চুলের যত্নে বিভিন্ন উপকরণের সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে জেনে নিন
চুলের যত্ন নিয়ে চিন্তা করছেন, অকালে চুল পড়ে যাচ্ছে, পেকে যাচ্ছে, কিভাবে চুলেচ যত্ন নিবেন চিন্তায় পড়ে গেছেন ? আর নয় চুল নিয়ে দুঃচিন্তা। চুল পড়া বন্ধে করণীয় উপায় সমূহ মেনে অনেকেই উপকার পেয়েছেন। আপনিও এইগুলো ফলো করতে পারেন।
এখানে যা যা আছে তা আপনার হাতের নাগালেেই পেয়ে যাবেন। এবং বেশি টাকাও খরচ করতে হবেনা। এখানে আছে প্রাকৃতিক ভেষজ ব্যবহারের নিয়ম, খাদ্যাভাস আরো অনেক কিছু যা ব্যবহারে আপনার সমস্যা চিরতরে দুর হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ। তাহলে আর দেরি কেন চলুন শুরু করা যাক--
ভূমিকাঃ চুল মানুষের সুন্দর্য্য বৃদ্ধি কেরে। প্রতিটি মানুষের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। যার চুল নাই সেই জানে চুলের কি দাম। চুলের যত্নে তেল, পেয়াজ, হেয়ার প্যাক, শ্যাম্পু কিভাবে করবেন, ভেষজ উপাদানের ব্যবহার, আরো অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আসুন কিভাবে চুলের যত্ন নিবো তা জেনে নিই।
চুল পড়া বন্ধে করণীয় উপায় সমূহ
চুলের যত্নে তেল এর উপকারিতা
চুলের যত্নে পেঁয়াজের উপকারিতা
চুলের যত্ন কিভাবে নিতে হয়
চুলের যত্নে হেয়ার প্যাক
শ্যাম্পু করার পর চুলের যত্ন
চুলের যত্নে কি কি খাওয়া উচিত
চুলের যত্নে ভেষজ উপাদান
চুলের যত্নে ইসলাম
চুলের যত্নে তেল এর উপকারিতা
চুলের যত্নে পেঁয়াজের উপকারিতা
চুলের যত্ন কিভাবে নিতে হয়
চুলের যত্নে হেয়ার প্যাক
শ্যাম্পু করার পর চুলের যত্ন
চুলের যত্নে কি কি খাওয়া উচিত
চুলের যত্নে ভেষজ উপাদান
চুলের যত্নে ইসলাম
চুল পড়া বন্ধে করণীয় উপায় সমূহ
চুল পড়া, অনেকের কাছে এই শব্দ দুটি যেন এক বিভীষিকা। বয়স বাড়ার সাথে সাথে চুল পড়বে, চুল পাকবে এটা স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু বর্তমানে অসংখ্য ছেলেমেয়েরা অল্প বয়সেই এ সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। যা সবার জন্য বেশ চিন্তার একটা কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর স্বাস্থ্য এবং রূপচর্চায় যে নারীরা বেশি মনোযোগী তাদের জন্য এটি একটি অভিশাপ।
এই অভিশাপ থেকে মুক্তির উপায় জেনে নিন। চলপাড়ার কারণ সমূহঃ জিনগত কারণ, হরমোন জনিত কারণ, ওষুধের প্রভাব, রেডিয়েশন থেরাপীর প্রভাব, মানসিক চাপ, ভেজা চুল বাধার কারণ। এ সমস্যা থেকে মুক্তির জন্য যা যা খেতে হবে- ডিম, পালং শাক, তেলযুক্ত মাছ, মিষ্টি আলু, বাদাম, চিংড়ি মাছ ও গাজর ইত্যাদি।
চুল পড়া বন্ধের যা যা পদক্ষেপ নিতে হবে- নিয়মিত মাথা পরিষ্কার করুন, তেল ব্যবহার করুন, সঠিকভাবে চুল আঁচড়ান, চুল শুকাতে হেয়ার ড্রাই মেশিন ব্যবহার পরিত্যাগ করুন, অ্যালকোহল ও কেমিক্যাল পরিত্যাগ করুন।
চুলের যত্নে তেল এর উপকারিতা
