ব্রণের দাগ দূর করার উপায় - তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণ দূর করার উপায়

আপনি কি ব্রণের সমস্যায় ভূগছেন ? আপনার মুখ থেকে ব্রণের কালো কালো দাগ দূর করতে পারছেন না ? আজকের পোস্টটি তাহলে আপনার জন্যই। তাহলে ব্রণের দাগ দূর করার উপায় - তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণ দূর করার উপায় জেনে নিন।
ব্রণের দাগ দূর করার উপায় - তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণ দূর করার উপায়

এখানে আরো যা জানতে পারবেন- তৈলাক্ত ত্বক থেকে ব্রণ দূর করার উপায় সম্পর্কে। ছেলেদের ও মেয়েদের ব্রণ এবং ব্রণের দাগ দূর করার সহজ উপায় জানতে পারবেন।

ভূমিকা

আজকের পোস্টটি যদি মনোযোগ দিয়ে পড়েন তাহলে ঘরোয়া পদ্ধতিতে কিভাবে মুখের ব্রণ দূর করবেন তা জানতে পারবেন। কত বয়স হলে ছেলে-মেয়েদের মুখে ব্রণ হয় এবং কোন কোন খাদ্যাভাসের কারণে ব্রণ হয় তাও জানতে পারবেন। 

শুধু খাদ্যাভাস বা নিয়ন্ত্রিত জীবন যাপনই ব্রণের জন্য দায়ী নয়, তৈলাক্ত ত্বকও ব্রণের জন্য সমান ভাবে দায়ী। তাই এই সব নিয়মিত সমস্যাগুলোর সমাধানের জন্য কিছু টিপস তুলে ধরার চেষ্টা করবো।

সূচীপত্র

মুখের ব্রণ দূর করার ঘরোয়া উপায়
তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণ দূর করার উপায়
নাকে ছোট ছোট ব্রণ দূর করার উপায়
৭ দিনে ব্রণ দূর করার উপায়
ছেলেদের মুখে ব্রণ দূর করার উপায়
মেয়েদের মুখে ব্রণ দুর করা উপায়

মুখের ব্রণ দূর করার ঘরোয়া উপায়

ছেলেদের এবং মেয়েদের বয়ঃসন্ধিকাল যখন থেকে শুরু হয় তখন থেকে ত্বকে ব্রণের সমস্যা দেখা দেয়। কাউরি যদি মুখে ব্রণ হয় তাহলে তার ত্বকের সৌন্দর্য অনেকখানি ম্লান হয়ে যায়। ব্রনের কারণে মুখে কালো দাগ সৃষ্টি হয়। যার ফলে চেহারা খুবই কুৎসিত দেখায়। তৈলাক্ত ত্বক মুলত ব্রণের জন্য দায়ী। ব্রন দুর করার জন্য নানান ধরনের প্রসাধন সামগ্রী বাজারে পাওয়া যায়। 

এই কেমিক্যাল যুক্ত (নকল) প্রসাধনী সামগ্রীগুলো ত্বকের জন্য মারাত্বক ক্ষতিকর। এগুলো ব্যবহারে ত্বকে কালচে দাগ পড়ে যায়, ত্বক পুড়ে যায় এবং ত্বকে ফুসকা পড়ে যায়। তাই আজকে আমি আপনাদের কিছু ঘরোয়া টিপস সম্পর্কে আলোচনা করবো যা নিয়মিতভাবে ব্যবহার করলে ত্বক থাকবে নরম, কোমল, তৈলাক্তহীন, ব্রন মুক্ত ও উজ্জল।

বেসনের ব্যবহারঃ ত্বক পরিস্কার করতে বেসনের ব্যবহার করে থাকেন বিউটিশিয়ানরা। আপনি যদি নিয়মিত বেসনের প্যাক ব্যবহার করেন তাহলে দেখবেন আপনার মুখের ব্রণ নির্মূল হয়ে যাবে। প্যাক তৈরির নিয়ম ও উপকরণ-
বেসন ২ টেবিল চামচ
কাঁচা হলুদ ১ চা চামচ
কাঁচা দুধ বা গোলাপ জল ২ টেবিল চুমচ
লেবুর রস ৩/৪ ফোটা

