স্বপ্নপুরী পিকনিক স্পট - উত্তবঙ্গের সবচেয়ে বড় পিকনিক স্পট সম্পর্কে জানুন

বার্ষিক পিকনিকের জন্য পিকনিক স্পট খুজে পাচ্ছেন না ? এবছর কোথায় ফ্যামিলি নিয়ে ঘুরতে যাবেন জায়গা ঠিক করতে পারছেন না ? তাহলে দেরি না করে নিচের লেখাগুলো পড়ে জেনে নিন স্বপ্নপুরী পিকনিক স্পটের যত খবরা খরব, আর ঘুরে আসুন সেখান থেকে।
স্বপ্নপুরী পিকনিক স্পট - উত্তবঙ্গের সবচেয়ে বড় পিকনিক স্পট সম্পর্কে জানুন

এখানে যত রকম বিনোদনের ব্যবস্থা আছে তা সবই জানতে পারবেন এই আর্টিকেল পড়ার মাধ্যমে। আসুন স্বপ্নপুরী পিকনিক স্পট - উত্তবঙ্গের সবচেয়ে বড় পিকনিক স্পট সম্পর্কে জানুন।

ভূমিকা

স্বপ্নপুরী পিকনিক স্পট বা বিনোদন কেন্দ্রটি দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার আফতাবগঞ্জে প্রায় ৪০০ একর জমির উপর গড়ে তোলা হয়েছে। সড়ক পথে দিনাজপুর থেকে স্বপ্নপুরী দূরত্ব প্রায় ৫২ কিলোমিটার। সমগ্র বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রচুর দর্শনার্থী চিত্তবিনোদনের জন্য স্বপ্নপুরীতে বেড়াতে আসেন। 

এছাড়া এখানে বিভিন্ন চলচিত্র নির্মিত হওয়ায় স্বপ্নপুরী সহজেই মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। স্বপ্নপুরী পিকনিক স্পটে আসলে একে একে দেখতে পাবেন কৃত্রিম লেক, পাহাড়, উদ্যান, বৈচিত্র্যপূর্ণ গাছগাছালি এবং ফুলের বাগান, বিভিন্ন প্রতিকৃতি, শিশুপার্ক, চিড়িয়াখানা, কৃত্রিম পশুপাখি, ফুলবাগিচা, কৃত্রিম ঝর্ণা, 

ঘোড়ার রথ, শালবাগান, হংসরাজ সাম্পান, খেলামঞ্চ, নামাজ জায়গা, কুঞ্জ, বিভিন্ন ভাস্কর্য, মাটির কুটির, ডাকবাংলো, বাজার এবং মাটির উপর নির্মিত বাংলাদেশের মানচিত্র। এছাড়াও প্রাকৃতিক পরিবেশের মোহনীয় সৌন্দর্য্য তো আছেই। তাই তো স্বপ্নপুরী পিকনিক স্পট - উত্তবঙ্গের সবচেয়ে বড় পিকনিক স্পট সম্পর্কে জানুন।

সূচীপত্রঃ

স্বপ্নপুরী পিকনিক স্পট
স্বপ্নপুরী প্রবেশ মূল্য কত
স্বপ্নপুরী আয়তন কত
স্বপ্নপুরী আবাসিক হোটেল ভাড়া কত
স্বপ্নপুরীর যোগাযোগ ব্যবস্থা
দিনাজপুরে আরো যা যা দেখার আছে

স্বপ্নপুরী পিকনিক স্পট

স্বপ্নপুরী পিকনিক স্পট এর অবস্থান দিনাজপুর জেলা শহর থেকে সড়ক পথে ৫২ কিলোমিটার দক্ষিন-পূর্বে নবাবগঞ্জ উপজেলার খালিশপুর মৌজায়। ফুলবাড়ি উপজেলা শহর থেকে স্বপ্নপুরী এর দূরত্ব ১২ কিলোমিটার। দিনাজপুর থেকে ফুলবাড়ি আফতাবগঞ্জ হাট হয়ে সম্পূর্ণ পাকা রাস্তা দিয়ে এখানে পৌঁছনো যায়।

বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অসংখ্য দর্শনার্থী বিনোদনের জন্য বা পিকনিক করার জন্য এখানে ছুটে আসেন। বিশেষ করে শীত মৌসুমে লোক সমাগম ঘটে বেশি। বর্তমানে চলচ্চিত্র স্পট হিসেবেও পরিচিতি লাভ করেছে। ইতোমধ্যে এখানে কয়েকটি চলচিত্র চিত্রায়িত হয়েছে। নয়ন জুড়ানো নিরিবিলি এ স্বপ্নপুরীতে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন পর্যটকরা এখানে আসে বিনোদনের জন্য।

