নিম পাতার উপকারিতা এবং ঔষধিগুন সম্পর্কে জানুন

আপনি ‍কি প্রাকৃতিক কিছু ব্যবহার করে ত্বক ঠিক রাখতে চান ? আপনার চর্মরোগ ভালো হচ্ছেনা ? চিন্তা নেই আমাদের এই লেখাগুলি পড়ে নিম পাতার উপকারিতা এবং ঔষধিগুন সম্পর্কে জানুন এবং ব্যবহার করে আপনার যাবতিয় সমস্যা সমাধান করুন
অনেক আগে থেকেই গ্রাম বাংলায় নিমের পাতার ব্যবহার হয়ে আসছে। রুপ চর্চা, চর্মরোগ, ডায়াবেটিস সহ আরো অনেক সমস্যার মহাঔষধ হিসেবে কাজ করে এই নিমের পাতা। নিমের ডাল দিয়ে দাঁত পরিস্কার করলে দাঁত মজবুত থাকে এবং মুখের কোন রোগ বালায় হয়না।

ভূমিকা

নিমের পাতায় রয়েছে বহু ঔষধিগুনাবলী। চিকিৎসকদের মতে, অ্যালার্জি, একজিমা, ফোড়া ও বিভিন্ন ধরনের ত্বকের সমস্যা নিরাময় করতে কার্যকরি এই নিম পাতা। নিমের পাতা, ডাল ও রস সবই কাজে লাগে। প্রায় পাঁচ হাজার বছর ধরে বাংলাদেশসহ ভারতীয় উপহাদেশে ঔষধি গাছ হিসেবে নিম পাত, নিম ও নিমের ডাল ব্যবহার হয়ে আসছে।

নিম পাতার উপকারিতা এবং ঔষধিগুন সম্পর্কে জানুন
নিম পাতার বৈশিষ্ট্য
চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার
চুলের জন্য নিম পাতার উপকারিতা
ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার
চর্মরোগে নিম পাতার ব্যবহার
এলার্জিতে নিম পাতার ব্যবহার

নিম পাতার উপকারিতা এবং ঔষধিগুন সম্পর্কে জানুন

বর্তমান বিশ্বে নিমের কদর তা কিন্তু এর অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে ব্যবহারের জন্য। নিম ছত্রাকনাশক হিসেবে, ব্যাকটেরিয়া রোধক হিসেবে, ভাইরাসরোধক হিসেবে, কীট-পতঙ্গ বিনাশে, চ্যাগাস রোধ নিয়ন্ত্রণে, ম্যালেরিয়া নিরাময়ে, দন্ত চিকিৎসায় ব্যথামুক্তি ও জ্বর কমাতে, জন্ম নিয়ন্ত্রণে ব্যবহার করা হয়।

নিম পাতার বৈশিষ্ট্য

নিম পাতার গুনাগুন বর্তমান বিশ্বে এখন অনেকেরই জানা তাই তো এর কদর দিন দিন বাড়ছে। অ্যান্টিসেপটিক, ব্যাকটেরিয়া রোধক, ছত্রাক নাশক, ভাইরাস রোধক ও কীট-পতঙ্গ বিনাশে নিম পাতার ব্যবহার হয়ে আসছে বহু আগ থেকে। নিম গাছ হল পারিবারিক ফার্মেসী। মাথার খুশকি নিরাময়ে নিমের রয়েছে আশ্চর্য গুনগুন ক্ষমতায়।

চুলকানি খোঁজ পাচরা ,দাদ ,এক জিমা ,ব্রণ ,বসন্তের দাগ দূর করতে নিমগাছ ও নিম পাতার ব্যবহার ব্যাপক। চুল পাকা, চুল পড়া ও চুলের ভঙ্গুরতা প্রতিরোধে নিম গাছ ও নিম পাতা অতুলনীয়। দাঁত নড়বড়ে হলে নিম্নের দাতুল বা মেসওয়াক ব্যবহার করা যায়। নিম গাছ ব্যাকটেরিয়া ও ফাংগাল ইনফেকশন নিরাময় করে ।

চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার

বলা হচ্ছে, নিম জলে স্নান করার বহু ধরনের উপকার রয়েছে। গায়ে চুলকানি বা ব়্যাশের জ্বালা থাকলেও তা থেকে যেমন রেহাই পাওয়া যায়। অনেক আগে থেকে চুলকানি দুর করতে গাছ-গাছালির ব্যবহার হয়ে আসছে তার মধ্যে নিম পাতা উল্লেখ যোগ্য।

নিম পাতার ঔষধি গুনাগুন সম্পর্কে অনেকেই জানেন আবার অনেকেরই অজানা। নিম পাতা ব্যবহার করে চুলকানি থেকে খুব সহজেই ‍মুক্তি পাওয়া যায়। নিম পাতা পানিতে দিয়ে ১০মিনিট পানি ফুটিয়ে ঠান্ডা করে নিয়ে সেই পানি দিয়ে গোসল করলে চুলকানি ভালো হয়।

চুলের জন্য নিম পাতার উপকারিতা

উজ্জ্বল, সুন্দর ও দৃষ্টিনন্দন চুল পেতে নিমপাতার ব্যবহার বেশ কার্যকর। চুলের খুশকি দূর করতে শ্যাম্পু করার সময় নিমপাতা সিদ্ধ পানি দিয়ে চুল ম্যাসেজ করে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। নিমের তেলে প্রচুর ভিটামিন ই এবং ফ্যাটি এসিড থাকে যা ত্বক এবং চুলের জন্য উপকারী। নিমের তেল অনেক তেতো হওয়ায় এবং গন্ধ করায় অনেকেই এই তেল পাথায় দিতে চায়না।