সমস্ত উপকরণগুলো একসাথে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন এবং আলতো করে মুখে লাগিয়ে রাখুন শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত। শুকিয়ে গেলে হালকা গরম পানি দিয়ে মাখ ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২/৩ বার করে ৩ মাস এই ভাবে ব্যবহার করুন দখেবেন মুখের ব্রণ দূর হয়ে যাবে।

শসা ও হলুদের ব্যবহারঃ প্রাকৃতিক ভেষজ হিসেবে শসা ও হলুদ ত্বকের ব্রণ দূর করতে, ফর্সা, কোমল ও মসৃণ করতে বেশ কার্যকরী উপাদান বলে মানা হয়। প্যাক তৈরির নিয়ম ও উপকরণ-
শসার রস ৩ টেবিল চামচ
হলুদ ১/২ চা-চামচ
লেবুর রস ১ টেবিল চামচ

এই উপকরণগুলো ভালোভাবে মিশিয়ে মিশ্রণটি তৈরি করুন। মুখে ভালোভাবে হাত দিয়ে লাগিয়ে রাখুন শুকানো পর্যন্ত। শুকিয়ে গেলে হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে উপরের নিয়মে সপ্তাহে ২/৩ বার করে ৩ মাস ব্যবহার করুন, দেখবেন মুখের ব্রণ দূর হয়ে গেছে।

অ্যালোভেরা জেল ও মধুর মিশ্রণঃ মুখের ত্বকের যত্নে ও মুখের ত্বককে ব্রণমুক্ত রাখতে অ্যালোভেরা প্রাচীনকাল থেকে ব্যবহার হয়ে আসছে। অ্যালোভেরাতে প্রচুর পরিমানে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার করণে এটি ত্বক থেকে মৃত কোষ বের করে দেয়। ফলে এটি ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না। তাই ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে ও ব্রনমুক্ত রাখতে অ্যালোভেরা জাদুর মত কাজ করে। মিশ্রণটি তৈরি করবেন যেভাবে-
অ্যালোভেরা জেল ২ টেবিল চামচ
মধু ২ টেবিল চামচ

মিশ্রণটি ভালোভাবে মিশিয়ে মুখে ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। শুকিয়ে গেলে হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই ভাবে ১ দিন পর পর ২/৩ মাস ব্যবহার করুন। দেখবেন ব্রণ দূর হয়ে গেছে।

টক দইঃ টক দই গোসলের আগে মুখে ভালোভাবে লাগিয়ে হালকা ম্যাসাজ করুন। এই ভাবে ৫/১০ মিনিট পর্যন্ত হালকা ম্যাসাজ করুন এবং কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। মিশ্রণ তৈরি করতে হলে-
টক দই ৩ টেবিল চামচ
লেবুর রস ১ চা-চামচ

ভালোভাবে মিশিয়ে টানা ২ মাস সপ্তাহে ২/৩ দিন ব্যবহার করুন। দেখবেন আপনার মুখের কালো কালো দাগ ও ছোপ ছোপ দাগ দূর হবে।

পাকা পেঁপের মিশ্রণঃ পাকা পেঁপে যেমন খেলে উপকার তেমনি ত্বকে ব্যবহার করলেও উপকার পাওয়া যায়। পাকা পেঁপে ত্বকে ব্রণের দাগ দূর করতে অনেকটা জাদুর মতো কাজ করে। এটি ত্বকের কালচে ভাব বা দাগ দূর করে ত্বককে উজ্জ্বল, কোমল ও মশৃণ করে তুলতে সাহায্য করে।

