর্ষণীয় করুন যে, দর্শক যেন আপনার তৈরি করা ওই ভিডিও ছেড়ে না চলে যান। 

তাতে করে ধীরে ধীরে আপনার ভিউয়ার সংখ্যা বাড়তে থাকবেই। যত ভিউয়ার হবে, ততই ভিডিওর ভিউ বাড়বে, বাড়বে লাইক এবং কমেন্টও। আর এই সব কিছু মিলিয়েই আপনি ইউটিউব থেকে ভাল টাকাও আয় করতে পারবেন।

ভিডিও বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আয়ঃ ইউটিউবার হিসেবে আপনি বিভিন্ন পরিষেবার অ্যাক্সেস পাবেন, যা আপনার ভিডিওগুলো থেকে অর্থ উপার্জন করার সুযোগ দেবে। অংশীদার হিসেবে অর্থ উপার্জনের সবচেয়ে সাধারণ উপায়গুলোর মধ্যে একটি হল ভিডিও বিজ্ঞাপন। যখন কোনও দর্শক আপনার একটি ভিডিও দেখে 

এবং সেই ভিডিও চলাকালীন তাকে কোনও একটি পণ্যের বিজ্ঞাপন দেখানো হয়, সেখান থেকে একটা কমিশন চলে যায় আপনার কাছে। এই ভাবে আপনি যতক্ষণ সেই দর্শককে আপনার ভিডিওতে মগ্ন রাখবেন, ততই সে বেশি করে বিজ্ঞাপনও দেখতে পাবে। তাতে আপনার আয় বাড়তে থাকবে।

ইউটিউব থেকে মাসে কত টাকা ইনকাম করা যায়

ইউটিউব থেকে প্রতি মাসে কত টাকা আয় করা যায় এটা অনেকেরই কমন একটি প্রশ্ন। আসলে প্রাথমিক অবস্থায় ইউটিউব থেকে আপনি একটি টাকা ও আয় করতে পারবেন না। তবে আপনি যদি সঠিকভাবে কাজ করেন খুবই শীঘ্রই ইউটিউব থেকে আয় করতে পারবেন। আপনি যদি দুই মাস বা তার কিছু সময় বেশি সঠিকভাবে পরিশ্রম করতে পারেন তাহলে আপনি ইউটিউব থেকে আয় করতে পারবেন।

আর ইউটিউব থেকে আপনারা সর্বনিম্ন এক মাসে ১০ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন। আপনি যদি প্রফেশনাল একজন ইউটিউবার হয়ে ্উঠেন সে ক্ষেত্রে আপনি দেড় লক্ষ টাকার বেশি আয় করতে পারবেন প্রতিমাসে। এ থেকে আমরা বুঝতেই পারছি ইউটিউব থেকে কেমন আয় করা সম্ভব। তবে অবশ্যই ইউটিউব থেকে প্রথম আয় করার জন্য আপনাকে পরিশ্রম করতে হবে।

ভিডিও না বানিয়ে ইউটিউব থেকে ইনকাম

উল্লেখ্য যে ইউটিউব নিজেই একটি বড় উৎস হাজারো কপিরাইট ফ্রি ভিডিও সংগ্রহ করার জন্য। আপনি ইউটিউব থেকেই কপিরাইট ফ্রি ভিডিও সংগ্রহ করে সেগুলোর হালকা কিছু কাস্টমাইজ করে নতুন করে আপলোড করতে পারেন এক্ষেত্রে আপনাকে কোন রেস্ট্রিকশন দেওয়া হবে না বা কপিরাইট ক্লেইন করা হবে না। তবে এই কাজটি করার জন্য আপনাকে যথেষ্ট SEO জানতে হবে।

ভিডিও ডাউনলোড করার পর কপিরাইট ফ্রি মিউজিক সংযোজন করতে হয়। এই কপিরাইট ফ্রি মিউজিক আপনি পাবেন আপনার ইউটিউবে বেল আইকন বাটনটির পাশে আপনার জিমেইল আইডির যে লোগো রয়েছে সেখানে ক্লিক করলে আপনি ইউটিউব স্টুডিও বলে একটি অপশন পাবেন সেখানে ক্লিক করুন। 

একটু নিচে স্ক্রল করলে দেখতে পাবেন অডিও লাইব্রেরী। অডিও লাইব্রেরীতে অনেক রকমের অডিও পাবেন সেখান থেকে আপনি আপনার পছন্দমতো একটি অডিও ডাউনলোড করে নিবেন । এরপর আপনাকে ভিডিও ডাউনলোড করার জন্য একটি সফটওয়্যার ডাউনলোড করতে হবে। আপনি আপনার পছন্দমতো একটি সফটওয়্যার বেছে নিন ভিডিও এডিটিং এর জন্য। 

