সাজেক ভ্যালি ভ্রমনের উপযুক্ত সয়ম ও হোটেল বুকিং এর পদ্ধতি
সাজেক ভ্যালিতে একই সঙ্গে পাহাড় এবং মেঘের মিতালী দেখার জন্য ভ্রমণ পিপাসু মানুষের পছন্দের এক নম্বরে এর অবস্থান। সাজেক ভ্যালি ভ্রমনের উপযুক্ত সয়ম ও হোটেল বুকিং এর পদ্ধতি বিস্তারিত জেনে ভ্রমণের পরিকল্পনা করে তারপর বের হবেন। আগে থেকে না জানলে রাস্তাঘাটে অনেক বিড়ম্বনার সম্মুখীন হতে পারেন।
রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলায় অবস্থিত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন হিসেবে খ্যাত সাজেক। সাজেক ভ্যালির উচ্চতা সমুদ্র পৃষ্ঠ হতে প্রায় ১৮০০ ফুট।
সাজেকের অবস্থান রাঙ্গামাটি জেলায় হলেও খাগড়াছড়ির দীঘিনালা হতে যাতায়াত অনেক সহজ। দীঘিনালা থেকে সাজেকের দূরত্ব প্রায় ৪০ কিলোমিটার এবং খাগড়াছড়ি থেকে এর দূরত্ব ৭০ কিলোমিটার।
ভূমিকা
চট্টগ্রাম বিভাগের রাঙ্গামাটি খাগড়াছড়ি বান্দরবান প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং পাহাড়ি এলাকা। পাহাড়ের চূড়ায় উঠলে সাদা সাদা তুলোর মতো মেঘ আপনাকে মুগ্ধ করবে। সাজেক কেমন একটি জায়গা যেখানে একই দিনে তিন রকমের প্রাকৃতিক রূপ দেখে আপনি চমৎকৃত হবেন।।
কখনো গরম অনুভূত হবে, আবার কখনো বৃষ্টিতে ভিজে যাবেন চোখের পলকে, আবার কখনো দেখবেন ঘন কুয়াশার চাদরে আপনার চারপাশ ঢেকে ফেলছে। সাজেক ভ্যালির শেষ গ্রাম হচ্ছে কংলক পাড়া যা সাজেক ভ্যালি ভ্রমণে আসা পর্যটকদের কাছে এক আকর্ষণীয় স্থান।
দিন কিংবা রাত সব সময়ই সাজেকের সৌন্দর্য মানুষকে মুক্ত করে তোলে। সাজেকে কোন সময় গেলে সেখানকার সূর্যোদয় এবং ভোরের প্রকৃতির সৌন্দর্য এটা কখনোই মিস করবেন না।
সাজেক ভ্যালি ভ্রমনের উপযুক্ত সয়ম ও হোটেল বুকিং এর পদ্ধতি
ঢাকা টু সাজেক বাস ভাড়া ২০২৩
চট্টগ্রাম থেকে সাজেক যাওয়ার উপায়
খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক কত কিলোমিটার
কক্সবাজার থেকে সাজেক কত কিলোমিটার
সাজেক ভ্যালি হোটেল ও রিসোর্ট লিস্ট এবং ভাড়া
কুড়ে ঘর রিসোর্ট সাজেক
সাজেকের সবচেয়ে ভালো রিসোর্ট
সাজেক ভ্যালি ভ্রমনের উপযুক্ত সয়ম ও হোটেল বুকিং এবং খরচ
সাজন চালের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সত্যিই অনেক সুন্দর, অপরূপ অতুলনীয়। সারা বছরই বর্ণের সাজে সেজে থাকে সাজেক ভ্যালি। তাই বছরের যে কোন সময় আপনি ভ্রমণ করতে পারেন। মেঘের খেলা দেখতে চাইলে আপনাকে জুলাই থেকে নভেম্বর মাসের মধ্যে যেতে হবে। অনেকের কাছে এই সময়টা সবচাইতে ভ্রমণের জন্য ভালো সময়।
সূর্যোদয়ের আলো এবং মেঘের খেলা দেখার জন্য আপনাকে খুব ভরে ওঠে চলে যেতে হবে হ্যালিপ্যাডে, সেখান থেকে সবচেয়ে ভালো সূর্যোদয় দেখা যায়। এবং সূর্যাস্তের রঙিন রূপ দেখতে চাইলে বিকেল বেলায় কোন পাহাড়ের চূড়ায় উঠে অপেক্ষা করতে হবে। নিমিষে আপনার প্রাণ জুড়িয়ে যাবে।
সন্ধ্যার পর দেখবেন আকাশে কোটি তারার মেলা। আকাশ পরিষ্কার থাকলে দেখতে পাবেন মিল্কিওয়ে বা ছায়া পথ। ঘুরে ঘুরে দেখতে পারেন চারপাশের আদিবাসীদের জীবন যাপন। সহজ সরল এ সকল গ্রামবাসীর আচরণ আপনাকে মুগ্ধ করবেই।