চুলে তেল দেওয়া একটি কার্যকরি পদ্ধতি। নারিকেল তেল, সরিষা তেল, অলিভ ওয়েল, বাদাম তেল চুলে ব্যবহার করেন পুষ্টির আশায়। নিঃসন্দেহে তেল চুলের পুষ্টি জোগায় তবে অভিজ্ঞ চিকিৎকের মতে তেল থেকে চুল ও মাথার ত্বকের পুষ্টি সংগ্রহ করতে সময় লাগে ৪০ থেকে ৫০ মিনিটের মত।
তাই দীর্ঘ্ সময় চুলে তেল দিয়ে থাকলে চুল বেশি পুষ্টি পাবে, বিষয়টি এরকম নয়। তাই সারা দিন সারা রাত চুলে তেল দিয়ে থাকলে হিতে বিপরিত হতে পারে। তাই বলে চুলে তেল ব্যবহার করা যাবেনা এমন নয়। চুলের যত্নে অবশ্যয় তেল ব্যবহার করতে হবে। এজন্য গোসলের ১ঘন্টা পূর্বে চুলে তেল দিয়ে ম্যাসাজ করে নিতে হবে এবং শ্যামপু দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।
চুলের যত্নে পেঁয়াজের উপকারিতা
চুলের যত্নে পেঁয়াজের ভূমিকা অপরিসিম। পেঁয়াজে আছে ভিটামিন এ,সি,ই অ্যান্টিফাঙ্গাল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এছাড়াও এটি কেরোটিনের মাত্রা বাড়াতে সহায়তা করে। চুলকে সিল্কি করতে, চুলের বৃদ্ধি করতে, চুলের স্বাস্থ্য মজবুত করে ও গোড়া শক্ত করে এবং অকালে চুল পাকা রোধ করে নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। চুলের যত্নে ঘরেই পেঁয়াজের তেল তৈরি করতে পারেন।
এর জন্য প্রথমে ছোট দেখে দু’টি পেঁয়াজ ভালো করে কুচি করে নিন। এবার একটি পাত্রে ৬ টেবিল চামচ নারকেল তেল, দু কোয়া রসুন ও কাটা পেঁয়াজ কুচি দিয়ে গরম করে নিন। মিশ্রণটি ফুটে উঠলে আঁচ বন্ধ করে ঠান্ডা করে বোতলে সংরক্ষণ করুন
চুলের যত্ন কিভাবে নিতে হয়
১. চুল সুরক্ষিত রাখুন
সূর্যের কড়া রোদ, বৃষ্টি, ধুলাবালি থেকে চুলকে সুরক্ষিত রাখুন। পাতলা কাপড় কিংবা ওড়না দিয়ে ঢেকে রাখলে চুল সুরক্ষিত থাকে।
২. ভেজা চুলকে সাবধানে ট্রিট করুন
ভেজা চুল ভঙ্গুর অবস্থায় থাকে সবথেকে বেশি। গোসলের পরপরই চুলে চিরুনি ব্যবহার করা উচিৎ নয়। চুল ভেজা থাকলো চুলের গোড়া থেকে ভেঙ্গে যাওয়াটা সহজ তাই শ্যাম্প করার সময় চুলে বেশি চাপ প্রয়োগ করা উচিৎ নয়।
৩. সঠিকভাবে শ্যাম্পু করুন
বাইরে চলাফেরা করলে চুলে প্রচুর ময়লা, ধুলাবালি জমে থাকে। তাই চুলের ধরণ বুঝে ভালোমানের শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করা উচিৎ। চুলে বেশি ময়লা থাকলে দুইবার শ্যাম্পু করুন। সপ্তাহে ৩দিন ভালো শ্যাম্পু দিয়ে চুল পরিস্কার করুন।
৪. নিয়মিত কন্ডিশনার ব্যবহার করুন
কন্ডিশনার ব্যবহার করুন তবে সঠিকভাবে। গোসলের পর কন্ডিশনার ব্যবহার করলে চুল হবে মসৃন। এতে চুল ভেঙ্গে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে কমে যায়। চুলে কন্ডিশনার ব্যবহার করলে চুলকে মসৃন রাখা তাই চুলের গোড়া থেকে ১ েইঞ্চি উপরে কন্ডিশনার ব্যবহার করা।
চুলের যত্নে হেয়ার প্যাক
নিয়মিত চুলের যত্ন না নিলে এবং পুষ্টির অভাব জনিত করণে চুল ধীরে ধীরে দূর্বল হয়ে পড়ে। চুলকে মজবুত করতে হেয়ার প্যাক বেশ কার্যকরি ভূমিকা পালন করতে পারে। চুল ভালো রাখার জন্য ধরন বুঝে হেয়ার প্যাক ব্যবহার করুন।