স্বপ্নপুরীতে এসে পৌঁছলে স্বাগত জানাবে স্বপ্নপুরীর গেটে দন্ডায়মান দুটি বিশাল আকৃতির পরীর প্রতিকৃতি। এ দুটি পরী তাদের দু’ডানা প্রসারিত করে ও একহাত উঁচু করে গেটের দু’পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছে। গেট পেরিয়ে পথের দু’ধারে বিভিন্ন গাছের সমারোহ। তারপর চোখে পড়বে পথের দু’ধারে সারি সারি দেবদারু গাছ। দেবদারু গাছের দু’পাশে নারিকেল গাছের সারি।

স্বপ্নপুরী প্রবেশ মূল্য কত

স্বপ্নপুরীতে নিরাপত্তা নিয়ে ভাবার কারণ নেই, এখানে কতৃপক্ষের নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। স্বপ্নপুরীতে প্রবশের জন্য রয়েছে এন্টি ফ্রী জন প্রতি ১০০ টাকা করে। এবং বাইক, গাড়ি, বাস পার্কিং করার জন্য রয়েছে নিজস্ব সুবিশাল নিরাপত্তা বিশিষ্ট পার্কিং যেখানে বাইক প্রতি ২০ টাকা, গাড়ি -মাইক্রো বাস ৫০ টাকা এবং বাসের জন্য ১০০ টাকা পার্কিং চার্জ।

এবং স্বপ্নপুরী তে অবস্থিত বিনোদন কেন্দ্র গুলো এবং রাইড গুলোর জন্য রয়েছে আলাদা এন্ট্রি ফি যা যথেষ্ট সন্তোষ জনক ৩০ টাকা শুরু করে ৫০ টাকা পর্যন্ত। স্বপ্নপুরী পিকনিক স্পটে প্রবেশ মূল্য বর্তমানে ১০০ টাকা।

বড় গাড়ী – ৫০০০ টাকা
পিকআপ / নছিমন – ২০০০ টাকা
মাইক্রোবাস অথবা হায়েস গাড়ী – ১৫০০ টাকা
নোয়া অথবা মাহিন্দ্র – ১০০০ টাকা
প্রাইভেট কার, সিএনজি কিংবা জীপ – ৪০০ টাকা
অটোরিক্সা – ৮০০ টাকা
মটর বাইক – ২০ টাকা

স্বপ্নপুরী আয়তন কত

উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় তথা বাংলাদেশের অন্যতম বড় বিনোদনকেন্দ্র আমাদের স্বপ্নপূরী। স্বপ্ন নয়, অথচ স্বপ্নের মতো সুন্দর নিরিবিলি এক মোহন মায়াবী স্বপ্নময় ভূবন স্বপ্নপুরী। যা দর্শনার্থী, পর্যটক, নাট্যকার, চলচ্চিত্রকারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সমর্থ হয়েছে।

এ স্বপ্নপুরী দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলাধীন আফতাবগঞ্জের খালিশপুর মৌজায় প্রায় ৪০০ একর জমির ওপর বিস্তৃত এই দৃষ্টিনন্দন পিকনিক বা বিনোদন স্পট। ১৯৮৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি জনপ্রিয় বংশীবাদক মো. দেলোয়ার হোসেন মাত্র ৭ একর ৩৮ শতাংশ জমি নিয়ে ব্যক্তিগত উদ্যোগে স্বপ্নপুরীর যাত্রা শুরু করেন। বর্তমানে এর আয়তন ৬০০ একর এর মত।

স্বপ্নপুরী আবাসিক হোটেল ভাড়া কত

স্বপ্নপুরীর বেশ কিছু আবাসিক হোটেলের নাম এবং তার ভাড়া সম্পর্কে প্রকাশ করছি। এই তথ্য গুলো ভালোভাবে জেনে নিন। এবং এই হোটেল গুলোর কন্টাক্ট নাম্বার সহ আমরা প্রকাশ করছি। যার কারণে তাদের সাথে যোগাযোগ করে আপডেট ভাড়া সম্পর্কে জানতে পারবেন।

হোটেলের নামঃ স্বপ্নপুরী রেস্ট হাউস
ভাড়াঃ ২৫০০ টাকা থেকে ১০০০০ টাকা পর্যন্ত (প্রতি রাত)
যোগাযোগঃ 01712-134095
হোটেলের নামঃ হোটেল স্বপ্নপুরী রেসিডেন্ট
ভাড়াঃ ৩০০০ টাকা থেকে ১৬ হাজার টাকা পর্যন্ত (প্রতি রাত)
যোগাযোগঃ 01778-764148