আর তাড়াহুড়ো যদি না থাকে, তাহলে একটু সময় করে হাজাছড়া ঝর্ণা, দিঘীনালা বনবিহার ও দিঘীনালা ঝুলন্ত ব্রিজ দেখে আসতে ভুলবেন না। সেখানে যাওয়ার আগে কোন হোটেলে থাকবেন। কোন হোটেলের খরচ কেমন, তা অবশ্যই জেনে আগে থেকে বুকিং দিয়ে রাখবেন। তাহলে সরাসরি হোটেল বাড়ির সাথে গিয়ে ঘুরতে পারবেন।
আসলে দূর থেকে জার্নি করে গাড়ি থেকে নামার পর হোটেল খোঁজে বের করে হোটেলে ওঠা অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। এখানে অনেক হোটেল এবং রিসোর্ট রয়েছে। পনেরশো টাকা থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত এক রাতের জন্য হোটেলের রুম নিয়ে থাকতে পারবেন।
আগে থেকে হোটেলের রুম বুকিং দিতে চাইলে ২০ থেকে ৩০ দিন আগে বুকিং দিয়ে রাখবেন তাহলে ভালো মানের হোটেলের রুম পাবেন। আর কম দামে থাকতে চাইলে আদিবাসী হোটেল বা কটেজ গলাতে থাকতে পারেন। তাছাড়া পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে ছোট ছোট অনেক কটেজ তৈরি হয়েছে এই সমস্ত কটেজ থেকেও সাজেকের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।
ঢাকা টু সাজেক বাস ভাড়া ২০২৩-২৪
বাস এর মাধ্যমে ঢাকা থেকে সরাসরি সাজেক যাওয়ার পদ্ধতি কিছুটা ভিন্ন। বড় বাস গুলি সরাসরি সাজেক যায় না। সে গেলে কিছুটা পদ্ধতি অবলম্বন করে আপনাকে যেতে হবে।
প্রথমে ঢাকা থেকে বাসে চড়ে খাগড়াছড়ি যাবেন। এরপর খাগড়াছড়ি থেকে জীব অথবা সিএনজি করে আপনাকে সাজেক যেতে হবে। সাজেক যাওয়ার পর ইচ্ছামত আপনি ঘুরে বেড়ান যেখানে মন চায় যতদিন মন চায় ভ্রমণ করুন, আর উপভোগ করুন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। ঢাকা টু খাগড়াছড়ি বাস সার্ভিস সমূহ-
শান্তি পরিবহন
শ্যামলী পরিবহন
হানিফ পরিবহন
GreenLine পরিবহন
ইকোনো ট্রান্সপোর্ট
খাদিজা পরিবহন
দেশ ট্রাভেলস পরিবহন
এ সকল পরিবহন গুলোর মাধ্যমে আপনারা ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি যেতে পারবেন। এ বাসগুলি এসি নন এসি দুই রকম সার্ভিস চালু আছে। এসি বাসগুলো ভাড়া তুলনামূলক একটু বেশি।
ঢাকা টু খাগড়াছড়ি বাস ভাড়াঃ ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি পর্যন্ত নন এসি ওপরের পরিবহন গুলোর ভাড়া ৭৫০ টাকা। এছাড়াও কিছু লোকাল বাস সার্ভিস চালু আছে ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি পর্যন্ত সেগুলো দামাদামির মাধ্যমে ৫০০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকে। উপরের উল্লেখিত পরিবহন গুলোর এসি সার্ভিস এর ভাড়া হচ্ছে ১২০০ টাকা।
চট্টগ্রাম থেকে সাজেক যাওয়ার উপায়
চট্টগ্রামের অক্সিজেন মোড় থেকে খাগড়াছড়ি যাওয়ার জন্য শান্তি পরিবহন এবং আরো অন্যান্য বাস ছেড়ে যায়, এখান থেকে এসে নন এসে দুই ধরনের বাস পাওয়া যায়। এসে বাসে ৩৫০ টাকা এবং নন এসি বাসায় ২০০ টাকা ভাড়ায় চট্টগ্রাম থেকে খাগড়াছড়ি যাওয়া যায়। খাগড়াছড়ি যাওয়ার পর সেখান থেকে চান্দের গাড়ি অথবা সিএনজি করে সাজেকে যেতে পারবেন।
খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক কত কিলোমিটার