চুল শুষ্ক বা মিশ্র হলে ১০ থেকে ১৫ দিন পরপর, আর তৈলাক্ত হলে ১৫ দিন পরপর চুলে প্যাক লাগান। ঘরে তৈরী প্যাক চুলের সুরক্ষায় বেশি কার্যকরী । নিচে কয়েকটি হেয়ার প্যাক উল্লেখ করা হলো।
কলা ও মধুর হেয়ার প্যাক
টক দই ও ডিম হেয়ার প্যাক
ভিটামিন ই ও নারিকেল তেল হেয়ার প্যাক
এ্যালোভেরা ও ক্যাস্টর অয়েল হেয়ার প্যাক
আপেল সিডার ভিনেগার হেয়ার প্যাক
মেথির হেয়ার প্যাক
শ্যাম্পু করার পর চুলের যত্ন
ভালো ব্রান্ডের শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেললেই চুলের যত্ন নেওয়া হয়েগেল তা কিন্তু নয়। রুক্ষ ও শুস্ক ভাব কাটিয়ে চুলকে মসৃণ এবং নরম করে তুলতে শ্যাম্পু করার পর চুলের ধরনের সাথ মানানসই সিরাম ব্যবহার করুন অথবা কন্ডিশনার ব্যবহার করতে পারেন। শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ার পর যে বিষয়গুলো খেয়ার রাখা দরকার তা নিম্নরুপ -
চল মাছুন সতর্কভাবে
শ্যাম্পুর পরে ব্লো ড্রায়ার ব্যবহার না করা
সিরাম ব্যবহার করুন
চুল বাধা থেকে বিরত থাকুন
আঙ্গুল দিয়ে চলের জট চাড়ান
চুলের যত্নে কি কি খাওয়া উচিত
আপনি স্বাস্থ্যকর থাকলে ভালো থাকবে আপনার চুল। চুলকে স্বাস্থ্যকর ও সুন্দর রাখতে তেল, পানি, শ্যাম্পু ও কন্ডিশনারের পাশাপাশি প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসও চুল সুন্দর ও স্বাস্থ্যকর রাখতে ভূমিকা রাখে। আমাদের প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় পুষ্টিকর খাবার রাখা জরুরি। চুলের পুষ্টি ও গুনাগুন ঠিক রাখতে নিচের খাবার গুলো খাওয়া জরুরি।
ডিমঃ প্রোটিনের একটি বড় উৎস হলো ডিম। এছাড়াও ডিমে আছে প্রচুর পরিমাণে জিংক, সেলেনিয়াম, সালফার ও আয়রন। আয়রন চুলের গোড়ায় রক্ত ও অক্সিজেনের সরবরাহ নিশ্চিত করে। ডিম পছন্দ নয় এমন মানুষ নেই বললেই চলে। ডিম সেদ্ধ করে অথবা রান্না করে সব অবস্থাতেই খেতে ভালো লাগে। তাই প্রতিদিন ডিম খান।
ডালঃ ডালে আছে প্রোটিন যা আমাদের দেহের ও চুলের কোষ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। চুল দ্রুত বাড়ে ও চুলের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে। তাই খাদ্য তালিকায় ডাল রাখতে পারেন।
সামদ্রিক মাছঃ সামদ্রিক মাছে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন ডি, যা চুলকে শক্ত ও মজবুত করতে সহায়তা করে। সামদ্রিক প্রায় সব মাছেই ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে যা চুলের বৃদ্ধিতে কাজ করে।
হাঁস মুরগির মাংশঃ হাঁস মুরগির মাংশে রয়েছে প্রোটিন। যা চুলকে স্বাস্থ্য উপযোগী উপাদান যেমন- জিংক, আয়রন ও ভিটামিন বি যোগাতে সাহায্য করে।
পালংশাকঃ পালংশাকে আছে প্রচুর পরিমানে আয়রন এবং ফোলাইট। এই সবুজ শাকটি খেলে আমাদের চুল দ্রুত বাড়ে ও মাথার ত্বক ঠিক রাখে কারণ এটি চুলের ফলিকলে অক্সিজেন পৌছায় এবং দেহে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ায়।