পেঁপে ১ টুকরা
মধু ১ চা-চামচ
মুলতানি মাটি ১ চা-চামচ
কমলার রস ২ চা-চামচ
লেবুর রস ১ চা-চামচ

সব কিছু এক সাথে মিশিয়ে প্যাকটি তৈরি করুন তারপর মুখে লাগিয়ে কমপক্ষে ১০/১৫ মিনিট লাগিয়ে রাখুন। মিশ্রণটি মুখে শুকিয়ে গেলে পরিস্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত ৩ বার এটি ব্যবহার করলে ১ মাসের মধ্যে আপনার মুখ ব্রণ মুক্ত হবে ইনশাআল্লাহ।

টমেটো ও মধুঃ টমেটোর মধ্যে এমন কিছু এনজাইম আছে যা আপনার ত্বকের ব্ল্যাকহেডস ও হোয়াইট হেড কে তুলে ফেলে ত্বককে ব্রনমুক্ত, সুন্দর,মশৃন ও উজ্জল করে তোলে। টমেটো ও মধু একসাথে ব্যবহার করলে অনেক গুন বেশি ফল পাওয়া যায়।

টমেটোর রস ৪ টেবিল চামচ
মধু ১ টেবিল চামচ
ব্রাউন সুগার ২ টেবিল চামচ

এই মিশ্রণটি ভালোভাবে মিশেয়ে মুখে লাগিয়ে রাখুন শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত। শুকিয়ে গেলে হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই ভাবে সপ্তাহে ২/৩ বাব করে ২/৩ মাস ব্যবহার করলে মুখের ব্রণ দূর হয়ে যাবে।

আলুর রসের ব্যবহারঃ আলুর রস ত্বকে ব্রণের কালচে ভাব দূর করতে অনেক উপকারী। এটি ত্বকের কালো দাগ দূর করে ত্বকের মশৃণতা, কোমলতা ও উজ্জ্বলতা জাগিয়ে তুলতে সহায়তা করে।
আলু ১ টা মধ্যম সাইজের
লেবুর রস ১ টেবিল চামচ

প্রথমে আলুটিকে ব্লান্ড করে আলুর রস বের করে নিন। আলুর রসের সাথে লেবুর রস মিশিয়ে নিন এবং মুখে লাগিয়ে রাখুন শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত। শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুুন। সপ্তাহে অন্তত ২/৩ বাব ব্যবহার করলে দেখবেন মুখ থেকে ব্রণ দূর হয়ে গেছে।

তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণ দূর করার উপায়

তৈলাক্ত ত্বকে খুব সহজে ধুলোবালি ময়লা আটকে যায় এবং অতিরিক্ত তেল মুখের লোমকূপগুলোকে বন্ধ করে দেয়। যার ফলে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হয়ে ব্রণ হওয়ার প্রকোপ অকাংশে বেড়ে যায়। কিছু ক্ষেত্রে ত্বক পরিষ্কার না রাখায় ব্রণ দেখা দিতে পারে। তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণ হলে তা সারিয়ে তোলা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই চলুন জেনে নেই তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণ হলে করণীয়-

তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে লেবু সবচেয়ে ভালো ঘরোয়া উপাদান, লেবুতে উপস্থিত সাইট্রিক অ্যাসিড তৈলাক্ত ত্বকের তেল নিয়ন্ত্রণ করার সাথে সাথে ত্বকের ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধ করে ত্বককে ব্রণ হওয়ার হাত থেকে রক্ষ করে। মধুর অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল উপাদান তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণ হতে বাধা প্রদান করে, ত্বকের ময়েশ্চারাইজারের স্তর ঠিক রাখে ও ত্বক উজ্জ্বল করে তোলে। 