আপনারা যারা সাজেক রহমানের পরিকল্পনা করছেন সাজেকের বিভিন্ন লোকেশন, এর স্থান সম্পর্কে জানার পাশাপাশি খাগড়াছড়ি থেকে সাজাকে দূরত্ব কত সেটা জানা খুব জরুরী। খাগড়াছড়ি থেকে সাজেকের দূরত্ব ৬৩ কিলোমিটার। দূরত্ব বিবেচনায় ভালো মান সম্পন্ন বাসে সময় লাগতে পারে দুই ঘন্টা দশ মিনিট।
বাই রোডে খাগড়াছড়ি থেকে সাদেকের দূরত্ব ৬৩.২ কিলোমিটার। তবে খাগড়াছড়ির কোন স্থান থেকে যাত্রা শুরু করছেন এবং সাজেকের কোন জায়গায় গিয়ে নামবেন তার ওপর নির্ভর করবে দূরত্ব এবং কত সময় লাগবে। এছাড়াও রাস্তাঘাটে যানজটের কথা অবশ্যই মাথায় রাখবেন।
ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রয়োজনে বাবুর মনের জন্য যারা প্রায় সাজেক থাকে খাগড়াছড়ি বা খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক যাতায়াত করেন তাদের অবশ্যই এর দূরত্বটা জেনে রাখা ভালো।
সাজেক ভ্যালি হোটেল ও রিসোর্ট লিস্ট এবং ভাড়া
সাজেকের সবচেয়ে ভালো রিসোর্ট
মেঘপুঞ্জিঃ সাজেকের সবচাইতে সুন্দর, জনপ্রিয় ও আকর্ষণীয় রিসোর্ট হচ্ছে মেঘপুঞ্জি রিসোর্ট। সংসারের একটানা খাটুনি, নিয়মিত অফিসের কাজ, চারপাশের আবহাওয়া যখন আপনাকে ক্লান্ত এবং অমনোযোগী করে ফেলে তখনই এই সমস্ত ক্লান্তি দূর করতে চলে আসুন সপরিবারে কিন্তু বন্ধুবান্ধবকে সাথে নিয়ে সাজেক ভ্যালির অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য।
এখানে আসলে আমার বিশ্বাস জীবনের সমস্ত ক্লান্তি. বিষন্নতা দূর হবেই হবে। আসার আগে অবশ্যই হোটেল বুকিং দিতে ভুলবেন না। সাজেক ভাইয়ের অন্যতম আকর্ষণীয় সুসজ্জিত মনোরম একটি রিসোর্টের নাম মেঘপুঞ্জি রিসোর্ট। করেছ ছকে রিসোর্ট বুকিং এর জন্য কন্টাক্ট নাম্বার দেওয়া আছে চাইলে সেখান থেকে নাম্বারটা নিয়ে রিসোর্ট বুকিং দিতে পারেন।
শেষ কথাঃ ভ্রমণ পিপাসু প্রতিটি মানুষের কাছে সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ আনন্দদায়ক। পাহাড়ি মনোরম সবুজ প্রকৃতি, পাহাড় এবং সাদা মেঘের লুকোচুরি খেলা সত্যি পর্যটকদের চোখ জুড়িয়ে দেয়। সেই সাথে মনের ক্লান্তি, হতাশা দুশ্চিন্তা কোথায় যে পালিয়ে যায় কেউ টেরই পায় না। এখানে থাকার জন্য ছোট-বড় অনেক হোটেল, রিসোর্ট এবং কটেজ রয়েছে।
আপনি যতদিন ইচ্ছা এখানে থেকে যেতে পারেন আর উপভোগ করতে পারেন প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য। আপনি যদি আসতে চান অবশ্যই একটু সময় নিয়ে আসবেন। সাজেকের সর্বত্রই মেঘ, পাহাড় আর সবুজের মিতালী চোখে পড়ে। যা দেখে পর্যটকদের চোখ জুড়িয়ে যায়। এখান থেকে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের অপূর্ব দৃশ্য অবলোকন করা যায়।
কখনো মেঘ, কখনো কুয়াশা আবার কখনো গরম অনুভূত হয় এ পাহাড়ের প্রাকৃতিক পরিবেশে। আপনি যদি সাজেক ভ্রমণ না করে থাকেন তাহলে এখনই পরিকল্পনা করুন এবং সে মোতাবেক প্রস্তুতি নিন। সাজেক ভ্যালি কত যে সুন্দর এটি শুধুমাত্র বলে বা লিখে বোঝানো যাবে না। সরাসরি জেনে ভ্রমণ করেছেন তিনি জানেন এর সৌন্দর্যের দিকগুলো। ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন, আল্লাহ হাফেজ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url