অ্যালার্জি ও চর্ম রোগ থেকে মুক্তির উপায় জানুন
যাদের অ্যালার্জি আছে, তাদেরকে খুব সাবধানে থাকতে হয়। কারণ সামান্য একটু এদিক সেদিক হলেই শুরু হয়ে যায় চুলকানি, চোখ লাল ত্বকে লালচে দানা ওঠা ইত্যাদি। এই সমস্যা যদি আপনার থাকে, তবে অ্যালার্জি ও চর্মরোগ থেকে মুক্তির উপায় জানুন।
অনেকে আছে ধুলাবালির কারণে এলার্জি হয়, কাউরি খাওয়া-দাওয়ার কারণে এলার্জি হয়। এলার্জি এবং চর্মরোগ একটি বিরক্তিকর। এখানে জানতে পারবেন কি কি কারনে এলার্জি বা চর্ম রোগ হয়। এবং এর থেকে মুক্তির উপায়।
ভূমিকা
ধুলাবালি ছাড়াও অন্য কোন বস্তুর প্রতি বেশি সংবেদনশীলতার কারণে এলার্জি হতে পারে। যেমন- ধাতব অলংকার, প্রসাধনী সামগ্রী, ডিটারজেন্ট, সাবান, পারফিউম, কোন রাসায়নিক, প্লাস্টিকের তৈরি জিনিস, ফুলের রেনু এবং সিনথেটিক কাপড় পরিধানের মাধ্যমে।
এ সমস্যা জন্মগত এবং পারিবারিক কারণেও হতে পারে। এলার্জি থেকে মুক্ত থাকার উপায় হল, যে বস্তুতে এলার্জি রয়েছে তার সংস্পর্শে না আসা। যার যে জিনিসে এলার্জি তিনি সেই জিনিস এড়িয়ে চলবেন। খাবার হতে পারে, অথবা পরিধানের কাপড় চোপড় হতে পারে। কোন জিনিসে আপনার এলার্জি বাড়ে সেটা আপনাকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
অ্যালার্জি ও চর্ম রোগ থেকে মুক্তির উপায় জানুন
অ্যালার্জির কারণ ও করণীয়
রক্তের এলার্জি দূর করার উপায়
এলার্জি চুলকানি দূর করার উপায়
স্কিন এলার্জি থেকে মুক্তির উপায়
চর্ম রোগ থেকে মুক্তির ঘরোয়া উপায়
অ্যালার্জিতে অস্থির? ঘরোয়া উপায়ে মিলবে সমস্যার সমাধান!
অ্যালার্জি ও চর্ম রোগ থেকে মুক্তির উপায় জানুন
এলার্জি ও চর্মরোগ থাকে মুক্তি পেতে হলে প্রথমে এলার্জি হওয়ার কারণ জানতে হবে। যে কারণে এলার্জি হয়েছে সে কাছ থেকে বের হতে থাকতে হবে। যেমন কাউরি অলংকার পরিধানে এলার্জি হলে, সে অলংকার প্রধান থেকে বিরত থাকতে হবে। কাউরে খাবারের এলার্জি হয়, যে খাবারে যার এলার্জি হয়, সে খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
ওষুধ সেবনে কাউরে যদি এলার্জি হয়, তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে সেই ওষুধের কথা বলতে হবে। এলার্জি, চুলকানি, দাউদ ও একজিমা এগুলো বিরক্তিকর কষ্টদায়ক। তাকে অ্যালার্জি হলে, দাউদ হলে বা চুলকানিতে প্রদাহ হলে প্রথমে আপনাকে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। এলার্জি চুলকানি দাউদ বর্তমানে মানুষের মধ্যে ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়েছে।
কেউ কেউ বলছেন করোনা ভাইরাসের টিকা প্রদানের কারণে এমন হচ্ছে। সহজে ভালো হচ্ছে না, দাউদের, এলার্জির ঔষধ খেয়ে ও ব্যবহার করে কিছুটা আরাম হলেও একেবারে নিরাময় হচ্ছে না। এজন্য প্রথমে একজন ভালো চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে রক্ত ও স্কিন পরীক্ষা করিয়ে তার প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ঔষধ সেবনে নিরাময় হতে পারে।
মনে রাখবেন এটি একটি অসুখ, এবং এর চিকিৎসা আছে। তাই লজ্জা এবং শরম না করে চিকিৎসকের কাছে সব খুলে বলুন, যেগুলো বারণ থাকবে সেগুলো অবশ্যই মেনে চলবেন।
অ্যালার্জির কারণ ও করণীয়