একটি সতেজ লেবু থেকে এক টেবিল চামচ রস নিয়ে তার সাথে এক টেবিল চামচ মধু নিয়ে একটি পাত্রে মেশান। দেখবেন এই দুই উপাদান মিলেমিশে বেশ গাঢ় লিকুইড তৈরি হবে। এবার এই লিকুইড আপনার ত্বকে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে দিন। ১৫ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে আপনার ত্বক ধুয়ে ফেলুন।

এই লিকুইডটি ব্যবহার করার পর আপনার ত্বকে ব্রণ কমে আসবে, ব্রণের দাগ হালকা হতে শুরু করবে এবং আপনার ত্বক উজ্জ্বল হবে। তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণ প্রতিরোধে এই প্যাকটি সপ্তাহে দুইবার ব্যবহার করুন। তাতে অবশ্যয় উপকার পাবেন।

টক দই ত্বক নরম ও নমনীয় রাখে আর বেসন ত্বকের অতিরিক্ত তেল শুষে নিয়ে ত্বকের উজ্জলতা বজায় রাখে। এই দুই উপাদান একসাথে হয়ে তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণ সারাতে ভালো কাজ করে। দুই টেবিল চামচ বেসন ও এক টেবিল চামচ দই নিয়ে একটি পাত্রে চামচের সাহায্যে পেস্ট বানান। পেস্ট হয়ে আসলে এতে দুই ফোটা মধু ও এক চিমটি হলুদ মিশিয়ে নিন।

প্যাকটি এবার আপনার মুখে ও গলায় সুন্দর করে লাগিয়ে নিন এবং শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। এটি শুকিয়ে গেলে হালকা গরম পানি হাতের সাহায্যে লাগিয়ে মিশ্রণটি ত্বক থেকে লুজ করে নিন। এবার হালকা ঘষে মিশ্রণটি মুখ থেকে ঝরিয়ে ফেলুন। এতে করে ত্বকের ডেড সেল উঠে আসার সাথে ত্বকের অতিরিক্ত তেল শুষে নিবে। সবশেষে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ দিয়ে ফেলুন। এই মিশ্রণটি সপ্তাহে অন্তত ২ বার ব্যবহার করুন।

নাকে ছোট ছোট ব্রণ দূর করার উপায়

(১) নাকের উপর ব্রণ হওয়ার কারণ হল আমরা যখন মুখ ধুই তখন আমাদের নাকের ময়লা ভালোভাবে পরিষ্কার হয় না। এতে মুখ অপরিষ্কার থাকে। ফলে নাকের উপর ময়লা জমে থাকার কারণে ব্রণ জন্মায়। মুখ ধোয়ার সময় নাকের গোড়া-আগা ভালো করে ধুয়ে নিন। যাতে নাকের উপরের ব্যাকটেরিয়া বেরিয়ে আসে এবং ছিদ্রগুলো উন্মুক্ত হয়। এতে নাকের ব্রণ দূর হয়।

(২) টুথপেস্ট সাধারণত দাঁতকে চকচকে করার জন্য দরকারী বলে পরিচিত। তবে এই টুথপেস্ট ব্রণের সমস্যা সমাধানে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। টুথপেস্ট মুখের অতিরিক্ত তেল শুষে নেয়। তাই যাদের নাকের গোড়ায় ও ডগায় ব্রণ আছে তারা টুথপেস্ট লাগান। 

কিন্তু মাথায় রাখতে হবে আপনার নাকের উপরের ত্বক কতটা টুথপেস্ট সহ্য করতে পারে। প্রথমে অল্প পরিমাণে প্রয়োগ করুন। আপনি যদি এটি আপনার ত্বকের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ খুঁজে পান। তারপর আপনি পরিমাণ নিতে পারেন এবং পেস্ট লাগিয়ে সমাধান পেতে পারেন।