পাকা টমেটোঃ পাকা টমেটো রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা মাথার স্ক্যাল্প এর রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন খাবারের তালিকায় পাকা টমেটো রাখুন।
আমলকিঃ চুলের যত্নে বহু আগ থেকে আমলকির ব্যবহার হয়ে আসছে। তবে লবন দিয়ে প্রতিদিন ৪/৫টি আমলকি চিবিয়ে খেলেও চুল পড়া অনেকাংশে কমে যায়। আমলকিতে আছে প্রচুর পরিমানে আয়রন যা নতুন চুল গজাতে ও চুল পড়া রোধ করতে সাহায্য করে।
শসাঃ শসা রয়েছে পরিমান মত সিলিকা সালফার এবং ভিটামিন এ। এই উপাদানগুলো চুলের বৃদ্ধি ঘটায় এবং চুল পড়া রোধ করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন খাবারের তালিকায় শসা রাখা উচিৎ। তবে খোসাসহ শসা খেলে উপকার বেশি।
ক্যাপসিকামঃ সবুজ, লাল ও হলুদ ক্যাপসিকাম ভিটামিন-সি এর ভালো উৎস। চুলের বৃদ্ধিতে ও চুলের ভঙ্গুরতা দুর করতে ভিটামিন-সি খুবই কার্যকর।
মটরশুটিঃ কেরোটিন চুলের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। মটরশুটি ও ডালে এই প্রোটিন রয়েছে। মজবুত চুলের জন্য প্রতিদিন মটরশুটি ও ডাল খেতে পারেন। এতে চুল হবে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ও ঝলমলে।
বাদামঃ বাদামে আছে বায়োটিন উপাদান যা চুল বৃদ্ধি করে গোড়া মজবুত করে তোলে। কাজু বাদাম, কাঠ বাদাম, চিনা বাদাম, পেস্তা বাদাম এসবে বেশি পরিমানে বায়োটিন রয়েছে। প্রতিদিনের তালিকায় ১কাপ বাদাম রাখুন। কয়েক মাসের মধ্যে আপনি পরিবর্তন লক্ষ্য করতে পারবেন।
লেবুঃ ভিটামিন সি চুলের জন্য প্রয়োজনীয় একটি পুষ্টি উপাদান। শরীরে ভিটামিন সি এর চাহিদা পুরণে লেবু জাতীয় ফল নিয়মিত খাওয়া উচিৎ। লেবু ভাতের সাথে অথবা হালকা কুসুম গমর পানিতে মধু মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। চুল দ্রুত গজাতে এটি অনেক কার্যকর।
পেয়ারা, পেঁপে ও কমলাঃ এসব ফল থেকে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন-সি পাওয়া যায়। ভিটামিন-সি চুলের গোড়ায় রক্ত সঞ্চালন করে এবং ভেঙ্গে যাওয়া প্রতিরোধ করে।
অ্যাভোকাডোঃ অ্যাভোকাডোতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন বি ও ই এবং ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। যা চুলের আগা ফাটা ও চুল পড়া রোধ করে। এর সাথে চুলের গোড়া মজবুত করে তোলে।
নাশপাতিঃ শরীরে রক্তের প্রবাহ ঠিক রাখা, রক্তে পিএইচ–এর মাত্রা ঠিক রাখা, সুন্দর চুল, এসবে নাশপাতির জুড়ি নেই। তাই সকালের খাদ্য তালিকায় অথবা দিনের যে কোনো সময় এটা খেতে পারেন।
মিষ্টি আলু ও গাজরঃ মিষ্টি আলুয় ভিটামিন মাথার ত্বকে প্রয়োজনীয় তেল তৈরি করতে সহায়তা করে। ভিটামিন এ এর অভাবে মাথার ত্বকে চুলকানি ও খুশকির মত সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই এই সব সমস্যা থেকে রেহায় পেতে আমাদের মিষ্টি আলু, গাজর ও মিষ্টি কুমড়া খাওয়া উচিৎ।