হাতে থেকে শুরু করে ওষুধ সেবনের প্রতিক্রিয়াতে এবং খাদ্যাভ্যাসের কারণে এই রোগ হতে পারে। কারো ক্ষেত্রে এলার্জি, দাউদ, চুলকানি সামান্য অসুবিধা হতে পারে। আবার কারো ক্ষেত্রে জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে। লজ্জায় মানুষের সামনে যেতে পারে না।
প্রত্যেকটি মানুষের শরীরে একটি প্রতিরোধ ব্যবস্থা বা ইমিউন থাকে, কোন কারনে এ ব্যবস্থায় অসামঞ্জসা দেখা দিলে তখনই এলার্জির বহিঃপ্রকাশ ঘটে। জেনেটিক এবং বংশগত কারণেও এলার্জি হতে পারে। সাবান ও প্রসাধনী ব্যবহারের কারণেও এলার্জি ও চর্ম রোগ হতে পারে।
সিনথেটিক বা উলের কাপড় পরিধানের মাধ্যমেও এই অসুখের বিস্তার করতে পারে। রাসায়নিক প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে এবং অতিরিক্ত তাপমাত্রা ও গরমের কারণেও এই এলার্জি ও চর্মরোগ হতে পারে। মানসিক চাপ অতিরিক্ত চিন্তা এটিও একটি অন্যতম কারণ।
করণীয়গুলো হলো- সাবান এবং প্রসাধনী ব্যবহারে সতর্ক হতে হবে শরীর এবং ত্বকের সাথে মানানসই সাবান এবং প্রসাধনী ব্যবহারে অভ্যস্ত হতে হবে। সতীর ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান করতে হবে। অতিরিক্ত টেনশন থেকে মুক্ত থাকার চেষ্টা করতে হবে। এবং চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে।
এলার্জি চুলকানি দূর করার উপায়
চুলকানি নানা কারণে হয়ে থাকে। চামড়ার গঠনগত পরিবর্তনের জন্য, নার্ভ সিস্টেমের সমস্যার জন্য, সাইকোজেনিক সমস্যার জন্য, নিউরোলজিক সমস্যার জন্য। এছাড়াও চুলকানি আছে এমন রোগীর সংস্পর্শে গেলে, এবং চুলকানি হয় এরকম খাবার খেলে। আমাদের দেহে অনেক ধরনের চুলকানি হয়ে থাকে।
যেমনঃ ত্বক চুলকানি, মাথা চুলকানি, চোখ চুলকানি, এলার্জিজনিত চুলকানি, নারী-পুরুষদের প্রাইভেট এরিয়ার আশপাশে ও চুলকানি হয়ে থাকে এবং এটি খুবই বিরক্তিকর ও অসহ্য। চুলকানি নিরাময়ের জন্য নিম্নোক্ত ওষুধগুলো সেবন করা যেতে পারে- Sendo, Oradin, Derma 50, Atarax 25mg, Alatrol, Fexo 120, Safi, Ebatin ইত্যাদি।
চুলকানি দুর করতে মলমের নামঃ Fungidal-HC cream, Togent, Ezen, Antifungal. চুলকানি দূর করার কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি রয়েছে কিছু উপায় অবলম্বন করলে এখান থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। চুলকানি বা অন্যান্য একজিমা, খোসপাছড়া জাতীয় রোগের জন্য অত্যন্ত কার্যকারী উপাদান হচ্ছে নিম পাতা। নিমপাতা ভালো করে ধুয়ে নিন এরপর কোথায় এরপর বেটে চুলকানির স্থানে পেস্ট করে লাগিয়ে দিন। কিছুক্ষণ পর ধরে ফেলুন। নিমপাতা সেদ্ধ করে সে পানি দিয়ে গোসল করতে পারেন তাহলেও চুলকানি দূর হয়ে যায়।
স্কিন এলার্জি থেকে মুক্তির উপায়
স্কিন এলার্জি খুব কমন একটা সমস্যা। এ সমস্যা শিশুদের বেশি হওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। আবার অনেকের ক্ষেত্রে ছোটবেলায় এলার্জির সমস্যা না থাকলেও পরবর্তীতে বয়েস বাড়ার সাথে সাথে এলার্জি দেখা দিতে পারে। কিছু বিধি নিষেধ মেনে চললে অধিকাংশ অ্যালার্জি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। স্কিন এলার্জি কিছু খাবার খেলে আরো বেড়ে যায়।
খাবার গুলো হল- চিংড়ি মাছ, বেগুন, ইলিশ মাছ, গরুর মাংস, বাদাম, হাঁসের ডিম এবং হাঁসের মাংস। স্ক্রিন এলার্জি সহ অন্যান্য এলার্জিতে খাবার গুলো খেলে এলার্জি আরো বেড়ে যায় এবং সহজে ভালো হয় না। তাই এই খাবারগুলো না খাওয়াই উচিত যাদের অ্যালার্জি আছে। স্কিন এলার্জি বা দাউদ দূর করার জন্য ওষুধ সেবন করতে পারেন।