(৩) রসুন শুধুমাত্র একটি মশলা নয়, ব্রণ প্রতিরোধে বিশেষভাবে সহায়ক। কয়েকটি রসুন নিয়ে ভালো করে কেটে তার রস নিয়ে নাকের গোড়ায় লাগান। এভাবে লাগিয়ে ৫ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ত্বকের যত্নে রসুন বিশেষ উপকারী। রাতে এই পদ্ধতিটি করার চেষ্টা করুন। তাহলে সকালে ঘুম থেকে উঠে নিজের চোখে ফল পাবেন।

৭ দিনে ব্রণ দূর করার উপায়

৭ দিনে ব্রণ দূর করার উপায় খুব একটা কঠিন নয়। আপনি চাইলে খুব সহজে অল্প কিছু নিয়ম মেনে মাত্র সাত দিনেই আপনার মুখের ব্রণ দূর করতে পারেন। তবে যে নিয়মগুলো বলা হবে সেই নিয়মগুলো আপনাকে নিয়মিত অনুসরণ করতে হবে। তাহলে চলুন জেনে নেই ৭ দিনে ব্রণ দূর করার উপায় গুলো সম্পর্কে।

১) নিয়মিত আপনার মুখ পরিষ্কার করুন

মুখের মধ্যে থাকা তেল গ্রন্থিগুলি সারা দিন সক্রিয় থাকে এবং এগুলো মেকআপ, ময়লা এবং দূষণের সাথে আটকে যেতে পারে। যার ফলে ত্বকের ছিদ্র বন্ধ হয়ে যায় কারণে ব্রণ হতে পারে। এজন্য নিয়মিত মুখ পরিষ্কার করুন। 

বয়ঃসন্ধির সময়ে বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর, ব্যায়াম ও খেলাধুলার পর মুখ ধোয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ । অধিকাংশ ত্বকের ডাক্তার বা বিউটিশিয়ানরা সুপারিশ করেন যে আপনি অন্তত একটি ক্লিনজিং তোয়ালে ব্যবহার করে নিয়মিত আপনার মুখ পরিষ্কার করার জন্য এতে ব্রণের প্রবণতা অনেকাংশেই কমবে।

২) স্যালিসিলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ একটি ক্লিনজার ব্যবহার করুন

স্যালিসিলিক অ্যাসিড ত্বকের পৃষ্ঠ থেকে মৃত কোষ এবং অতিরিক্ত তেল অপসারণ করতে সাহায্য করে। ব্রণ বা ব্ল্যাকহেডস থেকে মুক্তি পেতে এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। । অন্যদিকে ভিটামিন এ ব্ল্যাকহেডস দূর করতে ভূমিকা পালন করে। তাই ভালো ফলাফল পেতে স্যালিসিলিক অ্যাসিডের সঙ্গে ভিটামিন ‘এ’ ব্যবহার করুন। 

ভিটামিন “এ” পাইপ ক্লিনারের মতো কাজ করে, যার কারণে তেল আটকে যায় না। অন্যদিকে, স্যালিসিলিক অ্যাসিড ত্বক থেকে ক্ষতিকারক উপাদানগুলি সরিয়ে ব্রণ ব্রেকআউট মুক্ত রাখতে সাহায্য করে। সেই সাথে ত্বকের অবাঞ্ছিত দাগ দূর করতেও সাহায্য করে।

৩) মুখ থেকে হাত দূরে রাখুন

প্রায় সকলেই আমাদের আঙ্গুল বা নখ ব্যবহার করে মুখের ব্রণ বা ব্রণ দূর করার চেষ্টা করি। আমরা ভাবি এমনটা করলে সেই বিশেষ ব্রণ থেকে দ্রুত মুক্তি পাওয়া যাবে। কিন্তু এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা।বেশিরভাগ চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ মনে করেন যে আপনার হাত বা নখ দিয়ে ব্রণ বাছাই করার চেষ্টা করলে নিরাময় হতে বেশি সময় লাগে। 