অ্যালোভেরাঃ অ্যালোভেরায় থাকা এসিড, প্রোটিন, অ্যামাইনো, মিনারেল ও ভিটামিন, বিশেষ করে এ, সি ও ই ক্ষতিগ্রস্ত চুলের জন্য প্রয়োজন। অ্যালোভেরার পাতার ভিতরের শাঁস দিয়ে শরবত বানিয়ে খেতে পারেন।
শস্যদানাঃ বায়োটিনে থাকে আয়রণ, জিংক এবং ভিটামিন। বায়োটিন সেল গঠনে এবং অ্যামাইনো এসিড তৈরিতে ভূমিকা রাখে, যা সুন্দর চুলের জন্য আবশ্যক। তাই শস্যদানা খেয়ে বায়োটিনের চাহিদা পূরণ সম্ভব।
পনির, দুধ ও দুগ্ধ জাতীয় খাবারঃ এসব খাবারে আছে প্রোটিন, ভিটামিন বি-৫ এবং ভিটামিন-ডি। আধুনিক গবেষণা প্রমাণ করে যে, ভিটামিন-ডি চুলের গোড়ার সঠিক স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।
ওডসঃ ওটসে রয়েছে প্রোটিন, তামা, দস্তা ও ভিটামিন বি-এর মিশ্রণ। প্রাতঃরাশে ওটস খেলে চুল পড়াও কমবে, শরীরও ভালো থাকবে।
চুলের যত্নে ভেষজ উপাদান
চুলের যত্নে ভেষজ উপাদানের ব্যবহার কিছুটা সময়সাপেক্ষ ব্যপার হলেও কার্যত উপকারি ও নিরাপদ। কারণ মানবদেহে ভেষজ উপাদানগুলো গ্রহণ করার জন্য তৈরি। সেই দিক থেকে ভেষজ উপাদান চুলের যত্নের জন্য সবচাইতে বেশি নিরাপদ।
চুলের স্বাস্থ্য রক্ষায়, চুল পড়া বন্ধ করতে নতুন চুল গজাতে এবং খুশকি মুক্ত রাখতে ভেষজ উপাদান কার্যকরি ভূমিকা অপরিসিম।
ব্রাহ্মীঃ ব্রাহ্মী আমাদের চুলের গোড়ায় প্রয়োজনীয় ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, জিংক এবং ভিটামিন যোগায় যা চুল পড়া রোধের জন্যে অপরিহার্য।
মুকুনুওয়েন্নাঃ মুকুনুওয়েন্না (অলটারনেথেরা স্যাসিলিস) স্যাসাইল জয়উইড হিসেবে পরিচিত। এটি ব্রাজিলের স্থানীয় এবং বিশ্বজুড়ে অনেক গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ও উপনিবেশীয় অঞ্চলের একটি সাধারণ উদ্ভিদ।
বেশ কিছু উপকারী বৈশিষ্ট্যের পাশাপাশি অতি অল্প সময়ের মধ্যে নতুন চুল গজানো আর চুলের দ্রুত
বৃদ্ধির ক্ষেত্রে মুকুনুওয়েন্না অত্যন্ত দক্ষ ভূমিকা রাখে।
অশ্বগন্ধাঃ অশ্বগন্ধায় থাকা ন্যাচারাল অ্যান্টি অক্সিডেন্টস চুল পড়া রোধ করে, অকালপক্বতা রোধ করে, চুলের সার্বিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
ভৃঙ্গরাজঃ ভৃঙ্গরাজ এটা নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে, চুলের অকালপক্বতা রোধ করে, সেই সাথে যাদের নিদ্রাহীনতা আছে তাদেরকে ঘুমোতে সাহায্য করে।
রোজমেরিঃ চুলের যত্নে রোজমেরি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, এই প্রাকৃতিক উপাদান চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। আপনি রোজমেরি বিভিন্ন উপায়ে চুলে ব্যবহার করতে পারেন। তবে রোজমেরি এসেনশিয়াল অয়েল চুলের জন্যে সবথেকে বেশি উপকারী।
জবাঃ জবায় উপস্থিত হাইড্রোঅ্যালকোহলিক নির্যাস চুলের বৃদ্ধিতে যে সাহায্য করে, সেই প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে গবেষণায়। এমনকী জবার পাতাও চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে জবা ফুল এবং পাতা আপনি চুলের যত্নে ব্যবহার করতে পারেন।