এরপর আপনি যে ভিডিও আপলোড করার জন্য ডাউনলোড করেছেন অর্থ্যাৎ কপিরাইট ফ্রি যে ভিডিও ডাউনলোড করেছেন সে ভিডিওটি সফটওয়্যারে আপলোড করুন । এরপর আপনি যে অডিও ডাউনলোড করেছে সে অডিও আপলোড করুন। এরপর আপনাকে সফটওয়্যারের সাহায্যে ভিডিও এর সাথে অডিওটিকে সংযুক্ত করে নতুন একটি রুপ দিতে হবে ভিডিও এর।

আশা করি আপনারা সফটওয়্যারের সাহায্যে ভিডিওটি এডিট করতে পারবেন। এরপর আপনারা এই ভিডিওটি ইউটিউবে আপলোড করলে ভিউ এর উপর নির্ভর করে আপনারা টাকা আয় করতে পারবেন। তবে পাঠক এই পদ্ধতিটিতে আপনাকে নির্ভরশীল হওয়া যাবেনা কেননা এটি যেকোনো সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে কপি রাইট ইস্যু এর কারণে।

ইউটিউব চ্যানেল খুলতে কত টাকা লাগবে

বর্তমানে যারা নতুন ইউটিউব চ্যানেল খুলতে চান তারা অনেকেরই মাথায় বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন ঘুরপাক খায়, যেমন ইউটিউব চ্যানেল খুলতে কত টাকা লাগবে, কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন পড়বে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অনেক চিন্তিত থাকেন। আসলে যারা নতুন ইউটিউব ব্যবহার করতে চাচ্ছেন তাদেরকে উদ্দেশ্যে বলতে চাই।

ইউটিউব চ্যানেল খুলতে কোন টাকার প্রয়োজন হয় না শুধু একটি মাত্র জিমেইল এর প্রয়োজন হয়। এই জিমেইল একাউন্ট দিয়ে আপনি যে কোনো সময় একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলতে পারবেন।

ইউটিউব চ্যানেল খুলে স্বাভাবিক ভাবে কত দিন পর ইনকাম শুরু হয়

এটা পুরোপুরি আপনার কনটেন্ট এর উপরে নির্ভর করে আপনি যদি ভাল মানের কনটেন্ট আপলোড দিতে পারেন তাহলে আপনি ৫ থেকে ৬ মাসের মধ্যে আপনার ইউটিউব থেকে ইনকাম শুরু হয়ে যেতে পারে এবং আপনার কনটেন্ট এর কোয়ালিটি যদি খুব ভালো না হয় তাহলে ১.৫ থেকে ২ বছর বা ৩ বছর সময় লেগে যেতে পারে আপনার ইউটিউব থেকে ইনকাম আসতে। 

আমরা মনে করি ইউটিউব থেকে আহামরি টাকা পয়সা ইনকাম করা যায় আসলে ব্যাপারটা তেমন না আপনার যদি এক লক্ষ সাবস্ক্রাইবার থাকে এবং আপনার প্রতিটা ভিডিও তে যদি ১০ থেকে ১৫ হাজার, ২০ হাজার ভিউ আসে তাহলে আপনি প্রতি মাসে ১০০ ডলার ইনকাম করতে পারবেন কম তো বেশী হবেনা 

এখানে কিছু কিছু ইউটিউবার আছে যারা বিভিন্ন ধরনের গেজেট. মোবাইল. ল্যাপটপ, এসব টেকনিক্যাল বিষয়গুলো নিয়ে ভিডিও তৈরি করে তারা অনেক কোম্পানি থেকেই স্পনসর পাই তারা একটু বেশি ইনকাম করতে পারে এবং যারা বিভিন্ন ধরনের ফানি ভিডিও তৈরি করে রোস্টার ভিডিও তৈরি করে ফুড ব্লগিং করে 

এরা ভালো মানের ইনকাম করে ইউটিউব থেকে কিন্তু তাদের মিলিয়ন মিলিয়ন ভিউ আসে এজন্য তারা ইনকাম বেশি করতে পারে আপনার কনটেন্ট এর মান যদি ভাল হয় তাহলে আপনিও ভালো মানের ইনকাম করতে পারবেন ।