হাত বা নখ দিয়ে ব্রণ দূর করার চেষ্টা করলে মুখে দাগ পড়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এর মাধ্যমে সারা ত্বকে ব্রণ ছড়িয়ে পড়তে পারে। এইজন্য কখনোই হাত বা নখ দিয়ে ব্রণ দূর করার ভূলেও চেষ্টা করবেন না।

৪) বরফ ব্যবহার

বিরক্তিকর এবং বেদনাদায়ক ব্রণ নিয়ন্ত্রণ করার সেরা উপায়গুলির মধ্যে একটি হল বরফ প্রয়োগ করা। বরফ ব্যবহারের ফলে ব্রণ ছড়াতে বাধা পায় এবং ধীরে ধীরে প্রকোপ কমে যায়। এজন্য একটি কাপড়ে কিছু বরফ মুড়িয়ে ব্রণের উপর ৩/৪ মিনিট ধরে রাখুন।

৫) মেকআপের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন

মেকআপ জাতীয় সৌন্দর্য পণ্য প্রাপ্তবয়স্ক ব্রণের সবচেয়ে বড় একটি কারণ । আমাদের মুখের ত্বক খুবই সংবেদনশীল এবং খুব সামান্য কারণেই এখানে সমস্যা দেখা দেয়। মেকআপ পণ্যগুলিতে এমন অনেক উপাদান থাকে যা আপনার ত্বকের জন্য ক্ষতিকারক, এবং বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এই সমস্যাগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে ব্রণ। 

অনেকে আছে যারা মুখের ব্রণ লুকানোর জন্য বা সাময়িকভাবে ব্রণ দূর করার উপায় হিসাবে ভারী মেকআপ ব্যবহার করে থাকে। দুর্ভাগ্যবশত, ভারী মেকআপ করে সাময়িকভাবে ব্রণ আড়াল করতে পারলেও স্থায়ী ব্রণ ব্রেকআউট করতে পারে না। এইজন্য মেকআপ ব্যবহারে খুব সতর্ক থাকুন। 

সব সময় হালকা ধরনের মেকআপ ব্যবহার করার চেষ্টা করুন এবং ত্বকের জন্য বেশি উপকারী এমন উপাদান সমৃদ্ধ মেকআপ ব্যবহার করার চেষ্টা করুন।

ছেলেদের মুখে ব্রণ দূর করার উপায়

ত্বকের জন্য একটি বড় সমস্যা হচ্ছে ব্রন। সারাদিন বাইরে ধুলোবলির ভেতরে থাকার কারণে বেশিরভাগ ছেলেরই ব্রনের সমস্যা দেখা যায়। ব্রন সাধারণত মুখেই বেশি হয়। আর এই ব্রনের কারণে চেহারার স্বাভাবিক সৌন্দর্য নষ্ট হয়। তাই চলুন জেনে নিই, ছেলেরা কোন উপায়ে ব্রন দূর করবেন-

১. বাইরে থেকে ঘরে ফিরে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
২. সাধারণত তৈলাক্ত ত্বকেই ব্রণের সংক্রমণ বেশি হয়। তাই সব সময় মুখ পরিষ্কার রাখুন।
৩. দিনে কমপক্ষে এক থেকে দু বার গোসল করুন।
৪. ত্বকে নিয়মিত ময়দা, দুধ ও মধুর পেস্ট লাগান, ব্রণের দাগ চলে যাবে এবং ত্বক উজ্বল হবে।

৫. প্রতিদিন অন্তত তিন-চার বার মুখ ধোয়ার অভ্যাস করুন। ব্রণের উৎপাত অনেকটা কমে যাবে। যারা নামাজ পড়ে তাদের দিনে ৫ বার ওযু করার কারণে মুখ ধোয়া হয়ে যায়।
৬. মুখে সাবান ব্যবহার না করে ফেসওয়াশ ব্যবহার করুন
৭. মুখে ব্রণ দেখা দিলে তা নখ দিয়ে খোঁটাখুঁটি করা একদম ঠিক না। এতে ত্বকে ব্রণের দাগ স্থায়ী হয়ে যাবে ।