টারবিন প্রতি রাতে একটা করে এবং সে সাথে স্কিনের উপরে , গ্যাকোজিমা মলম ব্যবহার করতে পারেন। এটা ব্যবহারে খুব তাড়াতাড়ি আরাম পাওয়া যায়।। হোমিও ঔষধেও এ সমস্যা থেকে সমাধান পাওয়া সম্ভব। তবে হোমিও চিকিৎসা করলে একটু ধৈর্য সহকারে ওষুধ সেবন করতে হবে।
চর্ম রোগ থেকে মুক্তির ঘরোয়া উপায়
দাউদ, চুলকানি, জ্বালাপোড়া, , লাল ছোপ, ফুসকুড়ি এগুলা সব বিরক্তিকর সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। অনেক সময় এর ফলে ত্বকের স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা হারিয়ে যায়। আর এই সমস্যা শরীরের যে কোন স্থানে দেখা দিতে পারে। এ সমস্ত চর্মরোগ দেখা দিলে ঘরে তার সমাধান করে নিতে পারেন।
দাউদঃ চামড়ার উপর গোল চাকার মত লালচে ক্ষতস্থান সৃষ্টি হয় এ দাউদের কারণে। আক্রান্ত স্থানটি প্রচুর পরিমাণে চুলকায়। ঘাড়ে, পায়ের পাতা, বগলের নিচে, দুই উরুতে এধরনের ক্ষত দেখা যায়। এক্ষেত্রে সুতির পরিষ্কার ঢিলেঢালা জামা কাপড় পরিধান করতে হবে। ক্ষতস্থানে কাঁটা ছাড়া করা যাবে না এবং আন্টি ফাঙ্গাল ক্রিম লাগাতে হবে।
একজিমাঃ ত্বক ফেটে যাওয়া, চুলকানি, ত্বকে জ্বালা এগুলা লক্ষণ। এক্ষেত্রে নারিকেল তেল লাগালে আরাম পাওয়া যায়। লেবু ও বেকিং সোডা দিয়ে তৈরি পেস্ট চুলকানির ক্ষতস্থানে লাগালে চুলকানি কমে।
২ চা চামচ বেকিং সোডা ও এক চামচ লেবুর রস মিশিয়ে ত্বকে লাগান। পাঁচ থেকে দশ মিনিট অপেক্ষা করুন তারপর ধুয়ে ফেলুন। প্রতিদিন গোসলের আগে একবার এই পদ্ধতি অবলম্বন করুন দেখবেন চুলকানির উপদ্রব অনেক লাগছে কমে যাবে।
অ্যালার্জিতে অস্থির? ঘরোয়া উপায়ে মিলবে সমস্যার সমাধান!
এলার্জি অনেকের পুরোপুরি দূর করা যায় না। তবে এর প্রকোপ কমানো যায়। যে ব্যক্তির যে সমস্ত জিনিসে এলার্জি পারে, তাকে সে সমস্ত জিনিস থেকে দূরে থাকতে হবে। রোগী ভেদে একেকজনের একেক বস্তুতে এলার্জি।
ধরুন সিনথেটিক কাপড়ে এলার্জি তিনি সেই কাপড় পড়বেন না। কাউরে চিংড়ি মাছে এলার্জি তিনি খাবেন না। কোন বস্তুতে তার এলার্জি বাড়ে সেটা রোগীকেই মনে রাখতে হবে এবং তা মেনে চলতে হবে।
খাবার এবং পোশাক পরিচ্ছদ ব্যবহারে সাবধানতা অবলম্বন না করলে ওষুধ খেয়ে বা ক্রিম লাগিয়ে এলার্জি থেকে মুক্তি পাওয়া অসম্ভব। তাই প্রথমে আমাদেরকে লাইফস্টাইল বদলাতে হবে। ত্বকের এলার্জিতে এলোভেরা জেল ব্যবহার করলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। তবে জ্বালাপোড়া অচল কানে থেকে বাঁচা যায়।
উপসংহারঃ বর্তমানে বাংলাদেশে এলার্জি, চুলকানি, দাউদ সহ অন্যান্য চর্ম রোগের প্রকোপ ব্যাপক ধারণ করেছে। এমনও অনেক মানুষ আছে যারা বছরের পর বছর এই সমস্যা বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাচ্ছেন না। তাদের প্রতি আমার অনুরোধ উপরের এই পদ্ধতি গুলো প্রয়োগ করে আপনি এই সমস্যা থেকে যেতে পারেন।
একবার ব্যবহার করে দেখুন। যদি উপকার পান অন্যদেরও এই পদ্ধতি অবলম্বন করার পরামর্শ দিন। ভালো হলে, আরাম পেলে, আমার এই লেখাটি শেয়ার করে দিন। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url