এই সমস্ত হোটেল গুলো স্বপ্নপুরীর খুবই উন্নত এবং পরিচিত হোটেল। এখানে আপনারা আপনাদের নিজেদের মতন করে থাকতে পারবেন এতে কোন রকম অসুবিধা হবে না। সকল প্রকার সুবিধা পাওয়া যাবে বলে মনে করছে হোটেল গুলোতে।

স্বপ্নপুরীর যোগাযোগ ব্যবস্থা

ঢাকা থেকে দিনাজপুর যাতায়াত ব্যবস্থা রেলপথে একতা এক্সপ্রেস, দ্রুতযান এক্সপ্রেস, পঞ্চগড় এক্সপ্রেস এ পথে চলাচল করে। ভাড়া সাধারণত ৩৯০-১৩৯০ টাকা পর্যন্ত। ট্রেনে আসতে চাইলে ফুলবাড়ি ষ্টেশনে নামতে হবে। সেখান থেকে অটোতে চড়ে স্বপ্নপুরী যেতে হবে। 

অটো ভাড়া জনপ্রতি ২০/- টকা নিতে পারে। সড়কপথে নাবিল, হানিফ, এস আর ট্রাভেলস এ পথে চলাচল করে। কল্যাণপুর ও গাবতলী থেকে উঠতে হবে। আকাশপথে গেলে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে নামতে হবে। সেখান থেকে বাই রোডে যেতে হবে স্বপ্নপুরী।

দিনাজপুরে আরো যা যা দেখার আছে

দিনাজপুর সদর উপজেলায় রয়েছে দিনাজপুর রাজবাড়ি, ঘুঘুডাঙা জমিদার বাড়ি, রামসাগর, রামসাগর জাতীয় উদ্যান ও মন্দির, পঞ্চরত্ন মন্দির, হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। বিরল উপজেলায় আছে কড়ই বিল, ধর্মপুর শালবন, দীপশিখা মেটিস্কুল। বোচাগঞ্জ উপজেলায় আছে সাগুনী শালবন। 

কাহারোল উপজেলায় আছে কান্তজীর মন্দির, কান্তজীর মন্দির জাদুঘর, নয়াবাদ মসজিদ, কাঞ্চন বিল, প্রাচীন বিষ্ণু মন্দির। বীরগঞ্জ উপজেলায় আছে সিংড়া শালবন ও জাতীয় উদ্যান। ঘোড়াঘাট উপজেলায় আছে ঘোড়াঘাট দুর্গ, সুরা মসজিদ। বিরামপুর উপজেলায় আছে রখুনিকান্ত জমিদার বাড়ি, আশুরার বিল। নবাবগঞ্জ উপজেলায় আছে সোনাভানের ধাপ। 

খানসামা উপজেলায় আছে আওকরা মসজিদ, খানসামা জমিদার বাড়ি। পার্বতীপুর জেলায় আছে পার্বতীপুর জংশন।

উপসংহারঃ

নামের সঙ্গে মিল রেখে সৌন্দর্য পিপাসী ও ভ্রমণ বিলাসীদের জন্য গড়ে তোলা হয়েছে পর্যটন কেন্দ্র ও পিকনিক স্পট স্বপ্নপুরী। দর্শনার্থীদের স্বাগত জানাতে এর প্রবেশ দ্বারে, গেট দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতেই চোখে পড়ে মোহনীয় ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছে প্রস্তর নির্মিত ধবধবে সাদা ডানা মেলে দুটি সুবিশাল পরী স্বাগত জানাচ্ছে। 

কিছু দুর যেতেই ত্রিভু’জ আকারের পুকুর, ১টি বিশাল মানব মূর্তির যাদুঘর, ১টি প্রাণী চিড়িয়াখানা, ১টি যাদুঘর, রয়েছে কৃত্রিম পশুর দুনিয়া। পর্যটকদের জন্য নির্মাণ করা হয়েছ ৪০/৫০টি অভিজাত রেস্ট হাউজ। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা ব্যবস্থার পাশাপাশি প্রতিবছর স্বপ্নপুরীতে পরিবর্তন এবং নূতন বিষয় সংযোজন করা হয়েছে। 

সময় পেলে ঘুরে আসুন পরিবার নিয়ে বা বন্ধুদের সাথে। ভালো থাকুন, সৃস্থ্য থাকুন। আল্লাহ হাফেজ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