খাবারে সতর্কতা 

১. বেশি করে শাকসবজি খান। শাকসবজি ত্বক ও স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
২. তৈলাক্ত খাবার, ভাজাপোড়া খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
৩. প্রচুর পানি পান করুন।
৪. পেট পরিষ্কার রাখা খুবই জরুরি। অনেক সময় কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে ত্বকে ব্রণ দেখা দেয়।
৫. নিয়মিত সবুজ শাকসবজি আর টাটকা ফলমূল খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে প্রতিকার পাওয়া যায়।

মেয়েদের মুখে ব্রণ দুর করা উপায়

বর্তমান সময়ে মেয়েদের সুন্দর মুখে ব্রণ হলে মুখের সৌন্দর্য নষ্ট করে দেয়। কারণ নতুন প্রজন্ম অনুযায়ী ছেলেদের মুখে ব্রণ হলে খুব একটা সমস্যার সৃষ্টি হয় না। তবে মেয়েদের ক্ষেত্রে সুন্দর মুখে ব্রণ হলে ছেলেদের তুলনায় অনেকটা খারাপ দেখা যায়। অনেক মেয়েদের মুখে ব্রণ ও ব্রণের কালো দাগ লক্ষ্য করা যায় । এসব ব্রণ ও মুখের কালো দাগ দূর করা যায় ঘরোয়া উপায়ে।

মুলতানি মাটি

অনেক মেয়েদের মুখের ত্বকে বেশি তৈলাক্ত থাকার ফলে ব্রণের সৃষ্টি হয়। ব্রণ এবং তৈলাক্তভাব থেকে মুক্তি পেতে হলে মুলতানি মাটি অল্প পরিমাণে পানি দিয়ে পেষ্ট করে মুখে লাগাতে পারেন। নিয়মিত কয়েকদিন মুলতানি মাটি ব্যবহারের ফলে ব্রণ এবং মুখের মধ্যে থাকা তৈলাক্তভাবে দূর করতে সাহায্য করবে।

শসার রস

মেয়েদের ব্রণ দূর করার ঔষধের নাম হিসেবে সু-পরিচিত শসার রস ব্যবহার করলেও অনেক ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। নিয়মিত শসার রস সকাল ও রাতে ঘুমানোর আগে ব্যবহার করুন ব্রণ এবং কালো দাগ দূর করতে সহয়তা করবে। এছাড়াও শসার রস ব্যবহারে মেয়েদের মুখের ব্রণ দূর করতে খুব ভালো কাজ করে।

চালের গুঁড়া ও মধু

চালের গুঁড়া এবং মধু মিশিয়ে ৩ থেকে ৪ দিন ব্যবহারের ফলে ত্বক অনেক পরিস্কার হয়ে যাবে। মুখের ব্রণ দূর করার জন্য এই ৩টি উপাদান সঠিক ব্যবহারের ফলে ব্রণ এবং মুখের মধ্যে কালো দাগ দূর করতে অনেক ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।

উপসংহার

পরের বিস্তারিত আলোচনা থেকে নিশ্চয়ই আপনারা জেনে গেছেল মুখে ব্রন হওয়ার কারন ও তা সমাধান কল্পে করণীয় সম্পর্কে। এছাড়া আরোও জানতে পেরেছেন বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে কিভাবে উপকৃত হবেন। আপনি যদি নিয়মিতভাবে উপরোক্ত বিষয়গুলো মেনে চলেন তাহলে আপনার ত্বক থাকবে উজ্জল, সতেজ, লাবণ্য ও ব্রন মুক্ত।


উপরের আর্টিকেল থেকে যদি উপকৃত হয়ে থাকেন। তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধবদের মাঝে শেয়ার করে দিন। ভালো থাকবেন, সুস্থ্য থাকবেন, আল্লাহ হাফেজ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