ইউটিউব থেকে টাকা তোলার উপায়

ইউটিউব থেকে টাকা তোলার উপায় খুবই সহজ। ইউটিউব ভিডিও তৈরি করে সেখান থেকে অর্জিত টাকা আপনি সরাসরি আনতে পারবেন আপনার ব্যাংক একাউন্টে। আপনার চ্যানেল যদি মনিটাইজড করা থাকে তাহলে ভিডিওতে এড দেখার টাকা জমা হবে গুগল এডসেন্স একাউন্টে এবং এডসেন্স এর সাথে ব্যাংক একাউন্ট যুক্ত করা থাকলে প্রতি মাসের টাকা পরের মাসের ২০ থেকে ৩০ তারিখের মধ্যে সরাসরি ব্যাংক থেকে তুলতে পারবেন।

ইউটিউব থেকে আয় কি হালাল

ইউটিউবে মুসলিম ধর্ম অনুযায়ী টাকা কামানো হারাম, কারন ইউটিউবে ভিডিও এর মাঝে যে এড দেয় তাতে প্রায়ই পর্দাবিহীন মহিলাদের দেখা যায়। তবে হালাল উপার্জন ও করা যায়। একজন ইউটিউবার যদি বিভিন্ন কোম্পানির হালাল পন্যের এড নিজেই ভিডিওতে দেয়, তবে তা হারাম হবে না। 

আর এডসেন্স অন না করলে আপনার ভিডিওর মাধ্যমে তাদেরও ( ইহুদি) কোনো ইনকাম হবে না। আর তাদের বানানো বলেই যে আপনি ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করতে পারবেন না, এটা ভুল কথা। কারণ তারা তো শুধু হারাম কাজের উদ্দেশ্যেই ইউটিউব বানায় নি।

ইউটিউবে কত ভিউতে কত টাকা

সাধারণত আপনার ইউটিউব চ্যানেলের ভিডওর ভিউ ১০০০ হলেই আয় শুরু হয়। কিন্তু ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিওর ভিউ থেকে আয় শুরু করতে আপনার চ্যানেলের অবশ্যই ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রামের সঙ্গে যুক্ত হতে হবে। তবে ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিও থেকে ভালো টাকা আয় করতে হলে কম পক্ষে ১০০,০০০ ভিউ-এর প্রয়োজন।

তবে ভিউ ছাড়াও ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে আয় করা সম্ভব। তার জন্য আপনি ভিডিয়োর লিঙ্ক থেকে অন্য জিনিস বিক্রি করতে পারেন। ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিয়োর ভিউ থেকে আপনার আয় মূলত নির্ভর করে আপনার ভিডিয়োর কনটেন্টের উপর। বস্তুত ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিয়োর ১০০০ ভিউ-এর উপর ১ ডলার বা ৮২ টাকা থেকে ২৫ ডলার বা ২০৭০ টাকা আয় হওয়া সম্ভব। 

তথ্য অনুযায়ী ফাইন্যান্স এবং টেক সম্পর্কিত ভিডিয়ো নির্মাতারা ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিয়োর ভিউ-তে অন্যদের থেকে বেশি টাকা আয় করে থাকেন। মূলত এই বিষয় অ্যাডের সুযোগ থাকায় আয় বেশি হয়। এই ভিডিয়ো-তে অ্যাড দিয়ে ইউটিউবেরও লাভ হয়।

উপসংহারঃ

সর্বোপরি মনে রাখতে হবে যে, ইউটিউব এখন একটি প্রতিষ্ঠিত মাধ্যম। এতে রয়েছে অনেক প্রতিষ্ঠিত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর যাদের অবস্থান অনেকটাই শক্ত। তাই নতুন হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠতে চাইলে অবশ্যই চাই কঠোর পরিশ্রম। একটি চ্যানেল খোলার আগে অবশ্যই ভাবতে হবে সে ধরণের চ্যানেল আপনি ভাল ভাবে চালাতে পারবেন কিনা। একই সাথে থাকা চাই ভিডিওগ্রাফি, ভিডিও এডিটিং এসব সম্পর্কে প্রাথমিক জ্ঞান ও দক্ষতা।

পরিশেষে এটাই বলতে চাই আপনার যদি লক্ষ্য থাকে এই প্লাটফর্ম ভালো একটা কিছু করার। সেজন্য অবশ্যই যেকোন একটা বিষয়ে পটু হওয়া অত্যাবশকীয়। ইউটিউব আপনাকে টাকা আয়ের অনেক সু্যোগ করে দিলেও ওই পন্থাগুলো দিন দিন অনেক কঠোর করছে । ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে অনেকে পেশা হিসেবেও নিয়ে নিচ্ছে বিষয়টিকে। আর দেরি না করে আপনিও শুরু করতে পারেন


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