নিমের প্যাক বানিয়ে নিয়মিত ব্যবহার করলে চুল পড়া অনেকটাই কমে যাবে। মধু ও নিমপাতার রস মিশিয়ে চুলের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত লাগান। ২০ মিনিট পর শ্যাম্পু করুন। সপ্তাহে ৩ দিন ব্যবহারে চুল হবে ঝলমলে।

এক চা চামচ আমলকির রস, এক চা চামচ নিমপাতার রস, এক চা চামচ লেবুর রস, প্রয়োজন অনুযায়ী টকদই মিশিয়ে সপ্তাহে ২ দিন চুলে লাগিয়ে আধঘণ্টা অপেক্ষা করার পর শ্যাম্পু করুন। নিমপাতা ভালো করে বেটে চুলে লাগাতে পারেন। ১ ঘণ্টা পর ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে এক দিন করে ব্যবহার করুন। চুল পড়া কমার সঙ্গে সঙ্গে চুল নরম ও কোমল হবে।

ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার

১ চা চামচ বেসন, ১ চামচ টকদইয়ের সঙ্গে নিম পাউডার দিয়ে ভালো করে মেশান। এই প্যাক মুখে ও ঘাড়ে ভালো করে লাগান। শুকিয়ে গেলে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। কিছুদিন ব্যবহারে ব্রণের দাগ দূর করবে। ব্রণ দূর করতে নিমপাতার পাউডার, গোলাপজল এবং লেবুর রস একত্রে মিশিয়ে ২০ মিনিট ত্বকে লাগিয়ে রাখুন।

তারপর শুকিয়ে গেলে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দুদিন ব্যবহারে উপকার পাবেন। কয়েকটি নিমের পাতা, অল্প হলুদের গুঁড়ো এবং ঠাণ্ডাতরল দুধ দিয়ে পেস্ট তৈরি করে ত্বকে লাগিয়ে মাসাজ করুন। ১৫ মিনিট পর শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। নিম ও হলুদ ত্বকের সংক্রমণ এবং ব্যাকটেরিয়া দূর করে। এ ছাড়া তৈলাক্ততা এবং ব্রণের প্রকোপ কমায়।

চর্মরোগে নিম পাতার ব্যবহার

চর্মরোগ এক ধরনের মারাত্মক রোগ। বলা হয়ে থাকে যে, বর্ষায় চর্মরোগ খুব হয়। বর্ষায় আর্দ্রতার কারণে চর্মরোগ সহজেই ছড়ায় বা হতে পারে। এ ধরনের ত্বকে নিম ব্যবহার করতে পারেন। একজিমার সমস্যায়ও নিম পাতার রসে ভিজিয়ে ব্যান্ডেজ লাগালে অনেক উপকার পাওয়া যায়।

দাদ এবং ক্ষত নিরাময়ের জন্য, নিমের ১৫-২০ টি পাতা নিন পিষে পেষ্ট করে নিন, তারপর এটি ভালভাবে লাগান। ২-৩ বারে আরাম পাবেন। ১০ গ্রাম নিমের ছাল এবং নিমের বীজ নিম পাতার সঙ্গে পিষে ভালো করে পেস্ট তৈরি করুন।

যেখানে ত্বক সংক্রান্ত রোগ বা চুলকানি বা দাদ আছে সেখানে ভালো করে লাগান। এটি তাত্‍ক্ষণিক স্বস্তি দেবে। ব্রণের উপরও এই পেস্ট লাগাতে পারেন। দাদ, চুলকানি ও একজিমা ও ফোড়ার উপর নিম ব্যবহার করলে অনেক উপকার পাওয়া যায়।

এলার্জিতে নিম পাতার ব্যবহার

এলার্জির সঙ্গে আমরা কম-বেশি সবাই পরিচিত। এলার্জির কারণে অনেকে খাদ্যতালিকা থেকে বাদ রাখেন প্রিয় খাবারদাবার। যেমন- গরুর দুধ, হাঁসের ডিম ডিম, ইলিশ, চিংড়ি, পুঁটি, বোয়াল, বেগুন, কচু, গরুর মাংস, হাঁসের মাংস ইত্যাদি। এক চা চামচের তিন ভাগের এক ভাগ নিম পাতার গুড়া এবং এক চা চামচ ভুষি এক গ্লাস পানিতে আধা ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখতে রাখুন।

আধা ঘণ্টা পর চামচ দিয়ে নেড়ে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে, দুপুরে ভরা পেটে এবং রাতে শোয়ার আগে এই মিশ্রণ খেতে পারেন।

এ মিশ্রণ একনাগারে এক মাস খাওয়ার পর আপনার এলার্জি অনেকটাই কমে যাবে। এগুলো ছাড়াও কৃমির উৎপাত থেকে বাচতে নিম পাতার রস খেতে পারেন। নিয়মিক কয়েক দিন নিম পাতার রস খেলে পেটের কৃষি জনিত সমস্যা, ডায়াবেটিস মসম্যা অনেকাংশে কমে যাবে। ইনশাআল্লাহ- ।

উপসংহারঃ- পরিশেষে বলা যায় নিমের পাতা, নিমের গাছের ঔষধিগুন সম্পর্কে বলে শেষ করা যাবেনা। আশা করি উপরের নিয়মগুলি মেনে ব্যবহার করলে উল্লেখিত সমস্যা থেকে আরগ্য লাভ করবেন, ইনশাআল্লাহ।

আমার এই লেখাগুলো যদি আপনার ভালো লাগে তবে অন্যকে পড়তে উৎসাহিত করুন এবং সেয়ার করে দিন। নিজের যত্ন নিন, নিরাপদে থাকুন, ভালো থাকুন। আল্লাহ হাফেজ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