এই ফুল ও পাতায় উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট স্ক্যাল্পের সুস্বাস্থ্য ধরে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
জুঁইঃ চুলের অকালপক্কতা রোধ করতে সাহায্য করে এই ফুল। এমনকী জুঁইয়ের গুণে চুল পাতলা হয়ে যাওয়ার বা টাক পড়ার আশঙ্কাও কমে।
মেহেদীঃ চুলের যত্নে দীর্ঘদিন ধরেই মেহেদি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তবে আজকাল প্রাকৃতিক মেহেদির চেয়ে অনেকে বাজারে কেনা মেহেদিই বেশি ব্যবহার করেন। তবে রূপ বিশেষজ্ঞদের মতে, বাজারে কিনতে পাওয়া যায় এমন মেহেদিতেও নানা রাসায়নিক উপাদান থাকতে পারে যা চুলের ক্ষতি করে। এক্ষেত্রে প্রাকৃতিক মেহেদি ব্যবহার সম্পূর্ণ নিরাপদ।
মেহেদির ভিটামিন ই এবং ট্যানিন চুলকে প্রাকৃতিকভাবে মোলায়েম করে। আর ব্যবহারের পরের দিন তেল দিলে প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে চুলকে করে মসৃণ। মাথার ত্বক সুস্থ রাখতেও সহায়তা করে মেহেদি। মাথার ত্বকের পিএইচ-এর ভারসাম্য রক্ষা করার পাশাপাশি সিবাম গ্রন্থির কার্যকারিতা কমিয়ে তেল উৎপাদন সীমিত করে।
চুলের যত্নে ইসলাম
ইসলাম চুল কাটার অনুমতি দিয়েছে আবার চুল রাখারও অনুমতি দিয়েছে। স্বয়ং হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) সব সময় চুল রাখতেন। হযরত আনাস (রা) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাথায় অত্যাধিক তেল ব্যবহার করতেন। মাথার চুল আল্লাহ পাকের এক বিশেষ নিয়ামত। এই চুল মানুষকে গরম ও ঠান্ডা থেকে রক্ষা করে।
চুল মানুষের সুন্দর্য্য বৃদ্ধি করে। চুল আঁচড়ানো মানুষের স্বভাবজাত কাজ। এরপরও কিছু কিছু মানুষ এর প্রতি লক্ষ্য রাখে না। অথচ নবীজি (সা.) স্বীয় চুল চিরুনি দ্বারা আঁচড়িয়েছেন এবং উম্মতদের আঁচড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
স্ত্রীলোকের মাথার চুল পুরুষদের দাড়ির মতো সৌন্দর্য ও শ্রীবর্ধক। ইসলামি শরিয়তে নারীর চুল কর্তন করা জায়েজ নয় । স্বাভাবিক ভাবে চুলের যত্ন নেওয়া, চুলের সৌন্দর্য বর্ধন করা, ধোয়ার মাধ্যমে চুল পরিচ্ছন্ন রাখা, চুলে তেল ব্যবহার করা এবং চুল এলোমেলো না রাখা মুস্তাহাব।লেখকে মন্তব্য
উপসংহারঃ আমাদের শরীরের প্রত্যেকটি অংশই গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে চুলও আমাদের শরীর ও জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। মাথার চুল যে কত গুরুত্বপূর্ণ, কত মূল্যবান, যার চুল পড়ে গেছে সেই জানে। তাই চুলকে ভালো রাখতে হলে প্রথম থেকে আমাদের ভালোখাদ্যা মেনে চলতে হবে, মেনে চলতে হবে স্বাস্থ্য বিধি।
সঠিক উপায়ে চললে বয়স বাড়ার পরেও আপনার চুল থাকবে সুন্দর। আপনার মনে থাকবে ভালো, আপনার জীবন হয়ে উঠবে শান্তিময় উজ্জ্বল। প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করে চলে যত্ন নিন। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন। আল্লাহ হাফেজ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url